Ajker Patrika

দেশের পরিস্থিতি জাহান্নামের চেয়েও খারাপ: রব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশের পরিস্থিতি জাহান্নামের চেয়েও খারাপ: রব

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি জাহান্নামের চেয়েও খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। আজ শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘আমি স্যুটকেসে কাপড়-চোপড় আর ওষুধ নিয়ে এসেছি। জেলখানায় নিয়ে যাবেন? ফখরুলকে নিয়ে গেছেন, আব্বাসকে নিয়ে গেছেন। হাজারো নেতা-কর্মীকে জেলখানায় নিয়েছেন। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি জাহান্নামের চেয়েও খারাপ।’ 

আ স ম আব্দুর রব আরও বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে হাত ভেঙে দেবে। আগুন লাগিয়ে দেবে। এটা কী? কোন ধরনের আচরণ? কোন ধরনের মন্তব্য? বিএনপির পার্টি অফিস নয় শুধু, একটা রাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমার মধ্যে যেকোনো অফিস ভেঙে ফেলা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গুলি করে নাগরিক হত্যা করাতো দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকেই ঠেলে দেওয়া।’ 

পুলিশ সরকারি দলের নির্দেশে দলীয় কর্মীর মতো আচরণ করছে উল্লেখ করে রব বলেন, ‘তাঁরা জনগণকে আইন ভঙ্গ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না। তাঁরা অন্য কাউকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। তাঁরা নির্বাচনে বিশ্বাস করে না।’ 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আজকে আমাদের ভিন্ন কর্মসূচি ছিল। বিএনপি অফিস যেভাবে ক্রাইম জোন ঘোষণা করে আটকে দিয়েছে, সবাই একসঙ্গে বিএনপি অফিসে দেখতে যেতে চেয়েছি। সরকার স্বৈরাচারী কায়দায় বিএনপি অফিসকে ক্রাইম জোন বলে রাস্তাঘাট বন্ধ করে রেখেছে।’ 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে পুলিশ কমিশনার ও বিএনপির নেতাদের মধ্যে সমাবেশের স্থান নির্ধারণের আলোচনায় মনে হয়েছিল, বিরাজমান সমস্যা সমাধানের দিকে যাচ্ছে। হঠাৎ করে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হলো। রাস্তার মোড়ে মোড়ে আওয়ামী পান্ডারা পুলিশের সহায়তা নিয়ে অবস্থান করছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।’ 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। পুলিশ ও দলীয় গুন্ডাবাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নিজেরা ককটেল ফাটিয়ে বিরোধী দলের ওপর দোষ দিচ্ছে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি মহাভুল করছেন। আপনার পিতা যে ভুল করেছিলেন তাঁর জন্য তাঁকে জীবন দিতে হয়েছে। আপনিও সেই পথে হাঁটছেন। ভুল পথ থেকে সরে না এলে আপনার বিপদ আছে। সংলাপ না করে সংঘাতে যাচ্ছেন। এটা বহুদলীয় গণতন্ত্র হতে পারে না।’ 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রমুখ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবেন তারেক রহমান, সংবর্ধনা বিমানবন্দর ও এভারকেয়ারের কাছাকাছি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৮
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি

১৭ বছরের বেশি সময় পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওই দিন বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁর অবতরণের কথা রয়েছে।

দেশে ফিরতে তারেক রহমান ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেছেন বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।

এদিকে যুক্তরাজ্য থেকে তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে স্মরণীয় করে রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমরা চাই, তাঁর এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন যেন বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে যেভাবে, যা কিছু দৃষ্টান্ত হয়েছে, তাকে ছাড়িয়ে যায় এবং আগামী ৫৫ বছরে ইতিহাসেও যেন সেরকম কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা না হয়। সেভাবে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই আমাদের সব আয়োজন হচ্ছে।’

সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল আজ বৃহস্পতিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন করে। এ সময় তারা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর পাভেল, তারেক রহমানের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামছুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে তারেক রহমানের নিরাপদ আগমন, বিমানবন্দরের ভেতরে ও বাইরে শৃঙ্খলা রক্ষা, যাত্রী ও জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল বজায় রেখে অভ্যর্থনা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে আজ বিকেলে সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সরেজমিনে বিমানবন্দরে যেখানে তারেক রহমান অবতরণ করবেন, সে জায়গা, কোথা থেকে গাড়িতে উঠবেন এবং সব রাস্তা পরিদর্শন করেছি।’

সালাউদ্দিন আহমদ জানান, তারেক রহমান দেশে ফিরে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর মাকে দেখতে যেতে পারেন। তাই তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য বিমানবন্দর ও এভারকেয়ার হাসপাতালের কাছাকাছি উপযুক্ত স্থান খোঁজা হচ্ছে।

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেন বা অতিরিক্ত বগি রিজার্ভের আবেদন করেছে বিএনপি। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এই আবেদন দেওয়া হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, ২৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করবেন তারেক রহমান। তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে সারা দেশ থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতার ঢাকায় আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে যাত্রীদের যাতায়াত সহজ করতে ২৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে বিভিন্ন রুটে রেলগাড়ি রিজার্ভ করার উদ্যোগ নিতে চায় বিএনপি।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করা হবে বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

যে সাতটি রুটে বিশেষ ট্রেন বা অতিরিক্ত বগি রিজার্ভের আবেদন বিএনপি করেছে, সেগুলো হচ্ছে কক্সবাজার-ঢাকা, সিলেট-ঢাকা, জামালপুর-ময়মনসিংহ-ঢাকা, টাঙ্গাইল-ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকা, পঞ্চগড়-নীলফামারী-পার্বতীপুর-ঢাকা ও কুড়িগ্রাম-রংপুর-ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকার নির্বাচনের কাজ ভালোভাবে করতে পারবে কি না তার গ্যারান্টি নেই: মান্না

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রবাসীদের ডাক আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রবাসীদের ডাক আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকার এই (ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন) নির্বাচনের কাজ যে ভালোভাবে করতে পারবেন কি না—তার গ্যারান্টি পাওয়া যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। বর্তমান সরকার নির্বাচনের আগে লিবিয়ায় জেলে বন্দী বাংলাদেশিদের মুক্তির দাবিগুলো আদায়ের কাজে কিছু করবে বলে মনে হয় না বলে মনে করেন তিনি। নির্বাচন করাটা একটা বিরাট কাজ, যা ভালোভাবে করতে পারার কোনো গ্যারান্টি নেই। সরকার সমস্ত প্রার্থীর নিরাপত্তা দিতে পারবে কি না, সেই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে মাহমুদুর রহমান মান্না।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রবাসীদের ডাক আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে লিবিয়া ভিরগানাম জাওয়াইয়া, ত্রিপোলি কারাগারে বন্দী ২৬ জনের মুক্তির দাবিতে এ নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমাদের রাজনীতির একটা বড় সমস্যা। আমি জানি না সম্ভবত সারা পৃথিবীতেই রাজনীতি এ রকম হয় কি না। রাজনীতিতে ধাপ্পাবাজি খুব চলে। বক্তৃতার সময় এত সব কথা বলা হয়, এত বড় বড় অঙ্গীকার করা হয়, বড় বড় স্বপ্ন দেখানো হয়—যা বাস্তবের সঙ্গে যার কোনো সম্পর্কই নাই।’

লিবিয়াতে বন্দী পরিবারের সদস্যদের দুঃখ-দুর্দশার কথা ও তাঁদের মুক্তির কথা টেনে এনে সরকারের উদ্দেশে মান্না বলেন, ‘এই আপনাদের মতো যারা আজকের এই অনুষ্ঠানে এসেছেন, আক্রান্ত পরিবার বা শোকাহত পরিবার তাদের মতো—এ রকম অনুষ্ঠান অনেক কিছু হচ্ছে। ’২৪-এর অভ্যুত্থানের একটা অন্যতম স্লোগান ছিল, বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ করব। অথচ আমাদের চাকরির জীবনে কত যে বৈষম্য আছে। বেতনের ক্ষেত্রে কত যে বৈষম্য আছে। বিচারের ক্ষেত্রে কত যে বৈষম্য আছে। এগুলোকে কেউ আলাদা করে উনি (প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস) কোনো কাজ করেছে বলে আমরা জানিও না। এই দাবিগুলো আদায় করবার কাজে বর্তমান সরকারের কিছু করবে বলে মনে করেন আপনারা?’

বৈষম্য টেনে নির্বাচন করাটাও একটা বিরাট কাজ বলে উল্লেখ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘সরকার নির্বাচনের কাজ ভালোভাবে করতে পারবে কি না তার গ্যারান্টি নেই। কাল রাত থেকে খবর ভাসছে, হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন। রাতে কয়েকজন আমাকে ফোন করেছে। ও কি আসলে বেঁচে আছে? এ রকম আরও ঘটনা ঘটতে পারে বলে লোকে বলছে।’

মান্না বলেন, ‘সামনের সম্ভাব্য ঘটনা সামাল দিতে পারবে সরকার? সরকার অযথা বলে সমস্ত প্রার্থীদের আমরা নিরাপত্তা দেব। আমি মাহমুদুর রহমান মান্না আমার একার নিরাপত্তা দিতে পারবে? তারা আমি গ্রামে যতগুলো জায়গায় যাব, যেতে হয় নির্বাচন করলে, সংগঠন করলে গ্রামে গ্রামে, আমার পেছনে পুলিশ ঘুরতে পারবে? আমার সিকিউরিটি কীভাবে হবে; আর ৩০০টা ক্যান্ডিডেট ৩০০টা আসন কতগুলো প্রার্থী হবে তাঁদের হিসাব করে কথা বলছেন কি?’

সরকার যদি সাপোর্ট শুধু উইথড্র করে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনই করতে পারবে না বলে মন্তব্য মান্নার। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে চালুই আছে নির্বাচন শিডিউল ঘোষণা হওয়ার পর দেশের সবকিছু চলে যায় নির্বাচন কমিশনের হাতে। কথাটা ঠিক নাকি বলার জন্য বলা? আমি তো বাস্তবে দেখি এগুলো বলা হয়, কিন্তু এ রকম হয় না। সরকারের সাপোর্ট ছাড়া এগুলো কোনো কাজেই লাগে না। সরকার যদি সাপোর্ট জাস্ট উইথড্র করে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনই করতে পারবে না।’

মানব পাচারের কথা বলতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মানবের ব্যবসা, আদম ব্যবসা, মানব পাচার কিংবা হিউম্যান রিসোর্স যে রকম করে বলেন না কেন—এইখানে তো একটা ভয়াবহ দস্যুতা চলছে। প্রায় শুরু থেকে কোনো সরকার এটাকে মানবিক করবার চেষ্টা করেছেন? করেননি। আমরা কত বড় সংস্কারের আন্দোলন করলাম। ভূমধ্যসাগরের মধ্যে মানুষ ডুবে মারা যায়।’

বন্দী থেকে মুক্ত হতে চাওয়া পাঠানো এক চিঠির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই চিঠি পড়বার পরে কী মনে হয় আপনাদের? কোথায় সংস্কার করা দরকার আগে? আমরা মানুষকে মানুষই ভাবি না। আমাদের প্রশাসন ওদেরকে গরু-ছাগলের মতো মনে করে। মানে এমনিতেই তারা মানুষ খারাপ বলছি না। ওদের কোনো উপায়ও নাই। তারা (প্রশাসন) লিবিয়া পর্যন্ত হাত বাড়াতেই পারবে না। প্রফেসর ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক সম্মানের কারণে অনেকে মনে করতেন যে তিনি হয়তো ম্যাজিক দেখিয়ে অনেক কিছু করতে পারবেন’, যদিও গত কয়েক বছরে তেমন কোনো ম্যাজিক দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অবৈধ প্রবাসীদের মুক্তির সমস্যার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সমস্যার মূল কারণ হলো অনেক ব্যক্তিকে বৈধ পথে নেওয়া হয়নি এবং এজেন্টরা তাঁদের কোথাও রেজিস্টার করেনি, ফলে সরকার তাঁদের গ্যারান্টি দিতে পারে না। যদিও প্রফেসর ইউনূসের মতো মানুষের অনুরোধে কোনো দেশের সরকার হয়তো একবার বা দুবার সম্মান দেখাতে পারে, কিন্তু বিশ্বজুড়ে অবৈধ কার্যক্রমের শিকার হওয়া লোকদের রক্ষা করা কঠিন।’

প্রবাসীদের ডাক সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন লিবিয়া কারাগারে বন্দীদের স্বজনেরা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের অখণ্ডতায় সম্পৃক্ত বক্তব্যে জামায়াত-শিবিরকে জড়ানোর অপচেষ্টা চলছে: জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ভারতের অখণ্ডতায় সম্পৃক্ত বক্তব্যে জামায়াত-শিবিরকে জড়ানোর অপচেষ্টা চলছে: জামায়াত

ভারতের আঞ্চলিক অখণ্ডতায় সম্পৃক্ত বক্তব্যে জামায়াত-শিবিরকে জড়ানোর অপচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

বিবৃতিতে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির ওপর বর্বর হামলা এবং পরে হামলাকারীদের প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেওয়ার খবরের ভিত্তিতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জনগণের মনে যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তা আমরা গভীরভাবে লক্ষ করছি। এ প্রেক্ষাপটে জনপরিসরে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে ভারতের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। দুঃখজনকভাবে, এই আলোচনার মধ্যে কারও কারও বক্তব্যে ভারতের আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিয়ে যেসব মন্তব্য এসেছে, অনলাইন পরিসরে সেসব মন্তব্যের সঙ্গে দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়ানোর অপচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে।’

মাহবুব জুবায়ের আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আচরণ এবং ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার যেকোনো ভূমিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই কঠোর ভাষায় নিন্দা জানিয়ে আসছে। একই সঙ্গে শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীরা যেভাবে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অতিসত্বর তাদের বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।’

মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘তবে এটাও অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, যেকোনো দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আপসহীন। কোনো দেশের অখণ্ডতা নিয়ে বক্তব্যের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়ানোর চেষ্টা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ধরনের অপপ্রচার ও মিথ্যাচার অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

মাহবুব জুবায়ের আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরাবরই ন্যায়বিচার, আন্তর্জাতিক আইন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় আমরা দৃঢ় অবস্থানে অবিচল থাকব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সব জুলাই যোদ্ধাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি: সামান্তা শারমিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৩৬
সামান্তা শারমিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সামান্তা শারমিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

এনসিপির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) ধানমন্ডি থানা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী জান্নাতারা রুমীর ঝুলন্ত মরদেহের মধ্যে জুলাইয়ের সম্মুখসারির সব যোদ্ধাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রুমীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার সার্বিক খোঁজ নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

সামান্তা শারমিন বলেন, ‘রুমী আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের একজন সম্মুখসারির যোদ্ধা ছিলেন। উনি নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এনসিপিতে কাজ করতে এসেছিলেন। যেভাবে তাঁকে আমরা দেখতে পেয়েছি, এটাকে এনসিপির জায়গা থেকে, জুলাইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধার জায়গা থেকে আমরা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছি না।’

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমরা শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতা কামনা করে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছি। কিন্তু এরই মধ্যে আমরা খবর পাই যে আমাদের সহযোদ্ধা রুমীর মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায়। হাদির মস্তিষ্ক ভেদ করে যাওয়া বুলেট যেমন আমাদের ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে, রুমীর ঝুলন্ত মরদেহ আমাদের এই বাংলাদেশের সকল মানুষকে এবং আমরা যারা এনসিপিসহ অন্যান্য যারা জুলাইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধা ছিলেন, সবাইকে এই ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি।’

এ সময় জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সামান্তা শারমিন। তিনি বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে জুলাইয়ের যারা সম্মুখসারির যোদ্ধা, যারা শহীদ পরিবার এবং যাঁরা আহত হয়েছেন, যাঁরা এই পুরো অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা করা হয় নাই।’

জুলাই সনদ ও সংস্কার নিয়ে আলোচনা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এনসিপির এই নেত্রী। নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো কীভাবে কাজ করবে, তার সঠিক রোডম্যাপ নেই বলেও অভিযোগ জানান তিনি। সামান্তা বলেন, ‘জুলাই সনদ এবং সংস্কার নিয়ে দিনকে দিন আলাপ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় যখন পুরো দেশটাকে একটা এমন নির্বাচনের দিকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যে নির্বাচনে কীভাবে পুলিশ বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো কীভাবে কাজ করবে—সেটার কোনো সঠিক রোডম্যাপ (পথনির্দেশ) নাই।’

প্রসঙ্গত, রাজধানীর জিগাতলার একটি ছাত্রী হোস্টেল আজ সকালে জান্নাতারা রুমীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত