Ajker Patrika

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা ৬ শিক্ষার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ২২: ৩০
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা ৬ শিক্ষার্থীর

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতি চালু করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্ররাজনীতির পক্ষে থাকা তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেন। 

এ সময় তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশের নিরাপত্তার নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটারিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিক আলম, সাগর বিশ্বাস, অরিত্র ঘোষ ও ২১ ব্যাচের অর্ঘ দাস, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীর স্বপ্নীল এবং মিশুদত্ত চাঁদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আশিক আলম ও অরিত্র ঘোষ। 

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, ‘আমাদের হলের রুমে বঙ্গবন্ধু ও আপনার (শেখ হাসিনা) ছবি রাখতে চাইলেও আমাদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে “বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা” বিষয়ক ক্লাব প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেও তাঁর বিরোধিতা করে সমালোচনা করা হয়। যার কারণে এই ক্লাব প্রতিষ্ঠায় আমাদের পিছপা হতে হয়। এমনকি বর্তমানে এই সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় আমাদের জীবন হুমকিসহ নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। শিবির পরিচালিত “বাঁশেরকেল্লা”র পক্ষ থেকে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের নাম, মোবাইল নম্বর, শিক্ষার্থী নম্বর থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ম্যাসেজিং অ্যাপসগুলো ব্যবহার করে। যার প্রমাণ এরই মধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা আরও বলেন, ‘হে দেশরত্ন, বঙ্গবন্ধু তনয়া, আমাদের সাহায্য করুন। আমরা বিশ্বাস করি ভিন্ন-অভিন্ন সকল মতের সাধারণ বুয়েট শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে স্বাভাবিক ও নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চাই। আমরা চাই না আমাদের ক্যাম্পাস জঙ্গী তৈরীর কারখানা হোক। আমরা চাই না দেশে দ্বীপ ভাই, সনি আপু ও আবরার ফাহাদ ভাইয়ের মতো নির্মম ঘটনা ঘটুক, আমরা দ্বিতীয় কোনো হলি আর্টিজান ঘটনাও চাই না। আমরা চাইনা তন্ময় ভাইয়ের মতো কেউ শিবিরের নৃশংস হামলার ক্ষত চিহ্ন নিয়ে জীবনযাপন করুক। আমরা সবাই জানি বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত মুক্তবুদ্ধি চর্চার মুক্তমঞ্চ। সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার কাছে আমাদের এই আকুল আবেদন।’ 

তাঁরা আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আমরা আমাদের আকুল আরজি রাখলাম যে নিরাপদ ও স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্যাম্পাস উপহার দিন। দেশ ও দশের প্রতি ভালোবাসা রেখে সকলের কল্যাণকে মাথায় রেখে আমরা ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক পরিস্থিতি চাই এবং জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমরা বুয়েট ক্যাম্পাসে নিরাপদে এবং সৎ সাহসের সঙ্গে প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চা করতে চাই।’ 

এদিকে ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধের আন্দোলনের এক সংগঠক নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো আপডেট থাকলে আপনাদের জানানো হবে, আমাদের এখন কর্মসূচি নেই। নিয়মতান্ত্রিকভাবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।’ 

গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বুয়েটে প্রবেশকে কেন্দ্র করে ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে একদল শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগ সভাপতিকে ঢুকতে সহযোগিতা করায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বির সিট বাতিল, বহিষ্কারসহ ছয় দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রাব্বির সিট বাতিলও করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...