Ajker Patrika

‘জিপি অ্যাকাডেমি’ উন্মোচন করল গ্রামীণফোন

আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১০: ৫৫
‘জিপি অ্যাকাডেমি’ উন্মোচন করল গ্রামীণফোন

তরুণদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ গ্রামীণফোন। এই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি ‘জিপি অ্যাকাডেমি’ উন্মোচন করেছে। এই অ্যাকাডেমি ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে তরুণদের প্রস্তুত করে তুলতে সহায়তা করবে। 

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বুধবার এ খবর জানিয়েছে গ্রামীণফোন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সদ্য প্রতিষ্ঠিত জিপি অ্যাকাডেমির লক্ষ্য বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলা। জিপি অ্যাকাডেমির প্রোগ্রাম ও কোর্সগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা তরুণদের ক্যারিয়ার প্রস্তুতি জোরদার করবে, উদ্যোক্তা হওয়ার দক্ষতাকে শাণিত করবে এবং তাদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘জিপি এক্সপ্লোরারস’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে গ্রামীণফোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের গত দুই বছর ধরে আপ স্কিল করে যাচ্ছে। এখন জিপি অ্যাকাডেমির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য দেশজুড়ে তরুণদের দক্ষতার বিস্তৃতি ঘটানো। ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য জিপি অ্যাকাডেমির প্রোগ্রাম এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা অ্যাকাডেমিক জ্ঞান ও পেশাগত ক্ষেত্রের মধ্যে বিদ্যমান ব্যবধান দূর করবে এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লব-সংশ্লিষ্ট দক্ষতা অর্জনে সহায়তার মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তুলবে। পাশাপাশি তরুণদের ক্যারিয়ারের পরবর্তী স্তরে প্রবেশের প্রস্তুতির জন্য জিপি অ্যাকাডেমির কোর্সগুলো তাঁদের অ্যাকাডেমিক জ্ঞানের সঙ্গে অন্যান্য ভবিষ্যৎ উপযোগী দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

রাজধানীর জিপি হাউসে আয়োজিত গতকালের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনএসডিএর নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) দুলাল কৃষ্ণ সাহা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টেলিনর গ্রুপের ইভিপি ও চিফ পিপল অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি অফিসার সিসিলি হিউচ। 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) দুলাল কৃষ্ণ সাহা গ্রামীণফোনের এই অনন্য উদ্যোগে তার পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনীর মাধ্যমে দক্ষতা তৈরির অনন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের অংশগ্রহণ দেখে আনন্দিত। বেসরকারি খাতে এ ধরনের উদ্যোগ তরুণদের আরও দক্ষ করতে এবং তাদের বাস্তব কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করতে কার্যকর হবে।’

টেলিনর এএসএর ইভিপি ও চিফ পিপল অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি অফিসার সিসিলি হিউচ জিপি অ্যাকাডেমির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য ভবিষ্যৎমুখী কর্মদক্ষতা তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেলিনর ও সিসকোর যৌথ প্রয়াসে গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমির উদ্বোধনের অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি বিশ্বাস করি এবং আশা রাখি যে নির্ভরযোগ্য বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের এমন সম্মিলিত প্রচেষ্টা বাংলাদেশের তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতা বিকাশে, ডিজিটালাইজেশনকে ত্বরান্বিত করতে এবং বিশ্বব্যাপী একটি প্রতিযোগিতামূলক কর্মশক্তি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং সামাজিক প্রভাব প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণদের প্রকৃত সম্ভাবনাকে বের করে আনার প্রত্যয় ধারণ করে গ্রামীণফোন। আমরা আমাদের বিভিন্ন আপস্কিলিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তরুণদের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল দক্ষতার সমন্বয় ঘটানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি আশাবাদী যে, ফিউচার-রেডি স্কিলের মাধ্যমে যুবকদের ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের নিয়মিত প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় টেলিনর ও সিসকোকে পাশে নিয়ে জিপি অ্যাকাডেমি পরিবর্তনমুখী দক্ষতার মাধ্যমে তরুণদের সম্ভাবনার উন্মোচন ঘটাবে, যা বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট নেশনে পরিণত করতে ভূমিকা রাখবে।’

সিসকো বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার ফখরুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘টেলিনর ও গ্রামীণফোনের মধ্যকার অংশীদারত্ব এবং সিসকোর নেটওয়ার্কিং একাডেমিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে ভবিষ্যতে যে চমৎকার সম্ভাবনাগুলোর সূচনা হতে পারে, তা নিয়ে আমরা উচ্ছ্বসিত। এটি আগামীর প্রযুক্তির সঙ্গে বর্তমানের প্রতিভাকে সমন্বিত করার একটি পদক্ষেপ, যা প্রযুক্তি খাতে তাদের আরও দক্ষ করে তোলে, ফলশ্রুতিতে তাদের ভালো চাকরি পাওয়ার সুযোগ তৈরি করে এবং ভবিষ্যতের ডিজিটাল বিশ্বের জন্য বাংলাদেশের তরুণদের শাণিত করে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকালের অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের সিএইচআরও সৈয়দ তানভির হোসেনের অংশগ্রহণে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ভোট অব থ্যাংকস প্রদান করেন আইইউটির  প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ড. মো. আশরাফুল হক, সিসকো সিস্টেমের কান্ট্রি জিএম (বাংলাদেশ) ফখরুদ্দিন আহমেদ, টেলিনর গ্রুপের হেড অব সাসটেইনেবিলিটি’র ভিপি মনীষা ডোগরা এবং জিপি অ্যাকাডেমির প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাদমীনা মাহরীন ও গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান। গ্রামীণফোনের পাবলিক অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র ডিরেক্টর হোসেন সাদাত, জিপি অ্যাকাডেমির লিড ফারহানা ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মকর্তা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিসিআইয়ের সাধারণ সভা: ভ্যাট ও করকাঠামো যুক্তিসংগত করার দাবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা গতকাল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা গতকাল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভ্যাট ও করকাঠামোকে আরও যুক্তিসংগত করার দাবি তুলেছে দেশীয় পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে যুক্ত উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। পাশাপাশি, সকল শিল্প এলাকায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহকে নিরবচ্ছিন্ন ও টেকসই করতে আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে উৎপাদন কার্যক্রম বাধাহীনভাবে চলতে পারে।

গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় তাঁরা বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, শিল্পের প্রতিযোগিতা বজায় রাখা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া অত্যাবশ্যক।

সভায় বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) সভাপতির বক্তব্যে বলেন, দেশের উৎপাদনশীল শিল্পকে শক্তিশালী রাখতে সরবরাহ শৃঙ্খল ঠিক রাখা, সুষ্ঠু উৎপাদন ও কার্যক্রম নিশ্চিত করতে মসৃণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রয়োজন। আয়বৈষম্য কমানো এবং টেকসই এমএসএমই খাতের উন্নয়নের জন্য সরকার, শিক্ষাবিদ ও শিল্পের যৌথ উদ্যোগ অপরিহার্য। বিসিআই সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে শিল্পের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে কাজ করছে, যাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়, শিল্প প্রতিযোগিতামূলক থাকে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, ভ্যাট ও করকাঠামো সহজ, উদ্যোক্তাবান্ধব ও উৎপাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধিকে লক্ষ্য করেই তৈরি হওয়া উচিত। তাঁরা আরও বলেন, পণ্য টেস্টিং এবং সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়াকে উদ্যোক্তাবান্ধব করা, নতুন উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপের সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি। এসব পদক্ষেপ দেশীয় শিল্পে নতুন বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে, উৎপাদনশীলতা ও প্রতিযোগিতা ধরে রাখবে।

সভায় শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করা হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী এবং সাবেক সভাপতি এ টি এম ওয়াজিউল্লাহর জন্য। এক মিনিট নীরবতা পালন করে তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। সভা পরিচালনা করেন বিসিআই সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিন। সভার আলোচ্যসূচি অনুযায়ী, বিগত ৩৮তম সাধারণ সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন করা হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিসিআই কার্যক্রম ও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য অডিটেড হিসাব অনুমোদন এবং নতুন অডিটর নিয়োগের বিষয়ও অনুমোদিত হয়। সভায় অংশ নেন বিসিআই সদস্য ও সাবেক নেতা শাহেদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকিং খাতে সঞ্চিতির সংকট: সুরক্ষা ঝুঁকিতে গ্রাহকের আমানত

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
ব্যাংকিং খাতে সঞ্চিতির সংকট: সুরক্ষা ঝুঁকিতে গ্রাহকের আমানত

দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের যে আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটেছে, তার সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তায়। নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশন) বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায় গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুরক্ষাকাঠামোই কার্যত দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঘাটতি অব্যাহত থাকলে ব্যাংকিং খাতের সংকট কেবল সংখ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং এর প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়বে সাধারণ গ্রাহকের আমানতের সুরক্ষার ওপর, যা দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় ঝুঁকির বার্তা দিচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৪টি ব্যাংকে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। বিপরীতে এসব ব্যাংক রাখতে পেরেছে মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। এতে সম্মিলিত সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা।

এক বছর আগের সেপ্টেম্বরে প্রভিশন ঘাটতি ছিল ৫৬ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা (২ লাখ ৯৩ হাজার ৮২৩ কোটি)। ব্যাংকিং খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, এই প্রবণতা স্বাভাবিক কোনো আর্থিক চক্রের ফল নয়; এটি দীর্ঘদিন ধরে আড়াল করে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের প্রকৃত চিত্র সামনে আসার পরিণতি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পালাবদলের পর ব্যাংকিং খাতে পুনর্গঠিত, পুনঃ তফসিলকৃত, অবলোপনকৃত ও আদালতে আটকে থাকা ঋণসহ মোট ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে। বর্তমানে এসব ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের মোট অঙ্ক প্রায় সাড়ে ১০ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা এবং মন্দমানের কুঋণ ৫ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, যার বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি মানে সরাসরি আমানতকারীর ঝুঁকি। তাঁর মতে, গ্রাহকের আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই প্রভিশন রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনেক ব্যাংক এমন অবস্থায় আছে, তারা ন্যূনতম সঞ্চিতিও গড়ে তুলতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে সময়মতো প্রভিশন না রাখতে পারলে সেই ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম সীমিত বা বন্ধ হওয়া উচিত।

ব্যাংকিং বিধি অনুযায়ী, সাধারণ শ্রেণির ঋণের বিপরীতে শূন্য দশমিক ৫ থেকে ৫ শতাংশ, নিম্নমানের খেলাপি ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা লোকসান শ্রেণির খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ঋণ আদায়ে ব্যর্থতা, কম আমানত প্রবৃদ্ধি এবং সামগ্রিক আর্থিক সংকটে ব্যাংকগুলোর সেই সক্ষমতা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, খেলাপি ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের দ্রুত বৃদ্ধিই প্রভিশন ঘাটতির মূল কারণ। সরকারের পালাবদলের পর এসব ঝুঁকি প্রকাশ্যে আসায় ব্যাংকিং খাতের ভেতরের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়েছে।

ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ডাইনামিক প্রভিশনিং চালুর পরিকল্পনা নিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এই ডাইনামিক প্রভিশনিং চালু হলে ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়বে, মূলধনের চাপ কমবে এবং কুঋণ হ্রাস পেলে প্রভিশন ঘাটতিও কমে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেবিএস হোল্ডিংসের ফ্ল্যাট কিনলে বিশেষ ছাড় পাবেন প্রাইম ব্যাংকের গ্রাহকেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রাইম ব্যাংক পিএলসির সঙ্গে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
প্রাইম ব্যাংক পিএলসির সঙ্গে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

প্রাইম ব্যাংক পিএলসি দেশের শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় প্রাইম ব্যাংকের গ্রাহকেরা জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেড থেকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ মূল্যছাড় সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।

সম্প্রতি জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই অংশীদারত্বের আওতায় প্রাইম ব্যাংকের গ্রাহকেরা জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেড থেকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ মূল্যছাড় সুবিধা পাবেন, যা তাঁদের দেশের প্রিমিয়াম রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে বিনিয়োগের সুযোগ আরও সহজলভ্য করবে।

চুক্তিতে প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন মামুর আহমেদ এবং জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের পক্ষে ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুল হক।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেটস জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল এবং জেবিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) মো. বেলায়েত হোসেনসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের লাইফস্টাইলভিত্তিক মানসম্পন্ন সেবা ও আর্থিক সমাধান প্রদানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে, যা গ্রাহকদের স্বপ্ন পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুনরায় বিটিএমএর প্রেসিডেন্ট শওকত আজিজ রাসেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আবারও বিটিএমএর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শওকত আজিজ রাসেল। ছবি: সংগৃহীত
আবারও বিটিএমএর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন শওকত আজিজ রাসেল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবার নির্বাচিত হয়েছেন শওকত আজিজ রাসেল। তিনি আম্বার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং দেশের টেক্সটাইল শিল্পে একজন উদ্যোক্তা।

গত ২৫ নভেম্বর বিটিএমএর গুলশান কার্যালয়ে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিটিএমএ।

এতে বলা হয়, বিটিএমএর তিনজন ভাইস প্রেসিডেন্টও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং ক্যাটাগরি থেকে মো. শামীম ইসলাম, ফ্যাব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ক্যাটাগরি থেকে মো. আবুল কালাম ও টেক্সটাইল প্রোডাক্ট প্রসেসের ক্যাটাগরি থেকে শফিকুল ইসলাম সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত