নজরুল ইসলাম

২০২১, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য। ১৯৭১ সালের ৭ কোটি স্বাধীন বাঙালি এখন সংখ্যায় প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি বা বাংলাদেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত অতিদরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সম্ভবত ৪০তম, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনীতিতে উন্নীত হবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ১৯৭১-এ স্বাধীনতা অর্জনের পর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৮ ডলার, সুবর্ণজয়ন্তীকালে তা অন্যূন ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) ডলার, তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৭০ ডলার, বর্তমানে ২ হাজার ২২৭ ডলার। বিশ্বের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি এক বিশাল ধাঁধা। তাঁরা একে বলেন ‘পাজ্ল’ বা ‘প্যারাডক্স’। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যাপক হারে দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রক্রিয়ায় সরকারের বলিষ্ঠ তৎপরতার পাশাপাশি গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাকসহ বেশ কিছু এনজিও কয়েক দশকজুড়ে কাজ করেছে এবং তাতে ফলও পাওয়া গেছে। সরকারি নীতিমালার সুযোগ নিয়ে স্বাধীন দেশের উজ্জ্বল তরুণ উদ্যোক্তারা আধুনিক ধারার শিল্প ও বাণিজ্যব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃঢ় মঞ্চ তৈরি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক দশক ধরে (২০০৯-২০) অতি উচ্চ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হার (৬-৮%) বস্তুতই পরম আশ্চর্যের। শুধু কি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি? সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা দিকেই আজ বাংলাদেশের অগ্রগতি অতীব দৃশ্যমান এবং বহুল প্রশংসিত। অন্যদিকে বন্যা, ঝড়, ঝঞ্ঝার দেশ বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ মোকাবিলার পরীক্ষায় বিশ্বের অনুকরণীয় মডেল।
এমনকি ২০২০-২১ সালজুড়ে যে মহামারি, কোভিড-১৯, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এই মহামারি দীর্ঘস্থায়ী হলে বা আরও ভয়ংকর রূপ নিলে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হতেই পারে, যেমন হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশেই।
দুই.
কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও স্বাধীনতা–পরবর্তী ৫০ বছরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের সাফল্য, আনন্দ উদ্যাপনের বহু কারণ রয়েছে। দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু ইত্যাদি), বিদ্যুৎ উৎপাদন (এপ্রিল ২০২১-এর প্রথম সপ্তাহে সর্বোচ্চ প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট), অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি (কৃষি, শিল্প, প্রবাসী আয়, বিভিন্ন সেবা, নির্মাণ), দারিদ্র্য হ্রাসকরণের সাফল্য, নারী প্রগতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত হচ্ছি না, এসব বিষয়ে অন্যরা লিখবেন বরং আমার একান্ত নিজস্ব কিছু এলাকায় দেশের অর্জন (এবং প্রাসঙ্গিক সীমাবদ্ধতা বা দুর্বলতা) মোটাদাগে উল্লেখ করছি। আমার নিজস্ব এলাকাগুলো হলো শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা, নগর উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, সংস্কৃতি ও শিল্পকলা। তবে স্থান সংকুলানের স্বার্থে বর্তমান রচনা শুধু উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা এবং শিল্পকলার মধ্যে সীমিত রাখা হচ্ছে।
শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চতর শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসহ সকল পর্যায়েই ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সাক্ষরতার হার ১৭ শতাংশ থেকে ৭৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। (অবশ্য এই হার প্রায় শতভাগ হওয়া খুবই সম্ভব ছিল)। বিভিন্ন স্তরে নারী শিক্ষার অগ্রগতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত লিঙ্গসমতা অর্জিত হয়েছে। উচ্চতর পর্যায়েও শিক্ষায় মেয়েদের অগ্রগামিতা প্রশংসনীয়; এমনকি কৃষিশিক্ষার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তখন নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল খুবই সীমিত, শিক্ষকসংখ্যা তো অতি নগণ্য। বর্তমানে চিত্র খুবই ভিন্ন, কোনো কোনো বিভাগে নারী শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশের বহু নারী এখন উন্নত বিশ্বের অনেক প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। দেশের একাধিক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নারী।
শিক্ষার সকল স্তরেই সংখ্যাগত বিপ্লব ঘটে গেছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৯৭১ সালের মাত্র ৬ থেকে ২০২১ সালে ১৫০-এর ওপরে। অবশ্য পাশাপাশি অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোনো কোনো বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান প্রশংসিত। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (বর্তমান লেখকের চেয়ারম্যান থাকাকালে) ২০০৯ সালে উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন কর্মসূচি নামক একটি বড় মাপের কর্মসূচি গ্রহণ করে। এটি পরবর্তী সময়ে আরও বিস্তৃত হয়। বর্তমানে ভিন্ন নামে পরিচালিত হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার সুযোগ বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। কোভিড-১৯ নিয়েও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসনীয় গবেষণা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক গবেষণার সুযোগ বেড়েছে বিগত পাঁচ দশকে। এ ক্ষেত্রে কৃষি গবেষণা ও ওষুধশিল্পে অগ্রগতির কথা বলা যায়। বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খাদ্যশস্য ও অন্যান্য কৃষিপণ্য, মৎস্য, মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে এগিয়ে গেছে, তা বহুলাংশে কৃষি ও প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে গবেষণার উন্নয়নের জন্য সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষণাকেন্দ্র সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়েই পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন। এ নিয়ে গবেষণায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকার বিসিএএস (বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিস)। এই সঙ্গে স্মরণ করা যায় বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের এক কাতারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরব ভূমিকার কথা। অবশ্য বলা বাহুল্য, শিক্ষাক্ষেত্রে (এবং তা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য), জাতীয় বাজেট ও জিডিপিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ছাড়া শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বাংলাদেশে বিগত পাঁচ দশকে শিক্ষাক্ষেত্রে সংখ্যাগত ও গুণগত উন্নতি হলেও অত্যন্ত ক্ষতিকর যে প্রক্রিয়াটি শক্তি অর্জন করেছে, তা হলো সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টিকারী নানা ধারার, নানা পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থা। ধর্মভিত্তিক সংকীর্ণ শিক্ষার ব্যাপক প্রসার রীতিমতো উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের সৃষ্টির চেতনার সঙ্গে এমন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বেমানান ও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের সূত্রপাত ভাষা আন্দোলনে। স্বাধীন এই রাষ্ট্রের ভাষা বাংলা। বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ স্বভাবতই বাংলাদেশের ওপর মূলত নির্ভর করবে। সে ক্ষেত্রে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ, বাংলা একাডেমি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও পৃষ্ঠপোষকতা তো অবশ্যই অতীব জরুরি। বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির অর্জন প্রধানত স্বাধীনতা–উত্তরকালের কৃতিত্ব।
শুধু ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতার জন্যই নয়, বাংলা একাডেমির মাসব্যাপী ফেব্রুয়ারির বইমেলার (সংগত কারণে বর্তমান বছরে মার্চ-এপ্রিলে) তাৎপর্য ও গুরুত্ব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ও বহুমাত্রিক। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রেরণা এই বইমেলা।
শিল্প ও সংস্কৃতি: শিল্পকলা ভাষা, সাহিত্যসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখা বিশেষত শিল্পকলার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা-পরবর্তী পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর শাসনামলের মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতীয় উন্নয়নের প্রায় সব ক্ষেত্রেই সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নিয়ে এগিয়েছিলেন। এর অন্যতম ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যক্রমে প্রণোদনা দেওয়া। এ কাজে তিনি পাশে পেয়েছিলেন তাঁর অতি আপনজন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে। অনুকূল পরিবেশে অতি দ্রুত সফলতার দিকে এগিয়ে যায় এ দেশের চিত্রকলা ও ভাস্কর্যসহ সব সুকুমার শিল্প ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট শিল্প শাখা। তরুণ মুক্তিযোদ্ধা চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদে ফ্রান্সে উচ্চতর শিল্পশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং ক্রমান্বয়ে একজন সত্যিকারের আন্তর্জাতিক শিল্পীর মর্যাদালাভ করেন, ফ্রান্সের গৌরবজনক পদবি লাভ করেন। শিল্পী মনিরুল ইসলাম একই ভাবে স্পেনের স্বীকৃতি লাভ করেন। জাপানে সম্মানিত হন প্রবীণ শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া ও শিল্পী কাজী গিয়াসউদ্দিন। আরও বেশ কয়েকজন শিল্পী আন্তর্জাতিক শিল্পমঞ্চে কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হন। তা ছাড়া, সম্মিলিতভাবে এ দেশের শিল্পকলা অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে দ্বিবার্ষিক এশীয় শিল্পকলা প্রদর্শনী ১৯৮১ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের শিল্পকলা মঞ্চে অত্যন্ত সম্মানজনক স্বীকৃতি পেয়েছে (বাদ সেধেছে অবশ্য ২০২০ সালের করোনাভাইরাস মহামারি)। একটি উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে চিত্রকলা, ভাস্কর্য, স্থাপনাশিল্প, ফটোগ্রাফি ও ডিজিটাল আর্ট মাধ্যমে সত্যিকারের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নিদর্শন রাখা সহজ কথা নয়। বাংলাদেশের তরুণ শিল্পীরা সম্প্রতি অতি মর্যাদাবান ভেনিস বিয়েনালে নিয়মিত অংশ নিতে পারছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের শিল্পকলায় খুব বড় রকমের সাফল্য এ দেশের নারী শিল্পীদের মেধাবী সৃজনকর্ম।
শিল্পকলার উৎকর্ষ বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রেখে চলেছে ঢাকা শহরের বেশ কিছু আর্ট গ্যালারি বা শিল্পালয়। এদের মধ্যে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের গ্যালারির তৎপরতা ও পাশাপাশি অতি উন্নতমানের আর্ট পাবলিকেশনের কথা বলতেই হয়। কায়া, চিত্রকসহ আরও কয়েকটি শিল্পালয় এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
শিল্পীসমাজের একটি সাম্প্রতিক কর্মতৎপরতা বাঙালির জাতীয় জীবনে নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পেরেছে, তা হলো বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাঙালির জাতীয় চরিত্র নির্মাণে এ ধরনের উদ্যোগ ও তৎপরতার বিকল্প নেই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে করোনার মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতীকী উদ্যাপন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এর নেতৃত্বে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের মাধ্যমে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রতিকূল পরিবেশে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু করেছিলেন ছায়ানটের নেতারা।
শেষের কথা
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমার দেশের সাফল্যে আমি আমার বৃদ্ধ বয়সেও প্রচণ্ডভাবে উজ্জীবিত হই, কিন্তু একই সঙ্গে ভয়ানকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন দিবসেই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিশাল শক্তি প্রদর্শনে ও ভৌত উন্নয়নের ইতিবাচক সাফল্যের পাশাপাশি পরিবেশ, প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুষঙ্গরূপী ক্রমবর্ধমান সামাজিক বৈষম্যের বাস্তবতায়। এসব সত্ত্বেও আমি মনে করি পাঁচ দশকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও অনেক এগোবে।
নজরুল ইসলাম
শিক্ষাবিদ, নগরবিদ ও শিল্প সমালোচক
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান

২০২১, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য। ১৯৭১ সালের ৭ কোটি স্বাধীন বাঙালি এখন সংখ্যায় প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি বা বাংলাদেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত অতিদরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সম্ভবত ৪০তম, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনীতিতে উন্নীত হবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ১৯৭১-এ স্বাধীনতা অর্জনের পর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৮ ডলার, সুবর্ণজয়ন্তীকালে তা অন্যূন ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) ডলার, তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৭০ ডলার, বর্তমানে ২ হাজার ২২৭ ডলার। বিশ্বের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি এক বিশাল ধাঁধা। তাঁরা একে বলেন ‘পাজ্ল’ বা ‘প্যারাডক্স’। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যাপক হারে দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রক্রিয়ায় সরকারের বলিষ্ঠ তৎপরতার পাশাপাশি গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাকসহ বেশ কিছু এনজিও কয়েক দশকজুড়ে কাজ করেছে এবং তাতে ফলও পাওয়া গেছে। সরকারি নীতিমালার সুযোগ নিয়ে স্বাধীন দেশের উজ্জ্বল তরুণ উদ্যোক্তারা আধুনিক ধারার শিল্প ও বাণিজ্যব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃঢ় মঞ্চ তৈরি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক দশক ধরে (২০০৯-২০) অতি উচ্চ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হার (৬-৮%) বস্তুতই পরম আশ্চর্যের। শুধু কি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি? সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা দিকেই আজ বাংলাদেশের অগ্রগতি অতীব দৃশ্যমান এবং বহুল প্রশংসিত। অন্যদিকে বন্যা, ঝড়, ঝঞ্ঝার দেশ বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ মোকাবিলার পরীক্ষায় বিশ্বের অনুকরণীয় মডেল।
এমনকি ২০২০-২১ সালজুড়ে যে মহামারি, কোভিড-১৯, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এই মহামারি দীর্ঘস্থায়ী হলে বা আরও ভয়ংকর রূপ নিলে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হতেই পারে, যেমন হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশেই।
দুই.
কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও স্বাধীনতা–পরবর্তী ৫০ বছরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের সাফল্য, আনন্দ উদ্যাপনের বহু কারণ রয়েছে। দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু ইত্যাদি), বিদ্যুৎ উৎপাদন (এপ্রিল ২০২১-এর প্রথম সপ্তাহে সর্বোচ্চ প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট), অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি (কৃষি, শিল্প, প্রবাসী আয়, বিভিন্ন সেবা, নির্মাণ), দারিদ্র্য হ্রাসকরণের সাফল্য, নারী প্রগতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত হচ্ছি না, এসব বিষয়ে অন্যরা লিখবেন বরং আমার একান্ত নিজস্ব কিছু এলাকায় দেশের অর্জন (এবং প্রাসঙ্গিক সীমাবদ্ধতা বা দুর্বলতা) মোটাদাগে উল্লেখ করছি। আমার নিজস্ব এলাকাগুলো হলো শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা, নগর উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, সংস্কৃতি ও শিল্পকলা। তবে স্থান সংকুলানের স্বার্থে বর্তমান রচনা শুধু উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা এবং শিল্পকলার মধ্যে সীমিত রাখা হচ্ছে।
শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চতর শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসহ সকল পর্যায়েই ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সাক্ষরতার হার ১৭ শতাংশ থেকে ৭৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। (অবশ্য এই হার প্রায় শতভাগ হওয়া খুবই সম্ভব ছিল)। বিভিন্ন স্তরে নারী শিক্ষার অগ্রগতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত লিঙ্গসমতা অর্জিত হয়েছে। উচ্চতর পর্যায়েও শিক্ষায় মেয়েদের অগ্রগামিতা প্রশংসনীয়; এমনকি কৃষিশিক্ষার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তখন নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল খুবই সীমিত, শিক্ষকসংখ্যা তো অতি নগণ্য। বর্তমানে চিত্র খুবই ভিন্ন, কোনো কোনো বিভাগে নারী শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশের বহু নারী এখন উন্নত বিশ্বের অনেক প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। দেশের একাধিক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নারী।
শিক্ষার সকল স্তরেই সংখ্যাগত বিপ্লব ঘটে গেছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৯৭১ সালের মাত্র ৬ থেকে ২০২১ সালে ১৫০-এর ওপরে। অবশ্য পাশাপাশি অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোনো কোনো বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান প্রশংসিত। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (বর্তমান লেখকের চেয়ারম্যান থাকাকালে) ২০০৯ সালে উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন কর্মসূচি নামক একটি বড় মাপের কর্মসূচি গ্রহণ করে। এটি পরবর্তী সময়ে আরও বিস্তৃত হয়। বর্তমানে ভিন্ন নামে পরিচালিত হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার সুযোগ বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। কোভিড-১৯ নিয়েও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসনীয় গবেষণা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক গবেষণার সুযোগ বেড়েছে বিগত পাঁচ দশকে। এ ক্ষেত্রে কৃষি গবেষণা ও ওষুধশিল্পে অগ্রগতির কথা বলা যায়। বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খাদ্যশস্য ও অন্যান্য কৃষিপণ্য, মৎস্য, মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে এগিয়ে গেছে, তা বহুলাংশে কৃষি ও প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে গবেষণার উন্নয়নের জন্য সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষণাকেন্দ্র সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়েই পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন। এ নিয়ে গবেষণায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকার বিসিএএস (বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিস)। এই সঙ্গে স্মরণ করা যায় বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের এক কাতারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরব ভূমিকার কথা। অবশ্য বলা বাহুল্য, শিক্ষাক্ষেত্রে (এবং তা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য), জাতীয় বাজেট ও জিডিপিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ছাড়া শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বাংলাদেশে বিগত পাঁচ দশকে শিক্ষাক্ষেত্রে সংখ্যাগত ও গুণগত উন্নতি হলেও অত্যন্ত ক্ষতিকর যে প্রক্রিয়াটি শক্তি অর্জন করেছে, তা হলো সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টিকারী নানা ধারার, নানা পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থা। ধর্মভিত্তিক সংকীর্ণ শিক্ষার ব্যাপক প্রসার রীতিমতো উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের সৃষ্টির চেতনার সঙ্গে এমন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বেমানান ও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের সূত্রপাত ভাষা আন্দোলনে। স্বাধীন এই রাষ্ট্রের ভাষা বাংলা। বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ স্বভাবতই বাংলাদেশের ওপর মূলত নির্ভর করবে। সে ক্ষেত্রে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ, বাংলা একাডেমি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও পৃষ্ঠপোষকতা তো অবশ্যই অতীব জরুরি। বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির অর্জন প্রধানত স্বাধীনতা–উত্তরকালের কৃতিত্ব।
শুধু ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতার জন্যই নয়, বাংলা একাডেমির মাসব্যাপী ফেব্রুয়ারির বইমেলার (সংগত কারণে বর্তমান বছরে মার্চ-এপ্রিলে) তাৎপর্য ও গুরুত্ব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ও বহুমাত্রিক। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রেরণা এই বইমেলা।
শিল্প ও সংস্কৃতি: শিল্পকলা ভাষা, সাহিত্যসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখা বিশেষত শিল্পকলার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা-পরবর্তী পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর শাসনামলের মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতীয় উন্নয়নের প্রায় সব ক্ষেত্রেই সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নিয়ে এগিয়েছিলেন। এর অন্যতম ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যক্রমে প্রণোদনা দেওয়া। এ কাজে তিনি পাশে পেয়েছিলেন তাঁর অতি আপনজন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে। অনুকূল পরিবেশে অতি দ্রুত সফলতার দিকে এগিয়ে যায় এ দেশের চিত্রকলা ও ভাস্কর্যসহ সব সুকুমার শিল্প ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট শিল্প শাখা। তরুণ মুক্তিযোদ্ধা চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদে ফ্রান্সে উচ্চতর শিল্পশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং ক্রমান্বয়ে একজন সত্যিকারের আন্তর্জাতিক শিল্পীর মর্যাদালাভ করেন, ফ্রান্সের গৌরবজনক পদবি লাভ করেন। শিল্পী মনিরুল ইসলাম একই ভাবে স্পেনের স্বীকৃতি লাভ করেন। জাপানে সম্মানিত হন প্রবীণ শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া ও শিল্পী কাজী গিয়াসউদ্দিন। আরও বেশ কয়েকজন শিল্পী আন্তর্জাতিক শিল্পমঞ্চে কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হন। তা ছাড়া, সম্মিলিতভাবে এ দেশের শিল্পকলা অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে দ্বিবার্ষিক এশীয় শিল্পকলা প্রদর্শনী ১৯৮১ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের শিল্পকলা মঞ্চে অত্যন্ত সম্মানজনক স্বীকৃতি পেয়েছে (বাদ সেধেছে অবশ্য ২০২০ সালের করোনাভাইরাস মহামারি)। একটি উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে চিত্রকলা, ভাস্কর্য, স্থাপনাশিল্প, ফটোগ্রাফি ও ডিজিটাল আর্ট মাধ্যমে সত্যিকারের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নিদর্শন রাখা সহজ কথা নয়। বাংলাদেশের তরুণ শিল্পীরা সম্প্রতি অতি মর্যাদাবান ভেনিস বিয়েনালে নিয়মিত অংশ নিতে পারছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের শিল্পকলায় খুব বড় রকমের সাফল্য এ দেশের নারী শিল্পীদের মেধাবী সৃজনকর্ম।
শিল্পকলার উৎকর্ষ বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রেখে চলেছে ঢাকা শহরের বেশ কিছু আর্ট গ্যালারি বা শিল্পালয়। এদের মধ্যে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের গ্যালারির তৎপরতা ও পাশাপাশি অতি উন্নতমানের আর্ট পাবলিকেশনের কথা বলতেই হয়। কায়া, চিত্রকসহ আরও কয়েকটি শিল্পালয় এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
শিল্পীসমাজের একটি সাম্প্রতিক কর্মতৎপরতা বাঙালির জাতীয় জীবনে নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পেরেছে, তা হলো বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাঙালির জাতীয় চরিত্র নির্মাণে এ ধরনের উদ্যোগ ও তৎপরতার বিকল্প নেই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে করোনার মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতীকী উদ্যাপন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এর নেতৃত্বে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের মাধ্যমে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রতিকূল পরিবেশে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু করেছিলেন ছায়ানটের নেতারা।
শেষের কথা
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমার দেশের সাফল্যে আমি আমার বৃদ্ধ বয়সেও প্রচণ্ডভাবে উজ্জীবিত হই, কিন্তু একই সঙ্গে ভয়ানকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন দিবসেই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিশাল শক্তি প্রদর্শনে ও ভৌত উন্নয়নের ইতিবাচক সাফল্যের পাশাপাশি পরিবেশ, প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুষঙ্গরূপী ক্রমবর্ধমান সামাজিক বৈষম্যের বাস্তবতায়। এসব সত্ত্বেও আমি মনে করি পাঁচ দশকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও অনেক এগোবে।
নজরুল ইসলাম
শিক্ষাবিদ, নগরবিদ ও শিল্প সমালোচক
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান
নজরুল ইসলাম

২০২১, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য। ১৯৭১ সালের ৭ কোটি স্বাধীন বাঙালি এখন সংখ্যায় প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি বা বাংলাদেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত অতিদরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সম্ভবত ৪০তম, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনীতিতে উন্নীত হবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ১৯৭১-এ স্বাধীনতা অর্জনের পর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৮ ডলার, সুবর্ণজয়ন্তীকালে তা অন্যূন ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) ডলার, তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৭০ ডলার, বর্তমানে ২ হাজার ২২৭ ডলার। বিশ্বের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি এক বিশাল ধাঁধা। তাঁরা একে বলেন ‘পাজ্ল’ বা ‘প্যারাডক্স’। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যাপক হারে দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রক্রিয়ায় সরকারের বলিষ্ঠ তৎপরতার পাশাপাশি গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাকসহ বেশ কিছু এনজিও কয়েক দশকজুড়ে কাজ করেছে এবং তাতে ফলও পাওয়া গেছে। সরকারি নীতিমালার সুযোগ নিয়ে স্বাধীন দেশের উজ্জ্বল তরুণ উদ্যোক্তারা আধুনিক ধারার শিল্প ও বাণিজ্যব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃঢ় মঞ্চ তৈরি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক দশক ধরে (২০০৯-২০) অতি উচ্চ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হার (৬-৮%) বস্তুতই পরম আশ্চর্যের। শুধু কি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি? সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা দিকেই আজ বাংলাদেশের অগ্রগতি অতীব দৃশ্যমান এবং বহুল প্রশংসিত। অন্যদিকে বন্যা, ঝড়, ঝঞ্ঝার দেশ বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ মোকাবিলার পরীক্ষায় বিশ্বের অনুকরণীয় মডেল।
এমনকি ২০২০-২১ সালজুড়ে যে মহামারি, কোভিড-১৯, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এই মহামারি দীর্ঘস্থায়ী হলে বা আরও ভয়ংকর রূপ নিলে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হতেই পারে, যেমন হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশেই।
দুই.
কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও স্বাধীনতা–পরবর্তী ৫০ বছরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের সাফল্য, আনন্দ উদ্যাপনের বহু কারণ রয়েছে। দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু ইত্যাদি), বিদ্যুৎ উৎপাদন (এপ্রিল ২০২১-এর প্রথম সপ্তাহে সর্বোচ্চ প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট), অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি (কৃষি, শিল্প, প্রবাসী আয়, বিভিন্ন সেবা, নির্মাণ), দারিদ্র্য হ্রাসকরণের সাফল্য, নারী প্রগতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত হচ্ছি না, এসব বিষয়ে অন্যরা লিখবেন বরং আমার একান্ত নিজস্ব কিছু এলাকায় দেশের অর্জন (এবং প্রাসঙ্গিক সীমাবদ্ধতা বা দুর্বলতা) মোটাদাগে উল্লেখ করছি। আমার নিজস্ব এলাকাগুলো হলো শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা, নগর উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, সংস্কৃতি ও শিল্পকলা। তবে স্থান সংকুলানের স্বার্থে বর্তমান রচনা শুধু উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা এবং শিল্পকলার মধ্যে সীমিত রাখা হচ্ছে।
শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চতর শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসহ সকল পর্যায়েই ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সাক্ষরতার হার ১৭ শতাংশ থেকে ৭৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। (অবশ্য এই হার প্রায় শতভাগ হওয়া খুবই সম্ভব ছিল)। বিভিন্ন স্তরে নারী শিক্ষার অগ্রগতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত লিঙ্গসমতা অর্জিত হয়েছে। উচ্চতর পর্যায়েও শিক্ষায় মেয়েদের অগ্রগামিতা প্রশংসনীয়; এমনকি কৃষিশিক্ষার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তখন নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল খুবই সীমিত, শিক্ষকসংখ্যা তো অতি নগণ্য। বর্তমানে চিত্র খুবই ভিন্ন, কোনো কোনো বিভাগে নারী শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশের বহু নারী এখন উন্নত বিশ্বের অনেক প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। দেশের একাধিক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নারী।
শিক্ষার সকল স্তরেই সংখ্যাগত বিপ্লব ঘটে গেছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৯৭১ সালের মাত্র ৬ থেকে ২০২১ সালে ১৫০-এর ওপরে। অবশ্য পাশাপাশি অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোনো কোনো বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান প্রশংসিত। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (বর্তমান লেখকের চেয়ারম্যান থাকাকালে) ২০০৯ সালে উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন কর্মসূচি নামক একটি বড় মাপের কর্মসূচি গ্রহণ করে। এটি পরবর্তী সময়ে আরও বিস্তৃত হয়। বর্তমানে ভিন্ন নামে পরিচালিত হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার সুযোগ বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। কোভিড-১৯ নিয়েও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসনীয় গবেষণা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক গবেষণার সুযোগ বেড়েছে বিগত পাঁচ দশকে। এ ক্ষেত্রে কৃষি গবেষণা ও ওষুধশিল্পে অগ্রগতির কথা বলা যায়। বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খাদ্যশস্য ও অন্যান্য কৃষিপণ্য, মৎস্য, মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে এগিয়ে গেছে, তা বহুলাংশে কৃষি ও প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে গবেষণার উন্নয়নের জন্য সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষণাকেন্দ্র সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়েই পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন। এ নিয়ে গবেষণায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকার বিসিএএস (বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিস)। এই সঙ্গে স্মরণ করা যায় বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের এক কাতারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরব ভূমিকার কথা। অবশ্য বলা বাহুল্য, শিক্ষাক্ষেত্রে (এবং তা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য), জাতীয় বাজেট ও জিডিপিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ছাড়া শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বাংলাদেশে বিগত পাঁচ দশকে শিক্ষাক্ষেত্রে সংখ্যাগত ও গুণগত উন্নতি হলেও অত্যন্ত ক্ষতিকর যে প্রক্রিয়াটি শক্তি অর্জন করেছে, তা হলো সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টিকারী নানা ধারার, নানা পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থা। ধর্মভিত্তিক সংকীর্ণ শিক্ষার ব্যাপক প্রসার রীতিমতো উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের সৃষ্টির চেতনার সঙ্গে এমন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বেমানান ও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের সূত্রপাত ভাষা আন্দোলনে। স্বাধীন এই রাষ্ট্রের ভাষা বাংলা। বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ স্বভাবতই বাংলাদেশের ওপর মূলত নির্ভর করবে। সে ক্ষেত্রে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ, বাংলা একাডেমি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও পৃষ্ঠপোষকতা তো অবশ্যই অতীব জরুরি। বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির অর্জন প্রধানত স্বাধীনতা–উত্তরকালের কৃতিত্ব।
শুধু ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতার জন্যই নয়, বাংলা একাডেমির মাসব্যাপী ফেব্রুয়ারির বইমেলার (সংগত কারণে বর্তমান বছরে মার্চ-এপ্রিলে) তাৎপর্য ও গুরুত্ব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ও বহুমাত্রিক। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রেরণা এই বইমেলা।
শিল্প ও সংস্কৃতি: শিল্পকলা ভাষা, সাহিত্যসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখা বিশেষত শিল্পকলার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা-পরবর্তী পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর শাসনামলের মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতীয় উন্নয়নের প্রায় সব ক্ষেত্রেই সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নিয়ে এগিয়েছিলেন। এর অন্যতম ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যক্রমে প্রণোদনা দেওয়া। এ কাজে তিনি পাশে পেয়েছিলেন তাঁর অতি আপনজন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে। অনুকূল পরিবেশে অতি দ্রুত সফলতার দিকে এগিয়ে যায় এ দেশের চিত্রকলা ও ভাস্কর্যসহ সব সুকুমার শিল্প ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট শিল্প শাখা। তরুণ মুক্তিযোদ্ধা চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদে ফ্রান্সে উচ্চতর শিল্পশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং ক্রমান্বয়ে একজন সত্যিকারের আন্তর্জাতিক শিল্পীর মর্যাদালাভ করেন, ফ্রান্সের গৌরবজনক পদবি লাভ করেন। শিল্পী মনিরুল ইসলাম একই ভাবে স্পেনের স্বীকৃতি লাভ করেন। জাপানে সম্মানিত হন প্রবীণ শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া ও শিল্পী কাজী গিয়াসউদ্দিন। আরও বেশ কয়েকজন শিল্পী আন্তর্জাতিক শিল্পমঞ্চে কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হন। তা ছাড়া, সম্মিলিতভাবে এ দেশের শিল্পকলা অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে দ্বিবার্ষিক এশীয় শিল্পকলা প্রদর্শনী ১৯৮১ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের শিল্পকলা মঞ্চে অত্যন্ত সম্মানজনক স্বীকৃতি পেয়েছে (বাদ সেধেছে অবশ্য ২০২০ সালের করোনাভাইরাস মহামারি)। একটি উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে চিত্রকলা, ভাস্কর্য, স্থাপনাশিল্প, ফটোগ্রাফি ও ডিজিটাল আর্ট মাধ্যমে সত্যিকারের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নিদর্শন রাখা সহজ কথা নয়। বাংলাদেশের তরুণ শিল্পীরা সম্প্রতি অতি মর্যাদাবান ভেনিস বিয়েনালে নিয়মিত অংশ নিতে পারছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের শিল্পকলায় খুব বড় রকমের সাফল্য এ দেশের নারী শিল্পীদের মেধাবী সৃজনকর্ম।
শিল্পকলার উৎকর্ষ বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রেখে চলেছে ঢাকা শহরের বেশ কিছু আর্ট গ্যালারি বা শিল্পালয়। এদের মধ্যে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের গ্যালারির তৎপরতা ও পাশাপাশি অতি উন্নতমানের আর্ট পাবলিকেশনের কথা বলতেই হয়। কায়া, চিত্রকসহ আরও কয়েকটি শিল্পালয় এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
শিল্পীসমাজের একটি সাম্প্রতিক কর্মতৎপরতা বাঙালির জাতীয় জীবনে নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পেরেছে, তা হলো বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাঙালির জাতীয় চরিত্র নির্মাণে এ ধরনের উদ্যোগ ও তৎপরতার বিকল্প নেই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে করোনার মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতীকী উদ্যাপন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এর নেতৃত্বে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের মাধ্যমে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রতিকূল পরিবেশে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু করেছিলেন ছায়ানটের নেতারা।
শেষের কথা
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমার দেশের সাফল্যে আমি আমার বৃদ্ধ বয়সেও প্রচণ্ডভাবে উজ্জীবিত হই, কিন্তু একই সঙ্গে ভয়ানকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন দিবসেই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিশাল শক্তি প্রদর্শনে ও ভৌত উন্নয়নের ইতিবাচক সাফল্যের পাশাপাশি পরিবেশ, প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুষঙ্গরূপী ক্রমবর্ধমান সামাজিক বৈষম্যের বাস্তবতায়। এসব সত্ত্বেও আমি মনে করি পাঁচ দশকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও অনেক এগোবে।
নজরুল ইসলাম
শিক্ষাবিদ, নগরবিদ ও শিল্প সমালোচক
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান

২০২১, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য। ১৯৭১ সালের ৭ কোটি স্বাধীন বাঙালি এখন সংখ্যায় প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি বা বাংলাদেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত অতিদরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সম্ভবত ৪০তম, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনীতিতে উন্নীত হবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ১৯৭১-এ স্বাধীনতা অর্জনের পর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৮ ডলার, সুবর্ণজয়ন্তীকালে তা অন্যূন ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) ডলার, তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৭০ ডলার, বর্তমানে ২ হাজার ২২৭ ডলার। বিশ্বের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি এক বিশাল ধাঁধা। তাঁরা একে বলেন ‘পাজ্ল’ বা ‘প্যারাডক্স’। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যাপক হারে দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রক্রিয়ায় সরকারের বলিষ্ঠ তৎপরতার পাশাপাশি গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাকসহ বেশ কিছু এনজিও কয়েক দশকজুড়ে কাজ করেছে এবং তাতে ফলও পাওয়া গেছে। সরকারি নীতিমালার সুযোগ নিয়ে স্বাধীন দেশের উজ্জ্বল তরুণ উদ্যোক্তারা আধুনিক ধারার শিল্প ও বাণিজ্যব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃঢ় মঞ্চ তৈরি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক দশক ধরে (২০০৯-২০) অতি উচ্চ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হার (৬-৮%) বস্তুতই পরম আশ্চর্যের। শুধু কি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি? সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা দিকেই আজ বাংলাদেশের অগ্রগতি অতীব দৃশ্যমান এবং বহুল প্রশংসিত। অন্যদিকে বন্যা, ঝড়, ঝঞ্ঝার দেশ বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ মোকাবিলার পরীক্ষায় বিশ্বের অনুকরণীয় মডেল।
এমনকি ২০২০-২১ সালজুড়ে যে মহামারি, কোভিড-১৯, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এই মহামারি দীর্ঘস্থায়ী হলে বা আরও ভয়ংকর রূপ নিলে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হতেই পারে, যেমন হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশেই।
দুই.
কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও স্বাধীনতা–পরবর্তী ৫০ বছরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের সাফল্য, আনন্দ উদ্যাপনের বহু কারণ রয়েছে। দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু ইত্যাদি), বিদ্যুৎ উৎপাদন (এপ্রিল ২০২১-এর প্রথম সপ্তাহে সর্বোচ্চ প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট), অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি (কৃষি, শিল্প, প্রবাসী আয়, বিভিন্ন সেবা, নির্মাণ), দারিদ্র্য হ্রাসকরণের সাফল্য, নারী প্রগতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত হচ্ছি না, এসব বিষয়ে অন্যরা লিখবেন বরং আমার একান্ত নিজস্ব কিছু এলাকায় দেশের অর্জন (এবং প্রাসঙ্গিক সীমাবদ্ধতা বা দুর্বলতা) মোটাদাগে উল্লেখ করছি। আমার নিজস্ব এলাকাগুলো হলো শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা, নগর উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, সংস্কৃতি ও শিল্পকলা। তবে স্থান সংকুলানের স্বার্থে বর্তমান রচনা শুধু উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা এবং শিল্পকলার মধ্যে সীমিত রাখা হচ্ছে।
শিক্ষা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চতর শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসহ সকল পর্যায়েই ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সাক্ষরতার হার ১৭ শতাংশ থেকে ৭৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। (অবশ্য এই হার প্রায় শতভাগ হওয়া খুবই সম্ভব ছিল)। বিভিন্ন স্তরে নারী শিক্ষার অগ্রগতি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত লিঙ্গসমতা অর্জিত হয়েছে। উচ্চতর পর্যায়েও শিক্ষায় মেয়েদের অগ্রগামিতা প্রশংসনীয়; এমনকি কৃষিশিক্ষার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তখন নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল খুবই সীমিত, শিক্ষকসংখ্যা তো অতি নগণ্য। বর্তমানে চিত্র খুবই ভিন্ন, কোনো কোনো বিভাগে নারী শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশের বহু নারী এখন উন্নত বিশ্বের অনেক প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। দেশের একাধিক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নারী।
শিক্ষার সকল স্তরেই সংখ্যাগত বিপ্লব ঘটে গেছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৯৭১ সালের মাত্র ৬ থেকে ২০২১ সালে ১৫০-এর ওপরে। অবশ্য পাশাপাশি অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোনো কোনো বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান প্রশংসিত। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (বর্তমান লেখকের চেয়ারম্যান থাকাকালে) ২০০৯ সালে উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন কর্মসূচি নামক একটি বড় মাপের কর্মসূচি গ্রহণ করে। এটি পরবর্তী সময়ে আরও বিস্তৃত হয়। বর্তমানে ভিন্ন নামে পরিচালিত হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণার সুযোগ বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। কোভিড-১৯ নিয়েও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসনীয় গবেষণা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক গবেষণার সুযোগ বেড়েছে বিগত পাঁচ দশকে। এ ক্ষেত্রে কৃষি গবেষণা ও ওষুধশিল্পে অগ্রগতির কথা বলা যায়। বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খাদ্যশস্য ও অন্যান্য কৃষিপণ্য, মৎস্য, মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে এগিয়ে গেছে, তা বহুলাংশে কৃষি ও প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে গবেষণার উন্নয়নের জন্য সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষণাকেন্দ্র সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়েই পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন। এ নিয়ে গবেষণায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকার বিসিএএস (বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিস)। এই সঙ্গে স্মরণ করা যায় বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের এক কাতারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরব ভূমিকার কথা। অবশ্য বলা বাহুল্য, শিক্ষাক্ষেত্রে (এবং তা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য), জাতীয় বাজেট ও জিডিপিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ছাড়া শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বাংলাদেশে বিগত পাঁচ দশকে শিক্ষাক্ষেত্রে সংখ্যাগত ও গুণগত উন্নতি হলেও অত্যন্ত ক্ষতিকর যে প্রক্রিয়াটি শক্তি অর্জন করেছে, তা হলো সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টিকারী নানা ধারার, নানা পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থা। ধর্মভিত্তিক সংকীর্ণ শিক্ষার ব্যাপক প্রসার রীতিমতো উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের সৃষ্টির চেতনার সঙ্গে এমন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বেমানান ও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের সূত্রপাত ভাষা আন্দোলনে। স্বাধীন এই রাষ্ট্রের ভাষা বাংলা। বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ স্বভাবতই বাংলাদেশের ওপর মূলত নির্ভর করবে। সে ক্ষেত্রে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ, বাংলা একাডেমি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও পৃষ্ঠপোষকতা তো অবশ্যই অতীব জরুরি। বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির অর্জন প্রধানত স্বাধীনতা–উত্তরকালের কৃতিত্ব।
শুধু ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতার জন্যই নয়, বাংলা একাডেমির মাসব্যাপী ফেব্রুয়ারির বইমেলার (সংগত কারণে বর্তমান বছরে মার্চ-এপ্রিলে) তাৎপর্য ও গুরুত্ব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ও বহুমাত্রিক। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রেরণা এই বইমেলা।
শিল্প ও সংস্কৃতি: শিল্পকলা ভাষা, সাহিত্যসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখা বিশেষত শিল্পকলার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা-পরবর্তী পাঁচ দশকে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর শাসনামলের মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতীয় উন্নয়নের প্রায় সব ক্ষেত্রেই সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নিয়ে এগিয়েছিলেন। এর অন্যতম ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যক্রমে প্রণোদনা দেওয়া। এ কাজে তিনি পাশে পেয়েছিলেন তাঁর অতি আপনজন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে। অনুকূল পরিবেশে অতি দ্রুত সফলতার দিকে এগিয়ে যায় এ দেশের চিত্রকলা ও ভাস্কর্যসহ সব সুকুমার শিল্প ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট শিল্প শাখা। তরুণ মুক্তিযোদ্ধা চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদে ফ্রান্সে উচ্চতর শিল্পশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং ক্রমান্বয়ে একজন সত্যিকারের আন্তর্জাতিক শিল্পীর মর্যাদালাভ করেন, ফ্রান্সের গৌরবজনক পদবি লাভ করেন। শিল্পী মনিরুল ইসলাম একই ভাবে স্পেনের স্বীকৃতি লাভ করেন। জাপানে সম্মানিত হন প্রবীণ শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া ও শিল্পী কাজী গিয়াসউদ্দিন। আরও বেশ কয়েকজন শিল্পী আন্তর্জাতিক শিল্পমঞ্চে কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হন। তা ছাড়া, সম্মিলিতভাবে এ দেশের শিল্পকলা অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে দ্বিবার্ষিক এশীয় শিল্পকলা প্রদর্শনী ১৯৮১ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের শিল্পকলা মঞ্চে অত্যন্ত সম্মানজনক স্বীকৃতি পেয়েছে (বাদ সেধেছে অবশ্য ২০২০ সালের করোনাভাইরাস মহামারি)। একটি উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে চিত্রকলা, ভাস্কর্য, স্থাপনাশিল্প, ফটোগ্রাফি ও ডিজিটাল আর্ট মাধ্যমে সত্যিকারের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নিদর্শন রাখা সহজ কথা নয়। বাংলাদেশের তরুণ শিল্পীরা সম্প্রতি অতি মর্যাদাবান ভেনিস বিয়েনালে নিয়মিত অংশ নিতে পারছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের শিল্পকলায় খুব বড় রকমের সাফল্য এ দেশের নারী শিল্পীদের মেধাবী সৃজনকর্ম।
শিল্পকলার উৎকর্ষ বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রেখে চলেছে ঢাকা শহরের বেশ কিছু আর্ট গ্যালারি বা শিল্পালয়। এদের মধ্যে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের গ্যালারির তৎপরতা ও পাশাপাশি অতি উন্নতমানের আর্ট পাবলিকেশনের কথা বলতেই হয়। কায়া, চিত্রকসহ আরও কয়েকটি শিল্পালয় এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
শিল্পীসমাজের একটি সাম্প্রতিক কর্মতৎপরতা বাঙালির জাতীয় জীবনে নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পেরেছে, তা হলো বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাঙালির জাতীয় চরিত্র নির্মাণে এ ধরনের উদ্যোগ ও তৎপরতার বিকল্প নেই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে করোনার মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতীকী উদ্যাপন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এর নেতৃত্বে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের মাধ্যমে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রতিকূল পরিবেশে সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু করেছিলেন ছায়ানটের নেতারা।
শেষের কথা
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমার দেশের সাফল্যে আমি আমার বৃদ্ধ বয়সেও প্রচণ্ডভাবে উজ্জীবিত হই, কিন্তু একই সঙ্গে ভয়ানকভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন দিবসেই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিশাল শক্তি প্রদর্শনে ও ভৌত উন্নয়নের ইতিবাচক সাফল্যের পাশাপাশি পরিবেশ, প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের অনুষঙ্গরূপী ক্রমবর্ধমান সামাজিক বৈষম্যের বাস্তবতায়। এসব সত্ত্বেও আমি মনে করি পাঁচ দশকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে, ভবিষ্যতে আরও অনেক এগোবে।
নজরুল ইসলাম
শিক্ষাবিদ, নগরবিদ ও শিল্প সমালোচক
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

২০২১, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য। ১৯৭১ সালের ৭ কোটি স্বাধীন বাঙালি এখন সংখ্যায় প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি/বাংলাদেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত অতি দরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সম্ভবত ৪০তম, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনীতিতে উন্নীত হবে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া
২৮ জুন ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

২০২১, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য। ১৯৭১ সালের ৭ কোটি স্বাধীন বাঙালি এখন সংখ্যায় প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি/বাংলাদেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত অতি দরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সম্ভবত ৪০তম, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনীতিতে উন্নীত হবে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

২০২১, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য। ১৯৭১ সালের ৭ কোটি স্বাধীন বাঙালি এখন সংখ্যায় প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি/বাংলাদেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত অতি দরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সম্ভবত ৪০তম, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনীতিতে উন্নীত হবে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

২০২১, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের অর্জন অসামান্য। ১৯৭১ সালের ৭ কোটি স্বাধীন বাঙালি এখন সংখ্যায় প্রায় ১৭ কোটি বাঙালি/বাংলাদেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত অতি দরিদ্র বাংলাদেশ এখন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সম্ভবত ৪০তম, ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনীতিতে উন্নীত হবে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া
২৮ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫