শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার বিভিন্ন মিলনায়তনে আলোক-শব্দ প্রক্ষেপণসহ সব ধরনের কারিগরি সুযোগ-সুবিধার সংকট, হল ও মহড়াকক্ষ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য, নাটক চলাকালে মাঠে মাইকের ব্যবহার বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন নাট্যকর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
সমাবেশে নাট্যকর্মীদের হাতে ছিল বিভিন্ন দাবিসংবলিত পোস্টার। ‘নাটকের হলে নাটক ছাড়া অন্য অনুষ্ঠান বন্ধ করো’, ‘নাটক চলাকালে বাইরের মাঠে মাইক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে’, ‘মঞ্চে আলোর যথাযথ সরঞ্জাম চাই’ ইত্যাদি দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড লিখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন নাট্যকর্মীরা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, শহীদুজ্জামান সেলিম, আজাদ আবুল কালাম, ঠান্ডু রায়হান, ফয়েজ জহির, আশীষ খন্দকার প্রমুখ। ড. মোহাম্মদ বারীর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন মঞ্চকুসুম শিমূল ইউসুফ, অলোক বসু, মো. আলী হায়দার, তৌফিকুল ইসলাম ইমনসহ অর্ধশতাধিক নাট্যজন।
নাট্যজন মামুনুর রশীদ তাঁর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘থিয়েটার হলো একটা জাতির সভ্যতার প্রতীক। এ দেশের নাট্যকর্মীদের সম্মিলিত আন্দোলনের ফসল শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনগুলো। অথচ সেই মিলনায়তন বছরের পর বছর ধরে নানাবিধ সংকটে নিপতিত, যা মানসম্পন্ন নাটক মঞ্চায়নের অনুপযুক্ত। কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় নানা প্রকল্পের মাধ্যমে, অথচ প্রয়োজনীয় কাজটি করা হচ্ছে না। এ রকম অব্যবস্থাপনা চলতে থাকলে নাটক একসময় মুখ থুবড়ে পড়বে, যা আমাদের কারোরই কাম্য নয়।’
নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমির চারটি মিলনায়তনের আলো ও শব্দ প্রক্ষেপণযন্ত্রের ব্যবস্থা এতই অপ্রতুল যে নাট্যদলগুলোকে বিরাট অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে বাইরে থেকে সরঞ্জাম ভাড়া করতে হয়। অতি দ্রুত যন্ত্রপাতি নতুন করে প্রতিস্থাপনের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হোক।’
অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সভাপতি একই ব্যক্তি হওয়ার কারণে এই সংকটের সমাধান হচ্ছে না। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন একটা অকার্যকর সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এ জন্যই আমাদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই দাবিগুলো তুলে ধরতে হচ্ছে।’
প্রতিবাদ সমাবেশে অতি দ্রুত জাতীয় নাট্যশালার এসব সমস্যা সমাধানের তাগিদ দেন নাট্যকর্মীরা।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে