Ajker Patrika

চীনা পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্টে কঠোর নজরদারি করবে ভিয়েতনাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২১: ২৫
চীনা পণ্যে ভিয়েতনামের লেবেল নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ছবি: এএফপি
চীনা পণ্যে ভিয়েতনামের লেবেল নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ছবি: এএফপি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘শাস্তিমূলক শুল্ক’ এড়াতে ভিয়েতনাম এবার চীনের রপ্তানিতে কঠোর নজরদারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে ভিয়েতনামের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো চীনা পণ্যের ওপর নজর রাখবে হ্যানয় সরকার। শুধু তা-ই নয়, চীনমুখী সংবেদনশীল রপ্তানির ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ জোরদারের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি।

সরকারি নথিপত্র এবং এ বিষয়ে অবগত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এই পদক্ষেপের প্রস্তাব এমন সময়ে এল, যখন হোয়াইট হাউসের প্রভাবশালী বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারোসহ ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা এই ধারণা থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, চীনা পণ্য কম শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য ‘মেড ইন ভিয়েতনাম’ লেবেল ব্যবহার করা হচ্ছে।

এর আগে ভিয়েতনাম বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছিল, যাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির বিশাল বাণিজ্য উদ্বৃত্তের বিষয়ে নমনীয় থাকেন। তবে এরপরও ট্রাম্পের ‘লিবারেশন ডে’ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়।

যদিও এই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে, তবে গত বুধবার ভিয়েতনামের উপপ্রধানমন্ত্রী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বৈঠকের পর দুই দেশ আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।

রপ্তানিনির্ভর ভিয়েতনাম আশা করছে, এই শুল্ক ২২ থেকে ২৮ শতাংশের মধ্যে বা তারও নিচে নামিয়ে আনা যাবে। এ বিষয়ে অবগত তিন ব্যক্তি এমনটাই জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন জানান, গত মার্চে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তারা এই সীমার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

ভিয়েতনামের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার শুরুর ঘোষণা দিয়ে ভিয়েতনামের সরকার রাষ্ট্রীয় পোর্টালে জানায়, তারা ‘বাণিজ্য জালিয়াতি’ বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তবে এই পরিভাষার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানায়নি ভিয়েতনাম সরকার।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকে অনেক বহুজাতিক সংস্থা বেইজিংয়ের ওপর নির্ভরতা কমাতে ভিয়েতনামে কারখানা স্থাপন করে ‘চীন প্লাস ওয়ান’ নীতি বাস্তবায়ন করেছে।

ট্রাম্পের বেপরোয়া শুল্কনীতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে। কারণ, একদিকে তাদের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার এবং নিরাপত্তা অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখতে হচ্ছে, অন্যদিকে শীর্ষ বিনিয়োগের উৎস এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার ঝুঁকিও নিতে চাইছে না। যেখানে দক্ষিণ চীন সাগরে সীমান্ত নিয়ে চীন-ভিয়েতনাম বিরোধ বহুদিন ধরে চলে আসছে।

এ প্রসঙ্গে ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা নাভারো ৬ এপ্রিল ফক্স নিউজে কোনো প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করেন, ‘চীন শুল্ক ফাঁকি দিতে ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য ভিয়েতনামকে ব্যবহার করছে।’

বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, কিছু ক্ষেত্রে চীনা পণ্যবাহী জাহাজ ভিয়েতনামের বন্দরে অবস্থান করে। জাহাজবোঝাই পণ্যগুলো ‘ভিয়েতনামে তৈরি হয়েছে’ এমন প্রমাণপত্র পাওয়ার জন্যই মূলত এই বিরতি দেওয়া হয়। এরপর সেগুলো যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখে যাত্রা করে।

এখন চীনা পণ্যে কঠোর নজরদারি করতে ভিয়েতনামের প্রস্তাব ট্রান্সশিপমেন্টের অপব্যবহার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে উদ্বেগ, তা কমাতে যথেষ্ট কি না বা দেশটি সম্পূর্ণরূপে এই সমস্যা মোকাবিলা করতে পারবে কি না, তা এখনই বলা মুশকিল।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, বেইজিং ও হ্যানয়ের মধ্যে বাণিজ্য মূলত একটি উইন-উইন পরিস্থিতি। আমরা বিশ্বাস করি, ভিয়েতনাম তার নিজস্ব দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ এবং চীন ও ভিয়েতনামের মধ্যে পারস্পরিকভাবে লাভজনক সহযোগিতার সামগ্রিক পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি রেখে একটি সিদ্ধান্ত নেবে।

চিপস, স্যাটেলাইট ও বিমান

এদিকে ভিয়েতনামের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে প্রবাহিত সংবেদনশীল পণ্যের ক্ষেত্রেও হ্যানয় কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। রয়টার্স একটি খসড়া আদেশ পর্যালোচনা করে দেখেছে, ভিয়েতনাম সেমিকন্ডাক্টরের মতো দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য পণ্যের রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করতে চায়। এ ধরনের ইলেকট্রনিকস বেসামরিক ও সামরিক—উভয় কাজেই ব্যবহার করা যায়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে প্রস্তুত করা এই আদেশে কোনো তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। তবে ৪ এপ্রিলের একটি ব্যাখ্যা নোট আকারে এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নথিতে বলা হয়, প্রধান বাণিজ্য অংশীদারেরা হ্যানয়কে অনুরোধ করেছে, যাতে ‘রপ্তানিকারক দেশের সম্মতি ছাড়া তৃতীয় দেশে প্রযুক্তি স্থানান্তর বা লেবেল লাগানোর সম্ভাবনা কমিয়ে আনা যায়।’

মার্কিন সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উন্নয়নকে জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করছে। ওয়াশিংটন অত্যাধুনিক মার্কিন চিপ চীনে সরবরাহ বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রস্তাব অনুসারে, ভিয়েতনাম এখন এই ধরনের পণ্যের বাণিজ্যের জন্য নতুন ঘোষণা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া চালু করার পরিকল্পনা করছে। হ্যানয় এর আগে জানিয়েছিল, তারা মার্চ মাসের বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য পণ্যের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সহজীকরণ ও অন্যান্য প্রযুক্তিপণ্য-সম্পর্কিত পদক্ষেপের মধ্যে ভিয়েতনাম ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট যোগাযোগ পরিষেবার সহজ শর্তে অনুমোদন দেওয়ার কথাও ভাবছে। মাস্ক ৪ এপ্রিল এক এক্স পোস্টে ভিয়েতনামে একাধিক গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনার বিস্তারিত বিবরণ দেন।

সাম্প্রতিক সময়ে মহাকাশে ইলন মাস্কের প্রাধান্য বেইজিং হুমকি হিসেবেই দেখছে। যেখানে চীনও পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে বিপুল স্যাটেলাইট স্থাপনের মাধ্যমে স্টারলিংকের বিকল্প যোগাযোগ পরিষেবা অবকাঠামো তৈরির চেষ্টা করছে।

ভিয়েতনামের কূটনীতিকদের বৃহৎ শক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। আগামী সপ্তাহে চীনা নেতা সি চিন পিং হ্যানয় সফর করবেন। এ বিষয়ে অবগত দুজন ব্যক্তি জানিয়েছেন, সির সফরে ভিয়েতনামের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা চীনের কমার্শিয়াল এয়ারক্রাফট করপোরেশন অব চায়না (কম্যাক) নির্মিত উড়োজাহাজ অনুমোদন চূড়ান্ত হতে পারে। এর ফলে ভিয়েতনামের বিমান সংস্থাগুলোর জন্য চীনা জেট বিমান ইজারা নেওয়া ও কেনার পথ খুলতে পারে। চীনা প্রতিষ্ঠানটি বিদেশি ক্রেতা খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে। গত সপ্তাহেই ভিয়েতনামের বিমান সংস্থাগুলোর বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঋণচুক্তির ঘোষণা আসে। আর এরপরই চীনের সঙ্গেও একই ধরনের চুক্তির আভাস মিলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইএমইডির নভেম্বর মাসের প্রতিবেদন

এডিপি বাস্তবায়নে বড় ধাক্কা

  • পাঁচ মাসেই ব্যয় কমেছে ৬ হাজার কোটি।
  • শুধু নভেম্বরে ব্যয় কমেছে ৪ হাজার কোটি।
  • সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট।
  • নির্বাচন ইস্যুতে প্রকল্পের গতি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এডিপি বাস্তবায়নে বড় ধাক্কা

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বড় হলেও বাস্তব অগ্রগতি একেবারেই হতাশাজনক।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর—এই পাঁচ মাসে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৩ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ১১.৭৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় পিছিয়ে আছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর থেকে স্পষ্ট হচ্ছে, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প যেন এগোচ্ছেই না। সরকারি তহবিল, বৈদেশিক সহায়তা ও সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন—প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন ব্যয়ের এ তিন উৎসের প্রতিটিতেই যেন মন্থরতা লক্ষণীয়।

শুধু অর্থবছরের সার্বিক পরিস্থিতিই নয়, এডিপির মাসওয়ারি অগ্রগতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নভেম্বর মাসের তথ্য আরও চিন্তার। এই এক মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে ৮ হাজার ১৬৫ কোটি টাকার মতো, যেখানে আগের বছরের নভেম্বরেই ব্যয় ছিল ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এক মাসেই ব্যয় কমে গেছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রগতির হার মাত্র ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ধীরগতি কোনো স্বাভাবিক মৌসুমি প্রবণতা নয়; বরং প্রকল্প ব্যবস্থাপনার ভেতরে জমে থাকা নানা অচলাবস্থার ফল।

প্রকল্প অনুমোদনে বিলম্ব, টেন্ডারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়া, দক্ষ ঠিকাদারের অভাব, মাঠপর্যায়ে প্রকৌশল বিভাগগুলোর সংকোচন—এসব মিলেই উন্নয়ন ব্যয় জমে থাকছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনে তৈরি হওয়া মন্থরতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধা। আইএমইডি কর্মকর্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে পুরো প্রশাসনিক কাঠামো একধরনের অচল অবস্থায় ছিল, যার ধাক্কা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।

মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ব্যয়ে বৈষম্যও স্পষ্ট। বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও সংসদবিষয়ক সচিবালয় মন্ত্রণালয় পাঁচ মাসে এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি। কিছু বিভাগ অগ্রগতি দেখালেও, তা সমগ্র চিত্র বদলে দেওয়ার মতো নয়। বিপরীতে খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ ১৩২.৭৮ শতাংশ ব্যয় করেছে, যা বরাদ্দের চেয়েও বেশি ব্যয়—এটি চলমান প্রকল্পগুলোর প্রকৃত অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আইএমইডির মতে, প্রকৃত ব্যয় ও আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যকার এ ধরনের ব্যবধান ভবিষ্যতে প্রকল্প মূল্যায়নকে আরও জটিল করে তুলবে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলছেন, ‘বাস্তবায়নের হার স্পষ্টতই কম। শুধু সংখ্যা নয়, কেন এই অবস্থা, সেটাই এখন সবচেয়ে জরুরি প্রশ্ন।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন থাকায় ব্যবস্থাপনায় আরও ধীরতা দেখা দিতে পারে। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, অর্থবছরের শুরুতে সাধারণত কিছুটা ধীরতা দেখা গেলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। নির্বাচনকালীন প্রশাসন সাধারণত ঝুঁকিনির্ভর হয় না, ফলে প্রকল্পের গতি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

সব মিলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক দ্বিধা এবং মাঠপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণহীনতা মিলিয়ে এডিপি বাস্তবায়ন যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, তা দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন খুব কঠিন—এমনটি ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনের ভেতরেও।

চলতি অর্থবছরে এডিপি বরাদ্দ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম পাঁচ মাসে যে গতি দেখা গেছে, তাতে বছরের শেষে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন আদৌ সম্ভব হবে কি না, সে প্রশ্ন এখন আরও তীব্র হয়ে উঠছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডলারের বিপরীতে রুপির আরও দরপতন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার। ছবি: সংগৃহিত
ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার। ছবি: সংগৃহিত

যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরও ২৩ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ০১-এ পৌঁছেছে। ডলারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত এটিই রুপির সর্বনিম্ন দর। ধারাবাহিক বিদেশি তহবিলের প্রস্থান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এবং স্থায়ী ডলার ক্রয়কে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরুতে রুপি ৩৬ পয়সা কমে ৯১ দশমিক ১৪-এ পৌঁছায়, যা ইতিহাসের সর্বনিম্ন, পরে সামান্য পুনরুদ্ধার হয়। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে এবং ডলারের শক্তি কিছুটা কমেছে, তারপরও রুপির পতন অব্যাহত রয়েছে।

গত ১০টি লেনদেনের দিনে রুপি ৯০ থেকে ৯১-এর মধ্যে ওঠানামা করেছে। শুধু গত পাঁচ দিনে রুপির মান ডলারের তুলনায় ১ শতাংশ কমেছে। মুদ্রা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে রুপির দাম চলতি মাসে ৯২ ছাড়িয়ে যাবে।  

আজ মঙ্গলবার আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা রুপি ৯০ দশমিক ৮৭ থেকে লেনদেন শুরু হয়। পরে ৯০ দশমিক ৭৬ থেকে ৯১ দশমিক ১৪-এর মধ্যে ওঠানামা করে। শেষে ৯১ দশমিক ০১-এ বন্ধ হয়। গত সোমবার রুপি ৯০ দশমিক ৭৮-এ বন্ধ হয়েছিল, যা আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়সা কম।

ফিনরেক্স ট্রেজারি অ্যাডভাইজার্সের হেড অব ট্রেজারি অনিল কুমার বানসালি বলেন, ‘ডলারের ক্রয় অব্যাহত থাকায় রুপি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের নতুন বাণিজ্য প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় চুক্তি স্থগিত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের আবেদন করল পেপ্যাল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৫৬
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের আবেদন করল পেপ্যাল

ডিজিটাল পেমেন্ট কোম্পানি পেপ্যাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এটি পেপ্যাল ব্যাংক তৈরি করার জন্য ইউটাহ ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস এবং ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে আবেদন জমা দিয়েছে।

পেপ্যালের প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স ক্রিস বলেন, ‘পুঁজির নিরাপত্তা ছোট ব্যবসাগুলোর বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা। পেপ্যাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা ছোট ব্যবসার উন্নয়ন এবং মার্কিন অর্থনীতিতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব।’

১৯৯৮ সালে ইলন মাস্ক ও পিটার থিয়েল পেপ্যাল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি গ্রাহককে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। মার্কিন ব্যাংকিং লাইসেন্স পাওয়ার পর কোম্পানি তৃতীয় পক্ষের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে গ্রাহকের আমানতকে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশনে বিমার আওতায় আনতে পারবে।

পেপ্যালের আবেদন এসেছে এমন সময়ে, যখন একাধিক ক্রিপ্টো কোম্পানি এবং নিওব্যাংক এই বছরে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি সুবিধা নিয়ে নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকিং খাতে প্রবেশের সুযোগ গ্রহণের চেষ্টা করছে। এ বছরের মধ্যে নুবাঙ্ক, কয়েনবেসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং চার্টারের জন্য আবেদন করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত