Ajker Patrika

সোহরাওয়ার্দীতে বিএনপির সমাবেশ: মিছিল নিয়ে দলে দলে আসছেন নেতা-কর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৩, ১৫: ৪৪
সোহরাওয়ার্দীতে বিএনপির সমাবেশ: মিছিল নিয়ে দলে দলে আসছেন নেতা-কর্মীরা

রাজধানীতে বিএনপির কোনো কর্মসূচি থাকলে সতর্ক অবস্থানে থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে আজ সোমবার বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীতে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি খুব একটা চোখে পড়েনি। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দেওয়ার কোনো অভিযোগও পাওয়া যায়নি। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ সতর্ক রয়েছে, কোনো নাশকতার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মৎস্য ভবন, শাহবাগ মোড়, হাইকোর্ট মোড়, শিক্ষাভবনে, টিএসসিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আজ দুপুর ১২টার আগে থেকে বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসা শুরু করেন। বেলা দেড়টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে তাঁদের সমাবেশের দিকে যেতে দেখা গেছে। কোথাও পুলিশি বাধা বা তল্লাশির অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

বাংলামোটরে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী তৌহিদ বলেন, তাঁরা বাড্ডা থেকে হাতিরঝিল হয়ে ১৭ জন একসঙ্গে সমাবেশে যাচ্ছেন। পথে কোথাও পুলিশ কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি।  

আজ দুপুরে ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে স্পেশাল অ্যাসিসট্যান্ট টু কমিশনার সৈয়দ মামুন মোস্তফা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। ২৬টি শর্তে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ বেলা ৩টায় শুরু হবে বিএনপির জনসমাবেশ। এ উপলক্ষে বেলা ১১টার পর থেকে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করে বিএনপি। 

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ সারা দেশের মহানগর ও জেলা সদরে জনসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। প্রথমে সমাবেশটি নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে করার কথা ছিল। তবে পরে ভেন্যু পরিবর্তন করে দলটি। 

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার  (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার জানিয়েছেন, সমাবেশ করতে কোনো বাধা নেই। তবে বাসে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন, ওসমান হাদির অবস্থা যাতে আর কারও না হয়: আসিফ মাহমুদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৯
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রার্থীরা, বিশেষ করে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতারা ঝুঁকিতে আছেন বলে মন্তব্য করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষে এ কথা বলেন তিনি।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার পর ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করা এই ছাত্র উপদেষ্টা। ঢাকা-১০ আসন থেকে স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন আসিফ মাহমুদ।

মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শেষে আসিফ মাহমুদ জানান, প্রচারণার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে তাই তিনি স্বাভাবিক প্রচারণা করতে পারছেন না।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদির হত্যার আসামিদের এখনো পর্যন্ত সরকার গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এটি সরকারের ব্যর্থতা। প্রার্থীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। বিশেষ করে যাঁরা জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা, তাঁরা ঝুঁকিতে আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারকে প্রার্থীসহ জুলাই অভ্যুত্থানের নেতাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। শহীদ ওসমান হাদির মতো অবস্থা যাতে আর কারও না হয়।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন আসিফ মাহমুদ। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। গত ১০ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে ১২ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় ঢাকা-১০ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন আসিফ মাহমুদ।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর আসিফ মাহমুদের সমর্থকদের ধানমন্ডি এলাকায় উল্লাস করতে দেখা যায়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম এই সমন্বয়কের নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ঘোষণা তরুণ ভোটারদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা তৈরি করেছে।

ঢাকা-১০ আসনটি রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় এখানে ত্রিমুখী বা চতুর্মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এই আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলেও বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী মনোনয়ন দিয়েছেন।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলমকে এই আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জসীম উদ্দিন সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-১০ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন আসিফ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১২
সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আসিফ মাহমুদ। ছবি: ফেসবুক
সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আসিফ মাহমুদ। ছবি: ফেসবুক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

আজ সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিস থেকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন দুই ছাত্রপ্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। এর পর থেকেই তাঁদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জন শুরু হয়।

উপদেষ্টা পদ ছাড়ার পর আসিফ মাহমুদ কোন দল থেকে নির্বাচনে লড়বেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, তিনি নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে যোগ দেবেন অথবা গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে বিএনপি জোটের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করবেন। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১২ ডিসেম্বর আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নয়, বরং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই ঢাকা-১০ আসনে লড়বেন।

ঢাকা-১০ আসনটি রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় এখানে ত্রিমুখী বা চতুর্মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এই আসনে ইতিমধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন:

বিএনপির দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলমকে এই আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জসীম উদ্দিন সরকার।

তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখন পর্যন্ত এই আসনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর আসিফ মাহমুদের সমর্থকেরা ধানমন্ডি এলাকায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম এই সমন্বয়কের নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ঘোষণা তরুণ ভোটারদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা তৈরি করেছে।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর, বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি, আপিলের দিন ১১ জানুয়ারি, আর আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি।

অবশ্য গতকাল রোববার সংশোধিত তফসিলে রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের আপিল করার সময় দুই দিন কমানো হয়েছে। আপিলের সময় ৫-১১ জানুয়ারি পরিবর্তন করে ৫-৯ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

আপিল নিষ্পত্তির তারিখও দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। ১২–১৮ জানুয়ারির পরিবর্তে ১০-১৮ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

তফসিলে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন রাখা হয়েছে ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দের দিন ২১ জানুয়ারি। সব প্রক্রিয়া শেষে ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ হবে।

এবার ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।

এবারের নির্বাচনে ৩০০টি সংসদীয় আসনের ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি এবার সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার সংশ্লিষ্ট গণভোটও রয়েছে। এ কারণে কিছু ভোটকক্ষ ও গোপন কক্ষ (যেখানে ব্যালটে সিল দেওয়া হয়) বাড়াবে ইসি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বরাবরের মতো সাদা রঙের ব্যালট পেপার আর গণভোটের জন্য গোলাপি রঙের ব্যালট পেপার ব্যবহৃত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা গণতন্ত্রের ওপর আঘাত, এক হওয়ার সময় এসেছে: মির্জা ফখরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৮
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার নয়, গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। আমার অনুরোধ, কোনো রাজনৈতিক চিন্তা নয়, দল নয়, সব গণতন্ত্রকামী মানুষের এক হওয়ার সময় এসেছে।’

আজ সোমবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিবাদ সভাটির আয়োজন করে সম্পাদক পরিষদ এবং নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি জানি না আমরা এই মুহূর্তে কোন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আছি। আমার বয়স ৭৮। সারা জীবন সংগ্রাম করেছি একটা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ দেখব বলে। আজ যে বাংলাদেশ দেখছি, এ বাংলাদেশের স্বপ্ন আমি কোনো দিন দেখিনি।’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমার স্বাধীনভাবে চিন্তা করার যে অধিকার, আমার কথা বলার যে অধিকার, তার ওপর আবার আঘাত এসেছে, জুলাই যুদ্ধের ওপর আঘাত এসেছে। জুলাই যুদ্ধ ছিল এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ। আজ সেই জায়গায় আঘাত এসেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যারা অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে চাই, আমরা যারা আমাদের বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে দেখতে চাই, তাদের শুধু সচেতন হলে চলবে না, রুখে দাঁড়াতে হবে। এখন রুখে দাঁড়ানোর সময় এসে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের আহ্বান জানাব, এখানে এসে শুধু একাত্মতা ঘোষণা নয়, মানববন্ধন করে সংহতি প্রকাশ করা নয়, আজ সর্বক্ষেত্রে সর্বশক্তি নিয়ে আপনারা যারা বাংলাদেশকে ভালবাসেন—তাঁরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হন, এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।’

প্রতিবাদ সভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হওয়া মব ভায়োলেন্সের সঙ্গে সরকারের একটি অংশের সমর্থন আছে; রাজনৈতিক সমর্থন আছে—এ ছাড়া এটি করা সম্ভব হতো না।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘এই হামলা আমরা মেনে নিতে পারি না। এটাই যাতে ফুল স্টপ হয়। পতিত স্বৈরাচার তাদের সময় সে কাজ তারা করেছিল সাংবাদিকদের ওপর, সংবাদপত্রের ওপর, মিডিয়ার ওপর, এমনকি খুবই সিনিয়র সম্পাদকদের ওপর হামলা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় এসে এটা ফুল স্টপ হবে—এটা আমরা আশা করি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বটি তারা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা মনে করি, এখানে অবশ্যই সরকারের দায়িত্ব ছিল।’

নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, পৃথিবীর সব জায়গায় সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব সম্পাদকীয় নীতি থাকে। সে নীতি পছন্দ না হলে গণমাধ্যমে আগুন লাগিয়ে দেওয়া কোনো গণতন্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়।

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ওই দিন ২৬-২৭ জন স্টাফ ভবনের ভেতরে আটকে ছিল, ফায়ার সার্ভিসকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাদের উদ্দেশ্য শুধু ভবনে আগুন দেওয়া ছিল না, হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল।’

প্রতিবাদ সভায় আরও ছিলেন নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলায় সরকারের ভেতরের একটা অংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক, যারা এই ঘটনাটা সেই রাতে ঘটিয়েছে বা যারা প্রথম আলোসহ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা করেছে, তারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্লোগানগুলোকে ব্যবহার করেছে। শরিফ ওসমান হাদির নাম ব্যবহার করেছে। আমাদের স্লোগানগুলোকে ব্যবহার করে তারা সেখানে আক্রমণ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজকে যেই পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছি, এটা দুর্ভাগ্যজনক। কারণ এই পুরো পরিস্থিতির সঙ্গেই আমাদের জুলাই অভ্যুত্থান এবং তার পরবর্তী সময়ে এই পরিবেশ এবং যেই বাংলাদেশ আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম আমরা সেই দিকে আগাচ্ছি না।’

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় নাহিদ ইসলাম এসব মন্তব্য করেন। দেশে চলমান ‘মব ভায়োলেন্সের’ প্রতিবাদে সংবাদপত্র সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ এবং নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) যৌথভাবে এই সভা আয়োজন করে।

নাহিদ বলেন, ‘আমরা বলেছি, এ ঘটনায় সরকারের ভিতরের একটা অংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এটার পক্ষে সম্মতি তৈরি করা হয়েছিল অনেকদিন ধরেই। এটার সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যাকআপও আছে। এই তিনটা ঘটনা একসঙ্গে না ঘটলে এত বড় সাহস সেই রাতে কারও পক্ষে করা সম্ভব হতো না। কয়েক হাজার মানুষ গিয়ে এটা ঘটিয়েছে এরকমও না। ফলে পুরো ঘটনাটাই পরিকল্পিত ছিল। ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে কী কী ঘটানো হবে, সেটার একটা চক্রান্ত, পরিকল্পনা আগে তৈরি হয়েছে। ঘটনাগুলো দেখে আমাদের কাছে এটাই মনে হয়েছে।’

এনসিপির নেতা বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের সবারই এটার কিছু দায় আছে। আমাদের অনেক বেশি দায় আছে। যারা আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম। আমাদের জন্য এটা আরও দুর্ভাগ্যজনক।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘আজকে আমরা শব্দটা ব্যবহার করছি মব ভায়োলেন্স। এই শব্দটির সঙ্গে প্রথম দিকে একমত হতাম না বা আমরা এটার বিরোধিতা করতাম। কারণ আমরা যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম, তাদের পক্ষ থেকেই পুরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে প্রথম থেকে বলা হয়েছে মব। ফলে আমরা বলেছি যে এটা মবোক্রেসি না।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব, বিপ্লব পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশে অনেক কিছু হয়। তখন পুলিশ ছিল না। মানুষের অনেক ক্ষোভ ছিল। ১৬ বছরের ক্ষোভ ছিল। কিন্তু এখন দেড় বছর পার হয়ে গিয়েছে। এখন যেটা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণভাবে পরিকল্পিত অপরাধ হচ্ছে এবং এটা পুরো দেশের রাজনীতি ও নির্বাচন ভাবনাকে একদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই পরিকল্পনা চলছে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব নেওয়া উচিত। কারা সে রাতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে এটা খুবই স্পষ্ট। কারা সেটার পক্ষে সমর্থন করেছে। কারা সেই রাতে সেখানে গিয়েছে, লেখালেখি করেছে। আমাদের সবাই মিলে সরকারকে বাধ্য করতে হবে এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত এবং বিচার করতে। একই সঙ্গে শরিফ ওসমান হাদিকেও যারা গুলিবিদ্ধ করল, প্রকাশ্যে ঢাকা শহরে একজন এমপি পদপ্রার্থী এবং জুলাইয়ের মুখ সেই বিষয়টাকেও আমাদের সুরাহা করতে হবে।’

সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় সভায় আরও আছেন— সম্পাদক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, মানবাধিকার কর্মী রেহনুমা আহমেদ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ড. ইফতেখারুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত