*এনসিপির সমাবেশে হামলা *সংঘর্ষ *গুলি *আহত শতাধিক *দেশজুড়ে বিক্ষোভ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকায় ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে খুলনায় চলে যান। তবে আগামীকাল ফরিদপুরে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্লা (৪৫)। তাঁরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ, আগুন
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন পুলিশ গেলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতেও ভাঙচুর চালান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদরের ইউএনও এম রকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়ির চালক আহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ করা হয়।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশের তিন সদস্য হলেন সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার ও মিনহাজ। তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ ছাড়া কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোপালগঞ্জে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে পদযাত্রা ও সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পথে পথে বাধার কারণে তাঁদের পৌঁছাতে দেরি হয়। পরে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে: নাহিদ ইসলাম
বাধার মুখেও বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’ তিনি বলেন, মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
পদযাত্রায় হামলা
বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে পদযাত্রার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা কারাগারে হামলা
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা জেলা কারাগারে হামলা করে। তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের একত্র করে সেনা পাহারায় বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লারহাট সেতু পার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিপির সমাবেশ ঘিরে প্রথমে হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে জেলা কারাগারেও হামলা হয়। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে কোনো আসামি পালাতে পারেনি। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে কারারক্ষীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাত ৮টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
হামলার বিষয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না: গোপালগঞ্জে সারজিস
সমাবেশে হামলার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।’ ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
ওই পোস্টে সারজিস বলেন, ‘গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।’
গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা
কড়া পাহাড়ায় এনসিপি নেতাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন। পরে তাঁরা খুলনায় যান। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে মুজিববাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদীরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই; সেটা তারা স্পষ্ট করেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, সারা দেশের ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। মামলার আসামিরা এখানে আছে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সমাবেশ করতে পারে না। আমরা আজকে সেই মিথ ভেঙে দিয়েছি।’
হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পরিস্থিতি তদারকি উপদেষ্টাদের
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে অবস্থান করে গতকাল গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের...ভেঙে দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকায় ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে খুলনায় চলে যান। তবে আগামীকাল ফরিদপুরে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্লা (৪৫)। তাঁরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ, আগুন
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন পুলিশ গেলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতেও ভাঙচুর চালান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদরের ইউএনও এম রকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়ির চালক আহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ করা হয়।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশের তিন সদস্য হলেন সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার ও মিনহাজ। তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ ছাড়া কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোপালগঞ্জে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে পদযাত্রা ও সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পথে পথে বাধার কারণে তাঁদের পৌঁছাতে দেরি হয়। পরে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে: নাহিদ ইসলাম
বাধার মুখেও বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’ তিনি বলেন, মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
পদযাত্রায় হামলা
বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে পদযাত্রার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা কারাগারে হামলা
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা জেলা কারাগারে হামলা করে। তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের একত্র করে সেনা পাহারায় বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লারহাট সেতু পার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিপির সমাবেশ ঘিরে প্রথমে হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে জেলা কারাগারেও হামলা হয়। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে কোনো আসামি পালাতে পারেনি। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে কারারক্ষীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাত ৮টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
হামলার বিষয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না: গোপালগঞ্জে সারজিস
সমাবেশে হামলার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।’ ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
ওই পোস্টে সারজিস বলেন, ‘গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।’
গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা
কড়া পাহাড়ায় এনসিপি নেতাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন। পরে তাঁরা খুলনায় যান। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে মুজিববাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদীরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই; সেটা তারা স্পষ্ট করেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, সারা দেশের ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। মামলার আসামিরা এখানে আছে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সমাবেশ করতে পারে না। আমরা আজকে সেই মিথ ভেঙে দিয়েছি।’
হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পরিস্থিতি তদারকি উপদেষ্টাদের
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে অবস্থান করে গতকাল গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের...ভেঙে দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।
*এনসিপির সমাবেশে হামলা *সংঘর্ষ *গুলি *আহত শতাধিক *দেশজুড়ে বিক্ষোভ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকায় ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে খুলনায় চলে যান। তবে আগামীকাল ফরিদপুরে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্লা (৪৫)। তাঁরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ, আগুন
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন পুলিশ গেলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতেও ভাঙচুর চালান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদরের ইউএনও এম রকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়ির চালক আহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ করা হয়।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশের তিন সদস্য হলেন সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার ও মিনহাজ। তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ ছাড়া কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোপালগঞ্জে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে পদযাত্রা ও সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পথে পথে বাধার কারণে তাঁদের পৌঁছাতে দেরি হয়। পরে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে: নাহিদ ইসলাম
বাধার মুখেও বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’ তিনি বলেন, মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
পদযাত্রায় হামলা
বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে পদযাত্রার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা কারাগারে হামলা
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা জেলা কারাগারে হামলা করে। তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের একত্র করে সেনা পাহারায় বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লারহাট সেতু পার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিপির সমাবেশ ঘিরে প্রথমে হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে জেলা কারাগারেও হামলা হয়। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে কোনো আসামি পালাতে পারেনি। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে কারারক্ষীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাত ৮টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
হামলার বিষয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না: গোপালগঞ্জে সারজিস
সমাবেশে হামলার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।’ ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
ওই পোস্টে সারজিস বলেন, ‘গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।’
গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা
কড়া পাহাড়ায় এনসিপি নেতাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন। পরে তাঁরা খুলনায় যান। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে মুজিববাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদীরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই; সেটা তারা স্পষ্ট করেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, সারা দেশের ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। মামলার আসামিরা এখানে আছে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সমাবেশ করতে পারে না। আমরা আজকে সেই মিথ ভেঙে দিয়েছি।’
হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পরিস্থিতি তদারকি উপদেষ্টাদের
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে অবস্থান করে গতকাল গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের...ভেঙে দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা করেন বলে জানিয়েছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় জেলা শহরসহ আশপাশের এলাকায় ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গোপালগঞ্জে হামলার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে তাদের আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে খুলনায় চলে যান। তবে আগামীকাল ফরিদপুরে তাঁদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে যুবলীগ সদস্য দীপ্ত সাহা (২৫), শহরের থানাপাড়ার কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার আজাদ তালুকদারের ছেলে ইমন তালুকদার (১৮) এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্লা (৪৫)। তাঁরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ আড়াই শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শেখ মো. নাবিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে আজ রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ, আগুন
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন পুলিশ গেলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতেও ভাঙচুর চালান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদরের ইউএনও এম রকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পৌঁছালে তাঁর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গাড়ির চালক আহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ করা হয়।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশের তিন সদস্য হলেন সদর উপজেলার গোপীনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহমেদ বিশ্বাস, কনস্টেবল কাওছার ও মিনহাজ। তাঁদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। এতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গাছ ফেলে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ ছাড়া কোটালীপাড়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গোপালগঞ্জে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএনের সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন। বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে পদযাত্রা ও সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পথে পথে বাধার কারণে তাঁদের পৌঁছাতে দেরি হয়। পরে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে: নাহিদ ইসলাম
বাধার মুখেও বেলা দুইটার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’ তিনি বলেন, মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
পদযাত্রায় হামলা
বেলা আড়াইটার দিকে এনসিপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে পদযাত্রার সময় শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা কারাগারে হামলা
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় জনতা জেলা কারাগারে হামলা করে। তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীদের একত্র করে সেনা পাহারায় বাগেরহাটের প্রবেশদ্বার মোল্লারহাট সেতু পার করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
ভারপ্রাপ্ত জেলার তানিয়া জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিপির সমাবেশ ঘিরে প্রথমে হামলা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে জেলা কারাগারেও হামলা হয়। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটক বন্ধ ছিল। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে কোনো আসামি পালাতে পারেনি। এর আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। তবে কারারক্ষীসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে রাত ৮টা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
হামলার বিষয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।
মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না: গোপালগঞ্জে সারজিস
সমাবেশে হামলার পর এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না।’ ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
ওই পোস্টে সারজিস বলেন, ‘গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের ওপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে। আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র-জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।’
গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা
কড়া পাহাড়ায় এনসিপি নেতাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়ে। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন। পরে তাঁরা খুলনায় যান। সেখানে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে মুজিববাদীরা হত্যার উদ্দেশ্যে জঙ্গি কায়দায় এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট ও মুজিববাদীরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তিনি সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই; সেটা তারা স্পষ্ট করেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম, সারা দেশের ফ্যাসিস্টদের আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। মামলার আসামিরা এখানে আছে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল সমাবেশ করতে পারে না। আমরা আজকে সেই মিথ ভেঙে দিয়েছি।’
হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
পরিস্থিতি তদারকি উপদেষ্টাদের
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরে অবস্থান করে গতকাল গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি তদারকি ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের...ভেঙে দেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানা-পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
২ মিনিট আগে
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।
৬ মিনিট আগে
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
৯ মিনিট আগে
ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন
১৭ মিনিট আগেচাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৬ জুলাই ২০২৫
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।
৬ মিনিট আগে
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
৯ মিনিট আগে
ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন
১৭ মিনিট আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।
এবার প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। এ ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যা আছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য সাতটি, শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি শয্যা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রোগীদের থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হয়েছে এ ওয়ার্ডে।
রামেক হাসপাতালের সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদের উদ্যোগে হাসপাতালের পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই ওয়ার্ড করা হয়েছে। গত বুধবার তিনি এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। তারা মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের অ্যাক্রেডিটেশনেও সমস্যা হতে পারে। তখন এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ কমবে। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল।
তাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এই ওয়ার্ড চালু করার জন্য হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অনুরোধ করা হয়। সবকিছু শুনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন। ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি। এরপর তিনি হাসপাতাল ও রোগীদের কল্যাণে নতুন অনেক উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। হাসপাতালকে করে তুলেছেন রোগীবান্ধব। বাড়িয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
মানসিক রোগীদের জন্য নতুন ওয়ার্ড চালুর আগে গেল ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন শামীম আহাম্মদ। এরপর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে একজন সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়নি। আগে প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হতো এ হাসপাতালে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।
এবার প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। এ ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যা আছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য সাতটি, শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি শয্যা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রোগীদের থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হয়েছে এ ওয়ার্ডে।
রামেক হাসপাতালের সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদের উদ্যোগে হাসপাতালের পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই ওয়ার্ড করা হয়েছে। গত বুধবার তিনি এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। তারা মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের অ্যাক্রেডিটেশনেও সমস্যা হতে পারে। তখন এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ কমবে। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল।
তাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এই ওয়ার্ড চালু করার জন্য হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অনুরোধ করা হয়। সবকিছু শুনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন। ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে।’
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি। এরপর তিনি হাসপাতাল ও রোগীদের কল্যাণে নতুন অনেক উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। হাসপাতালকে করে তুলেছেন রোগীবান্ধব। বাড়িয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
মানসিক রোগীদের জন্য নতুন ওয়ার্ড চালুর আগে গেল ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন শামীম আহাম্মদ। এরপর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে একজন সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়নি। আগে প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হতো এ হাসপাতালে।

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৬ জুলাই ২০২৫
পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানা-পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
২ মিনিট আগে
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
৯ মিনিট আগে
ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন
১৭ মিনিট আগেশিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি

আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বগুড়া শাখা। গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এ নোটিশ ইস্যু করা হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। নোটিশে বলা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।

বগুড়া শাখাপ্রধান তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মঞ্জুরিপত্রের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও আপনাকে/আপনাদেরকে মৌখিকভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ও মোবাইল ফোনে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি/আপনারা তা পরিশোধ করেননি। ইতিপূর্বে আপনাকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, তবুও বিনিয়োগের দায় পরিশোধ করেননি। আপনার/আপনাদের লেনদেনের পরিস্থিতি দেখে আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে যে, আপনার/আপনাদের সঙ্গে আমাদের আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতএব, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগের সমুদয় দায় ৩৮৪.৭৬ মিলিয়ন টাকা পরিশোধ করে হিসাবসমূহ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’
এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তৃতীয় অধ্যায় (নির্বাচন) ১২(১)(ঠ) ধারা অনুসারে কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’

আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বগুড়া শাখা। গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এ নোটিশ ইস্যু করা হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। নোটিশে বলা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।

বগুড়া শাখাপ্রধান তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মঞ্জুরিপত্রের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও আপনাকে/আপনাদেরকে মৌখিকভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ও মোবাইল ফোনে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি/আপনারা তা পরিশোধ করেননি। ইতিপূর্বে আপনাকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, তবুও বিনিয়োগের দায় পরিশোধ করেননি। আপনার/আপনাদের লেনদেনের পরিস্থিতি দেখে আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে যে, আপনার/আপনাদের সঙ্গে আমাদের আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতএব, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগের সমুদয় দায় ৩৮৪.৭৬ মিলিয়ন টাকা পরিশোধ করে হিসাবসমূহ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’
এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তৃতীয় অধ্যায় (নির্বাচন) ১২(১)(ঠ) ধারা অনুসারে কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৬ জুলাই ২০২৫
পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানা-পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
২ মিনিট আগে
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।
৬ মিনিট আগে
ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন
১৭ মিনিট আগেফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের বলা হলেও কর্ণপাত না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলি স্বর্ণকারপট্টির মুজিব সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একাধিক টিম।
সরেজমিন দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন এই ভবনের মালিক স্থানীয় সঞ্জয় কর্মকার, অজয় কর্মকার ও সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পার্শ্ববর্তী ভবনসংলগ্ন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা বা প্যারাসাইলিং ব্যবস্থা ছিল না। এই অবস্থায় পাইলিংয়ের (নিচের অংশ) কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। হঠাৎ করেই ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে দৌড়ে সরে পড়েন নির্মাণশ্রমিক ও শোরুমটির কর্মচারীরা।
বেস্ট বাইয়ের কর্মীরা জানান, তারা সকালে এসে ফ্লোরের টাইলসে ফাটল দেখতে পান। ফাটল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ক্যাশ কাউন্টার টেবিলটা সরিয়ে ফেলেন, এর মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনের এক পাশ।
ধসে পড়া ভবন ও বেস্ট বাই ফ্রাঞ্চাইজের মালিক মনিরা খাতুনের দাবি, এ ঘটনায় তাঁর ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তিনি এর বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বারবার নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা রাতের আঁধারে আমার ভবনের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছে, যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালে উল্টো আমার কর্মচারীদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।’

ঘটনাস্থলে ছুটে আসা শহরের বাসিন্দা ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং তা সঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব তাদের। যদি সঠিকভাবে তদারকি হতো তাহলে এমন দুর্ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভবনমালিকদের একজন সঞ্জয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে পৌরসভার প্রশাসক ও ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।’

ফরিদপুরে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পাশের আরেকটি দ্বিতল ভবনের একাংশ ধসে পড়েছে। এতে ভবনটিসহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনে অবস্থিত আরএফএল কোম্পানির বেস্ট বাই শোরুম। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন সেখানে কর্মরতরা। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনমালিকের অভিযোগ, নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের বলা হলেও কর্ণপাত না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।
আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলি স্বর্ণকারপট্টির মুজিব সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের একাধিক টিম।
সরেজমিন দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণাধীন এই ভবনের মালিক স্থানীয় সঞ্জয় কর্মকার, অজয় কর্মকার ও সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি। পাইলিংয়ের কাজ করার সময় পার্শ্ববর্তী ভবনসংলগ্ন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা বা প্যারাসাইলিং ব্যবস্থা ছিল না। এই অবস্থায় পাইলিংয়ের (নিচের অংশ) কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্মাণশ্রমিকেরা। হঠাৎ করেই ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে দৌড়ে সরে পড়েন নির্মাণশ্রমিক ও শোরুমটির কর্মচারীরা।
বেস্ট বাইয়ের কর্মীরা জানান, তারা সকালে এসে ফ্লোরের টাইলসে ফাটল দেখতে পান। ফাটল ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে ক্যাশ কাউন্টার টেবিলটা সরিয়ে ফেলেন, এর মধ্যেই ধসে পড়ে ভবনের এক পাশ।
ধসে পড়া ভবন ও বেস্ট বাই ফ্রাঞ্চাইজের মালিক মনিরা খাতুনের দাবি, এ ঘটনায় তাঁর ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং তিনি এর বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বারবার নির্মাণাধীন ভবনমালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তাঁরা রাতের আঁধারে আমার ভবনের নিচের মাটি সরিয়ে ফেলেছে, যার কারণে আজকের এই দুর্ঘটনা। পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট দূরত্ব রেখে কাজ করার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালে উল্টো আমার কর্মচারীদের হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়।’

ঘটনাস্থলে ছুটে আসা শহরের বাসিন্দা ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোজাফফর আলী মুসা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভবন নির্মাণ করতে হলে পৌরসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হয় এবং তা সঠিকভাবে তদারকির দায়িত্ব তাদের। যদি সঠিকভাবে তদারকি হতো তাহলে এমন দুর্ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ভবনমালিকদের একজন সঞ্জয় সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম জানান, খবর পেয়ে তাঁরা এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে কোনো অভিযোগ পায়নি পুলিশ। অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে পৌরসভার প্রশাসক ও ফরিদপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।’

দেশজুড়ে মাসব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাঁদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর হামলাকারী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে গুলি, ককটেল হামলা, সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৬ জুলাই ২০২৫
পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানা-পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
২ মিনিট আগে
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।
৬ মিনিট আগে
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
৯ মিনিট আগে