Ajker Patrika

ছাত্র ইউনিয়নের ৭২ বছর পূর্তি: সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতির দাবি 

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৯: ০৬
ছাত্র ইউনিয়নের ৭২ বছর পূর্তি: সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতির দাবি 

সর্বজনীন একমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যানটিনে ছাত্র ইউনিয়নের ৭২ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি পেশ ও নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। 

১১ দফা দাবিগুলো হলো অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; অবিলম্বে একই ধারার গণমুখী, বিজ্ঞানভিত্তিক, সর্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে; শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে ডাকসুসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে; শিক্ষা খাতে জাতীয় আয়ের ৮ ভাগ অথবা জাতীয় বাজেটের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে; অবিলম্বে প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে হলগুলোর সিট বণ্টন করে গণরুম ও গেস্টরুমে ছাত্র নির্যাতন বন্ধ করতে হবে; জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, শ্রেণিকক্ষ ও স্বতন্ত্র পরীক্ষার হল নির্মাণ করে নিয়মিত শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে; বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর বাতিল করতে হবে, শিক্ষার্থীদের জন্য অভিন্ন টিউশন ফি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, ইউজিসি অনুমোদিত অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে হবে; ইউজিসির কৌশলপত্র, আইকিউএসি, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল, পিপিসহ বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের পরামর্শে চালু সকল শিক্ষা ধ্বংসের প্রকল্প বাতিল করতে হবে; সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে; পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন বন্ধ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। সবিশেষ সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০২৩, ওটিটি নিয়ন্ত্রণ নীতিমালাসহ সকল গণবিরোধী ও অগণতান্ত্রিক আইন বাতিল করতে হবে। 

ছাত্র ইউনিয়নের ৭২ বছর বছর পূর্তি উপলক্ষে ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো ২৫ এপ্রিল, দুপুর ১২টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র সমাবেশ। ২৬ এপ্রিল বেলা ১১টায় ঢাবির মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক সেমিনার। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ফিলিস্তিন, লেবানন, সাইপ্রাস, আয়ারল্যান্ড, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, সার্বিয়া, ডেনমার্ক, কম্বোডিয়া, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ ২০টির বেশি দেশের প্রায় ৩০টি ছাত্র ও যুব সংগঠন এ সেমিনারে অংশগ্রহণ করবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির একাংশের সভাপতি রাগীব নাঈম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মিখা পিরেগু, জয় রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক তামজীদ হায়দার চঞ্চল, কোষাধ্যক্ষ নাজিফা জান্নাত, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক লেনিক চাকমা প্রমুখ। 

রাগীব নাইম বলেন, ‘সামগ্রিক সংকটের কারণেই শিক্ষাঙ্গনেও আজ স্বৈরাচারের থাবা। দলীয়করণের মধ্য দিয়ে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। গেস্টরুম, গণরুমকে ব্যবহার করে গত ১৫ বছরে ছাত্রলীগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার বিশ্বজিৎ, আবু বক্কর, বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদসহ অনেকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যক্কারজনক গণধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন ছাত্রলীগের নেতারাই। আর প্রশাসন ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি আঁকার অভিযোগ এনে বহিষ্কার করে আমাদের সহযোদ্ধা অমর্ত্য আর ঋদ্ধকে।’ 

ছাত্র ইউনিয়নের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রসঙ্গ টেনে নাঈম বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু এবং সাধারণ সম্পাদক মাঈন আহমেদকে মারাত্মকভাবে আহত করে। ছাত্রলীগ এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভয় দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখে আর এই সুযোগে প্রশাসন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রাখে।’ 

রাগীব নাইম আরও বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের জীবন ওষ্ঠাগত। কর্মসংস্থানের অভাবে কায়িক শ্রম দিতে কেউ ছুটছেন মধ্যপ্রাচ্যে, মানসিক শ্রম দিতে কেউ ছুটছেন ইউরোপ-আমেরিকায়। প্রশাসনের সকল পর্যায়ে দুর্নীতি, গা-জোয়ারি, অস্বচ্ছতা। বিরোধী শক্তিরা বিভক্ত, ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় কালিমালিপ্ত ও বিকল্প উপস্থাপনে ব্যর্থ। অস্ত্রের রাজনীতি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, ব্যালটের রাজনীতিও পরাজিত। ফলে জনগণের সামনে নৈরাশ্যের অন্ধকার। অতীতে এহেন ক্রান্তিকালে দেশকে আলো দেখিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।’ 

এদিকে ৭২ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক বিবৃতি দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়নের অপর অংশ (দীপক-শাহরিয়ার)। এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক-বর্তমান নেতা-কর্মী, শুভানুধ্যায়ী, আপামর ছাত্র সমাজকে ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সভাপতি দীপক শীল এবং সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা। 

বিবৃতিতে বলা হয় ছাত্র ইউনিয়ন এ দেশের প্রতিটি ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে ছাত্র ইউনিয়ন ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করেছে। সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়ন লড়াই অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষার অধিকার আদায় এবং একমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন দাবিতে ছাত্র ইউনিয়ন লড়াই জারি রেখেছে। ছাত্র ইউনিয়নের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা ছাত্র সমাজকে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি ছুড়ে ফেলে ছাত্র আন্দোলনের আদর্শভিত্তিক ধারাকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টায় ১২ লাখ টাকা তাসনিম জারার নির্বাচনী তহবিলে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
তাসনিম জারা। ছবি: সংগৃহীত
তাসনিম জারা। ছবি: সংগৃহীত

সাত ঘণ্টায় ১২ লাখ টাকার বেশি নির্বাচনী অনুদান পেয়েছেন ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। আজ মঙ্গলবার ভোরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে তিনি এ কথা জানান।

ফেসবুক পোস্টে তাসনিম জারা লিখেছেন, ‘মাত্র ৭ ঘণ্টায় আপনারা ১২ লাখ টাকারও বেশি পাঠিয়েছেন। এতটা অভূতপূর্বভাবে আপনারা পাশে দাঁড়াবেন, তা সত্যিই আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল। আপনাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।’

তাসনিম জারা আরও জানান, তাদের মোট লক্ষ্যমাত্রা ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮০ টাকা। আর ৩৪ লাখ টাকা সংগ্রহ সম্পন্ন হলেই তহবিল সংগ্রহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তাসনিম জারা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা অবগত আছি, যে রাত (সোমবার) ২টার পর থেকে নির্ধারিত লিমিট অতিক্রম করার কারণে বিকাশে আর টাকা পাঠানো যাচ্ছে না। আপাতত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ডোনেশান গ্রহণ করা যাচ্ছে।’

গতকাল সোমবার নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ শুরু করেন তাসনিম জারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সহায়তা চান তিনি।

তাসনিম জারা গতকাল রাতে আরেকটি পোস্টে লিখেছেন, ‘আপনাদের আগেই বলেছি, আমরা স্বচ্ছভাবে টাকা উত্তোলন ও খরচ করব। তাই আপনাদের সঙ্গে স্ক্রিনশট শেয়ার করছি। এ দুটি অ্যাকাউন্ট শূন্য থেকে শুরু হয়েছে। আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আপনাদের সম্পূর্ণ হিসাব দেওয়া হবে।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ঢাকা-৯ (খিলগাঁও, সবুজবাগ, মুগদা, মান্ডা) আসনের মনোনয়নপত্র কিনেছেন তাসনিম জারা। ঢাকা-৯ আসন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড তথা সবুজবাগ, খিলগাঁও, মুগদা ও মান্ডা থানা নিয়ে গঠিত।

এই আসনটিতে বিএনপি এখনো প্রার্থী না দিলেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দিয়েছে। এই আসনে জামায়াতের প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী কবির আহমদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র নিলেন এনসিপির তাজনূভা, ১৮-তে নাসীর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আজ সোমবার আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার কার্যালয় থেকে তাজনূভা জাবীন ঢাকা-১৭ ও নাসীরুদ্দীন ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়নপত্র নেন।

তাজনূভা জাবীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড প্রোফাইলে দেওয়া পোস্টে বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে ঢাকা-১৭ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি আজকে। আমার জন‍্য দোয়া করবেন আপনারা। আমার দল এনসিপি। আমার দলের মার্কা শাপলা কলি।’

ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনী এলাকার মধ্যে রয়েছে গুলশান, বনানী, বারিধারা, ভাষানটেক, কালাচাঁদপুর, শাহজাদপুর, কড়াইল, মহাখালী ও ক‍্যান্টনমেন্ট। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী এস এম খালিকুজ্জামান। বিএনপি এই আসনে এখানো দলীয় প্রার্থী দেয়নি। এই আসনের আরেকজন প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পক্ষে তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা উত্তরা আজিমপুর কাঁচাবাজার আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এনসিপির মিডিয়া সেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্যসচিব মো. মান্নান তালুকদার (মাহিন), সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম প্রিন্স এবং এনসিপির উত্তরার সাত থানার প্রধান সমন্বয়কারী ও যুগ্ম সমন্বয়কারীরা।

ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচনী এলাকার মধ্যে রয়েছে উত্তরখান, খিলক্ষেত, তুরাগ ও দক্ষিণখান। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মব সহিংসতা গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছে: রিজভী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্ছৃঙ্খল জনতা মব তৈরি করে হামলা চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করছে— এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে গণতন্ত্রবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ সোমবার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে রেখে সারা দেশে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে গণতন্ত্র কখনোই শক্তিশালী হবে না। তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। জনগণ এখন ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাকে নষ্ট করার জন্য একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। এ ধরনের অপচেষ্টাকে কোনোভাবেই সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিদেশের সঙ্গে অসম চুক্তিতে চড়া মূল্যে বিদ্যুৎ কিনে জনগণের অর্থের অপচয় করেছে। জনগণের কষ্টার্জিত টাকাকে নিজের মনে করে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বের প্রশংসা করে রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ইশরাক এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই প্রজন্মের নেতা-কর্মীরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচন বানচালের চেষ্টা জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করবে: জোনায়েদ সাকি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণসংহতি আন্দোলনের (জিএসএ) প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যাবে, গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তের দিকে যাবে; তার জন্য বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন অপরিহার্য। যারাই একে বানচাল করতে চেষ্টা করবে, তাদের জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাইয়ের আদর্শে প্রতিহত করবে।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, ময়মনসিংহে শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে লাশ পুড়িয়ে ফেলা ও লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বাড়িতে আগুন দিয়ে শিশু আয়েশা আক্তারকে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাইয়ে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, তার বিচার করতে হবে। নির্বাচন বানচালের যে তৎপরতা চলছে, সরকারকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা প্রথম আলো, ডেইলি স্টার কিংবা অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন জনের ওপর হামলা করেছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সরকারের সমালোচনা করে জোনায়েদ সাকি বলেন, অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সরকার, যারা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করার দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারা আজকে অভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী নেতৃত্বের নিরাপত্তা দেওয়ার কাজটি করতে পারছে না।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে সাকি বলেন, তারা এখনো দেশকে ধ্বংস করার ক্ষেত্র থেকে নিরস্ত হয়নি। তারা গণতান্ত্রিক উত্তরণকে নস্যাৎ করে দিয়ে, বানচাল করে দিয়ে এই দেশকে আবারও চূড়ান্ত বিপর্যয়ের দিকে নিতে চায়। পতিত ফ্যাসিস্টরা বসে নেই, তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের অর্জনকে ধ্বংস করতে চায়।

দেশে নব্য ফ্যাসিস্টের আগমন ঘটেছে ইঙ্গিত করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্টরা যে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিল, আজকে তার বিপরীতে আরেক দল নতুন করে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করতে চায় এবং সেইটাকে কি সরকার পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে? এক ফ্যাসিবাদ পাল্টে আরেক ফ্যাসিবাদের ধারা সেখানে জন্ম কিংবা তাদের উত্থানে সহায়তা করছে? আমাদের সতর্ক ও সচেতন হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ তিনি গণমাধ্যমের ওপরে হামলাকে গণতন্ত্রের ওপরে হামলা বলে উল্লেখ করেন।

সমাবেশে দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বলতে এই ন্যায়বিচার ও ইনসাফের রাজনৈতিক মতাদর্শকে বুঝেছিলাম। সেই রাষ্ট্র গঠনের জন্য আমাদের এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে হবে।’

দলের রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য তাসলিমা আখতার বলেন, ‘যারা পতিত ফ্যাসিস্টকে পুনর্বাসন করতে চায়, তারাই আমাদের নির্বাচনকে বারবার পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে হবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জিএসএর রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, দীপক কুমার রায়, আমজাদ হোসেন, অঞ্জন দাস, লুৎফুন্নাহার সুমনা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত