
২০২১ সালের জুন মাস। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছে কোম্পানিটির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার টি-শার্টের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। তিনি সরবরাহ বাড়ালেন, সেগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেল। এরপর তিনি বুঝতে পারলেন, এই টি-শার্টগুলো বিশেষ একধরনের ক্রেতার কাছেই বেশি চাহিদাসম্পন্ন— আর তাঁরা হলেন মৎস্যজীবী।
মহামারির সময় তুলার পোশাকের দাম বেড়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা পলিয়েস্টারের দিকে ঝোঁকেন। পলিয়েস্টার শুধু সস্তাই নয়, দ্রুত শুকিয়ে যায়। টেকনো স্পোর্টসওয়্যারের টি-শার্টগুলো অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দেয় এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল হওয়ায় সমুদ্রে কয়েক দিন থাকলেও দুর্গন্ধ ছড়ায় না। ফলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই টি-শার্টগুলো।
অ্যাক্টিভউয়্যার বা খেলাধুলার পোশাক তৈরিতে ভারতের বৃহত্তম ঘরোয়া ব্র্যান্ডের পরিচালক ঝুঞ্জুনওয়ালা দাবি করেন, ‘আজকের দিনে কন্যাকুমারী থেকে চেন্নাই পর্যন্ত তিনজন মৎস্যজীবীর মধ্যে একজন আমাদের ব্র্যান্ডের পোশাক ব্যবহার করে।’
বিশ্বজুড়ে পলিয়েস্টার টি-শার্ট, ভিসকোস বা অন্যান্য সিনথেটিক ফাইবারের মিশ্রণে তৈরি পোশাকগুলো ‘ম্যান-মেড ফাইবার’ বা এমএমএফ নামে পরিচিত। এসব পোশাক ভারতে চল পেতে সময় লেগেছে। ভারত এখনো তুলার বাজারের ওপর নির্ভরশীল। দেশটিতে তুলার পোশাকের চাহিদা এখনো ৬০ শতাংশের বেশি। তবে বৈশ্বিক চিত্র ভিন্ন।
আন্তর্জাতিক তুলা উপদেষ্টা কমিটির (আইসিএসি) মতে, ১৯৬০ সালে বিশ্বের মোট টেক্সটাইল ফাইবারের চাহিদায় তুলার পরিমাণ ছিল ৬৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটি মাত্র ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বে এখন এমএমএফ ফাইবারের চাহিদার পরিমাণ এখন ৭৪ শতাংশ।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, বিশ্বের ক্রেতারা ফাংশনাল পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। তুলা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। সেখানে এমএমএফ ক্রেতাদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। তাঁর মতে, তুলার তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমশ কমতে থাকবে।
ফাংশনাল পোশাক বলতে বিশেষ ব্যবহারের জন্য তৈরি পোশাক বোঝানো হয়, যেমন জিম বা অফিসে পরার পোশাক।

এদিকে ভারতের রপ্তানি বাজারে তুলাভিত্তিক পোশাকের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মোট রপ্তানির মধ্যে এমএমএফ টেক্সটাইলের পোশাক মাত্র ১৪ শতাংশ। ফলে চীন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামের কাছে ভারত দ্রুত-বর্ধনশীল এমএমএফ বাজার হারাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত এক সময় বিশ্ব টেক্সটাইল বাজারে প্রভাবশালী অবস্থানে থাকলেও এখন তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাহলে, ভারত কীভাবে আবার প্রতিযোগিতায় ফিরে আসতে পারে? প্রথমে বোঝা যাক, ভারত কেন ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ছে।
উদ্ভাবন বনাম দক্ষতা
গোপীনাথ বালার কেমিস্ট্রির প্রতি মুগ্ধতা ছোটবেলা থেকেই। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর নাসার জন্য ন্যানো ম্যাটেরিয়াল ও মহাকাশ প্রকল্পে তিনটি কাজে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে একটি ছিল মঙ্গল গ্রহের প্রকল্প। ২০০৭ সালে ভারত ফিরে এসে কোয়েম্বাটোরের কাছে উদুমালপেট এলাকায় পরিবারের মালিকানাধীন শ্রী ভেঙ্কটলক্ষ্মী স্পিনার্স প্রাইভেট লিমিটেডে মিলে কাজ শুরু করেন। কোম্পানিটি তুলার সুতা উৎপাদন করত। তবে তুলার সুতা উৎপাদন লাভজনক না হওয়ায় ২০১৬ সালে মিলটি বন্ধ করে বালা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল খাতে প্রবেশ করেন। এ ধরনের টেক্সটাইল প্রতিরক্ষা, অটোমোবাইল, বিমান ও মহাকাশযানে ব্যবহার করা হয়।
বালা দুটি পণ্য তৈরি করেছেন—একটি হলো বায়োডিগ্রেডেবল ফেব্রিক, যা বিজ্ঞাপনী বোর্ডে ব্যবহৃত ফ্লেক্স কাপড়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আরেকটি হলো আউটডোর ছাউনি ও ত্রাণ কাঠামো তৈরির জন্য কাপড়, যা ধাতু বা পাতের পরিবর্তে ছাদের জন্য ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ভবিষ্যতে বালা গাড়ির জন্য এয়ারব্যাগ তৈরি করতে চান। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন তাঁর প্রথম দুটি পণ্য থেকে পর্যাপ্ত আয় আসবে।
বালা বলেন, ‘এই দুটি পণ্য তৈরি করতে আমার তিন বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। তুলা টেক্সটাইলের তুলনায় ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) কাপড় বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কারণ এটাতে হাতে-কলমে কাজ করতে হয়।’
কাঙ্ক্ষিত গুণমান অর্জন করতে পণ্যের বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করতে হয়, তার জন্য বড় অঙ্কের প্রাথমিক বিনিয়োগও প্রয়োজন। তিনি আশা করেন, এয়ারব্যাগ প্রকল্পটি বাজারে আসতে আরও চার বছর লাগবে।
বালা আরও বলেন, এমএমএফ ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি সুতির চেয়ে ভিন্ন। উন্নত টেক্সটাইল ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এখানে উদ্ভাবনী হতে হয়। অন্যদিকে প্রচলিত তুলার পোশাক তৈরির প্রক্রিয়া টেক্সটাইল উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা।
এ বিষয়ে মেনকা মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও বিশ্বের বৃহত্তম স্পোর্টস পণ্যসামগ্রীর খুচরা বিক্রেতা ডেকাথলনের সরবরাহকারী আর.এম. লক্ষ্মণ নারায়ণ বলেন, উদাহরণ হিসেবে কাঁচামালের বিষয়টি ধরা যাক। তুলার বিপরীতে পলিয়েস্টার সুতা তৈরির ক্ষেত্রে এর গঠন জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সরাসরি পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে। পলিয়েস্টারের শত শত প্রকার রয়েছে এবং প্রতিটি প্রকারের আরও বিভিন্ন উপভাগ আছে। সঠিক ধরনের সুতা বাছাই করতে প্রায় ২০টি বৈশিষ্ট্যের জন্য এই সুতাগুলোর পরীক্ষা করতে হয়, যেমন সংকোচন, প্রসারণ যোগ্যতা, সংকোচন ক্ষমতা বা কার্ল স্থিতিশীলতা।

তাই বেশির ভাগ তুলার কাপড়ের উদ্যোক্তা এমএমএফ বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজারে প্রবেশ করতে চান না। বালার মতে, টেক্সটাইল শিল্পের ১৫ শতাংশ উদ্যোক্তা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জগতে প্রবেশ করতে পারেন। আর প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্যোক্তা এমএমএফ টেক্সটাইলকে উন্নত ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছেন।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল পণ্য তৈরি করতে তুলনামূলকভাবে আরও বেশি কারিগরি দক্ষতা, উচ্চতর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের প্রয়োজন।
কাঁচামালের সংকট
সমস্যার শেষ নেই। ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পলিয়েস্টার ও ভিসকোজ উৎপাদনকারী হলেও মানসম্পন্ন কাঁচামালের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার। ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারতে যে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতা পাওয়া যায়— তা গুণগত দিক থেকে চীন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের চেয়ে নিম্নমানের।’
ভারতীয় কাঁচামাল সরবরাহকারীরা বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় নতুনত্ব আনেনি। এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। এসভিজি ফ্যাশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজকুমার আগরওয়াল বলেন, ভারতের পলিয়েস্টার শিল্প অধিকাংশ সময় অভ্যন্তরীণ বাজারে মনোযোগী ও এর দাম খুব কম। পলিয়েস্টার সুতা প্রস্তুতকারকদের জন্য নতুনত্বে বিনিয়োগের কোনো প্রণোদনা নেই। তবে এমএমএফ টেক্সটাইল রপ্তানি একবার বাড়তে শুরু করলে কাঁচামালের গুণগত মান উন্নত হবে।
ঝুঞ্জুনওয়ালার টেকনোস্পোর্টসওয়ার প্রায় সব পলিয়েস্টার সুতা চীন থেকে আমদানি করে। কোম্পানিটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০০ কোটি রুপি আয়ের আশা করছে এবং সম্প্রতি তারা এ৯১ পার্টনার্স থেকে ১৭৫ কোটি রুপি তহবিল পেয়েছে।
আমদানি করাও সহজ নয়। ভারত সরকার নির্দিষ্ট পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার ক্ষেত্রে কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার (কিউসিও) আরোপ করেছে, যার ফলে আমদানির জন্য ভারতীয় মান সংস্থার (বিআইএস) শংসাপত্র প্রয়োজন হয়। এর ফলে চীন থেকে আমদানি সীমিত হচ্ছে।
আগরওয়াল বলেন, চীনা কোম্পানিগুলো বিএআইএস সার্টিফিকেশন নিবন্ধন করতে পারে না, ফলে চীন থেকে আমদানি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।
টেকনোস্পোর্টসওয়ার চীনা ‘ফুললি ড্রন ইয়র্ন’ দিয়ে পোশাক তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরিবর্তে তারা ‘ড্রন টেক্সচারাইজড ইয়র্ন’ নামে আরেকটি ভিন্ন ধরনের সুতা ব্যবহার করছে। এই সুতার ওপরও কিউসি প্রযোজ্য হলে কোম্পানিটির কপাল পুড়বে।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারত এমএমএফ পোশাকের বাজারে জায়গা করে নিতে চাইলে কাঁচামাল আমদানির ব্যাপারে খোলামেলা নীতি প্রণয়ন করতে হবে। গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে চীনকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আমাদের তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে হবে, আগে তাঁদের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে এবং এরপর পেছনে ফেলতে হবে। আমরা কেন নিজেদের সবচেয়ে কার্যকরী সাপ্লাই চেইন থেকে আলাদা রাখব?’
ঝুনঝুনওয়ালা আরও প্রশ্ন করেন, ‘কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিলে ভারতীয় এমএমএফ টেক্সটাইল শিল্প উন্নত হবে, বাজারে পৌঁছাবে ও রপ্তানি বাড়বে। একবার এটি ঘটলে দেশীয় কাঁচামালের মান উন্নত হবে। তখন আমদানি কমে যাবে। ভারত সরকার মোবাইল ফোন তৈরির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। বেশির ভাগ পলিয়েস্টার উপাদান চীন থেকে আসে। সেখানে টেক্সটাইল খাতকে কেন আলাদা ভাবতে হবে?’
‘মেইক-ইন-চায়না’ পলিসি
একটি বড় সমস্যা হলো, পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার মতো যেসব কাঁচামালের জন্য মান নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা রয়েছে, সেই মানগুলো ফেব্রিকসের মতো ডাউনস্ট্রিম পণ্যের বেলায় প্রযোজ্য নয়। প্রতিদিন চীন থেকে ৮ লক্ষ কেজি এমএমএফ ফেব্রিক আসে। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এগুলো কেজিপ্রতি ১ ডলারে আমদানি হতো, যা ভারতীয় সুতার খরচের থেকেও কম।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর মার্চে পাঁচ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন মূল্য ৩ দশমিক ৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি ছয় মাসের জন্য। এরপর আমদানিকারকরা অন্য ক্যাটাগরির অধীনে আমদানি করতে শুরু করেন। এমএমএফ ফেব্রিকসের ৫০টি ক্যাটাগরি রয়েছে। সরকার এখন ১৩ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে সর্বনিম্ন মূল্য আরোপ করেছে এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ভারত বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আগরওয়াল বলেন, ‘এখানে সমস্যা হলো বাংলাদেশ চীন থেকে এমএমএফ ফেব্রিক বিনা শুল্কে আমদানি করে, সেগুলো দিয়ে পোশাক তৈরি করে আবার বিনা শুল্কে ভারতে রপ্তানি করে। বাস্তবে আমরা বিনা শুল্কে চীনা ফেব্রিক আমদানি করতে দিচ্ছি।’
ভারতের এমএমএফ শিল্প শক্তিশালী করতে এই নীতিটি সংশোধন করা প্রয়োজন। আগরওয়াল আরও বলেন, ‘আপনি কাঁচামালের আমদানিকে সীমাবদ্ধ করতে পারেন না এবং ডাউন স্ট্রিম পণ্যের অবাধ প্রবাহকে অনুমতি দিতে পারেন না। এটা হচ্ছে ‘মেক-ইন-চায়না’ নীতি।’

মিসিং লিংক
গুণগত মানের সমস্যা সত্ত্বেও ভারত এমএমএফ সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম। ভারত যথেষ্ট পরিমাণে নিটিং ও উইভিং সক্ষমতা অর্জন করছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রক্রিয়াজাতকরণ অবকাঠামোর অভাব, বিশেষত ডাইং (রঙ করা)। কঠোর দূষণ নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে কম দামের কারণে দেশীয় শিল্প যথেষ্ট সুবিধা করতে পারছে না। আরও কিছু কারণও রয়েছে।
মেনাকা মিলসের নারায়ণ বলেন, এমএমএফ ডাইং সুতি ডাইংয়ের চেয়ে আলাদা। ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়া ভিন্ন। এতে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াও প্রয়োজন। ডাইং প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ করতে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় লাগে।
শিল্পটি এগিয়ে নিতে সরকার এ ক্ষেত্রে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (শিল্প কারখানার দূষিত পানি পরিশোধনাগার) স্থাপন করতে পারে। আগরওয়াল বলেন, এগুলো পিএম-এমআইটিআরএ প্রকল্পের আওতায় করা যেতে পারে। কেননা প্রকল্পটি টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিশ্বমানের অবকাঠামো তৈরির জন্য গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি তাইওয়ান সফরের সময় নারায়ণ হতবাক হন যে, সেখানে শিল্পটি প্রতিকেজি ফেব্রিক ডাইং করতে ৭০ লিটার পানি ব্যবহার করে। মেনাকা মিলসে ছয় বছর ধরে কাজ করার পর তিনি পানি ব্যবহারের পরিমাণ মাত্র ২৬ লিটারে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি প্রমাণ করে যে, আমরা এমএমএফের বাজারে পৃথিবীর সেরা হতে পারি। শুধু আমাদের সুষম প্রতিযোগিতার মাঠ দিন।’
উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা
ভারত সরকার খাতটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে কাজ করছে। সম্প্রতি তারা এমএমএফ টেক্সটাইল এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এমএমএফ ফেব্রিক, এমএমএফ পোশাক এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জন্য ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি রুপির প্রোডাকশন-লিংকড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৪টি আবেদন স্কিমটির আওতায় অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট বিনিয়োগ ১৯ হাজার ৭৯৮ কোটি।
সরকার একটি জাতীয় টেকনিক্যাল টেক্সটাইল মিশনও ঘোষণা করেছে এবং এখন পর্যন্ত ১৬৮টি গবেষণা প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।
এমএমএফ এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল শিল্পকে এগিয়ে নিতে ভারত এসব পদক্ষেপ অনেক দেরিতে নিয়েছে। সামনে পথ এখনো বন্ধুর। ভারতের টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তাদের মানসিকতা এখনো তুলাকে ঘিরে। যারা সাহস করে এমএমএফ শুরু করেছে তাঁরা নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সঠিক ইকোসিস্টেমের অভাব, কাঁচামাল সরবরাহে নিয়ন্ত্রণমূলক প্রতিবন্ধকতা ও চড়া আমদানি মূল্য। ভারতে পলিয়েস্টারের চাহিদা এখনো ধীরে বাড়ছে ও বৈশ্বিক ক্রেতারা এখনো ভারতের এমএমএফ পণ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। শিল্পটি আশা করছে, অন্তত তাদের ক্ষতিকর আমদানি নীতিগুলো সংশোধন করা হোক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘মিন্ট’ থেকে ভাষান্তর করেছেন আবদুল বাছেদ

২০২১ সালের জুন মাস। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছে কোম্পানিটির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার টি-শার্টের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। তিনি সরবরাহ বাড়ালেন, সেগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেল। এরপর তিনি বুঝতে পারলেন, এই টি-শার্টগুলো বিশেষ একধরনের ক্রেতার কাছেই বেশি চাহিদাসম্পন্ন— আর তাঁরা হলেন মৎস্যজীবী।
মহামারির সময় তুলার পোশাকের দাম বেড়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা পলিয়েস্টারের দিকে ঝোঁকেন। পলিয়েস্টার শুধু সস্তাই নয়, দ্রুত শুকিয়ে যায়। টেকনো স্পোর্টসওয়্যারের টি-শার্টগুলো অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দেয় এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল হওয়ায় সমুদ্রে কয়েক দিন থাকলেও দুর্গন্ধ ছড়ায় না। ফলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই টি-শার্টগুলো।
অ্যাক্টিভউয়্যার বা খেলাধুলার পোশাক তৈরিতে ভারতের বৃহত্তম ঘরোয়া ব্র্যান্ডের পরিচালক ঝুঞ্জুনওয়ালা দাবি করেন, ‘আজকের দিনে কন্যাকুমারী থেকে চেন্নাই পর্যন্ত তিনজন মৎস্যজীবীর মধ্যে একজন আমাদের ব্র্যান্ডের পোশাক ব্যবহার করে।’
বিশ্বজুড়ে পলিয়েস্টার টি-শার্ট, ভিসকোস বা অন্যান্য সিনথেটিক ফাইবারের মিশ্রণে তৈরি পোশাকগুলো ‘ম্যান-মেড ফাইবার’ বা এমএমএফ নামে পরিচিত। এসব পোশাক ভারতে চল পেতে সময় লেগেছে। ভারত এখনো তুলার বাজারের ওপর নির্ভরশীল। দেশটিতে তুলার পোশাকের চাহিদা এখনো ৬০ শতাংশের বেশি। তবে বৈশ্বিক চিত্র ভিন্ন।
আন্তর্জাতিক তুলা উপদেষ্টা কমিটির (আইসিএসি) মতে, ১৯৬০ সালে বিশ্বের মোট টেক্সটাইল ফাইবারের চাহিদায় তুলার পরিমাণ ছিল ৬৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটি মাত্র ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বে এখন এমএমএফ ফাইবারের চাহিদার পরিমাণ এখন ৭৪ শতাংশ।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, বিশ্বের ক্রেতারা ফাংশনাল পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। তুলা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। সেখানে এমএমএফ ক্রেতাদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। তাঁর মতে, তুলার তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমশ কমতে থাকবে।
ফাংশনাল পোশাক বলতে বিশেষ ব্যবহারের জন্য তৈরি পোশাক বোঝানো হয়, যেমন জিম বা অফিসে পরার পোশাক।

এদিকে ভারতের রপ্তানি বাজারে তুলাভিত্তিক পোশাকের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মোট রপ্তানির মধ্যে এমএমএফ টেক্সটাইলের পোশাক মাত্র ১৪ শতাংশ। ফলে চীন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামের কাছে ভারত দ্রুত-বর্ধনশীল এমএমএফ বাজার হারাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত এক সময় বিশ্ব টেক্সটাইল বাজারে প্রভাবশালী অবস্থানে থাকলেও এখন তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাহলে, ভারত কীভাবে আবার প্রতিযোগিতায় ফিরে আসতে পারে? প্রথমে বোঝা যাক, ভারত কেন ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ছে।
উদ্ভাবন বনাম দক্ষতা
গোপীনাথ বালার কেমিস্ট্রির প্রতি মুগ্ধতা ছোটবেলা থেকেই। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর নাসার জন্য ন্যানো ম্যাটেরিয়াল ও মহাকাশ প্রকল্পে তিনটি কাজে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে একটি ছিল মঙ্গল গ্রহের প্রকল্প। ২০০৭ সালে ভারত ফিরে এসে কোয়েম্বাটোরের কাছে উদুমালপেট এলাকায় পরিবারের মালিকানাধীন শ্রী ভেঙ্কটলক্ষ্মী স্পিনার্স প্রাইভেট লিমিটেডে মিলে কাজ শুরু করেন। কোম্পানিটি তুলার সুতা উৎপাদন করত। তবে তুলার সুতা উৎপাদন লাভজনক না হওয়ায় ২০১৬ সালে মিলটি বন্ধ করে বালা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল খাতে প্রবেশ করেন। এ ধরনের টেক্সটাইল প্রতিরক্ষা, অটোমোবাইল, বিমান ও মহাকাশযানে ব্যবহার করা হয়।
বালা দুটি পণ্য তৈরি করেছেন—একটি হলো বায়োডিগ্রেডেবল ফেব্রিক, যা বিজ্ঞাপনী বোর্ডে ব্যবহৃত ফ্লেক্স কাপড়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আরেকটি হলো আউটডোর ছাউনি ও ত্রাণ কাঠামো তৈরির জন্য কাপড়, যা ধাতু বা পাতের পরিবর্তে ছাদের জন্য ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ভবিষ্যতে বালা গাড়ির জন্য এয়ারব্যাগ তৈরি করতে চান। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন তাঁর প্রথম দুটি পণ্য থেকে পর্যাপ্ত আয় আসবে।
বালা বলেন, ‘এই দুটি পণ্য তৈরি করতে আমার তিন বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। তুলা টেক্সটাইলের তুলনায় ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) কাপড় বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কারণ এটাতে হাতে-কলমে কাজ করতে হয়।’
কাঙ্ক্ষিত গুণমান অর্জন করতে পণ্যের বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করতে হয়, তার জন্য বড় অঙ্কের প্রাথমিক বিনিয়োগও প্রয়োজন। তিনি আশা করেন, এয়ারব্যাগ প্রকল্পটি বাজারে আসতে আরও চার বছর লাগবে।
বালা আরও বলেন, এমএমএফ ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি সুতির চেয়ে ভিন্ন। উন্নত টেক্সটাইল ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এখানে উদ্ভাবনী হতে হয়। অন্যদিকে প্রচলিত তুলার পোশাক তৈরির প্রক্রিয়া টেক্সটাইল উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা।
এ বিষয়ে মেনকা মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও বিশ্বের বৃহত্তম স্পোর্টস পণ্যসামগ্রীর খুচরা বিক্রেতা ডেকাথলনের সরবরাহকারী আর.এম. লক্ষ্মণ নারায়ণ বলেন, উদাহরণ হিসেবে কাঁচামালের বিষয়টি ধরা যাক। তুলার বিপরীতে পলিয়েস্টার সুতা তৈরির ক্ষেত্রে এর গঠন জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সরাসরি পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে। পলিয়েস্টারের শত শত প্রকার রয়েছে এবং প্রতিটি প্রকারের আরও বিভিন্ন উপভাগ আছে। সঠিক ধরনের সুতা বাছাই করতে প্রায় ২০টি বৈশিষ্ট্যের জন্য এই সুতাগুলোর পরীক্ষা করতে হয়, যেমন সংকোচন, প্রসারণ যোগ্যতা, সংকোচন ক্ষমতা বা কার্ল স্থিতিশীলতা।

তাই বেশির ভাগ তুলার কাপড়ের উদ্যোক্তা এমএমএফ বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজারে প্রবেশ করতে চান না। বালার মতে, টেক্সটাইল শিল্পের ১৫ শতাংশ উদ্যোক্তা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জগতে প্রবেশ করতে পারেন। আর প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্যোক্তা এমএমএফ টেক্সটাইলকে উন্নত ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছেন।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল পণ্য তৈরি করতে তুলনামূলকভাবে আরও বেশি কারিগরি দক্ষতা, উচ্চতর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের প্রয়োজন।
কাঁচামালের সংকট
সমস্যার শেষ নেই। ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পলিয়েস্টার ও ভিসকোজ উৎপাদনকারী হলেও মানসম্পন্ন কাঁচামালের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার। ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারতে যে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতা পাওয়া যায়— তা গুণগত দিক থেকে চীন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের চেয়ে নিম্নমানের।’
ভারতীয় কাঁচামাল সরবরাহকারীরা বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় নতুনত্ব আনেনি। এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। এসভিজি ফ্যাশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজকুমার আগরওয়াল বলেন, ভারতের পলিয়েস্টার শিল্প অধিকাংশ সময় অভ্যন্তরীণ বাজারে মনোযোগী ও এর দাম খুব কম। পলিয়েস্টার সুতা প্রস্তুতকারকদের জন্য নতুনত্বে বিনিয়োগের কোনো প্রণোদনা নেই। তবে এমএমএফ টেক্সটাইল রপ্তানি একবার বাড়তে শুরু করলে কাঁচামালের গুণগত মান উন্নত হবে।
ঝুঞ্জুনওয়ালার টেকনোস্পোর্টসওয়ার প্রায় সব পলিয়েস্টার সুতা চীন থেকে আমদানি করে। কোম্পানিটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০০ কোটি রুপি আয়ের আশা করছে এবং সম্প্রতি তারা এ৯১ পার্টনার্স থেকে ১৭৫ কোটি রুপি তহবিল পেয়েছে।
আমদানি করাও সহজ নয়। ভারত সরকার নির্দিষ্ট পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার ক্ষেত্রে কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার (কিউসিও) আরোপ করেছে, যার ফলে আমদানির জন্য ভারতীয় মান সংস্থার (বিআইএস) শংসাপত্র প্রয়োজন হয়। এর ফলে চীন থেকে আমদানি সীমিত হচ্ছে।
আগরওয়াল বলেন, চীনা কোম্পানিগুলো বিএআইএস সার্টিফিকেশন নিবন্ধন করতে পারে না, ফলে চীন থেকে আমদানি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।
টেকনোস্পোর্টসওয়ার চীনা ‘ফুললি ড্রন ইয়র্ন’ দিয়ে পোশাক তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরিবর্তে তারা ‘ড্রন টেক্সচারাইজড ইয়র্ন’ নামে আরেকটি ভিন্ন ধরনের সুতা ব্যবহার করছে। এই সুতার ওপরও কিউসি প্রযোজ্য হলে কোম্পানিটির কপাল পুড়বে।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারত এমএমএফ পোশাকের বাজারে জায়গা করে নিতে চাইলে কাঁচামাল আমদানির ব্যাপারে খোলামেলা নীতি প্রণয়ন করতে হবে। গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে চীনকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আমাদের তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে হবে, আগে তাঁদের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে এবং এরপর পেছনে ফেলতে হবে। আমরা কেন নিজেদের সবচেয়ে কার্যকরী সাপ্লাই চেইন থেকে আলাদা রাখব?’
ঝুনঝুনওয়ালা আরও প্রশ্ন করেন, ‘কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিলে ভারতীয় এমএমএফ টেক্সটাইল শিল্প উন্নত হবে, বাজারে পৌঁছাবে ও রপ্তানি বাড়বে। একবার এটি ঘটলে দেশীয় কাঁচামালের মান উন্নত হবে। তখন আমদানি কমে যাবে। ভারত সরকার মোবাইল ফোন তৈরির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। বেশির ভাগ পলিয়েস্টার উপাদান চীন থেকে আসে। সেখানে টেক্সটাইল খাতকে কেন আলাদা ভাবতে হবে?’
‘মেইক-ইন-চায়না’ পলিসি
একটি বড় সমস্যা হলো, পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার মতো যেসব কাঁচামালের জন্য মান নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা রয়েছে, সেই মানগুলো ফেব্রিকসের মতো ডাউনস্ট্রিম পণ্যের বেলায় প্রযোজ্য নয়। প্রতিদিন চীন থেকে ৮ লক্ষ কেজি এমএমএফ ফেব্রিক আসে। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এগুলো কেজিপ্রতি ১ ডলারে আমদানি হতো, যা ভারতীয় সুতার খরচের থেকেও কম।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর মার্চে পাঁচ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন মূল্য ৩ দশমিক ৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি ছয় মাসের জন্য। এরপর আমদানিকারকরা অন্য ক্যাটাগরির অধীনে আমদানি করতে শুরু করেন। এমএমএফ ফেব্রিকসের ৫০টি ক্যাটাগরি রয়েছে। সরকার এখন ১৩ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে সর্বনিম্ন মূল্য আরোপ করেছে এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ভারত বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আগরওয়াল বলেন, ‘এখানে সমস্যা হলো বাংলাদেশ চীন থেকে এমএমএফ ফেব্রিক বিনা শুল্কে আমদানি করে, সেগুলো দিয়ে পোশাক তৈরি করে আবার বিনা শুল্কে ভারতে রপ্তানি করে। বাস্তবে আমরা বিনা শুল্কে চীনা ফেব্রিক আমদানি করতে দিচ্ছি।’
ভারতের এমএমএফ শিল্প শক্তিশালী করতে এই নীতিটি সংশোধন করা প্রয়োজন। আগরওয়াল আরও বলেন, ‘আপনি কাঁচামালের আমদানিকে সীমাবদ্ধ করতে পারেন না এবং ডাউন স্ট্রিম পণ্যের অবাধ প্রবাহকে অনুমতি দিতে পারেন না। এটা হচ্ছে ‘মেক-ইন-চায়না’ নীতি।’

মিসিং লিংক
গুণগত মানের সমস্যা সত্ত্বেও ভারত এমএমএফ সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম। ভারত যথেষ্ট পরিমাণে নিটিং ও উইভিং সক্ষমতা অর্জন করছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রক্রিয়াজাতকরণ অবকাঠামোর অভাব, বিশেষত ডাইং (রঙ করা)। কঠোর দূষণ নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে কম দামের কারণে দেশীয় শিল্প যথেষ্ট সুবিধা করতে পারছে না। আরও কিছু কারণও রয়েছে।
মেনাকা মিলসের নারায়ণ বলেন, এমএমএফ ডাইং সুতি ডাইংয়ের চেয়ে আলাদা। ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়া ভিন্ন। এতে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াও প্রয়োজন। ডাইং প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ করতে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় লাগে।
শিল্পটি এগিয়ে নিতে সরকার এ ক্ষেত্রে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (শিল্প কারখানার দূষিত পানি পরিশোধনাগার) স্থাপন করতে পারে। আগরওয়াল বলেন, এগুলো পিএম-এমআইটিআরএ প্রকল্পের আওতায় করা যেতে পারে। কেননা প্রকল্পটি টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিশ্বমানের অবকাঠামো তৈরির জন্য গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি তাইওয়ান সফরের সময় নারায়ণ হতবাক হন যে, সেখানে শিল্পটি প্রতিকেজি ফেব্রিক ডাইং করতে ৭০ লিটার পানি ব্যবহার করে। মেনাকা মিলসে ছয় বছর ধরে কাজ করার পর তিনি পানি ব্যবহারের পরিমাণ মাত্র ২৬ লিটারে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি প্রমাণ করে যে, আমরা এমএমএফের বাজারে পৃথিবীর সেরা হতে পারি। শুধু আমাদের সুষম প্রতিযোগিতার মাঠ দিন।’
উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা
ভারত সরকার খাতটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে কাজ করছে। সম্প্রতি তারা এমএমএফ টেক্সটাইল এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এমএমএফ ফেব্রিক, এমএমএফ পোশাক এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জন্য ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি রুপির প্রোডাকশন-লিংকড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৪টি আবেদন স্কিমটির আওতায় অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট বিনিয়োগ ১৯ হাজার ৭৯৮ কোটি।
সরকার একটি জাতীয় টেকনিক্যাল টেক্সটাইল মিশনও ঘোষণা করেছে এবং এখন পর্যন্ত ১৬৮টি গবেষণা প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।
এমএমএফ এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল শিল্পকে এগিয়ে নিতে ভারত এসব পদক্ষেপ অনেক দেরিতে নিয়েছে। সামনে পথ এখনো বন্ধুর। ভারতের টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তাদের মানসিকতা এখনো তুলাকে ঘিরে। যারা সাহস করে এমএমএফ শুরু করেছে তাঁরা নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সঠিক ইকোসিস্টেমের অভাব, কাঁচামাল সরবরাহে নিয়ন্ত্রণমূলক প্রতিবন্ধকতা ও চড়া আমদানি মূল্য। ভারতে পলিয়েস্টারের চাহিদা এখনো ধীরে বাড়ছে ও বৈশ্বিক ক্রেতারা এখনো ভারতের এমএমএফ পণ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। শিল্পটি আশা করছে, অন্তত তাদের ক্ষতিকর আমদানি নীতিগুলো সংশোধন করা হোক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘মিন্ট’ থেকে ভাষান্তর করেছেন আবদুল বাছেদ

২০২১ সালের জুন মাস। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছে কোম্পানিটির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার টি-শার্টের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। তিনি সরবরাহ বাড়ালেন, সেগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেল। এরপর তিনি বুঝতে পারলেন, এই টি-শার্টগুলো বিশেষ একধরনের ক্রেতার কাছেই বেশি চাহিদাসম্পন্ন— আর তাঁরা হলেন মৎস্যজীবী।
মহামারির সময় তুলার পোশাকের দাম বেড়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা পলিয়েস্টারের দিকে ঝোঁকেন। পলিয়েস্টার শুধু সস্তাই নয়, দ্রুত শুকিয়ে যায়। টেকনো স্পোর্টসওয়্যারের টি-শার্টগুলো অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দেয় এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল হওয়ায় সমুদ্রে কয়েক দিন থাকলেও দুর্গন্ধ ছড়ায় না। ফলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই টি-শার্টগুলো।
অ্যাক্টিভউয়্যার বা খেলাধুলার পোশাক তৈরিতে ভারতের বৃহত্তম ঘরোয়া ব্র্যান্ডের পরিচালক ঝুঞ্জুনওয়ালা দাবি করেন, ‘আজকের দিনে কন্যাকুমারী থেকে চেন্নাই পর্যন্ত তিনজন মৎস্যজীবীর মধ্যে একজন আমাদের ব্র্যান্ডের পোশাক ব্যবহার করে।’
বিশ্বজুড়ে পলিয়েস্টার টি-শার্ট, ভিসকোস বা অন্যান্য সিনথেটিক ফাইবারের মিশ্রণে তৈরি পোশাকগুলো ‘ম্যান-মেড ফাইবার’ বা এমএমএফ নামে পরিচিত। এসব পোশাক ভারতে চল পেতে সময় লেগেছে। ভারত এখনো তুলার বাজারের ওপর নির্ভরশীল। দেশটিতে তুলার পোশাকের চাহিদা এখনো ৬০ শতাংশের বেশি। তবে বৈশ্বিক চিত্র ভিন্ন।
আন্তর্জাতিক তুলা উপদেষ্টা কমিটির (আইসিএসি) মতে, ১৯৬০ সালে বিশ্বের মোট টেক্সটাইল ফাইবারের চাহিদায় তুলার পরিমাণ ছিল ৬৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটি মাত্র ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বে এখন এমএমএফ ফাইবারের চাহিদার পরিমাণ এখন ৭৪ শতাংশ।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, বিশ্বের ক্রেতারা ফাংশনাল পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। তুলা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। সেখানে এমএমএফ ক্রেতাদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। তাঁর মতে, তুলার তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমশ কমতে থাকবে।
ফাংশনাল পোশাক বলতে বিশেষ ব্যবহারের জন্য তৈরি পোশাক বোঝানো হয়, যেমন জিম বা অফিসে পরার পোশাক।

এদিকে ভারতের রপ্তানি বাজারে তুলাভিত্তিক পোশাকের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মোট রপ্তানির মধ্যে এমএমএফ টেক্সটাইলের পোশাক মাত্র ১৪ শতাংশ। ফলে চীন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামের কাছে ভারত দ্রুত-বর্ধনশীল এমএমএফ বাজার হারাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত এক সময় বিশ্ব টেক্সটাইল বাজারে প্রভাবশালী অবস্থানে থাকলেও এখন তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাহলে, ভারত কীভাবে আবার প্রতিযোগিতায় ফিরে আসতে পারে? প্রথমে বোঝা যাক, ভারত কেন ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ছে।
উদ্ভাবন বনাম দক্ষতা
গোপীনাথ বালার কেমিস্ট্রির প্রতি মুগ্ধতা ছোটবেলা থেকেই। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর নাসার জন্য ন্যানো ম্যাটেরিয়াল ও মহাকাশ প্রকল্পে তিনটি কাজে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে একটি ছিল মঙ্গল গ্রহের প্রকল্প। ২০০৭ সালে ভারত ফিরে এসে কোয়েম্বাটোরের কাছে উদুমালপেট এলাকায় পরিবারের মালিকানাধীন শ্রী ভেঙ্কটলক্ষ্মী স্পিনার্স প্রাইভেট লিমিটেডে মিলে কাজ শুরু করেন। কোম্পানিটি তুলার সুতা উৎপাদন করত। তবে তুলার সুতা উৎপাদন লাভজনক না হওয়ায় ২০১৬ সালে মিলটি বন্ধ করে বালা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল খাতে প্রবেশ করেন। এ ধরনের টেক্সটাইল প্রতিরক্ষা, অটোমোবাইল, বিমান ও মহাকাশযানে ব্যবহার করা হয়।
বালা দুটি পণ্য তৈরি করেছেন—একটি হলো বায়োডিগ্রেডেবল ফেব্রিক, যা বিজ্ঞাপনী বোর্ডে ব্যবহৃত ফ্লেক্স কাপড়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আরেকটি হলো আউটডোর ছাউনি ও ত্রাণ কাঠামো তৈরির জন্য কাপড়, যা ধাতু বা পাতের পরিবর্তে ছাদের জন্য ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ভবিষ্যতে বালা গাড়ির জন্য এয়ারব্যাগ তৈরি করতে চান। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন তাঁর প্রথম দুটি পণ্য থেকে পর্যাপ্ত আয় আসবে।
বালা বলেন, ‘এই দুটি পণ্য তৈরি করতে আমার তিন বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। তুলা টেক্সটাইলের তুলনায় ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) কাপড় বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কারণ এটাতে হাতে-কলমে কাজ করতে হয়।’
কাঙ্ক্ষিত গুণমান অর্জন করতে পণ্যের বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করতে হয়, তার জন্য বড় অঙ্কের প্রাথমিক বিনিয়োগও প্রয়োজন। তিনি আশা করেন, এয়ারব্যাগ প্রকল্পটি বাজারে আসতে আরও চার বছর লাগবে।
বালা আরও বলেন, এমএমএফ ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি সুতির চেয়ে ভিন্ন। উন্নত টেক্সটাইল ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এখানে উদ্ভাবনী হতে হয়। অন্যদিকে প্রচলিত তুলার পোশাক তৈরির প্রক্রিয়া টেক্সটাইল উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা।
এ বিষয়ে মেনকা মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও বিশ্বের বৃহত্তম স্পোর্টস পণ্যসামগ্রীর খুচরা বিক্রেতা ডেকাথলনের সরবরাহকারী আর.এম. লক্ষ্মণ নারায়ণ বলেন, উদাহরণ হিসেবে কাঁচামালের বিষয়টি ধরা যাক। তুলার বিপরীতে পলিয়েস্টার সুতা তৈরির ক্ষেত্রে এর গঠন জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সরাসরি পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে। পলিয়েস্টারের শত শত প্রকার রয়েছে এবং প্রতিটি প্রকারের আরও বিভিন্ন উপভাগ আছে। সঠিক ধরনের সুতা বাছাই করতে প্রায় ২০টি বৈশিষ্ট্যের জন্য এই সুতাগুলোর পরীক্ষা করতে হয়, যেমন সংকোচন, প্রসারণ যোগ্যতা, সংকোচন ক্ষমতা বা কার্ল স্থিতিশীলতা।

তাই বেশির ভাগ তুলার কাপড়ের উদ্যোক্তা এমএমএফ বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজারে প্রবেশ করতে চান না। বালার মতে, টেক্সটাইল শিল্পের ১৫ শতাংশ উদ্যোক্তা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জগতে প্রবেশ করতে পারেন। আর প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্যোক্তা এমএমএফ টেক্সটাইলকে উন্নত ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছেন।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল পণ্য তৈরি করতে তুলনামূলকভাবে আরও বেশি কারিগরি দক্ষতা, উচ্চতর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের প্রয়োজন।
কাঁচামালের সংকট
সমস্যার শেষ নেই। ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পলিয়েস্টার ও ভিসকোজ উৎপাদনকারী হলেও মানসম্পন্ন কাঁচামালের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার। ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারতে যে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতা পাওয়া যায়— তা গুণগত দিক থেকে চীন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের চেয়ে নিম্নমানের।’
ভারতীয় কাঁচামাল সরবরাহকারীরা বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় নতুনত্ব আনেনি। এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। এসভিজি ফ্যাশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজকুমার আগরওয়াল বলেন, ভারতের পলিয়েস্টার শিল্প অধিকাংশ সময় অভ্যন্তরীণ বাজারে মনোযোগী ও এর দাম খুব কম। পলিয়েস্টার সুতা প্রস্তুতকারকদের জন্য নতুনত্বে বিনিয়োগের কোনো প্রণোদনা নেই। তবে এমএমএফ টেক্সটাইল রপ্তানি একবার বাড়তে শুরু করলে কাঁচামালের গুণগত মান উন্নত হবে।
ঝুঞ্জুনওয়ালার টেকনোস্পোর্টসওয়ার প্রায় সব পলিয়েস্টার সুতা চীন থেকে আমদানি করে। কোম্পানিটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০০ কোটি রুপি আয়ের আশা করছে এবং সম্প্রতি তারা এ৯১ পার্টনার্স থেকে ১৭৫ কোটি রুপি তহবিল পেয়েছে।
আমদানি করাও সহজ নয়। ভারত সরকার নির্দিষ্ট পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার ক্ষেত্রে কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার (কিউসিও) আরোপ করেছে, যার ফলে আমদানির জন্য ভারতীয় মান সংস্থার (বিআইএস) শংসাপত্র প্রয়োজন হয়। এর ফলে চীন থেকে আমদানি সীমিত হচ্ছে।
আগরওয়াল বলেন, চীনা কোম্পানিগুলো বিএআইএস সার্টিফিকেশন নিবন্ধন করতে পারে না, ফলে চীন থেকে আমদানি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।
টেকনোস্পোর্টসওয়ার চীনা ‘ফুললি ড্রন ইয়র্ন’ দিয়ে পোশাক তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরিবর্তে তারা ‘ড্রন টেক্সচারাইজড ইয়র্ন’ নামে আরেকটি ভিন্ন ধরনের সুতা ব্যবহার করছে। এই সুতার ওপরও কিউসি প্রযোজ্য হলে কোম্পানিটির কপাল পুড়বে।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারত এমএমএফ পোশাকের বাজারে জায়গা করে নিতে চাইলে কাঁচামাল আমদানির ব্যাপারে খোলামেলা নীতি প্রণয়ন করতে হবে। গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে চীনকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আমাদের তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে হবে, আগে তাঁদের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে এবং এরপর পেছনে ফেলতে হবে। আমরা কেন নিজেদের সবচেয়ে কার্যকরী সাপ্লাই চেইন থেকে আলাদা রাখব?’
ঝুনঝুনওয়ালা আরও প্রশ্ন করেন, ‘কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিলে ভারতীয় এমএমএফ টেক্সটাইল শিল্প উন্নত হবে, বাজারে পৌঁছাবে ও রপ্তানি বাড়বে। একবার এটি ঘটলে দেশীয় কাঁচামালের মান উন্নত হবে। তখন আমদানি কমে যাবে। ভারত সরকার মোবাইল ফোন তৈরির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। বেশির ভাগ পলিয়েস্টার উপাদান চীন থেকে আসে। সেখানে টেক্সটাইল খাতকে কেন আলাদা ভাবতে হবে?’
‘মেইক-ইন-চায়না’ পলিসি
একটি বড় সমস্যা হলো, পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার মতো যেসব কাঁচামালের জন্য মান নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা রয়েছে, সেই মানগুলো ফেব্রিকসের মতো ডাউনস্ট্রিম পণ্যের বেলায় প্রযোজ্য নয়। প্রতিদিন চীন থেকে ৮ লক্ষ কেজি এমএমএফ ফেব্রিক আসে। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এগুলো কেজিপ্রতি ১ ডলারে আমদানি হতো, যা ভারতীয় সুতার খরচের থেকেও কম।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর মার্চে পাঁচ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন মূল্য ৩ দশমিক ৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি ছয় মাসের জন্য। এরপর আমদানিকারকরা অন্য ক্যাটাগরির অধীনে আমদানি করতে শুরু করেন। এমএমএফ ফেব্রিকসের ৫০টি ক্যাটাগরি রয়েছে। সরকার এখন ১৩ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে সর্বনিম্ন মূল্য আরোপ করেছে এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ভারত বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আগরওয়াল বলেন, ‘এখানে সমস্যা হলো বাংলাদেশ চীন থেকে এমএমএফ ফেব্রিক বিনা শুল্কে আমদানি করে, সেগুলো দিয়ে পোশাক তৈরি করে আবার বিনা শুল্কে ভারতে রপ্তানি করে। বাস্তবে আমরা বিনা শুল্কে চীনা ফেব্রিক আমদানি করতে দিচ্ছি।’
ভারতের এমএমএফ শিল্প শক্তিশালী করতে এই নীতিটি সংশোধন করা প্রয়োজন। আগরওয়াল আরও বলেন, ‘আপনি কাঁচামালের আমদানিকে সীমাবদ্ধ করতে পারেন না এবং ডাউন স্ট্রিম পণ্যের অবাধ প্রবাহকে অনুমতি দিতে পারেন না। এটা হচ্ছে ‘মেক-ইন-চায়না’ নীতি।’

মিসিং লিংক
গুণগত মানের সমস্যা সত্ত্বেও ভারত এমএমএফ সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম। ভারত যথেষ্ট পরিমাণে নিটিং ও উইভিং সক্ষমতা অর্জন করছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রক্রিয়াজাতকরণ অবকাঠামোর অভাব, বিশেষত ডাইং (রঙ করা)। কঠোর দূষণ নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে কম দামের কারণে দেশীয় শিল্প যথেষ্ট সুবিধা করতে পারছে না। আরও কিছু কারণও রয়েছে।
মেনাকা মিলসের নারায়ণ বলেন, এমএমএফ ডাইং সুতি ডাইংয়ের চেয়ে আলাদা। ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়া ভিন্ন। এতে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াও প্রয়োজন। ডাইং প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ করতে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় লাগে।
শিল্পটি এগিয়ে নিতে সরকার এ ক্ষেত্রে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (শিল্প কারখানার দূষিত পানি পরিশোধনাগার) স্থাপন করতে পারে। আগরওয়াল বলেন, এগুলো পিএম-এমআইটিআরএ প্রকল্পের আওতায় করা যেতে পারে। কেননা প্রকল্পটি টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিশ্বমানের অবকাঠামো তৈরির জন্য গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি তাইওয়ান সফরের সময় নারায়ণ হতবাক হন যে, সেখানে শিল্পটি প্রতিকেজি ফেব্রিক ডাইং করতে ৭০ লিটার পানি ব্যবহার করে। মেনাকা মিলসে ছয় বছর ধরে কাজ করার পর তিনি পানি ব্যবহারের পরিমাণ মাত্র ২৬ লিটারে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি প্রমাণ করে যে, আমরা এমএমএফের বাজারে পৃথিবীর সেরা হতে পারি। শুধু আমাদের সুষম প্রতিযোগিতার মাঠ দিন।’
উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা
ভারত সরকার খাতটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে কাজ করছে। সম্প্রতি তারা এমএমএফ টেক্সটাইল এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এমএমএফ ফেব্রিক, এমএমএফ পোশাক এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জন্য ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি রুপির প্রোডাকশন-লিংকড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৪টি আবেদন স্কিমটির আওতায় অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট বিনিয়োগ ১৯ হাজার ৭৯৮ কোটি।
সরকার একটি জাতীয় টেকনিক্যাল টেক্সটাইল মিশনও ঘোষণা করেছে এবং এখন পর্যন্ত ১৬৮টি গবেষণা প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।
এমএমএফ এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল শিল্পকে এগিয়ে নিতে ভারত এসব পদক্ষেপ অনেক দেরিতে নিয়েছে। সামনে পথ এখনো বন্ধুর। ভারতের টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তাদের মানসিকতা এখনো তুলাকে ঘিরে। যারা সাহস করে এমএমএফ শুরু করেছে তাঁরা নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সঠিক ইকোসিস্টেমের অভাব, কাঁচামাল সরবরাহে নিয়ন্ত্রণমূলক প্রতিবন্ধকতা ও চড়া আমদানি মূল্য। ভারতে পলিয়েস্টারের চাহিদা এখনো ধীরে বাড়ছে ও বৈশ্বিক ক্রেতারা এখনো ভারতের এমএমএফ পণ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। শিল্পটি আশা করছে, অন্তত তাদের ক্ষতিকর আমদানি নীতিগুলো সংশোধন করা হোক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘মিন্ট’ থেকে ভাষান্তর করেছেন আবদুল বাছেদ

২০২১ সালের জুন মাস। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছে কোম্পানিটির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার টি-শার্টের চাহিদা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। তিনি সরবরাহ বাড়ালেন, সেগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেল। এরপর তিনি বুঝতে পারলেন, এই টি-শার্টগুলো বিশেষ একধরনের ক্রেতার কাছেই বেশি চাহিদাসম্পন্ন— আর তাঁরা হলেন মৎস্যজীবী।
মহামারির সময় তুলার পোশাকের দাম বেড়ে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরা পলিয়েস্টারের দিকে ঝোঁকেন। পলিয়েস্টার শুধু সস্তাই নয়, দ্রুত শুকিয়ে যায়। টেকনো স্পোর্টসওয়্যারের টি-শার্টগুলো অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও সুরক্ষা দেয় এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল হওয়ায় সমুদ্রে কয়েক দিন থাকলেও দুর্গন্ধ ছড়ায় না। ফলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই টি-শার্টগুলো।
অ্যাক্টিভউয়্যার বা খেলাধুলার পোশাক তৈরিতে ভারতের বৃহত্তম ঘরোয়া ব্র্যান্ডের পরিচালক ঝুঞ্জুনওয়ালা দাবি করেন, ‘আজকের দিনে কন্যাকুমারী থেকে চেন্নাই পর্যন্ত তিনজন মৎস্যজীবীর মধ্যে একজন আমাদের ব্র্যান্ডের পোশাক ব্যবহার করে।’
বিশ্বজুড়ে পলিয়েস্টার টি-শার্ট, ভিসকোস বা অন্যান্য সিনথেটিক ফাইবারের মিশ্রণে তৈরি পোশাকগুলো ‘ম্যান-মেড ফাইবার’ বা এমএমএফ নামে পরিচিত। এসব পোশাক ভারতে চল পেতে সময় লেগেছে। ভারত এখনো তুলার বাজারের ওপর নির্ভরশীল। দেশটিতে তুলার পোশাকের চাহিদা এখনো ৬০ শতাংশের বেশি। তবে বৈশ্বিক চিত্র ভিন্ন।
আন্তর্জাতিক তুলা উপদেষ্টা কমিটির (আইসিএসি) মতে, ১৯৬০ সালে বিশ্বের মোট টেক্সটাইল ফাইবারের চাহিদায় তুলার পরিমাণ ছিল ৬৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটি মাত্র ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বে এখন এমএমএফ ফাইবারের চাহিদার পরিমাণ এখন ৭৪ শতাংশ।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, বিশ্বের ক্রেতারা ফাংশনাল পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। তুলা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। সেখানে এমএমএফ ক্রেতাদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। তাঁর মতে, তুলার তৈরি পোশাকের চাহিদা ক্রমশ কমতে থাকবে।
ফাংশনাল পোশাক বলতে বিশেষ ব্যবহারের জন্য তৈরি পোশাক বোঝানো হয়, যেমন জিম বা অফিসে পরার পোশাক।

এদিকে ভারতের রপ্তানি বাজারে তুলাভিত্তিক পোশাকের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মোট রপ্তানির মধ্যে এমএমএফ টেক্সটাইলের পোশাক মাত্র ১৪ শতাংশ। ফলে চীন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামের কাছে ভারত দ্রুত-বর্ধনশীল এমএমএফ বাজার হারাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত এক সময় বিশ্ব টেক্সটাইল বাজারে প্রভাবশালী অবস্থানে থাকলেও এখন তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাহলে, ভারত কীভাবে আবার প্রতিযোগিতায় ফিরে আসতে পারে? প্রথমে বোঝা যাক, ভারত কেন ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ছে।
উদ্ভাবন বনাম দক্ষতা
গোপীনাথ বালার কেমিস্ট্রির প্রতি মুগ্ধতা ছোটবেলা থেকেই। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর নাসার জন্য ন্যানো ম্যাটেরিয়াল ও মহাকাশ প্রকল্পে তিনটি কাজে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে একটি ছিল মঙ্গল গ্রহের প্রকল্প। ২০০৭ সালে ভারত ফিরে এসে কোয়েম্বাটোরের কাছে উদুমালপেট এলাকায় পরিবারের মালিকানাধীন শ্রী ভেঙ্কটলক্ষ্মী স্পিনার্স প্রাইভেট লিমিটেডে মিলে কাজ শুরু করেন। কোম্পানিটি তুলার সুতা উৎপাদন করত। তবে তুলার সুতা উৎপাদন লাভজনক না হওয়ায় ২০১৬ সালে মিলটি বন্ধ করে বালা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল খাতে প্রবেশ করেন। এ ধরনের টেক্সটাইল প্রতিরক্ষা, অটোমোবাইল, বিমান ও মহাকাশযানে ব্যবহার করা হয়।
বালা দুটি পণ্য তৈরি করেছেন—একটি হলো বায়োডিগ্রেডেবল ফেব্রিক, যা বিজ্ঞাপনী বোর্ডে ব্যবহৃত ফ্লেক্স কাপড়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আরেকটি হলো আউটডোর ছাউনি ও ত্রাণ কাঠামো তৈরির জন্য কাপড়, যা ধাতু বা পাতের পরিবর্তে ছাদের জন্য ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ভবিষ্যতে বালা গাড়ির জন্য এয়ারব্যাগ তৈরি করতে চান। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন তাঁর প্রথম দুটি পণ্য থেকে পর্যাপ্ত আয় আসবে।
বালা বলেন, ‘এই দুটি পণ্য তৈরি করতে আমার তিন বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। তুলা টেক্সটাইলের তুলনায় ম্যান-মেড ফাইবার (এমএমএফ) কাপড় বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কারণ এটাতে হাতে-কলমে কাজ করতে হয়।’
কাঙ্ক্ষিত গুণমান অর্জন করতে পণ্যের বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করতে হয়, তার জন্য বড় অঙ্কের প্রাথমিক বিনিয়োগও প্রয়োজন। তিনি আশা করেন, এয়ারব্যাগ প্রকল্পটি বাজারে আসতে আরও চার বছর লাগবে।
বালা আরও বলেন, এমএমএফ ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল তৈরি সুতির চেয়ে ভিন্ন। উন্নত টেক্সটাইল ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এখানে উদ্ভাবনী হতে হয়। অন্যদিকে প্রচলিত তুলার পোশাক তৈরির প্রক্রিয়া টেক্সটাইল উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা।
এ বিষয়ে মেনকা মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক ও বিশ্বের বৃহত্তম স্পোর্টস পণ্যসামগ্রীর খুচরা বিক্রেতা ডেকাথলনের সরবরাহকারী আর.এম. লক্ষ্মণ নারায়ণ বলেন, উদাহরণ হিসেবে কাঁচামালের বিষয়টি ধরা যাক। তুলার বিপরীতে পলিয়েস্টার সুতা তৈরির ক্ষেত্রে এর গঠন জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সরাসরি পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলে। পলিয়েস্টারের শত শত প্রকার রয়েছে এবং প্রতিটি প্রকারের আরও বিভিন্ন উপভাগ আছে। সঠিক ধরনের সুতা বাছাই করতে প্রায় ২০টি বৈশিষ্ট্যের জন্য এই সুতাগুলোর পরীক্ষা করতে হয়, যেমন সংকোচন, প্রসারণ যোগ্যতা, সংকোচন ক্ষমতা বা কার্ল স্থিতিশীলতা।

তাই বেশির ভাগ তুলার কাপড়ের উদ্যোক্তা এমএমএফ বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজারে প্রবেশ করতে চান না। বালার মতে, টেক্সটাইল শিল্পের ১৫ শতাংশ উদ্যোক্তা টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জগতে প্রবেশ করতে পারেন। আর প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্যোক্তা এমএমএফ টেক্সটাইলকে উন্নত ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছেন।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল পণ্য তৈরি করতে তুলনামূলকভাবে আরও বেশি কারিগরি দক্ষতা, উচ্চতর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের প্রয়োজন।
কাঁচামালের সংকট
সমস্যার শেষ নেই। ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম পলিয়েস্টার ও ভিসকোজ উৎপাদনকারী হলেও মানসম্পন্ন কাঁচামালের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার। ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারতে যে পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতা পাওয়া যায়— তা গুণগত দিক থেকে চীন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের চেয়ে নিম্নমানের।’
ভারতীয় কাঁচামাল সরবরাহকারীরা বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় নতুনত্ব আনেনি। এর পেছনে একটি কারণ রয়েছে। এসভিজি ফ্যাশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজকুমার আগরওয়াল বলেন, ভারতের পলিয়েস্টার শিল্প অধিকাংশ সময় অভ্যন্তরীণ বাজারে মনোযোগী ও এর দাম খুব কম। পলিয়েস্টার সুতা প্রস্তুতকারকদের জন্য নতুনত্বে বিনিয়োগের কোনো প্রণোদনা নেই। তবে এমএমএফ টেক্সটাইল রপ্তানি একবার বাড়তে শুরু করলে কাঁচামালের গুণগত মান উন্নত হবে।
ঝুঞ্জুনওয়ালার টেকনোস্পোর্টসওয়ার প্রায় সব পলিয়েস্টার সুতা চীন থেকে আমদানি করে। কোম্পানিটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০০ কোটি রুপি আয়ের আশা করছে এবং সম্প্রতি তারা এ৯১ পার্টনার্স থেকে ১৭৫ কোটি রুপি তহবিল পেয়েছে।
আমদানি করাও সহজ নয়। ভারত সরকার নির্দিষ্ট পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার ক্ষেত্রে কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার (কিউসিও) আরোপ করেছে, যার ফলে আমদানির জন্য ভারতীয় মান সংস্থার (বিআইএস) শংসাপত্র প্রয়োজন হয়। এর ফলে চীন থেকে আমদানি সীমিত হচ্ছে।
আগরওয়াল বলেন, চীনা কোম্পানিগুলো বিএআইএস সার্টিফিকেশন নিবন্ধন করতে পারে না, ফলে চীন থেকে আমদানি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।
টেকনোস্পোর্টসওয়ার চীনা ‘ফুললি ড্রন ইয়র্ন’ দিয়ে পোশাক তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরিবর্তে তারা ‘ড্রন টেক্সচারাইজড ইয়র্ন’ নামে আরেকটি ভিন্ন ধরনের সুতা ব্যবহার করছে। এই সুতার ওপরও কিউসি প্রযোজ্য হলে কোম্পানিটির কপাল পুড়বে।
ঝুঞ্জুনওয়ালা বলেন, ‘ভারত এমএমএফ পোশাকের বাজারে জায়গা করে নিতে চাইলে কাঁচামাল আমদানির ব্যাপারে খোলামেলা নীতি প্রণয়ন করতে হবে। গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে চীনকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আমাদের তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে হবে, আগে তাঁদের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে এবং এরপর পেছনে ফেলতে হবে। আমরা কেন নিজেদের সবচেয়ে কার্যকরী সাপ্লাই চেইন থেকে আলাদা রাখব?’
ঝুনঝুনওয়ালা আরও প্রশ্ন করেন, ‘কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দিলে ভারতীয় এমএমএফ টেক্সটাইল শিল্প উন্নত হবে, বাজারে পৌঁছাবে ও রপ্তানি বাড়বে। একবার এটি ঘটলে দেশীয় কাঁচামালের মান উন্নত হবে। তখন আমদানি কমে যাবে। ভারত সরকার মোবাইল ফোন তৈরির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। বেশির ভাগ পলিয়েস্টার উপাদান চীন থেকে আসে। সেখানে টেক্সটাইল খাতকে কেন আলাদা ভাবতে হবে?’
‘মেইক-ইন-চায়না’ পলিসি
একটি বড় সমস্যা হলো, পলিয়েস্টার ফিলামেন্ট সুতার মতো যেসব কাঁচামালের জন্য মান নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা রয়েছে, সেই মানগুলো ফেব্রিকসের মতো ডাউনস্ট্রিম পণ্যের বেলায় প্রযোজ্য নয়। প্রতিদিন চীন থেকে ৮ লক্ষ কেজি এমএমএফ ফেব্রিক আসে। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এগুলো কেজিপ্রতি ১ ডলারে আমদানি হতো, যা ভারতীয় সুতার খরচের থেকেও কম।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পর মার্চে পাঁচ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন মূল্য ৩ দশমিক ৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি ছয় মাসের জন্য। এরপর আমদানিকারকরা অন্য ক্যাটাগরির অধীনে আমদানি করতে শুরু করেন। এমএমএফ ফেব্রিকসের ৫০টি ক্যাটাগরি রয়েছে। সরকার এখন ১৩ ক্যাটাগরির পণ্য আমদানিতে সর্বনিম্ন মূল্য আরোপ করেছে এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে ভারত বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। আগরওয়াল বলেন, ‘এখানে সমস্যা হলো বাংলাদেশ চীন থেকে এমএমএফ ফেব্রিক বিনা শুল্কে আমদানি করে, সেগুলো দিয়ে পোশাক তৈরি করে আবার বিনা শুল্কে ভারতে রপ্তানি করে। বাস্তবে আমরা বিনা শুল্কে চীনা ফেব্রিক আমদানি করতে দিচ্ছি।’
ভারতের এমএমএফ শিল্প শক্তিশালী করতে এই নীতিটি সংশোধন করা প্রয়োজন। আগরওয়াল আরও বলেন, ‘আপনি কাঁচামালের আমদানিকে সীমাবদ্ধ করতে পারেন না এবং ডাউন স্ট্রিম পণ্যের অবাধ প্রবাহকে অনুমতি দিতে পারেন না। এটা হচ্ছে ‘মেক-ইন-চায়না’ নীতি।’

মিসিং লিংক
গুণগত মানের সমস্যা সত্ত্বেও ভারত এমএমএফ সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম। ভারত যথেষ্ট পরিমাণে নিটিং ও উইভিং সক্ষমতা অর্জন করছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রক্রিয়াজাতকরণ অবকাঠামোর অভাব, বিশেষত ডাইং (রঙ করা)। কঠোর দূষণ নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে কম দামের কারণে দেশীয় শিল্প যথেষ্ট সুবিধা করতে পারছে না। আরও কিছু কারণও রয়েছে।
মেনাকা মিলসের নারায়ণ বলেন, এমএমএফ ডাইং সুতি ডাইংয়ের চেয়ে আলাদা। ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়া ভিন্ন। এতে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াও প্রয়োজন। ডাইং প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ করতে পাঁচ থেকে ছয় বছর সময় লাগে।
শিল্পটি এগিয়ে নিতে সরকার এ ক্ষেত্রে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (শিল্প কারখানার দূষিত পানি পরিশোধনাগার) স্থাপন করতে পারে। আগরওয়াল বলেন, এগুলো পিএম-এমআইটিআরএ প্রকল্পের আওতায় করা যেতে পারে। কেননা প্রকল্পটি টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিশ্বমানের অবকাঠামো তৈরির জন্য গঠন করা হয়েছে।
সম্প্রতি তাইওয়ান সফরের সময় নারায়ণ হতবাক হন যে, সেখানে শিল্পটি প্রতিকেজি ফেব্রিক ডাইং করতে ৭০ লিটার পানি ব্যবহার করে। মেনাকা মিলসে ছয় বছর ধরে কাজ করার পর তিনি পানি ব্যবহারের পরিমাণ মাত্র ২৬ লিটারে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি প্রমাণ করে যে, আমরা এমএমএফের বাজারে পৃথিবীর সেরা হতে পারি। শুধু আমাদের সুষম প্রতিযোগিতার মাঠ দিন।’
উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা
ভারত সরকার খাতটিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে কাজ করছে। সম্প্রতি তারা এমএমএফ টেক্সটাইল এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এমএমএফ ফেব্রিক, এমএমএফ পোশাক এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের জন্য ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি রুপির প্রোডাকশন-লিংকড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৪টি আবেদন স্কিমটির আওতায় অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট বিনিয়োগ ১৯ হাজার ৭৯৮ কোটি।
সরকার একটি জাতীয় টেকনিক্যাল টেক্সটাইল মিশনও ঘোষণা করেছে এবং এখন পর্যন্ত ১৬৮টি গবেষণা প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।
এমএমএফ এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল শিল্পকে এগিয়ে নিতে ভারত এসব পদক্ষেপ অনেক দেরিতে নিয়েছে। সামনে পথ এখনো বন্ধুর। ভারতের টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তাদের মানসিকতা এখনো তুলাকে ঘিরে। যারা সাহস করে এমএমএফ শুরু করেছে তাঁরা নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সঠিক ইকোসিস্টেমের অভাব, কাঁচামাল সরবরাহে নিয়ন্ত্রণমূলক প্রতিবন্ধকতা ও চড়া আমদানি মূল্য। ভারতে পলিয়েস্টারের চাহিদা এখনো ধীরে বাড়ছে ও বৈশ্বিক ক্রেতারা এখনো ভারতের এমএমএফ পণ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়। শিল্পটি আশা করছে, অন্তত তাদের ক্ষতিকর আমদানি নীতিগুলো সংশোধন করা হোক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘মিন্ট’ থেকে ভাষান্তর করেছেন আবদুল বাছেদ

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৪ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৫ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

২০২১ সালের জুন মাস। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের কোম্পানির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার..
১৮ নভেম্বর ২০২৪
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৪ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৫ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

২০২১ সালের জুন মাস। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের কোম্পানির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার..
১৮ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৫ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

২০২১ সালের জুন মাস। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের কোম্পানির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার..
১৮ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৪ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

২০২১ সালের জুন মাস। কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন ভারতের তিরুপ্পুর-ভিত্তিক টেকনো স্পোর্টসওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুনীল ঝুঞ্জুনওয়ালা। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন, পোন্ডিচেরির খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের কোম্পানির ‘রাউন্ড-নেক ফুল-স্লিভ’ পলিয়েস্টার..
১৮ নভেম্বর ২০২৪
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৪ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৫ ঘণ্টা আগে