Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে সপ্তাহে ৫ দিন ‘মিড ডে মিল’

এস. এম. রকি, খানসামা (দিনাজপুর)
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৯: ০৪
শিক্ষার্থীদের জন্য খিচুড়ি রান্না করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষার্থীদের জন্য খিচুড়ি রান্না করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি ও পড়াশোনার মানোন্নয়নে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন শিক্ষকেরা। নিজ উদ্যোগেই এই স্কুলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে ৫ দিন ডিম কিংবা পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার এবং প্রতি বৃহস্পতিবার খিচুড়ি খাওয়ানো হচ্ছে। শিক্ষকদের এমন উদ্যোগে স্কুলে নিয়মিত শিক্ষার্থী উপস্থিতি আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২২ সাল থেকে ব্যতিক্রমী এই কাজ করা প্রতিষ্ঠান দলি গুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের গুলিয়ারা গ্রামে অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দলি গুলিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয় ২০১৩ সালে।

২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫০ জন। সে সময় দৈনিক ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থীরা আসত। এখন শিক্ষার্থী আছে ৮৪ জন। আজ বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে ৭৫ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ৬ জন।

শিক্ষক ও অভিভাবকেরা জানায়, ২০১৮ সালে দলি গুলিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মো. আক্তারুজ্জামান। ওই সময় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ও উপস্থিতি ছিল কম। তাই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে প্রধান শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করা এবং ঝরে পড়া রোধে নিজেই উদ্যোগ নিলেন পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার।

এরপর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং অভিভাবকদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় সবার সম্মতি নিলেন। ২০২২ সালের জুন মাস থেকে দলি গুলিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হয় ‘মিড ডে মিল’। যেটি এখনো চলমান।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই স্কুল ক্যাম্পাস গিয়ে দেখা যায়, এক শিক্ষক খিচুড়ি রান্নার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাঁকে সহায়তা করছে এক অভিভাবক। রান্না শেষ হতে হতেই বেলা ১টা ৫০ মিনিটের দিকে বিরতির ঘণ্টা বেজে উঠল। বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে এল শিক্ষার্থীরা। এ সময় হই-হুল্লোড় করে বেসিন ও টিউবওয়েলে হাত ধোয়া, প্লেট পরিষ্কার ও পানির বোতল ভর্তিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা।

বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে বসে খিচুড়ি খাচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে বসে খিচুড়ি খাচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

হাত ধুয়ে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে শুরু করল দুপুরের খাবার। এতে প্রধান শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামানসহ অন্য সহকারী শিক্ষকেরা পরিবেশনে ব্যস্ত দেখা যায়।

এমন আয়োজনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি যেমন বেড়েছে, তেমনি দুপুরে খাবার পেয়ে খুশি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।

সহকারী শিক্ষক মনমত কুমার রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম ছিল। বর্তমান প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে তাঁরা নানামুখী উদ্যোগ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার আয়োজনের মাধ্যমে ভর্তি ও উপস্থিতি আরও বেড়েছে। এখন উপস্থিতি হার প্রায় ৯০ শতাংশ।

শিক্ষার্থী প্রীতম, জিৎ, মনিষা ও কাকলীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, সঠিক সময়ে বাসায় রান্না না হওয়া এবং প্রতিদিন স্কুলে আসার পরে ক্ষুধার জন্য বাড়ি চলে যাওয়া বন্ধ করতে স্যারদের এই আয়োজন ভালোই লাগে। ডিমসহ নানা খাবার দেয় ও বৃহস্পতিবার খিচুড়ি ও ডিম ভাজি খাওয়ায় স্যারেরা।

রিমা রাণী রায় নামে এক অভিভাবক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষকদের এমন আয়োজনে সবাই খুশি। বাড়ির কাজের ফাঁকে এমন আয়োজনে স্কুলের অভিভাবকরাও সহযোগিতা করে থাকি।’

রমা রাণী রায় নামে রান্নার কাজে সম্পৃক্ত এক শিক্ষক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ক্ষুধামুক্ত থাকলে পড়াশোনায় মনোযোগ থাকবে। তাই এমন আয়োজন। এতেই আমাদের ভালোই লাগে। কেননা এতে বাচ্চারা ভালো থাকে ও নিয়মিত স্কুলে আসে।’

দলি গুলিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর দেখতে পান অধিকাংশই খেটে খাওয়া মানুষ। অভাব-অনটনের কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত স্কুলে আসত না। অনেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। তাই নিয়মিত শিক্ষার্থী উপস্থিতি, শিক্ষার মানোন্নয়নসহ ঝরে পড়া রোধে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতেই এমন উদ্যোগ নেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এই আয়োজনে প্রতি মাসে তাঁর ৭-৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এই ব্যয় বহন করা কষ্টসাধ্য তাই, এমন আয়োজনে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এমন উদ্যোগ ধরে রাখার সঙ্গে পরিধিও বৃদ্ধি করা যাবে।

এ বিষয়ে ভাবকী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিজ অর্থায়নে ওই স্কুলের শিক্ষকদের এমন উদ্যোগ বেশ প্রশংসনীয়। তাঁদের এমন ইতিবাচক কাজে ইউনিয়ন পরিষদ পাশে থাকবে।

স্ব-উদ্যোগে বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবার এমন উদ্যোগই পারবে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত স্কুলে উপস্থিতি ও একসঙ্গে খাওয়ার ফলে তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব তৈরি হবে। যেটি তাদের মানবিক করে তুলবে। এমন প্রশংসনীয় উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রিয়ায় টিউশন ফি নেই

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুন্দরবন থেকে ৭ জেলেকে অপহরণ জলদস্যু ডন বাহিনীর, মুক্তিপণ দাবি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সুন্দরবন। ছবি: সংগৃহীত
সুন্দরবন। ছবি: সংগৃহীত

সুন্দরবন থেকে সাত জেলেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। জলদস্যু ‘ডন বাহিনী’ অপহৃত প্রত্যেকের পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসতে সক্ষম দুই জেলে জানিয়েছেন।

আজ রোববার সকালে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের মালঞ্চ নদীর হাঁসখালী, চেলাকাটা ও হেতালবুনি খাল থেকে ওই সাতজনকে অপহরণ করা হয়।

অপহৃত জেলেরা হলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ (৫০), ইব্রাহিম হোসেন (৪৫), আনারুল ইসলাম (২২), নাজমুল হক (৩৪), শামিম হোসেন (৩৬), আনোয়ার হোসেন (৩২) ও হরিনগর গ্রামের মুজিবুল হোসেন (৩৫)।

সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা দুই জেলে ফজর আলী ও সবুজ মিয়া জানান, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কদমতলা স্টেশন থেকে তাঁরা তিন দিন আগে অনুমতি নিয়ে কাঁকড়া ধরার জন্য সুন্দরবনে যান। বনে গিয়ে কাঁকড়া শিকারের জন্য আজ তাঁরা মালঞ্চ নদীর বিভিন্ন খালে অবস্থান করছিলেন। সকাল ৮টার দিকে তিনটি নৌকায় ১০ জন বন্দুকধারী তাঁদের ঘিরে ফেলেন। প্রতি নৌকা থেকে একজন করে উঠিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় দস্যুরা বিকাশ নম্বর দিয়ে সেখানে মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তিন দিনের মধ্যে মুক্তিপণের টাকা না দিলে অপহৃত জেলেদের হাত-পা ভেঙে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ওই দুই জেলে আরও জানান, ঋণ করে টাকা নিয়ে কাঁকড়া শিকারের জন্য তাঁরা বনে গিয়েছিলেন। এখন চালান তুলতে না পারার পাশাপাশি মুক্তিপণ দিয়ে সহকর্মীদের ছাড়াতে হবে। প্রতিজনের মুক্তিপণ বাবদ ডন বাহিনী ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছে।

জানতে চাইলে সুন্দরবনের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

বন বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ডন বাহিনী ২০১৮ সালে আত্মসমর্পণ করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি অলিম ও রবিউল বাহিনীর মতো ডন বাহিনীও আগের মতো সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু করেছে। বাহিনীপ্রধানের বাড়ি খুলনা হলেও তাঁর দলের অনেকের বাড়ি শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রিয়ায় টিউশন ফি নেই

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়ন বিরোধে কালিয়াকৈরে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ-আগুন, আহত ১০

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কালিয়াকৈরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সময় ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কালিয়াকৈরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সময় ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর-১ (কালিয়াকৈর-সিটি আংশিক) আসনে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কালিয়াকৈরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি নির্বাচনী প্রচার অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী, কালিয়াকৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান এবং ‘মনোনয়নবঞ্চিত’ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ইশরাক সিদ্দিকীর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ইশরাক সিদ্দিকীর সমর্থকেরা আজ বিকেলে উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ডাকে। পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচিতে যোগ দিলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মুজিবুর রহমানের ২০-২৫ জন সমর্থক তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীদের কাছ থেকে ১০টি মোটরসাইকেল আটক করে তাতে অগ্নিসংযোগ করেন ইসরাকের সমর্থকেরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নেভান।

ইশরাক সিদ্দিকীর দাবি, ‘এই আসনের মনোনয়ন ঘিরে এলাকার স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ কাজ করছিল। তারই প্রতিফলন হিসেবে আজকে বিক্ষোভ করার কথা ছিল। কিন্তু বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মুজিবুর রহমানের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হাতেনাতে কয়েকজনকে আটকও করা হয়। এ ঘটনার পর পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মুজিবুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে তাঁর এক সমর্থক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাবি করেন, তাঁরা গণসংযোগ করতে গেলে ইশরাক সিদ্দিকীর লোকজনের সঙ্গে তাঁদের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আশফাকুজ্জামান বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তি বজায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মুজিবুর রহমানকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। এই আসনে ইশরাক সিদ্দিকীসহ বেশ কয়েকজন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রিয়ায় টিউশন ফি নেই

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘বাকসু’ নিয়ে টানাটানি, ক্ষুব্ধ বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সংক্ষিপ্ত নাম ‘বাকসু’ অনুমোদনের প্রতিবাদে আজ রোববার বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সংক্ষিপ্ত নাম ‘বাকসু’ অনুমোদনের প্রতিবাদে আজ রোববার বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সংক্ষিপ্ত নাম ‘বাকসু’ অনুমোদনের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি, বিএম কলেজের ছাত্র সংসদ অনেক আগে থেকেই ‘বাকসু’ হিসেবে পরিচিত। ববি সেই নাম নিয়ে টানাটানি করছে।

এর প্রতিবাদে আজ রোববার দুপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের সামনে অবস্থান নেন বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তাঁরা দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান। এ সময় কিছু সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ববি শিক্ষার্থীদের ইঙ্গিত করে ‘বাকসু চোর’, ‘বাকসু চোর’ বলে স্লোগন দেন।

সস্প্রতি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র সংসদের নাম বাকসু হিসেবে অনুমোদন দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বলেন, ‘বাকসু বিএম কলেজের ৭২ বছরের ঐতিহ্য। হুট করে কেউ এসে বাকসু নাম দাবি করবেন, তা আমাদের জীবন থাকতে হবে না। তাঁরা যদি এই নাম নিয়ে টানাটানির সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে বরিশালে তাঁদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।’

শিক্ষার্থী সুমি হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা বাকসু নির্বাচন নিয়ে আন্দোলন করছি। আজকে বাধ্য হয়ে দুই দফা দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি। দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরব।’

জানা গেছে, বরিশালের বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের নাম ১৯৫২ সাল থেকে বাকসু হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সম্প্রতি ববি সিন্ডিকেটে তাদের ছাত্র সংসদের নামও বাকসু হিসেবে অনুমোদন দেয়। এর আগে বিএম কলেজ ও ববি সমঝোতা বৈঠকে বসলেও কোনো সমাধান হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রিয়ায় টিউশন ফি নেই

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রোজার আগেই নির্বাচন হতে হবে, যত বিলম্ব হবে তত শঙ্কা বাড়বে: মান্না

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘রোজার আগে নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচন যত বিলম্ব হবে তত শঙ্কা হবে। আগে নির্বাচন কমিশন বলেছিল চলতি মাসের ৭-৮ তারিখের দিকে তফসিল ঘোষণা করা হবে। তারপর শোনা গেল ১১ তারিখ তফসিল ঘোষণা হবে। এখন নির্বাচন কমিশন বলছে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কোনো কথা বলবে না। আমরা পত্রিকায় দেখেছি। কিন্তু আমরা বলেছি, রোজার আগেই নির্বাচন হতে হবে।’

আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কুড়িগ্রামে নাগরিক ঐক্যের জেলা কার্যালয় উদ্বোধনকালে মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সংকটের প্রতি ইঙ্গিত করে মান্না বলেন, ‘এই দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জোটে বেগম জিয়ার অসাধারণ অবদান ছিল। তিনি অনেক কষ্ট করেছেন, অনেক নির্যাতন সহ্য করেছেন। সবাই চাই তিনিও এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় থাকুন। তাঁর স্বাস্থ্য বিষয়ে সবার মাঝে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সে কারণে নির্বাচনের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় কি না—এটা আমাদের মনের মধ্যে আছে। তবে আমরা চাই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে।’

বিএনপি কিংবা সমমনা দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী জোট প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘১৫ বছরের লড়াইয়ে আমাদের সঙ্গে বিএনপিসহ অন্যান্য দল ছিল। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কারও সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা গড়ে ওঠেনি। আমরা এককভাবে কিছু করতে চাই না।’

এদিন বিকেলে জেলা শহরের কলেজ মোড়ে অবস্থিত স্বাধীনতার বিজয়স্তম্ভে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন মাহমুদুর রহমান মান্না। এ সময় তিনি বলেন, ‘জনগণের কল্যাণে যা হয়, এই অঙ্গীকার যদি কোনো দল সবার সামনে করে—তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে আছি। বিএনপি যদি করে তাহলে বিএনপির সঙ্গে আছি।’

সমাবেশে বক্তব্যকালে মান্না নাগরিক ঐক্যে নতুন যোগদানকারী জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আব্দুস সালামকে কুড়িগ্রাম-২ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।

সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জেলা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আব্দুস সালাম, সদস্যসচিব জোহবাদুল ইসলাম বাবলুসহ অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জোট চূড়ান্ত, ঘোষণা বিকেলে

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রিয়ায় টিউশন ফি নেই

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত