Ajker Patrika

গুচ্ছে না থাকার সিদ্ধান্ত জবি শিক্ষক সমিতির

জবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৩, ১৮: ০১
গুচ্ছে না থাকার সিদ্ধান্ত জবি শিক্ষক সমিতির

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাধারণ সভা করেছেন শিক্ষকেরা। সেখানে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান। 

লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকব না। এক সপ্তাহের মধ্যে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা আজই এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে চিঠি দেব। আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে।’ 

এর আগে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সভা শেষে আগামী মাসের শেষের দিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চায় বলে জানিয়েছিল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটি। তবে এতে আপত্তি জানায় জবি শিক্ষক সমিতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জ্ঞান, নৈতিকতা এবং উৎকর্ষের ধারায় তিন দশকের গৌরবময় অগ্রযাত্রা

মিজানুর রহমান ভূঁইয়া
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্থায়ী ক্যাম্পাস। ছবি: সংগৃহীত
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্থায়ী ক্যাম্পাস। ছবি: সংগৃহীত

দেশের উচ্চশিক্ষার ইতিহাসে গত তিন যুগ ছিল পরিবর্তন ও সম্প্রসারণের সময়। এই সময়ে শিক্ষা শুধু শহরকেন্দ্রিক থেকে বেড়ে ধীরে ধীরে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছেছে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নৈতিকতা, গুণগত মান ও সামাজিক দায়বদ্ধতার সমন্বয়ে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এইউবি) সেগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১৯৯৬ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি তিন দশকে পদার্পণ করছে। মাত্র ২৯৫ শিক্ষার্থী নিয়েযাত্রা শুরু হয়। এইউবি আজ দেশের সুপরিচিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আশুলিয়ার টংগাবাড়িতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে দেশি-বিদেশি কয়েক হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিকোণ

সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক রবিউল আলম বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডে পিএইচডি রিসার্চার। তিনি বলেন, ‘৩০ বছর মানে শুধু সময় পার হওয়া নয়, বরং সময়টা চিন্তার ধারাবাহিকতাও। এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শুধু ডিগ্রি অর্জনে নয়; প্রশ্ন করতে, নিজস্ব বাস্তবতা বুঝতে এবং জ্ঞানকে নতুনভাবে ভাবতে উৎসাহ দিয়েছে। এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত শক্তি।’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুন্নাহার পিংকি বলেন, ‘এইউবি আমাদের স্বপ্ন গড়ার জায়গা। এখানে শিক্ষকেরা শুধু বইয়ের জ্ঞান দেন না, ভালো মানুষ হতে শেখান। তাঁদের আন্তরিকতা, ধৈর্য ও সহযোগিতা আমাদের প্রতিদিন এগিয়ে যেতে সাহস জোগায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আশা করি, আগামীর দিনগুলোতেও এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেবে।’

এক স্বপ্নদ্রষ্টার উদ্যোগ

প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. আবুল হাসান এম সাদেক একজন অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর কানাডায় পিএইচডি সম্পন্ন করেন। বিদেশে কর্মজীবনের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দেশে ফিরে আসেন। এরপর তিনি ব্যক্তিগত সঞ্চয়, অভিজ্ঞতা এবং শ্রম বিনিয়োগ করার মধ্য

দিয়ে ১৯৯৬ সালে এইউবি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সীমিত। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমরা স্বল্প খরচে শিক্ষাদান করছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন খাতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে কাজ করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম আন্তর্জাতিক মানের; আইসিটি, স্মার্ট ক্লাসরুম, অনলাইন লার্নিং এবং আধুনিক কারিকুলাম চালু রয়েছে।’

শিক্ষা দর্শন ও একাডেমিক পরিবেশ

এইউবির শিক্ষা দর্শনের মূল ভিত্তি নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধ। এখানে শিক্ষা শুধু সনদ অর্জনে সীমাবদ্ধ নয়; ব্যক্তিত্ব ও দায়িত্ববোধ গঠনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। আধুনিক ও কর্মবাজারমুখী পাঠ্যক্রম, অভিজ্ঞ শিক্ষক ও গবেষকদের সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি স্থিতিশীল একাডেমিক পরিবেশ তৈরি করেছে। গবেষণা, সেমিনার ও কর্মশালার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণী ও সৃজনশীল চিন্তায় উৎসাহ দেওয়া হয়।

গ্র্যাজুয়েটদের অবস্থান

দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং, করপোরেট খাত, শিক্ষা, গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রশাসন, গণমাধ্যম ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে তাঁরা কর্মরত। পেশাদারি ও নৈতিক আচরণে সবাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

মান নিশ্চয়তা ও অবকাঠামো

শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়টি গঠন করেছে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেল (আইকিউএসি)। ১০ একর জমির স্থায়ী ক্যাম্পাসে রয়েছে ১০ তলা একাডেমিক ভবন, আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার, সেমিনার কক্ষ, দুটি খেলার মাঠ, সাতটি কম্পিউটার ল্যাব এবং লাখো বইয়ের লাইব্রেরি ও জার্নাল। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে হোস্টেল সুবিধা ও বিনা মূল্যের পরিবহনব্যবস্থা।

সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সুযোগ

স্বল্প ফি কাঠামোর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাকে সহজলভ্য করা এইউবির লক্ষ্য। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য পূর্ণ বৃত্তি এবং মেধাবী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম রয়েছে। নারী শিক্ষা, সহশিক্ষা কার্যক্রম, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক আয়োজন, খেলাধুলা ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব ও সামাজিক দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে সহায়ক।

ভবিষ্যৎ লক্ষ্য

তিন দশকের অভিজ্ঞতায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এখন একটি স্বনামধন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গবেষণা, ডিজিটাল লার্নিং, উদ্ভাবন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং উদ্যোক্তা উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি

শিক্ষা ডেস্ক
সাখাওয়াত হোসেন লিমন।
সাখাওয়াত হোসেন লিমন।

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা দরজায় কড়া নাড়ছে। এ সময়টায় অনেকে হতাশ হয়ে পড়ে, কীভাবে প্রস্তুতি গোছাবে, কোন দিকটায় বেশি গুরুত্ব দেবে—এসব ভেবে দুশ্চিন্তা বাড়ে। এ সময় আত্মবিশ্বাসই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যারা ফার্স্ট টাইমার, তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় সময় ব্যবস্থাপনায়। শুরুতে প্রশ্ন বুঝলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারায় ফল ভালো আসে না। তবে একটু কৌশলী হলেই এ সময়টা খুবই কার্যকরভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। চলুন, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পর্কে একনজরে দেখে নেওয়া যাক:

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

পরীক্ষার আগমুহূর্তে নতুন কোনো টপিক না পড়াই ভালো। বরং আগের পড়া টপিকগুলো বারবার রিভিশন করতে হবে। প্রশ্নব্যাংক দেখে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো ভালোভাবে রিভিশন করতে হবে। প্রতিটি বিষয়ে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ ভালো রেজাল্ট করতে হলে প্রতিটি বিষয়েই ভালো নম্বর তুলতে হবে। নিয়মিত অনুশীলন ও পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেকে ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। পরীক্ষার আগমুহূর্তে স্বাস্থ্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অত্যন্ত ৬ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে।

আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা

আত্মবিশ্বাস সফলতা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি, যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত অধ্যয়ন, পরিশ্রম ও নিজেকে মূল্যায়নের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হবে।

পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার আগে করণীয়

পরীক্ষা শুরু হওয়ার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে। ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন, ঘড়ি ইত্যাদি নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না। পরীক্ষার মূল প্রবেশপত্র (স্টুডেন্ট কপি ও অফিস কপি) এবং এইচএসসি পরীক্ষার মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড সঙ্গে আনতে হবে।

প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর করণীয়

প্রশ্নপত্রে যদি সেটকোড থাকে তাহলে তা অবশ্যই আগে পূরণ করতে হবে। ৮০টি প্রশ্নের বিপরীতে সময় মাত্র ৬০ মিনিট। তাই টাইম ম্যানেজমেন্ট ভালো রেজাল্ট করার ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১.২৫ মার্ক অর্থ্যাৎ ৮০টি প্রশ্নের জন্য ১০০ মার্ক। প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর প্রথম দিক থেকে সিরিয়ালে উত্তর করতে হবে। কোনো প্রশ্নে কনফিউশন থাকলে সেটির জন্য অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা যাবে না। প্রশ্নের চারটি অপশন ভালো করে পড়ে তিনটি ভুল উত্তর খুঁজে বের করে সঠিক উত্তরটির বৃত্ত ভরাট করতে হবে। নেগেটিভ মার্কিংয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। একটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে।

সবশেষে বলা যায়, জীবনে সফলতার ক্ষেত্রে নিজের প্রতি আস্থা, ধৈর্য ও পরিশ্রমের বিকল্প নেই। জীবনে সফল হওয়ার জন্য সব ধরনের বাধা-বিপত্তি পরিকল্পিতভাবে দমন করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি পরিশ্রমী, অধ্যবসায়ী, আত্মবিশ্বাসীরা কখনোই হেরে যায় না।

সাখাওয়াত হোসেন লিমন, শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় মানবিক ইউনিটে ৩৯তম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থায়িত বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫২
কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা
কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা

কানাডার শীর্ষ স্থানীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো বিভিন্ন স্কলারশিপে আবেদনের আহ্বান জানিয়েছে। ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এসব স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই স্কলারশিপ কর্মসূচিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন।

যেসব শিক্ষার্থী কানাডায় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখছেন এবং আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চান, তাঁদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যোগ্য শিক্ষার্থীদের জন্য এ স্কলারশিপগুলো উচ্চশিক্ষার ব্যয় কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কানাডায় পড়াশোনার পথ আরও সহজ করে দেবে।

ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো কানাডার অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৮২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। টরন্টো শহরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টির তিনটি ক্যাম্পাস সেন্ট জর্জ, স্কারবরো ও মিসিসাগায় হাজারো দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় নিয়মিত জায়গা করে নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে নোবেলজয়ীসহ বহু খ্যাতিমান গবেষক, শিক্ষক ও পেশাজীবী উঠে এসেছেন।

সুযোগ-সুবিধা

শিক্ষার্থীরা ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর স্কলারশিপ খুঁজে পেতে অ্যাওয়ার্ড এক্সপ্লোরার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে দেওয়া বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ ও গ্র্যান্টের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। মেধা, যোগ্যতা ও আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন বিবেচনায় এসব বৃত্তি দেওয়া হয়। প্রতিটি বৃত্তির আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন। এই প্ল্যাটফর্মে আবেদনকারীরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বা দেশীয় শিক্ষার্থী, বিষয়ভিত্তিক প্রোগ্রাম, পড়াশোনার স্তরসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরি নির্বাচন করে উপযুক্ত স্কলারশিপ বেছে নিতে পারবেন।

আবেদনের যোগ্যতা

কানাডার বিভিন্ন স্কলারশিপের ক্ষেত্রে যোগ্যতার শর্তও ভিন্ন ভিন্ন। প্রতিটি স্কলারশিপের জন্য আলাদা আলাদা যোগ্যতা ও শর্ত নির্ধারিত। আবেদনকারীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, বিষয়ভিত্তিক ফল, ভর্তি প্রোগ্রাম এবং কখনো কখনো জাতীয়তা বা শিক্ষার্থীর স্ট্যাটাসের ওপর এসব শর্ত নির্ভর করে। কোন স্কলারশিপে আবেদন করা হচ্ছে, তার ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীর যোগ্যতা মূল্যায়ন করা হয়। আবেদন করার আগে সংশ্লিষ্ট স্কলারশিপের মৌলিক যোগ্যতার শর্তগুলো বিস্তারিতভাবে যাচাই করা জরুরি। এসব প্রাথমিক যোগ্যতার তথ্য লিঙ্কে গিয়ে পাওয়া যাবে।

স্কলারশিপের ধরন

ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোতে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একাধিক মর্যাদাপূর্ণ স্কলারশিপ কর্মসূচি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দি ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো স্কলার্স প্রোগ্রাম, প্রেসিডেন্টস স্কলার্স অব এক্সেলেন্স প্রোগ্রাম এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে নকশা করা লেস্টার বি. পিয়ারসন ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব স্কলারশিপের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আলাদা করে কোনো আবেদন করতে হয় না। ভর্তি আবেদনের তথ্যের ভিত্তিতেই যোগ্য শিক্ষার্থীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্কলারশিপের জন্য বিবেচনা করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদনপ্রক্রিয়াকে আরও সহজ করেছে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ

ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো ও এর অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন কলেজ, অনুষদ ও বিভাগ প্রতিবছর প্রায় ৪ হাজার ৫০০টি বৃত্তি দিয়ে থাকে। যার মোট আর্থিক মূল্য প্রায় ২ কোটি মার্কিন ডলার। পাশাপাশি চলমান শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার ইনকোর্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এসব স্কলারশিপ ও আর্থিক সহায়তায় শিক্ষার্থীরা যেসব বিষয়ে পড়ালেখা করতে পারেন, সেগুলো হলো ফার্মেসি, মেডিকেল রেডিয়েশন সায়েন্সেস, বায়োমেডিক্যাল কমিউনিকেশনস, মেডিসিন, আর্কিটেকচার, ল্যান্ডস্কেপ অ্যান্ড ডিজাইন, ডেন্টিস্ট্রি, ফিজিক্যাল থেরাপি, ফরেস্ট্রি, ইনফরমেশন, নার্সিং, আইন (ল), ম্যানেজমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং, সামাজিক বিজ্ঞান।

আবেদন পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা লিঙ্কে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৪ জানুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জকসুর প্রচারণা শেষ: সুষ্ঠু ও শঙ্কামুক্ত নির্বাচনের আশায় প্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা

  • সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের কারও কারও সংশয়
  • অন্য ছাত্র সংসদ ভোটের মতো ‘বিশৃঙ্খলা’ চান না কেউ
  • ভোট গ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর, ফল সেদিনই বা পরদিন
সোহানুর রহমান, জবি
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৭
রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রচার গতকাল শেষ হয়েছে। শেষ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের সামনে প্রচারে ব্যস্ত ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী এ কে এম রাকিব। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রচার গতকাল শেষ হয়েছে। শেষ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের সামনে প্রচারে ব্যস্ত ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী এ কে এম রাকিব। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদের প্রথম নির্বাচন হতে যাচ্ছে ৩০ ডিসেম্বর। ১৫ ডিসেম্বর শুরু হওয়া নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা গতকাল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। প্রচারণার পুরোটা সময় ক্যাম্পাসে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রার্থীসহ সবার প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।

প্রচার পর্বজুড়ে প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের ভাবনা ও প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছেন। প্রচার করা হয়েছে ইশতেহার।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, ‘প্রচারণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। এখন একটাই প্রত্যাশা, একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরাপদ নির্বাচন। অন্যান্য ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে যে ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়েছে, তা কোনোভাবেই আমরা চাই না।’

ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের প্রচারণা ছিল জোরদার। নিয়মিত ক্যাম্পাসে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁদের সমস্যা শুনেছি। আমরা নির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। তবে নির্বাচন কমিশন ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমাদের কিছুটা সংশয় রয়েছে। আমরা একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি।’

তরুণদের নতুন দল এনসিপির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের এজিএস পদপ্রার্থী শাহীন মিয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি। যেখানে গেছি, শিক্ষার্থীরা বলেছেন আমরা সব সময় ক্যাম্পাসের জন্য কাজ করেছি। সব মিলিয়ে আমরা আশাবাদী। তবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আমাদের বারবার হতাশ করেছে। আশা করি, নির্বাচনের দিন আগের সে পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে গতকাল প্রচার চালান ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে গতকাল প্রচার চালান ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট-সমর্থিত ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেলের এজিএস পদপ্রার্থী শামসুল আলম মারুফ বলেন, ‘আমরা প্রচারণার জন্য খুব কম সময় পেয়েছি। এরপরও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি এবং নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী। তবে নির্বাচন কতটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।’

সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশায় শিক্ষার্থীরাও

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসান মিয়া বলেন, ‘এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রথম ভোট। এজন্য খুবই উৎসুক রয়েছি। এমন কোনো কিছু দেখতে চাই না, যার মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হয়।’

আরেক শিক্ষার্থী সাহেদ সিজান বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনে একটা না একটা ঝামেলা থাকেই। কিন্তু আমার প্রত্যাশা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটা শঙ্কামুক্ত নির্বাচন উপহার দেবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে ভোটারদের জন্য প্রয়োজনীয় ১২ দফা নির্দেশনা জারি করে ইতিমধ্যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আশা করছি, জকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।’

৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ শেষে সম্ভব হলে সেদিনই বা ৩১ ডিসেম্বর ফল ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ আমলের গোড়ার দিকে, ১৮৬৩ সালে প্রথমে স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু হয়েছিল এ শিক্ষায়তনটির। একপর্যায়ে মানিকগঞ্জের বালিয়াটির জমিদার কিশোরী লাল চৌধুরীর ওপর স্কুলটি পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে। তিনি তাঁর বাবা জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামে এর নামকরণ করেন। ১৯২০ সালে ব্রিটিশ সরকার এটিকে কলেজে উন্নীত করে। ২০০৫ সালে কলেজটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সরকারের অনুমোদন পায়। সেই থেকে এবারই প্রথম এর ছাত্র সংসদের নির্বাচন হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত