আফসান চৌধুরী

বাংলাদেশে ইতিহাসচর্চার একটা সমস্যা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা এটাকে একটা পবিত্র বিষয় মনে করি। বিশ্লেষণের দিকে না গিয়ে যদি কোনো কিছুতে ধারণা থাকে, সেই ধারণাটা আঁকড়ে ধরি, তার বিপক্ষে বা অন্যদিক থেকে এটা দেখার চেষ্টা করি না। এই অসহিষ্ণুতা আমাদের ইতিহাসচর্চাকে অনেকটা আক্রান্ত করেছে।
আমরা সবাই বাঙালি, বাঙালি হিসেবেই সংগ্রাম করেছি। এটা মূলত আমরা বলি এই কারণে যে পাকিস্তানি যে রাজনীতি আছে, সেটায় সবাই মুসলমান। সেই রাজনীতির বিপক্ষে আমরা অবস্থান তৈরি করেছি। কিন্তু আমাদের যে আরও অনেক পরিচিতি আছে, ঐতিহাসিক পরিচিতি আছে, সেদিকে আমরা কিন্তু নজর দিই না।
আমরা ধরে নিয়েছি, কেবল একটাই বাস্তবতা রয়েছে। এর ফলে আমাদের ইতিহাসচর্চার ত্রুটিগুলো বেড়েছে। এবং আমাদের যে শিক্ষা দেওয়া হয়, আমাদের নতুন যে ভাবনাচিন্তা যে কোন ইতিহাসের বিষয়ের ক্ষেত্রে হওয়ার কথা, সেটা পাইনি।
ফলে যে সমস্যাটা তৈরি হয়েছে, এই যে বাঙালি, বাঙালি যে পবিত্র একটা বিষয়, প্রশ্নাতীত একটা বিষয়, তা বলে দুর্বলতা তৈরি করেছি। আমরা মানুষ চিনতে ভুল করছি। যাঁদের ভুল করে চিনেছি, তাঁদের একজনের নাম মাওলানা ভাসানী। অন্যজনের নাম শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা খুঁজছি না, তাঁরা কোন রাজনীতি করেছেন তাঁদের সারা জীবনে। ফলে আমাদের ইতিহাস থেকে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে তো বটেই, গোটা বয়ান থেকে বাদ পড়েছে সাধারণ মানুষ। বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শেখ মুজিবকে আমরা শুধু বাঙালি করে দেখেছি। সংগ্রামের সঙ্গে শেখ মুজিবের যে সম্পর্ক, সেটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।
শেখ মুজিবকে যদি বুঝতে হয়, তাহলে শেখ মুজিবের গোপালগঞ্জ পর্যায়ের পর্বটা দেখা দরকার।
দ্বন্দ্বগুলো দেখতে গেলে দেখতে হয় কার বিরুদ্ধে শেখ মুজিবের সংগ্রাম ছিল, কার পক্ষে শেখ মুজিবের সংগ্রাম ছিল, কারা তাঁকে বন্ধু বলে ভাবছে, কারা
তাঁকে শত্রু বলে ভাবছে। এই যে শত্রু আর বন্ধুর সমীকরণ, এটা হচ্ছে ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে, বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে মূল সম্পর্ক।
আমরা মনে করি, জাতীয়তাবাদের বাইরে গিয়ে যদি অন্য কিছু ভাবি, তাহলে হয়তো আমার নিজের দেশের ঐতিহ্য আর ইতিহাসের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব হবে। আমরা ভুলে যাই, শেখ মুজিবের সংগ্রামের ইতিহাস হচ্ছে আমাদের নিজস্ব ইতিহাসের দর্পণ। সেই দর্পণকে আমরা কিছুটা হলেও ঝাপসা করেছি জাতীয়তাবাদের ধুয়া দিয়ে।
শেখ মুজিবের অভিজ্ঞতাটাই বলি। শেখ সাহেবের রাজনৈতিক জীবনের মূল মুহূর্ত কোনগুলো? ১৯৪৮ সালে যখন তাঁর সঙ্গে মিটিং করতে গিয়ে দেখা হচ্ছে সোহরাওয়ার্দীর, তখন কোন পরিপ্রেক্ষিতে দেখা হচ্ছে? পরিপ্রেক্ষিত হলো, ১৯৩৭-এর নির্বাচনের পরে যখন সোহরাওয়ার্দী এবং ফজলুল হক সভা করতে গেলেন গোপালগঞ্জে, তাঁদের সভা করতে দিতে চায়নি শেখ মুজিবুর রহমানেরই স্বদেশিরা। শেখ সাহেব ওখানে গিয়ে বুর্জোয়া মানুষকে বলেছেন, সভা করতে দিতে হবে। এই মুহূর্তটা আমি মনে করি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই যে গোপালগঞ্জে শেখ সাহেব যে সংগ্রাম করতে শিখেছেন, সেটা প্রান্তিক এলাকা। প্রান্তিক এলাকা থেকে তিনি এসেছেন কলকাতায়। মাত্র দু-তিন বছরের মধ্যেই তিনি কলকাতার রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। শেখ সাহেব যেখানে পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন, সেখানে যাঁদের সঙ্গে উঠতেন-বসতেন, যাঁদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন, ওই পরিমণ্ডল থেকেই কিন্তু শেখ সাহেবের সমগ্র রাজনীতি তৈরি হচ্ছে।
এই রাজনীতি তৈরি হওয়াতে কোন বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ? দ্বন্দ্ব। মার্ক্সবাদীরা অনেক সময় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের কথা বলে, কিন্তু তারা নিজেরাই দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ প্রয়োগ করে না। তারা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল প্রয়োগ করে। শেখ সাহেবকে যদি বুঝতে হয়, তাহলে তাঁর দ্বন্দ্বকে দিয়ে বুঝতে হবে। আমাদের সমাজে কোনটা দ্বন্দ্ব ছিল? আমাদের সমাজে অনেক দ্বন্দ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় দ্বন্দ্ব ছিল নির্যাতন। সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হচ্ছিল জমিদারের হাতে। তারচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছিল গোটা ব্যবস্থার মধ্যে, যেখানে কৃষকদের সুযোগ অত্যন্ত কম ছিল। তাঁদের বড় ভূমিকাও ছিল। যাঁরা অর্থনৈতিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন, তাঁরা জানেন, বিভিন্ন সময়ে এই সুবিধাবাদী জনগোষ্ঠীকে সুযোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন নিয়মকানুন তৈরি হয়েছিল। নির্যাতিত হতো বাংলার মানুষ। সেই নির্যাতন প্রক্রিয়াটা কিন্তু ধার্মিক নয়। সম্প্রদায়ভিত্তিক না। ধর্মীয় সম্প্রদায়ভিত্তিক না। ভাষা–সম্প্রদায়ভিত্তিকও না। সেটি অর্থনৈতিক সম্পর্কভিত্তিক।
এই অর্থনৈতিক সম্পর্কের কথাটা শেখ সাহেব বলে গেছেন। এবং আমার মতে, এই কারণে তাঁর আত্মজীবনীটা পড়া উচিত। সেটা একটা আধুনিক বই। আমাদের ইতিহাস জীবনের একটা অন্যতম বই হচ্ছে আত্মজীবনীর বইটা। সেটা পড়ে দেখা যায়, শেখ সাহেব বিশ্লেষণগুলো করছেন যে মুসলমান জমিদারেরা হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করছেন। এই সহজ-সরল কথাটার মধ্যেই কিন্তু রয়েছে সত্যতা। তো তাহলে বাঙালি ঐতিহ্যটা কোন জায়গা থেকে আসে? মূল সম্পর্কটা হলো জমিদারের সঙ্গে কৃষকের যে দ্বন্দ্ব। এটাই হচ্ছে প্রধান দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব অনেক উপদ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। মূলত এটাই হচ্ছে বিষয়।
উপনিবেশবাদ কিন্তু একক বিষয় নয়। উপনিবেশবাদ হচ্ছে অনেক জনগোষ্ঠী মিলে। যারা উপনিবেশবাদের দালাল ছিল, তারা উপনিবেশবাদ সৃষ্টি করেছে। তারা যে শুধু সুবিধা পেয়েছে তা নয়, তারা বিনিময়ে কিছু দিয়েছে। আমাদের দেশের উপনিবেশবাদ বলতে শুধু ইংরেজকে বোঝালে চলবে না, দালালগুলো সমানভাবে উপনিবেশবাদ তৈরি করছে। এটাই হচ্ছে মৌলিক। শেখ সাহেবের আন্দোলন ও বিদ্রোহ তাদের বিরুদ্ধে। শেখ সাহেবের এই বিষয়টা যদি আমরা খেয়াল করি, তাহলে দেখব, ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পরে ১৯৪০-এ তো স্বাধীন দেশ হওয়ার ঘোষণা হয়ে গেছে। সেই ১৯৪০-এ দেশ স্বাধীন হওয়ার কথা। স্বাধীন হওয়ার কথা পূর্ব পাকিস্তান। বিষয়টা পূর্ব পাকিস্তান নয়, বিষয়টা স্বাধীনতা। কোনো দিন বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানের সঙ্গে পরাধীন অবস্থায় থাকবে, এটা ছিল না। ১৯৪০ থেকে ৪৬ পর্যন্ত যত দলিল আছে তাতে দেখা যেতে পারে যে, সেই সময় স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান নিয়ে যত কথাবার্তা হয়েছে, যত বই লেখা হয়েছে, যত স্টাডি হয়েছে, যত সংগঠন তৈরি হয়েছে, সেটা ১৯৪৬–এর নির্বাচনের পরে জিন্নাহ উল্টে দিলেন। আমি মনে করি জিন্নাহ একজন অসৎ রাজনীতিবিদ, একজন সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ। নিজের সুবিধার জন্য যা প্রয়োজন হয়েছে, করেছেন। করাটাই স্বাভাবিক, যেহেতু তিনি উত্তর ভারতের মানুষ। উত্তর ভারতের মানুষেরা সব সময় বঙ্গকে দখল করতে চেয়েছে—সেটা আর্যই হোক, সেটা আফগানই হোক, সেটা মোগল হোক, সেটা পাকিস্তান হোক। এটা দখলকৃত অঞ্চল। তো দখলকৃত অঞ্চলের রাজনীতি আর দখলদার অঞ্চলের রাজনীতি তো এক হতে পারে না। সম্ভব না। সেই কারণে বাংলাদেশের যে বাস্তবতা, সেই বাস্তবতা কিন্তু তৃতীয় ধারার। একটা ধারা পাকিস্তানের, একটা ধারা ভারতের। দুটোই কিন্তু একত্রবাদের ধারা। অর্থাৎ আমরা সবাই এক। অর্থাৎ ভারতীয়রা, মানে কংগ্রেস বলছে, আমরা সবাই ইন্ডিয়ান। আর মুসলিম লীগ বলছে, আমরা সবাই মুসলমান। আর পরবর্তীকালে এসে বলছে, আমরা সবাই বাঙালি। কিন্তু তিনটা এক জিনিস না। আমাদের সমাজে মুসলমান আছে, হিন্দু আছে। বাঙালি আছে, আদিবাসী আছে। কিন্তু আমাদের একত্র করল কী? শেখ সাহেবের এই ঐতিহাসিক ভূমিকাটা পালন করা সম্ভব হলো কী করে? এটা হচ্ছে, শেখ সাহেব যে ইতিহাস থেকে সৃষ্টি হয়েছেন, অন্য মানুষেরাও কিন্তু একই ইতিহাস থেকে সৃষ্টি হয়েছেন। এই ঐতিহাসিক পরিচিতি, সংস্কৃতির পরিচিতি, অর্থাৎ আমি বাঙালি না মুসলমান ইত্যাদি ইত্যাদির চেয়েও অনেক বড়। কারণ, ভাষা বা অন্য কোনো জিনিসের যে বিরোধিতা করা যায়, তার প্রমাণ তো আমাদের দেশেই আছে। ১৯৪৭ সালে যখন ইউনাইটেড বেঙ্গল মুভমেন্ট বা যৌথ বাংলা আন্দোলন হয়েছিল, সেই যৌথ বাংলা আন্দোলনের প্রথম সমর্থন করে পরে বিরোধিতা যে করেছিল তারা ভারতের বাঙালি। অর্থাৎ এখন যারা পশ্চিমবঙ্গে থাকে। দেশভাগের যে কথা বলা হয় ১৯৪৭ সালে, তার প্রস্তাব এবং পাস করানোটা ছিল আজকের পশ্চিমবঙ্গের লোকদের। কেন করেছিল? কারণ তারা ভারতীয় হয়ে গিয়েছিল। তাদের একটা স্বাধীন দেশ করার ইচ্ছা ছিল না, যেকোনো কারণেই হোক, ইতিহাসের দিক থেকে। এই কারণে আমাদের দেশে ভাবনাটাই থাকে না যে, আমরা বাঙালি হিসেবেও এক। আমরা ৪০ সালের স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের কথা বলেছি। আমরা যৌথ পাকিস্তান, তার অধীনে যে থাকব, তার কথা আমরা কোনো দিন বলিনি। তাই যদি হয়, তাহলে পরিষ্কার হয়ে যায় যে আমরা তৃতীয় একটা সত্তা নিয়ে
এসেছি। তৃতীয় সত্তা কিন্তু জাতীয়তাবাদ থেকে উদ্ভূত হয়নি। আমরা যদি বাঙালি হই, তাইলে ভারতীয় বাঙালিরা আমাদের সঙ্গে থাকতে চাইল না কেন? আমরা যদি মুসলমান হব, তাহলে পাকিস্তানিরা আমাদের কেন মারল?
আমরা পাকিস্তানিও না, বাঙালিও না। যদি কোনোভাবে এ রকম পরিচিতি করা যায়, তাহলে বলতে হবে আমরা পূর্ববঙ্গ। ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় আজকে বাংলাদেশ। এই ধারাবাহিকতাকে বুঝতে হলে কিন্তু আমাদের সনাতনি জাতীয়তাবাদী ধারা থেকে সরে এসে বুঝতে হবে ইতিহাস কোন দিকে আমাদের নিয়ে গেছে। ইতিহাস নিজের দিকে এগোয়। শেখ সাহেবকে বুঝতে হলে এই বিষয়টা পরিষ্কার হতে হবে যে, ইতিহাসের পরিচিতি কী, সংস্কৃতির পরিচিতি কী, জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝায় এবং সামাজিক সংগ্রামের যে জাতীয়তাবাদ, সেটা কী? সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ আর ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদ এক নয়। আমাদের এক করেছে আমাদের ইতিহাস। আমি মনে করি মাওলানা ভাসানীর ক্ষেত্রেও তা-ই। এখানে শেষ কথা আমি বলছি, ধারাবাহিকতাটা কীভাবে রক্ষা করতে হয়। দেখতে হয়, ১৯৩০ সালে এই লোকটা, মাওলানা ভাসানী মুসলিম লীগে যোগদান করেছেন। তিনি আর কংগ্রেস করেন না তখন। কেন করেছেন? কারণ সাধারণ মানুষেরা আসামে গিয়ে কষ্ট করছে, থাকছে। তাদের পক্ষে কে দাঁড়াবে? মাওলানা ভাসানী দাঁড়িয়েছেন। শেখ সাহেব যখন মুসলিম লীগ করতে গিয়েছেন, তিনি কি মুসলমান পরিচয় নিয়ে গেছেন? শেখ সাহেব গেছেন সংগ্রামী, নির্যাতিত মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে। শেখ সাহেবের আত্মজীবনীতেই তা আছে। শেখ সাহেব প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন। আমাদের ইতিহাস হচ্ছে প্রতিবাদ এবং সংগ্রাম। আমরা যে ধর্মীয় চর্চা করে জাতীয়তাবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে ভুলে গিয়েছি, আমাদের জাতীয় চরিত্র হচ্ছে সংগ্রাম, আমাদের জাতীয় চরিত্র হচ্ছে প্রতিবাদ। এবং এটাই আমাদের পরিচিতি থাকবে। যত দিন আমরা মুক্তভাবে ইতিহাসকে দেখতে না শিখব, তত দিন আমরা বুঝতে পারব না শেখ মুজিবুর রহমানকে, বুঝতে পারব না মাওলানা ভাসানীকে। এবং বুঝতে পারব না বাংলাদেশকে।
আফসান চৌধুরী
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক

বাংলাদেশে ইতিহাসচর্চার একটা সমস্যা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা এটাকে একটা পবিত্র বিষয় মনে করি। বিশ্লেষণের দিকে না গিয়ে যদি কোনো কিছুতে ধারণা থাকে, সেই ধারণাটা আঁকড়ে ধরি, তার বিপক্ষে বা অন্যদিক থেকে এটা দেখার চেষ্টা করি না। এই অসহিষ্ণুতা আমাদের ইতিহাসচর্চাকে অনেকটা আক্রান্ত করেছে।
আমরা সবাই বাঙালি, বাঙালি হিসেবেই সংগ্রাম করেছি। এটা মূলত আমরা বলি এই কারণে যে পাকিস্তানি যে রাজনীতি আছে, সেটায় সবাই মুসলমান। সেই রাজনীতির বিপক্ষে আমরা অবস্থান তৈরি করেছি। কিন্তু আমাদের যে আরও অনেক পরিচিতি আছে, ঐতিহাসিক পরিচিতি আছে, সেদিকে আমরা কিন্তু নজর দিই না।
আমরা ধরে নিয়েছি, কেবল একটাই বাস্তবতা রয়েছে। এর ফলে আমাদের ইতিহাসচর্চার ত্রুটিগুলো বেড়েছে। এবং আমাদের যে শিক্ষা দেওয়া হয়, আমাদের নতুন যে ভাবনাচিন্তা যে কোন ইতিহাসের বিষয়ের ক্ষেত্রে হওয়ার কথা, সেটা পাইনি।
ফলে যে সমস্যাটা তৈরি হয়েছে, এই যে বাঙালি, বাঙালি যে পবিত্র একটা বিষয়, প্রশ্নাতীত একটা বিষয়, তা বলে দুর্বলতা তৈরি করেছি। আমরা মানুষ চিনতে ভুল করছি। যাঁদের ভুল করে চিনেছি, তাঁদের একজনের নাম মাওলানা ভাসানী। অন্যজনের নাম শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা খুঁজছি না, তাঁরা কোন রাজনীতি করেছেন তাঁদের সারা জীবনে। ফলে আমাদের ইতিহাস থেকে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে তো বটেই, গোটা বয়ান থেকে বাদ পড়েছে সাধারণ মানুষ। বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শেখ মুজিবকে আমরা শুধু বাঙালি করে দেখেছি। সংগ্রামের সঙ্গে শেখ মুজিবের যে সম্পর্ক, সেটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।
শেখ মুজিবকে যদি বুঝতে হয়, তাহলে শেখ মুজিবের গোপালগঞ্জ পর্যায়ের পর্বটা দেখা দরকার।
দ্বন্দ্বগুলো দেখতে গেলে দেখতে হয় কার বিরুদ্ধে শেখ মুজিবের সংগ্রাম ছিল, কার পক্ষে শেখ মুজিবের সংগ্রাম ছিল, কারা তাঁকে বন্ধু বলে ভাবছে, কারা
তাঁকে শত্রু বলে ভাবছে। এই যে শত্রু আর বন্ধুর সমীকরণ, এটা হচ্ছে ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে, বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে মূল সম্পর্ক।
আমরা মনে করি, জাতীয়তাবাদের বাইরে গিয়ে যদি অন্য কিছু ভাবি, তাহলে হয়তো আমার নিজের দেশের ঐতিহ্য আর ইতিহাসের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব হবে। আমরা ভুলে যাই, শেখ মুজিবের সংগ্রামের ইতিহাস হচ্ছে আমাদের নিজস্ব ইতিহাসের দর্পণ। সেই দর্পণকে আমরা কিছুটা হলেও ঝাপসা করেছি জাতীয়তাবাদের ধুয়া দিয়ে।
শেখ মুজিবের অভিজ্ঞতাটাই বলি। শেখ সাহেবের রাজনৈতিক জীবনের মূল মুহূর্ত কোনগুলো? ১৯৪৮ সালে যখন তাঁর সঙ্গে মিটিং করতে গিয়ে দেখা হচ্ছে সোহরাওয়ার্দীর, তখন কোন পরিপ্রেক্ষিতে দেখা হচ্ছে? পরিপ্রেক্ষিত হলো, ১৯৩৭-এর নির্বাচনের পরে যখন সোহরাওয়ার্দী এবং ফজলুল হক সভা করতে গেলেন গোপালগঞ্জে, তাঁদের সভা করতে দিতে চায়নি শেখ মুজিবুর রহমানেরই স্বদেশিরা। শেখ সাহেব ওখানে গিয়ে বুর্জোয়া মানুষকে বলেছেন, সভা করতে দিতে হবে। এই মুহূর্তটা আমি মনে করি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই যে গোপালগঞ্জে শেখ সাহেব যে সংগ্রাম করতে শিখেছেন, সেটা প্রান্তিক এলাকা। প্রান্তিক এলাকা থেকে তিনি এসেছেন কলকাতায়। মাত্র দু-তিন বছরের মধ্যেই তিনি কলকাতার রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। শেখ সাহেব যেখানে পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন, সেখানে যাঁদের সঙ্গে উঠতেন-বসতেন, যাঁদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন, ওই পরিমণ্ডল থেকেই কিন্তু শেখ সাহেবের সমগ্র রাজনীতি তৈরি হচ্ছে।
এই রাজনীতি তৈরি হওয়াতে কোন বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ? দ্বন্দ্ব। মার্ক্সবাদীরা অনেক সময় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের কথা বলে, কিন্তু তারা নিজেরাই দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ প্রয়োগ করে না। তারা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল প্রয়োগ করে। শেখ সাহেবকে যদি বুঝতে হয়, তাহলে তাঁর দ্বন্দ্বকে দিয়ে বুঝতে হবে। আমাদের সমাজে কোনটা দ্বন্দ্ব ছিল? আমাদের সমাজে অনেক দ্বন্দ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় দ্বন্দ্ব ছিল নির্যাতন। সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হচ্ছিল জমিদারের হাতে। তারচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছিল গোটা ব্যবস্থার মধ্যে, যেখানে কৃষকদের সুযোগ অত্যন্ত কম ছিল। তাঁদের বড় ভূমিকাও ছিল। যাঁরা অর্থনৈতিক ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন, তাঁরা জানেন, বিভিন্ন সময়ে এই সুবিধাবাদী জনগোষ্ঠীকে সুযোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন নিয়মকানুন তৈরি হয়েছিল। নির্যাতিত হতো বাংলার মানুষ। সেই নির্যাতন প্রক্রিয়াটা কিন্তু ধার্মিক নয়। সম্প্রদায়ভিত্তিক না। ধর্মীয় সম্প্রদায়ভিত্তিক না। ভাষা–সম্প্রদায়ভিত্তিকও না। সেটি অর্থনৈতিক সম্পর্কভিত্তিক।
এই অর্থনৈতিক সম্পর্কের কথাটা শেখ সাহেব বলে গেছেন। এবং আমার মতে, এই কারণে তাঁর আত্মজীবনীটা পড়া উচিত। সেটা একটা আধুনিক বই। আমাদের ইতিহাস জীবনের একটা অন্যতম বই হচ্ছে আত্মজীবনীর বইটা। সেটা পড়ে দেখা যায়, শেখ সাহেব বিশ্লেষণগুলো করছেন যে মুসলমান জমিদারেরা হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করছেন। এই সহজ-সরল কথাটার মধ্যেই কিন্তু রয়েছে সত্যতা। তো তাহলে বাঙালি ঐতিহ্যটা কোন জায়গা থেকে আসে? মূল সম্পর্কটা হলো জমিদারের সঙ্গে কৃষকের যে দ্বন্দ্ব। এটাই হচ্ছে প্রধান দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব অনেক উপদ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। মূলত এটাই হচ্ছে বিষয়।
উপনিবেশবাদ কিন্তু একক বিষয় নয়। উপনিবেশবাদ হচ্ছে অনেক জনগোষ্ঠী মিলে। যারা উপনিবেশবাদের দালাল ছিল, তারা উপনিবেশবাদ সৃষ্টি করেছে। তারা যে শুধু সুবিধা পেয়েছে তা নয়, তারা বিনিময়ে কিছু দিয়েছে। আমাদের দেশের উপনিবেশবাদ বলতে শুধু ইংরেজকে বোঝালে চলবে না, দালালগুলো সমানভাবে উপনিবেশবাদ তৈরি করছে। এটাই হচ্ছে মৌলিক। শেখ সাহেবের আন্দোলন ও বিদ্রোহ তাদের বিরুদ্ধে। শেখ সাহেবের এই বিষয়টা যদি আমরা খেয়াল করি, তাহলে দেখব, ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের পরে ১৯৪০-এ তো স্বাধীন দেশ হওয়ার ঘোষণা হয়ে গেছে। সেই ১৯৪০-এ দেশ স্বাধীন হওয়ার কথা। স্বাধীন হওয়ার কথা পূর্ব পাকিস্তান। বিষয়টা পূর্ব পাকিস্তান নয়, বিষয়টা স্বাধীনতা। কোনো দিন বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানের সঙ্গে পরাধীন অবস্থায় থাকবে, এটা ছিল না। ১৯৪০ থেকে ৪৬ পর্যন্ত যত দলিল আছে তাতে দেখা যেতে পারে যে, সেই সময় স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান নিয়ে যত কথাবার্তা হয়েছে, যত বই লেখা হয়েছে, যত স্টাডি হয়েছে, যত সংগঠন তৈরি হয়েছে, সেটা ১৯৪৬–এর নির্বাচনের পরে জিন্নাহ উল্টে দিলেন। আমি মনে করি জিন্নাহ একজন অসৎ রাজনীতিবিদ, একজন সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ। নিজের সুবিধার জন্য যা প্রয়োজন হয়েছে, করেছেন। করাটাই স্বাভাবিক, যেহেতু তিনি উত্তর ভারতের মানুষ। উত্তর ভারতের মানুষেরা সব সময় বঙ্গকে দখল করতে চেয়েছে—সেটা আর্যই হোক, সেটা আফগানই হোক, সেটা মোগল হোক, সেটা পাকিস্তান হোক। এটা দখলকৃত অঞ্চল। তো দখলকৃত অঞ্চলের রাজনীতি আর দখলদার অঞ্চলের রাজনীতি তো এক হতে পারে না। সম্ভব না। সেই কারণে বাংলাদেশের যে বাস্তবতা, সেই বাস্তবতা কিন্তু তৃতীয় ধারার। একটা ধারা পাকিস্তানের, একটা ধারা ভারতের। দুটোই কিন্তু একত্রবাদের ধারা। অর্থাৎ আমরা সবাই এক। অর্থাৎ ভারতীয়রা, মানে কংগ্রেস বলছে, আমরা সবাই ইন্ডিয়ান। আর মুসলিম লীগ বলছে, আমরা সবাই মুসলমান। আর পরবর্তীকালে এসে বলছে, আমরা সবাই বাঙালি। কিন্তু তিনটা এক জিনিস না। আমাদের সমাজে মুসলমান আছে, হিন্দু আছে। বাঙালি আছে, আদিবাসী আছে। কিন্তু আমাদের একত্র করল কী? শেখ সাহেবের এই ঐতিহাসিক ভূমিকাটা পালন করা সম্ভব হলো কী করে? এটা হচ্ছে, শেখ সাহেব যে ইতিহাস থেকে সৃষ্টি হয়েছেন, অন্য মানুষেরাও কিন্তু একই ইতিহাস থেকে সৃষ্টি হয়েছেন। এই ঐতিহাসিক পরিচিতি, সংস্কৃতির পরিচিতি, অর্থাৎ আমি বাঙালি না মুসলমান ইত্যাদি ইত্যাদির চেয়েও অনেক বড়। কারণ, ভাষা বা অন্য কোনো জিনিসের যে বিরোধিতা করা যায়, তার প্রমাণ তো আমাদের দেশেই আছে। ১৯৪৭ সালে যখন ইউনাইটেড বেঙ্গল মুভমেন্ট বা যৌথ বাংলা আন্দোলন হয়েছিল, সেই যৌথ বাংলা আন্দোলনের প্রথম সমর্থন করে পরে বিরোধিতা যে করেছিল তারা ভারতের বাঙালি। অর্থাৎ এখন যারা পশ্চিমবঙ্গে থাকে। দেশভাগের যে কথা বলা হয় ১৯৪৭ সালে, তার প্রস্তাব এবং পাস করানোটা ছিল আজকের পশ্চিমবঙ্গের লোকদের। কেন করেছিল? কারণ তারা ভারতীয় হয়ে গিয়েছিল। তাদের একটা স্বাধীন দেশ করার ইচ্ছা ছিল না, যেকোনো কারণেই হোক, ইতিহাসের দিক থেকে। এই কারণে আমাদের দেশে ভাবনাটাই থাকে না যে, আমরা বাঙালি হিসেবেও এক। আমরা ৪০ সালের স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের কথা বলেছি। আমরা যৌথ পাকিস্তান, তার অধীনে যে থাকব, তার কথা আমরা কোনো দিন বলিনি। তাই যদি হয়, তাহলে পরিষ্কার হয়ে যায় যে আমরা তৃতীয় একটা সত্তা নিয়ে
এসেছি। তৃতীয় সত্তা কিন্তু জাতীয়তাবাদ থেকে উদ্ভূত হয়নি। আমরা যদি বাঙালি হই, তাইলে ভারতীয় বাঙালিরা আমাদের সঙ্গে থাকতে চাইল না কেন? আমরা যদি মুসলমান হব, তাহলে পাকিস্তানিরা আমাদের কেন মারল?
আমরা পাকিস্তানিও না, বাঙালিও না। যদি কোনোভাবে এ রকম পরিচিতি করা যায়, তাহলে বলতে হবে আমরা পূর্ববঙ্গ। ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় আজকে বাংলাদেশ। এই ধারাবাহিকতাকে বুঝতে হলে কিন্তু আমাদের সনাতনি জাতীয়তাবাদী ধারা থেকে সরে এসে বুঝতে হবে ইতিহাস কোন দিকে আমাদের নিয়ে গেছে। ইতিহাস নিজের দিকে এগোয়। শেখ সাহেবকে বুঝতে হলে এই বিষয়টা পরিষ্কার হতে হবে যে, ইতিহাসের পরিচিতি কী, সংস্কৃতির পরিচিতি কী, জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝায় এবং সামাজিক সংগ্রামের যে জাতীয়তাবাদ, সেটা কী? সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ আর ঐতিহাসিক জাতীয়তাবাদ এক নয়। আমাদের এক করেছে আমাদের ইতিহাস। আমি মনে করি মাওলানা ভাসানীর ক্ষেত্রেও তা-ই। এখানে শেষ কথা আমি বলছি, ধারাবাহিকতাটা কীভাবে রক্ষা করতে হয়। দেখতে হয়, ১৯৩০ সালে এই লোকটা, মাওলানা ভাসানী মুসলিম লীগে যোগদান করেছেন। তিনি আর কংগ্রেস করেন না তখন। কেন করেছেন? কারণ সাধারণ মানুষেরা আসামে গিয়ে কষ্ট করছে, থাকছে। তাদের পক্ষে কে দাঁড়াবে? মাওলানা ভাসানী দাঁড়িয়েছেন। শেখ সাহেব যখন মুসলিম লীগ করতে গিয়েছেন, তিনি কি মুসলমান পরিচয় নিয়ে গেছেন? শেখ সাহেব গেছেন সংগ্রামী, নির্যাতিত মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে। শেখ সাহেবের আত্মজীবনীতেই তা আছে। শেখ সাহেব প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন। আমাদের ইতিহাস হচ্ছে প্রতিবাদ এবং সংগ্রাম। আমরা যে ধর্মীয় চর্চা করে জাতীয়তাবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে ভুলে গিয়েছি, আমাদের জাতীয় চরিত্র হচ্ছে সংগ্রাম, আমাদের জাতীয় চরিত্র হচ্ছে প্রতিবাদ। এবং এটাই আমাদের পরিচিতি থাকবে। যত দিন আমরা মুক্তভাবে ইতিহাসকে দেখতে না শিখব, তত দিন আমরা বুঝতে পারব না শেখ মুজিবুর রহমানকে, বুঝতে পারব না মাওলানা ভাসানীকে। এবং বুঝতে পারব না বাংলাদেশকে।
আফসান চৌধুরী
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে ইতিহাসচর্চার একটা সমস্যা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা এটাকে একটা পবিত্র বিষয় মনে করি। বিশ্লেষণের দিকে না গিয়ে যদি কোনো কিছুতে ধারণা থাকে, সেই ধারণাটা আঁকড়ে ধরি, তার বিপক্ষে বা অন্যদিক থেকে এটা দেখার চেষ্টা করি না। এই অসহিষ্ণুতা আমাদের ইতিহাসচর্চাকে অনেকটা আক্রান্ত করেছে।
২৮ জুন ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে ইতিহাসচর্চার একটা সমস্যা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা এটাকে একটা পবিত্র বিষয় মনে করি। বিশ্লেষণের দিকে না গিয়ে যদি কোনো কিছুতে ধারণা থাকে, সেই ধারণাটা আঁকড়ে ধরি, তার বিপক্ষে বা অন্যদিক থেকে এটা দেখার চেষ্টা করি না। এই অসহিষ্ণুতা আমাদের ইতিহাসচর্চাকে অনেকটা আক্রান্ত করেছে।
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে ইতিহাসচর্চার একটা সমস্যা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা এটাকে একটা পবিত্র বিষয় মনে করি। বিশ্লেষণের দিকে না গিয়ে যদি কোনো কিছুতে ধারণা থাকে, সেই ধারণাটা আঁকড়ে ধরি, তার বিপক্ষে বা অন্যদিক থেকে এটা দেখার চেষ্টা করি না। এই অসহিষ্ণুতা আমাদের ইতিহাসচর্চাকে অনেকটা আক্রান্ত করেছে।
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

বাংলাদেশে ইতিহাসচর্চার একটা সমস্যা হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা এটাকে একটা পবিত্র বিষয় মনে করি। বিশ্লেষণের দিকে না গিয়ে যদি কোনো কিছুতে ধারণা থাকে, সেই ধারণাটা আঁকড়ে ধরি, তার বিপক্ষে বা অন্যদিক থেকে এটা দেখার চেষ্টা করি না। এই অসহিষ্ণুতা আমাদের ইতিহাসচর্চাকে অনেকটা আক্রান্ত করেছে।
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫