Ajker Patrika

শতবর্ষে মৃণাল সেন: তাঁর যে পাঁচটি সিনেমা দেখতে পারেন

আপডেট : ১৪ মে ২০২৩, ১২: ৫৬
শতবর্ষে মৃণাল সেন: তাঁর যে পাঁচটি সিনেমা দেখতে পারেন

শতবর্ষে বাংলা সিনেমার বর্ষীয়ান নির্মাতা মৃণাল সেন। ১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলা শহরের সদর এলাকার ঝিলটুলিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ফরিদপুরে তিনি তাঁর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পড়ালেখা সম্পন্ন করে পশ্চিম বাংলার কলকাতায় স্থায়ী হন। উপমহাদেশে সৎ ও চিন্তাশীল চলচ্চিত্রে তিনি অন্যতম পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের ‘ভুবন সোম’। ২৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও ৪টি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ৬টি চলচ্চিত্র বিষয়ক মৌলিক গ্রন্থও লিখেছেন মৃণাল সেন। জন্মদিনে যেনে নেওয়া যাক তাঁর পাঁচটি চলচ্চিত্র সম্পর্কে।

ইন্টারভিউ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যে অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক‘ইন্টারভিউ’
ইন্টারভিউ মৃণাল সেনের ‘কলকাতা ট্রিলজি’র প্রথম চলচ্চিত্র। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন রঞ্জিত মল্লিক। চলচ্চিত্রটিতে সেসময়ের কলকাতার উত্তাল দিনগুলোর ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। চলচ্চিত্রটিতে সাধারণ মানুষের জীবনের চিত্র তুলে ধরেন পরিচালক। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ঔপনিবেশিক ধারণা পুষে রাখার মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রটি ১৯৭১ সালে মুক্তি পেয়েছিল।

‘কলকাতা ৭১ ’। ছবি: সংগৃহীত‘কলকাতা ৭১’ 
মৃণাল সেনের ‘কলকাতা ট্রিলজি’র দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘কলকাতা ৭১ ’। চলচ্চিত্রটিতে কলকাতার খাদ্যসংকট, সত্তরের নকশাল আন্দোলন উঠে এসেছে। এটি চারটি আলাদা গল্পের সমষ্টি। সমরেশ বসু, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবোধ সান্যাল ও মৃণাল সেনের চারটি গল্পের ওপর ভিত্তি করে ছবিটি নির্মাণ করা হয়। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন উৎপল দত্ত ও মাধবী মুখোপাধ্যায়।

‘পদাতিক’। ছবি: সংগৃহীত‘পদাতিক’
‘কলকাতা ট্রিলজি’র শেষ চলচ্চিত্র ‘পদাতিক’–এ সেই সময়ের কলকাতার আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরেছেন মৃণাল সেন। এই চলচ্চিত্রটি ১ আগস্ট ১৯৮৫ সালে মুক্তি পায়। এক রাজনৈতিক কর্মীকে নিয়ে লেখা গল্পে প্রধান চরিত্র করেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়।

মৃগয়া চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী‘মৃগয়া’
মৃগয়া চলচ্চিত্রটি ১৯৭৬ সালে ভাগবতী চরণ পানিগ্রাহী রচিত ছোট গল্প ‘শিকার’ এর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে। চলচ্চিত্রটিতে ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে সম্পর্ক এবং ১৯২০-র ভারতীয় ভূস্বামীদের শোষণ চিত্রায়িত হয়েছে। ২৪ তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এ মৃগয়া দুটি পুরস্কার লাভ করে-সেরা কাহিনি চিত্র এবং সেরা অভিনেতা। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করে সেরা অভিনেতা হিসেবে ভারতের জাতীয় পুরস্কার পান মিঠুন চক্রবর্তী। এটি ১৯৭৭ সালে দশম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘গোল্ডেন সেন্ট জর্জ পুরস্কার’–এর জন্য মনোনীত হওয়া ছাড়াও সেরা চলচ্চিত্রের জন্য ফিল্মফেয়ার সমালোচক পুরস্কারও লাভ করে।

খণ্ডহর চলচ্চিত্রে অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহকে দৃশ্য বুঝিয়ে দিচ্ছেন মৃণাল সেন‘খণ্ডহর’
প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোটগল্প অবলম্বনে হিন্দি ভাষায় চলচ্চিত্রটি নির্মাণ হয়েছে। শাবানা আজমি, নাসিরউদ্দিন শাহ অভিনীত চলচ্চিত্রটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের আঁ সার্ত্রে রিগা বিভাগে প্রদর্শিত হয়ছিল। তিন বন্ধুকে ঘিরে চলচ্চিত্রের গল্পটি আবর্তিত হয়। তিন বন্ধু একসময় শহর ছেড়ে এক গণ্ডগ্রামে গিয়ে দিন তিনেকের ছুটি কাটানোর জন্য যান। আর সেই ছুটি কাটানোর অভিজ্ঞতা ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে সিনেমার কাহিনি। চলচ্চিত্রটির জন্য শাবানা আজমি পেয়েছিলেন সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। একই সঙ্গে ছবিটির সম্পাদনকারী মৃন্ময় চক্রবর্তী পেয়েছিলেন সেরা সম্পাদনকারীর পুরস্কার। এ ছাড়া শিকাগো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা চলচ্চিত্র হিসাবে গোল্ডেন হুগো আর মন্ট্রিয়েল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দ্বিতীয় সেরার পুরস্কার জিতে নেয় ‘খণ্ডহর’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্যারামাউন্টের ১০৮ বিলিয়নের প্রস্তাবে না, নেটফ্লিক্সের ৭২ বিলিয়নের চুক্তিই চায় ওয়ার্নার ব্রস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৬
ওয়ার্নার ব্রসকে অধিগ্রহণে চলছে নেটফ্লিক্স ও প্যারামাউন্ট স্কাইড্যান্সের লড়াই। ছবি: কাউন্সিল অব গিকস।
ওয়ার্নার ব্রসকে অধিগ্রহণে চলছে নেটফ্লিক্স ও প্যারামাউন্ট স্কাইড্যান্সের লড়াই। ছবি: কাউন্সিল অব গিকস।

ওয়ার্নার ব্রস বা ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি নিয়ে আলোচনার যেন শেষই হচ্ছে না। তবে এর অবসান টানতে ওয়ার্নার ব্রস নিজেরাই যেন তোড়জোড় শুরু করেছে। তারা তাদের শেয়ারহোল্ডারদের প্যারামাউন্ট স্কাইড্যান্সের ১০৮.৪ বিলিয়ন ডলারের অধিগ্রহণ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।

এর আগে প্যারামাউন্ট স্কাইড্যান্স দাবি করেছিল, তাদের প্রস্তাবটি ওয়ার্নার ব্রাদার্সের চলচ্চিত্র ও স্ট্রিমিং ব্যবসা নিয়ে নেটফ্লিক্সের সঙ্গে করা ৭২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির চেয়ে ‘উন্নত’।

এ সময় হলিউডের অন্যতম প্রাচীন ও খ্যাতনামা চলচ্চিত্র স্টুডিওর নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে, সে প্রশ্নে নাটকীয় মোড় নেয়। ওয়ার্নার ব্রাদার্সের পরিচালনা পর্ষদ সর্বসম্মতিক্রমে প্যারামাউন্ট স্কাইড্যান্সের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের সুপারিশ করে। একই সঙ্গে তারা জানায়, নেটফ্লিক্সের সঙ্গে করা চুক্তিটিই প্রতিষ্ঠানের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষা করে।

গত অক্টোবরে একাধিক সম্ভাব্য ক্রেতার আগ্রহ পাওয়ার পর ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি নিজেকে বিক্রির জন্য উন্মুক্ত করে। ওই আগ্রহীদের মধ্যে প্যারামাউন্ট স্কাইড্যান্সও ছিল।

এরপর ৫ ডিসেম্বর ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি জানায়, তারা তাদের চলচ্চিত্র ও স্ট্রিমিং ব্যবসা নেটফ্লিক্সের কাছে বিক্রি করতে সম্মত হয়েছে।

দীর্ঘ আইনি নথিতে ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারির পরিচালনা পর্ষদ বলেছে, প্যারামাউন্টের প্রস্তাবটি বহু এবং গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে। একই সঙ্গে তারা জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ধনী পরিবার এলিসন পরিবার এই প্রস্তাবে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্যারামাউন্টের প্রস্তাবের পেছনে রয়েছে বিলিয়নিয়ার এলিসন পরিবার। এই পরিবারের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলেও জানা যায়।

বিনোদন শিল্পে বর্তমানে ক্ষমতার অবস্থান কোথায় তা তুলে ধরে ওয়ার্নার ব্রাদার্সের পরিচালনা পর্ষদ জানায়, স্ট্রিমিং জায়ান্ট নেটফ্লিক্সের প্রস্তাবটি আর্থিকভাবে বেশি সুসংহত। পাশাপাশি এটি দীর্ঘ মেয়াদে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য বেশি মূল্য সৃষ্টি করবে।

এদিকে ওয়ার্নার ব্রাদার্সের এই সুপারিশকে স্বাগত জানিয়েছে নেটফ্লিক্স। প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রধান নির্বাহী টেড সারানডোস বলেন, একীভূতকরণ চুক্তিটি ‘উন্নত’ এবং ‘শেয়ারহোল্ডারদের সর্বোত্তম স্বার্থে’ করা হয়েছে।

ওয়ার্নার ব্রাদার্সের শেয়ারহোল্ডারদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে নেটফ্লিক্স আবারও জানায়, তাদের প্রস্তাবে অর্থায়নের কাঠামো আরও স্পষ্ট। পাশাপাশি এতে নিয়ন্ত্রক সংক্রান্ত ঝুঁকিও তুলনামূলকভাবে কম।

এ অবস্থায় প্যারামাউন্ট চাইলে নতুন করে আরেকটি প্রস্তাব দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে হলিউড আলোড়িত করা এই অধিগ্রহণ–নাটক এখানেই শেষ হচ্ছে না।

নেটফ্লিক্স ও প্যারামাউন্টের চুক্তির মধ্যে যে তফাত

নেটফ্লিক্স ওয়ার্নার ব্রাদার্সের চলচ্চিত্র স্টুডিও এবং এইচবিও স্ট্রিমিং সেবা কিনতে চায়। এতে তারা ওয়ার্নার ব্রাদার্সের সমৃদ্ধ কনটেন্ট ভান্ডারের ব্যবহারের অধিকার পাবে। একই সঙ্গে নিজেদের গ্রাহকদের জন্য এসব সিনেমা ও অনুষ্ঠান নিশ্চিতভাবে দেখানোর সুযোগও সুরক্ষিত হবে।

তবে নেটফ্লিক্স মিডিয়া জায়ান্টটির পে-টিভি চ্যানেলগুলো নিতে আগ্রহী নয়। ফলে নেটফ্লিক্সের প্রস্তাবে গেলে অধিগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার আগে ওয়ার্নার ব্রাদার্সকে সিএনএন ও টিএনটির মতো টেলিভিশন নেটওয়ার্কগুলো আলাদা একটি কোম্পানিতে বিক্রি করে দিতে হবে।

অন্যদিকে প্যারামাউন্ট পুরো ওয়ার্নার ব্রাদার্সকেই কিনতে চায়। এর অর্থ হলো, তাদের নিজস্ব টিভি চ্যানেল সিবিএস, এমটিভি ও শোটাইমের প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যানেলগুলোকেও অধিগ্রহণের আওতায় আনতে হবে।

নেটফ্লিক্স ওয়ার্নার ব্রাদার্স অধিগ্রহণের চুক্তি ঘোষণা করার এক সপ্তাহ পরই প্যারামাউন্ট স্কাইড্যান্স পুরো কোম্পানিটি কিনতে নতুন প্রস্তাব দেয়। এতে ওয়ার্নার ব্রাদার্সের টেলিভিশন নেটওয়ার্কগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

তবে ক্রমেই বিনোদন শিল্পে মালিকানা একীভূত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ভোক্তাদের পছন্দের সুযোগ কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো প্রশ্ন তুলতে পারে। এছাড়া ওয়ার্নার ব্রাদার্স অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রতিযোগিতা-নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কঠোর নজরদারির মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কেন ওয়ার্নার ব্রসকে নিয়ে এই লড়াই

ওয়ার্নার ব্রাদার্সের নতুন মালিক স্ট্রিমিং বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পাবে। এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ চলচ্চিত্র ও টিভি অনুষ্ঠানের ভান্ডার তাদের নিয়ন্ত্রণে আসবে। এর মধ্যে রয়েছে ‘হ্যারি পটার’, ‘মনস্টারভার্স’, ‘ফ্রেন্ডস’ এবং এইচবিও ম্যাক্স স্ট্রিমিং সেবা।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টারের বিশ্লেষক মাইক প্রুলক্স বলেন, ওয়ার্নার ব্রাদার্সের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে যাবে, সে লড়াইয়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন যা ঘটছে, তা যেন এইচবিওর সাকসেশন সিরিজের বাস্তব রূপ, বা এর আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ একটি পর্বের মতো। আর যদি মনে করেন, এই কাহিনির শেষটা আপনি আগেই বুঝে গেছেন, তাহলে আবার ভাবুন।’

এদিকে চলচ্চিত্র শিল্পের একটি অংশ ওয়ার্নার ব্রাদার্সের পুরো বা আংশিক কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে। রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকার পূর্ব ও পশ্চিম শাখা এই একীভূতকরণ ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছে।

তাদের যুক্তি, এই ধরনের একীভূতকরণ হলে মজুরি কমে যেতে পারে এবং কর্মসংস্থান হ্রাসের ঝুঁকি তৈরি হবে। পাশাপাশি দর্শকদের জন্য কনটেন্টের পরিমাণও কমে যাবে বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঈদের সিনেমার দৌড়ে ‘বনলতা সেন’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
মাসুমা রহমান নাবিলা। ছবি: সংগৃহীত
মাসুমা রহমান নাবিলা। ছবি: সংগৃহীত

আগামী রোজার ঈদেও একগুচ্ছ সিনেমার মুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে। এরই মধ্যে এসেছে ‘প্রিন্স’, ‘দম’, ‘রাক্ষস’, ‘বনলতা এক্সপ্রেস’, ‘পিনিক’সহ আরও বেশ কয়েকটি সিনেমার ঘোষণা। এ তালিকায় যুক্ত হলো ‘বনলতা সেন’। ২০২৪ সালে সিনেমাটি মুক্তির প্রস্তুতি নিয়েছিলেন নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পিছিয়ে আসেন। অবশেষে জানা গেল, নতুন বছরে আলোর মুখ দেখবে সিনেমাটি। আগামী রোজার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে বনলতা সেন।

জীবনানন্দ দাশের কাল্পনিক চরিত্র বনলতা সেনকে ঘিরে সিনেমাটি বানিয়েছেন মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। সরকারি অনুদানের এ সিনেমায় নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন মাসুমা রহমান নাবিলা। তবে সহজেই এই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাননি অভিনেত্রী। শুরুতে এ সিনেমার অন্য একটি চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল নাবিলাকে। তবে রাজি হননি অভিনেত্রী। নির্মাতাকে শর্ত দিয়েছিলেন, তিনি বনলতা সেন চরিত্রে অভিনয় করতে আগ্রহী। এরপর তিনবার অডিশন দেওয়ার পর বনলতা চরিত্রে নাবিলাকে চূড়ান্ত করেন নির্মাতা।

বনলতা সেন সিনেমায় জীবনানন্দ দাশ চরিত্রে দেখা যাবে খায়রুল বাসারকে। আরও অভিনয় করেছেন সোহেল মণ্ডল, নাজিবা বাশার, প্রিয়ন্তী উর্বী, রুপন্তী আকীদ, শরিফ সিরাজ, সুমাইয়া খুশি প্রমুখ।

২০২১-২২ অর্থবছরে ৭০ লাখ টাকার অনুদান পায় বনলতা সেন। নির্মাতা জানিয়েছেন, সিনেমাটি নির্মাণে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেননি তিনি। সময় বেশি লাগলেও যত্ন নিয়ে কাজ শেষ করেছেন। মাসুদ হাসান উজ্জ্বল বলেন, ‘জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে কাজ করা অনেক বেশি দায়বদ্ধতার। রিসার্চ করা, প্রস্তুতি নেওয়া, উপযুক্ত অভিনয়শিল্পী খোঁজা—পুরো প্রক্রিয়াটা অনেক কঠিন ছিল। সিনেমার জন্য সবাইকে প্রস্তুত করে নেওয়ার একটা বিষয় ছিল। দীর্ঘদিন আমরা রিহার্সাল করেছি। এই সিনেমার অনেক বড় একটা পার্ট ছিল প্রোডাকশন ডিজাইন। আমি পর্দায় যেভাবে সিনেমাটি দেখতে চাই, তা প্রস্তুত করতে অনেক সময় লেগে যায়।’

বনলতা সেন মুক্তির বিষয়ে নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল জানান, ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা করছেন তাঁরা। শিগগির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে শুরু হবে প্রচার-প্রচারণা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবলোকন নাট্যদলের নতুন নাটক ‘গন্ধসূত্র’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
অবলোকন নাট্যদলের নতুন নাটক ‘গন্ধসূত্র’

মঞ্চে নতুন নাটক নিয়ে আসছে নাটকের দল অবলোকন নাট্যদল। নাটকের নাম ‘গন্ধসূত্র’। নাটকটি লিখেছেন অপু শহীদ, নির্দেশনা দিয়েছেন তৌফিকুল ইসলাম ইমন। আজ রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে গন্ধসূত্র নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী। একই স্থান ও সময়ে আগামীকাল মঞ্চস্থ হবে এই নাটকের দ্বিতীয় প্রদর্শনী।

নাটকের গল্প এগিয়েছে একটি মেয়ের জীবনকে ঘিরে। মেয়েটি যেন হঠাৎ করেই ভয়ংকর হয়ে ওঠে। তার ব্যক্তিগত অহং দলিত হয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্রের সহযোগিতায়। নিজ ঘরে সে শনাক্ত করে সেই নির্যাতক ও নিপীড়ককে। সমাজের আইনের প্রতি সে আস্থা হারিয়ে ফেলে। এ ঘটনা যেন পৃথিবীর যেকোনো রাষ্ট্রে, যেকোনো নগরে ঘটে থাকে। ঠিক এখনই কোথাও না কোথাও ঘটছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। যে দেশে দীর্ঘ ফ্যাসিস্ট শাসনের পর গণতন্ত্র হামাগুড়ি দিতে শুরু করে, সেখানে এসব ঘটনা বেশি ঘটে।

নির্দেশক অপু শহীদ জানান, সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে এই নাটক। সমকালের বাংলাদেশের অভিজ্ঞতায় জারিত এক দগদগে নাটক গন্ধসূত্র। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বই এখন গ্লোবাল ভিলেজ। বিশ্বের অর্থনীতি এখন সমাজ-রাজনীতি, উন্নয়ন-বিশ্বায়ন, যুদ্ধ-হিংস্রতায় এমন এক টালমাটাল অবস্থার সৃষ্টি করেছে, যেখানে ব্যক্তি মানুষের সুস্থ থাকাটা বেশ কৌতূহলপ্রদ। আধিপত্যবাদী চরিত্র পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছিল কিন্তু কিছুতেই একটা কাঠামোতে দাঁড় করানো যাচ্ছিল না। এই অস্থিরতার মধ্যে মনে পড়ে গেল আর্জেন্টাইন-আমেরিকান নাট্যকার অ্যারিয়েল ডর্ফম্যানের কথা। এই বিশ্বায়নের যুগে মূল ইংরেজি নাটক, পোলনস্কির ফিল্ম এমনকি হিন্দি সিনেমাও পেয়ে গেলাম। পেয়ে গেলাম ডর্ফম্যানের আরও অনেক লেখার সন্ধান। নাটকের মূল ভরকেন্দ্র রাখলাম পোলনস্কির “ডেথ অ্যান্ড দ্য মেইডেন” সিনেমার ওপর।’

নির্দেশক তৌফিকুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘গন্ধসূত্র নাটকের স্ক্রিপ্ট হাতে পেয়ে মনে হলো, এই নাটকের সময়টা শুধু আমাদের রাষ্ট্রের নয়, বর্তমান বিশ্বের যেখানেই গণতন্ত্র ধসে পড়ছে সেখানকার বাস্তবতা। নাটকে নির্যাতিত এক নারী ব্যক্তিগত যন্ত্রণার বদলা নিতে চাইছে, এর বিপরীতে দাঁড়িয়ে দুই পুরুষ চরিত্র নাটকীয় দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে। নাটকের শেষে এসে মেয়ে এবং আগন্তুক এক ভয়ানক ডিসকোর্সে পৌঁছায়। রাষ্ট্রের রাজনৈতিক চরিত্রের বৈপরীত্যের কারণে সাধারণ নাগরিক একে অপরের শত্রু হয়ে দাঁড়ায়।’

গন্ধসূত্র নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসরিন অনু, সরওয়ার জাহান উপল, তৌফিকুল ইসলাম ইমন, ডায়না প্রমুখ। সংগীতে আছেন চার্লস নিলয় চৌধুরী, সেট ডিজাইনে আবু বকর সিদ্দিকি, আলোক পরিকল্পনায় মোখলেছুর রহমান এবং কস্টিউম ডিজাইন করেছেন আইরিন পারভীন লোপা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসপাতাল থেকে ফিরে অভিমানী নচিকেতা

বিনোদন ডেস্ক
নচিকেতা চক্রবর্তী
নচিকেতা চক্রবর্তী

ডিসেম্বর মাসের শুরুতে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে তাঁর। চিকিৎসা শেষে ছয় দিন পর ১২ ডিসেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে-বসে কাগজ-কলমে নচিকেতা লিখে রেখেছিলেন মৃত্যু নিয়ে তাঁর অনুভূতি। গতকাল ফেসবুকে নিজের কণ্ঠে প্রকাশ করেন ‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি’ শীর্ষক তাঁর এই উপলব্ধি।

জীবনে চলার পথে বেশ কয়েকবার মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখেছেন নচিকেতা। সেই কথাই সবাইকে জানালেন তিনি। নচিকেতার কথায়, ‘মৃত্যুর মুখ থেকে বারংবার ফিরে মন্দ লাগছে না। প্রথমবার বাইক থেকে পড়ে মাথায় লেগে কোমায়, তখন বয়স ১৫। দ্বিতীয়বার মানিকতলায় বাসভাড়া বৃদ্ধি আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে পাশের কমরেডের মৃত্যু আমার বদলে; হঠাৎ স্থান পরিবর্তনের কারণে। তখন বয়স কুড়ি। তৃতীয়বার পাতালরেলের নির্মিত হওয়া পরিত্যক্ত টানেলে জলে ডুবতে ডুবতে, তখন বয়স ১৬। ক্ষুদিরাম ছবি দেখে উৎসাহিত হয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে বেঁচে যাওয়া। দড়িটা হঠাৎ ছিঁড়ে যাওয়ায়, বয়স তখন ৭। নকশাল আন্দোলন দেখে উত্তেজিত হয়ে স্কুলে আগুন লাগিয়ে মরতে মরতে, তখন বয়স ৬। ৪৭ বছর বয়সে দিল্লির হাসপাতালে মোস্ট কমপ্লিকেটেড হুইপল সার্জারির টেবিল থেকে। এ ছাড়াও কত দুর্ঘটনা বা সুপরিকল্পিত গুজবের মৃত্যু থেকে আজ অবশেষে অ্যাপোলোতে হৃদয় ছন্দ বন্ধ থেকে এই বয়সে।’

মৃত্যু নিয়ে তাঁর অনুভূতির এই ভিডিওতে নেটিজেনদের প্রতি নচিকেতার অভিমান ফুটে উঠেছে। কারণ, অনেকবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে তাঁর মৃত্যুর গুজব। এবারও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর এমন খবর ছড়িয়েছিল। তাই তো অভিমানের সুরে নচিকেতা বললেন, ‘আমাকে তো আমার যা আয়ু, তার থেকে বেশিবার মারা হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। হয়তো ভুল হয়ে গেছে, ক্ষমা করবেন। এবার আপনারা মৃত্যু ঘোষণা করলেই মরে যাওয়ার চেষ্টা করব। কথা দিচ্ছি। অন্তত আপনাদের মান রাখতে।’

এ ভিডিওর শেষে নিজের ‘আগুনপাখি’ গানের দুটি লাইন জুড়ে দিয়েছেন নচিকেতা—‘মৃত্যু মস্ত ফাঁকি, দুচোখে আকাশ ডানায় আগুন, আরও আরও কত ওড়া বাকি’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত