মঈনুস সুলতান

থাইল্যান্ডের তরুণী প্রেমজাই। ওর সঙ্গে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে সাক্ষরতাবিষয়ক দুই মাসের প্রশিক্ষণে শামিল হই। প্রশিক্ষণে দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে আগত পার্টিসিপেন্টরা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলেও আমরা দুজন থেকে যাই যুক্তরাষ্ট্রে। চেষ্টা করি, ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটসে মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হতে। তখন গোল বাঁধে আমি ও প্রেমজাই টোফেল পরীক্ষা পাস করতে ব্যর্থ হলে। তো আমরা দুজনে নন-ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হই, যেখানে ক্লাস করার জন্য টোফেল ইত্যাদির কোনো প্রয়োজন ছিল না।
জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টবিষয়ক একটি নন-ডিগ্রি ক্লাসে সপ্তাহে বার দুই আমরা মিলিত হতাম। এ ছাড়া কোনো না কোনো কারণে ক্যাম্পাসে আমাদের দেখা-সাক্ষাৎ প্রতিদিনই হতো। তখন আমি অত্যন্ত আর্থিক সংকটের মধ্যে ছিলাম। কিছুতেই স্বল্প বাজেটে বসবাসের জন্য একটি কামরা পাচ্ছিলাম না। তাই চেনাজানা বন্ধুবান্ধবদের অ্যাপার্টমেন্টে—কখনো কাউচে আবার কখনো ফ্লোরে বেডরোল পেতে বাতাসভরা বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তাম। তিন বেলা যথেষ্ট পরিমাণে খাবারদাবার জোটানোও মুশকিল হয়ে পড়েছিল।
আমি যেদিন অনাহারে থাকতাম, প্রেমজাই কীভাবে তা যেন টের পেয়ে যেত। ক্লাসের বিরতিতে তার ঢাউস পার্স থেকে একটি প্লাস্টিকের কৌটা বের করে দিয়ে বলত—ক্যাফেটেরিয়ার বুফে-লাঞ্চে প্রচুর বেক করা ফিশ দিয়েছিল, আমি তো অত খেতে পারি না, এক টুকরা এক্সট্রা মাছ সেভ করেছি।
তত দিনে প্রেমজাইয়ের হালচাল ও চেহারাসুরতে বিস্তর পরিবর্তন এসেছে। সে চুল কাঁচি দিয়ে এবড়োখেবড়ো করে নিজ হাতে ছেঁটে মুখে এনেছে ঈষৎ কর্কশ লুক। রেশমি স্কার্ট টার্ট বাদ দিয়ে পরতে শুরু করেছে পুরুষালি ঢঙের ঢোলা র্যাগেড্ শার্ট-প্যান্ট। আমার সঙ্গে দেখা হলে আর আগের মতো সুইট করে হাসে না। খোঁচা মেরে খানিক ত্যাড়া ত্যাড়া কথা বলে। আর আমি না চাইলেও খুব ইনডাইরেক্টলি এক-আধটু সাহায্যও করে।
আমার বাতাসভরা বালিশ ফুটো হয়ে যাওয়াতে আমি উইলিয়াম ফোকনারের ঢাউস রচনাবলিতে মাথা রেখে দিন কয়েক ঘুমাই। তাতে ঘাড় বাঁকা হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর ব্যাকপেন বাড়ে বিঘতভাবে। তখন প্রেমজাই নিয়ে আসে চিলেকোঠায় বসবাসের সম্ভাবনার সংবাদ। সে আরও চারটি আমেরিকান শ্বেতাঙ্গ মেয়েদের সঙ্গে মিলেঝুলে একটি ভিক্টোরীয় ধাঁচের খুব পুরোনো দোতলা বাড়িতে শেয়ারে বাস করছে। ওই বাড়িতে চিলেকোঠার এক চিলতে কামরা নামকাওয়াস্তে টাকায় ভাড়া দিচ্ছে। চাইলে আমিও ওখানে বাস করতে পারি।
ওই দিন সন্ধ্যাবেলা আমার বেডরোল, ব্যাকপ্যাক ও ফুটোবালিশ নিয়ে ওখানে এসে উঠি। চিলেকোঠায় পৌঁছাতে হয় হিলহিলে একটি আলগা মই বেয়ে। পরিসর পা লম্বা করে ঘুমানোর মতো প্রশস্ত। পাশে জামাকাপড়, জুতাছাতা, গোটা বিশেক বইপত্র ও কফি মগ রাখার মতো যথেষ্ট জায়গা আছে। বৈদ্যুতিক বাতির কোনো বন্দোবস্ত নেই। তার প্রয়োজনও নেই, টর্চ জ্বেলে অনায়াসে মই বাওয়া যাবে। আর খুব দরকার পড়লে জ্বালানো যাবে মোমবাতি। তখন গ্রীষ্মকাল চলছে। আমি দিন তিনেক চিলেকোঠায় বসবাস করে এক রাতে গরমে ঘেমে-নেয়ে মই বেয়ে নেমে আসি দোতলায়।
করিডরে একটি পুরোনো জ্যাম্পেস কাউচে স্কার্ট হাঁটু অবধি গুটিয়ে পা ছড়িয়ে বসে প্রেমজাই। সে ডিকশনারি দেখে মৃদুস্বরে দুলে দুলে ইংরেজি শব্দের উচ্চারণ মশকো করছে। আমার ঘর্মাক্ত হালত দেখে বোধ করি তার কৃপা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে বেজমেন্ট থেকে সে নিয়ে আসে একটি মাকড়সার জালে জড়ানো টেবিল ফ্যান। ঘণ্টাখানেকের পরিশ্রমে তাতে এক্সট্রা ইলেকট্রিক তার জুড়ে দিয়ে চিলেকোঠার ঠিক নিচে তার কামরায় প্লাগ-ইন করে মই বেয়ে তা আমার বেডরোলের পাশে রেখে যায়।
তারপর থেকে টেবিল ফ্যানের বাতাসে আমার শরীর জুড়ালেও, গভীর রাতে আমি দুঃস্বপ্ন থেকে জেগে উঠতে থাকি। কারণ, টেবিল ফ্যানটিতে কোনো ঢাকনা ছিল না। তাই আধো ঘুমে কেবলই মনে হতো—যদি ডানায় হাত লেগেটেগে যায়।
প্রেমজাই তখন কেবলই মুখভার করে থাকত বলে এ নিয়ে অভিযোগও করতে সাহস পেতাম না। তার মন খারাপের কারণ আমার জানা ছিল। আমি দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় টোফেল পাস করেছি, সঙ্গে সঙ্গে মাস্টার্স প্রোগ্রামে অ্যাডমিশনের বিষয়টিও সম্মানজনকভাবে সুরাহা হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে পরীক্ষায় বসে প্রেমজাই টোফেল উত্তীর্ণ হতে পারেনি। আমার সফলতায় আমি বড় বিব্রতবোধ করি। তার দিকে ভালো করে চোখ তুলে তাকাতেও পারি না আর।
উইকয়েন্ড শুরু হলে শনিবারে আমি একটু রাত করে বাড়ি ফিরতাম। ওই দিন ভিক্টোরীয় ধাঁচের পুরোনো দোতলা বাড়িটির যেন রূপ বদলে যেতো। চার-চারটি শ্বেতাঙ্গ যুবতী সন্ধ্যার পর সাজগোজ করত। আসত তাদের বয়ফ্রেন্ডরা। আমি মুখচোরা বিলাইয়ের মতো বেশ রাতে পা টিপে টিপে লিভিং রুমের লাগোয়া করিডর ধরে হেঁটে যেতে যেতে দেখি, মোমের আলোয় স্কার্টের ঘূর্ণি তুলে নাচছে একটি মেয়ে। আর তার বয়ফ্রেন্ড দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাজাচ্ছে চেলো।
সিঁড়ির তলায় ফয়ারেও খুব কাছাকাছি হয়ে দাঁড়িয়ে আরেকটি কাপল। তারা চাকোস চাকোস করে চুমো খাওয়ার ফাঁকে আমাকে ‘গুড নাইট’, ও ‘হ্যাভ অ্যা নাইস ইভিনিং’ বলে। দোতলার করিডরের কোনায় দেখি, জ্যাম্পেস কাউচে পা ছড়িয়ে বসে প্রেমজাই, যথারীতি ডিকশনারি ঘেঁটে ঘেঁটে মশকো করছে ইংরেজি রিডিং প্যাসেজ।
আমাকে দেখতে পেয়ে অনেক দিন পর তার মুখে ফিরে আসে সুপারসুইট হাসিটি। ফিক করে ঠোঁট ঈষৎ বাঁকিয়ে বলে, ‘টেল মি হাউ অ্যাম আই গোনা গেট অ্যা বয়ফ্রেন্ড?’ জবাবে আমি নির্লিপ্ত থাকলে সে টুসকি দিয়ে একটি মিন্টগাম আমার দিকে ছুড়ে দেয়। ঠিক তখনই পাশের লাগোয়া কামরা থেকে ভেসে আসে শরীরিভাবে অন্তরঙ্গ হওয়ার আলামত। এ ধরনের আধো অস্ফুট আওয়াজকে বিশুদ্ধ বাংলায় বলা হয় শীৎকার। তাতে প্রেমজাইয়ের চোখমুখ লাজরক্তিম হয়ে উঠলে, আমি এ সুযোগে তাকে ‘গুড নাইট’ বলে মইয়ে পা রেখে চিলেকোঠায় উঠে পড়ি।
মাসখানেকের ভেতর প্রেমজাইয়ের জীবনে মোড় ফিরে। কীভাবে যেন তারও জুটে যায় একটি বয়ফ্রেন্ড। চাঁছাছোলা মস্তকের পুরুষটি বারান্দাঅলা হ্যাট পরে এসে হাজির হতো দিনদুপুরে। রাতবিরাতে আমি চিলেকোঠা থেকে নেমে করিডরের কোনার কমন বাথরুম ব্যবহার করতে গেলে, চোখে পড়ত, প্রেমজাইয়ের বয়ফ্রেন্ড সানগ্লাসে চোখ ঢেকে ছায়ামূর্তির মতো টাকিলার বোতল আর লেবু হাতে যাচ্ছে কিচেনের দিকে।
একদিন ভোরবেলা মই বেয়ে নামতেই দেখি, জ্যাম্পেস কাউচে দৈহিকভাবে অন্তরঙ্গ হয়ে বসে আছে প্রেমজাই ও তার পুরুষবন্ধুটি। আমি চোখ ফেরাতে গেলে প্রেমজাই ‘ওয়েট অ্যা মিনিট’ বলে উঠে দাঁড়ায়। কার্পেটে পড়ে থাকা ড্রেসিং গাউন তুলে কাঁধে জড়িয়ে, কোমরে ফিতা বাঁধতে বাঁধতে সে বলে,‘আই লাইক ইউ টু মিট মাই বয়ফ্রেন্ড।’
তো আমি হাতটাত মিলিয়ে পরিচিত হই তার পুরুষবন্ধু হেক্টরের সঙ্গে। ছেলেটির ঊর্ধ্বাঙ্গ আদুল, লোমভরা বুকে অসংখ্য কাটাকুটি ও জখমের দাগ। ইংরেজি সে বলে খুবই সামান্য। তবে আমাকে আন্তরিকভাবে টাকিলা পানের আমন্ত্রণ জানায়, এবং জানতে চায় কী কাজ করি?
মাস্টার্স প্রোগ্রামের ছাত্রত্ব ছাড়া আমি মূলত বেকার জানতে পেরে, মেক্সিকো থেকে ফার্ম ওয়ার্কার হিসেবে আগত হেক্টর চুকচুক করে আফসোস প্রকাশ করে। বলে, চলে এসো আমার সঙ্গে, ফার্মে আপেল কুড়াবে, ঘণ্টাওয়ারি মাইনে এরা মন্দ দেয় না।
আমি রাজি না হলে হেক্টর একটু হতাশ হয়ে টিপয়ের তলা থেকে টেনে বার করে ছোট্ট একটি পিঞ্জিরা। তার আগল খুলে দিয়ে ঠোঁট সুচালো করে শিস দিতেই ডানা ঝটপটিয়ে খানিক উড়ে এসে তার কাঁধে বসে বর্ণিল একটি পাখি। প্রেমজাই উৎসাহের সঙ্গে ধূসরে সাদাটে হলুদ মাখানো খেচরের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়। এটি হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ান কাকাটিয়েল।
জুটিঅলা কাকাতুয়ার চোখের নিচে অরেঞ্জ বর্ণের দুটি কিউট বৃত্ত। পাখিটি হেক্টরের কাঁধ ছেড়ে উড়ে এসে ল্যান্ড করে প্রেমজাইয়ের ড্রেসিং গাউনের ঢোলা পকেটে। ওখানে পা রেখে সে বোতাম খুঁটতে শুরু করলে, আমি তাদের গুডবাই বলি।
সিঁড়ি ধরে একতলায় নেমে আসতে আসতে কেন জানি একটু ঈর্ষা হয়। কিন্তু হেক্টরের সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে আমাকে গলায় গোখরা সাপ পেঁচিয়ে ঘোরাফেরা করতে হয়। সে যোগ্যতা আমার নেই, তারপর নীরবে কপাট খুলে নেমে আসি ফুটপাতে।
কিছুদিনের মধ্যে প্রেমজাই লেখাপড়াতে আগ্রহ হারায়। নন-ডিগ্রি কোর্সের ক্লাসগুলোতে সে আর রেগুলার অ্যাটেন্ড করছে না। মাঝেমধ্যে দুপুরবেলা বাড়ি ফিরলে দেখি, সে কিচেনে রান্নাবান্না করছে, আর বারস্টুলে সানগ্লাস পরে বসে হেক্টর। কাকাতুয়াকে সে খাওয়াচ্ছে এক-দুটি করে সূর্যমুখী ফুলের বীজ।
প্রেমজাই আমার সঙ্গে আর কথাবার্তা তেমন বলে না। তবে ভালোমন্দ কিছু রান্না করলে বিড়ালকে খাবার দেওয়ার মতো করে চিলেকোঠার দোরগোড়ায় রেখে যায় এক বাটি থাই গ্রীন কারি, বা তম-ইয়াম-কুঙ বলে চিংড়ি মাছের স্যুপ, সঙ্গে পিরিচে একদলা জেসমিন রাইস।
হেক্টর সপ্তাহখানেকের জন্য মেক্সিকো সিটিতে ফিরে গেলে, কাকাতুয়ার হেফাজতের পুরো কাস্টডি পায় প্রেমজাই। কিন্তু সপ্তা তিন গড়িয়ে মাসখানেক হতে চলল হেক্টর আর ফিরে না। সে কোনো ঠিকানা বা টেলিফোন নম্বর দিয়ে যায়নি যে প্রেমজাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নিতে পরবে—তার হয়েছে কী?
তো কাকাতুয়াটি প্রেমজাইয়ের সঙ্গেই আছে। সে শিখে নিচ্ছে এক-দুটি থাই শব্দ বা বাক্য। একাকী উড়ে বেড়ায় খেচরটি দোতলার সর্বত্র। প্রেমজাই আজকাল জ্যাম্পেস কাউচে হামেশা মন খারাপ করে বসে থাকে। মিনি বুমবক্সে সে অহরহ শুনে আলবার্ট থংচাই বলে এক থাই পপ সিংগারের বিষণ্ন লিরিক।
টেবিল-ল্যাম্পের শেডের প্রান্তে বসে মৃদু সিঙসঙ স্বরে কাকাতুয়া অনুকরণ করে থাই গায়কের সেরেনাদ। আমি পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে ‘ওয়েট অ্যা মিনিট’ বলে আমাকে দাঁড় করিয়ে প্রেমজাই পাখিটি দেখিয়ে বলে, ‘ইজ নট হি অ্যা ডার্লিং বার্ড?’
‘অবকোর্স হি ইজ,’ বলে আমি সায় দিই। সে উৎসাহিত হয়ে বলে, ‘আমি তার নাম দিয়েছি পাকপাও। থাই ভাষায় পাকপাও এর অর্থ হচ্ছে ঘুড়ি। সারাক্ষণ উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে তো।’ কাকাতুয়াটি যেন তার কথা বুঝতে পেরেছে, এমন ভঙ্গিতে গ্রীবা বাঁকা করে থাই ভাষায় বলে, ‘কবচাই জিং জিং’ বা ‘থ্যাংক ইউ ট্রুলি’। পাখির পাকামিতে প্রেমজাই হেসে ফেলে ফিক করে।
পরদিন এ রকম করিডর ধরে হেঁটে যাচ্ছি। প্রেমজাই আবার আমাকে থামায়। বলে, ‘লুক পাকপাও চমৎকার একটি ট্রিক শিখেছে।’ বিষয় কী? পাখি আবার কী শিখল?
প্রেমজাই কাঠের সুদর্শন কারুকাজ করা ফ্রেমের একটি আয়না তুলে ধরে। আয়নাটির নিচের দিকে মেকআপের টুকিটাকি রাখার জন্য ছোট্ট একটি ট্রে আটকানো। ‘কিস দ্যা শ্যাডো-বার্ড ইন দি মিরর’, বলতেই পাকপাও ট্রে-তে পা রেখে বসে আরশিতে তার প্রতিবিম্ব মনোযোগ দিয়ে দেখে। খানিক নিরিখ করে সে অবশেষে প্রতিবিম্বের ঠোঁটে রাখে তার ঠোঁট। প্রেমজাই খুশি হয়ে তাকে কয়েকটি সূর্যমুখী ফুলের বীজ খেতে দেয়।
হেক্টর আর ফিরে আসেনি। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেমজাইয়ের বসবাসের মেয়াদ শেষ হয়ে আসে। সে টোফেল পরীক্ষায় চতুর্থবারের মতো অসফল হয়েছে। তার ভিসা এক্সটেনশন হচ্ছে না। আর এখনই ব্যাংকক রিটার্ন গেলে, আগে যেখানে সে চাকরি করত তা-ও হয়তো ফিরে পাওয়া যেতে পারে।
খুব দোলাচলের ভেতর এক সন্ধ্যায় সে মই বেয়ে উঠে আসে চিলেকোঠায়। পিরিচে করে সে নিয়ে এসেছে শুকনো কিছু ঝরা গোলাপের পাপড়ি। লাল গোলাপটি হেক্টর তাকে দিয়েছিল। শুকনো পাপড়িগুলো সিল্কের রুমালে পেঁচিয়ে পুঁটলি বাঁধতে গিয়ে প্রেমজাই আকুল হয়ে কাঁদে। সে ফিরে যাচ্ছে ব্যাংককে দিন তিনেক পর। এই শুকনো কটি পাপড়ি ছাড়া তার কাছে হেক্টরের আর কোনো স্মৃতিই নেই।
একটি সমস্যা দেখা দেয় কাকাতুয়া পাকপাওকে নিয়ে। তাকে থাইল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া যাবে না। আমি প্রেমজাইকে পরামর্শ দিই—প্যাটস্টোরে গিয়ে হয় পাখিটিকে বিক্রি করে দিতে, অথবা খুঁজে দেখতে, জানাশোনা কেউ যদি পাকপাওকে দত্তক নিয়ে লালনপালন করতে রাজি হয়।
এই দুই প্রস্তাবের কোনটাতেই প্রেমজাই রাজি হয় না। সে কেঁদে বলে, তার ধারণা কিছুদিন পর হেক্টর ফিরে আসবে। আর পাকপাও এর সন্ধানে এ বাড়িতে তার ফিরে আসা খুবই যুক্তিসংগত। তার দাবি আমি কিছুদিন পাকপাওয়ের তত্ত্বতালাবি করব, ইতিমধ্যে হেক্টর ফিরে এলে পাখিটি তাকে ফেরত দেব।
আমি ভেবেচিন্তে নিমরাজি হই। তখন প্রেমজাই আমাকে কাঠের কারুকাজ করা আয়নাটি দেখিয়ে বলে, পাকপাও আয়নায় মুখ দেখতে ও প্রতিবিম্বের পাখিকে চুমো খেতে খুবই ভালোবাসে। আমি যেন প্রতিদিন দুই-তিনবার আরশিতে পাকপাওয়ের মুখ দেখার ব্যবস্থা করি। এতে কাকাতুয়ার মন ভালো থাকবে।
এই প্রস্তাবে আমি রাজি হয়ে প্রেমজাইয়ের কাছে আয়নাটি চাই। কিন্তু সে কপাল কুঁচকে বলে, ‘সরি, এই আয়নাটি আমি আমার দিদিমার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছি। এটি তোমাকে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে শহরের একটি দোকানে সাউথ ইস্ট এশিয়ান আর্ট অবজেক্ট বিক্রি হয়। ওখানে এ ধরনের আয়না আছে কয়েকটি। তুমি কাইন্ডলি একটি কিনে নিও।’
প্রস্তাব শুনে আমি নীরব থাকি। তো উদ্বিগ্ন স্বরে সে ফের কথা বলে, ‘তুমি কি আমার পাকপাওয়ের জন্য একটি থাই স্টাইলের আয়না কিনতে পারবে না? আই অ্যাম রিয়েলি স্যরি, দিদিমার কাছ থেকে পাওয়া আয়নাটা যে দিতে চাচ্ছি না।’ আমি তার মুখের দিকে তাকাই। প্রেমজাইয়ের চোখমুখে ফুটে ওঠা বিষণ্ন অভিব্যক্তি আমাকে ছুঁয়ে যায়। তো একটি আয়না কেনার প্রতিশ্রুতি দিই। প্রেমজাই মৃদু হাসে, কিন্তু হাসিতেও মুছে যায় না বিষণ্নতার গাঢ় ছায়া।
মাস দুই কেটে যায়। হেক্টর ফিরে আসেনি। তবে কাকাতুয়া পাকপাওয়ের সঙ্গে আমার বন্ধন গাঢ় হয়েছে। এখন সে অবলীলায় আমার হাতে বসে তালু থেকে খুঁটে খায় সূর্যমুখী ফুলের বীজ। মাঝেসাজে পাখিটির মন ভালো থাকলে থাই ভাষায় আলবার্ট থংসাইয়ের পপ গানের লিরিকও শোনায় এক-আধটু। আমি সারা দিন নানা ধান্দায় বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াই। তাই পাকপাওকে খাঁচায় থাকতে হয়। তাকে পিঞ্জিরায় বন্দী করে রাখছি বলে একটু গ্লানিও হয়।
অবশেষে প্রেমজাইয়ের কাছ থেকে চিঠি আসে। সে জানতে চেয়েছে, আমি পাকপাওকে থাই স্টাইলের আয়না কিনে দিয়েছি কি না? বিষয়টি আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। আমার নিজের কোনো আয়না ছিল না। আর চুলদাড়িতে ভবসব নিজস্ব সুরত দেখার কোনো প্রয়োজনও ছিল না। তাই প্রেমজাইয়ের চিঠি পড়ামাত্র পাকপাওকে কমন বাথরুমে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিই। কাকতুয়াটির আরশি-প্রীতি সত্যিই অসাধারণ। সে উড়ে উড়ে কেবলই দেয়ালের আয়নায় মুখ দেখে। চেষ্টা করে, আয়নাতে পা ঠেকিয়ে পালক ছড়িয়ে বসে পড়ার। আমি তার পায়ের নিচে বাহু পেতে দিলে সে তাতে বসে তাকিয়ে থাকে প্রতিবিম্বের পাখিটির দিকে। তারপর ঠোঁট দিয়ে ছুঁয়ে দেয় ছায়া-পাখির ওষ্ঠ।
বিষয়টি আর অবহেলা করা যায় না। সুতরাং পাকপাওকে পিঞ্জিরায় পুরে নিয়ে রওনা হই শহরের দিকে। সাউথ ইস্ট এশিয়ান আর্ট অবজেক্টের দোকানে সত্যিই পাওয়া যায়, থাই স্টাইলের কয়েকটি আয়না। এই আরশিগুলো অবিকল প্রেমজাইয়ের দিদিমার দেওয়া আয়নার মতো। দাম উনচল্লিশ ডলার নাইটিনাইন সেন্ট। দামের দিকে তাকিয়ে পিঞ্জিরাসহ বেরিয়ে আসি দোকান থেকে।
শহরের পার্কের প্রান্তে এসে বনানীর নিবিড় ছায়ায় একটি বেঞ্চে বসে পিঞ্জিরা খুলে দিই। পাকপাও বেরিয়ে এসে আমার কাঁধে বসে। অবাক হয়ে সে দেখে, চারদিকের ঝিরিঝিরি সবুজ পত্রালি। আমি থাই স্টাইলের আরশির দামের বিষয়টি ভাবি। আমার উপার্জন নেই বললেই চলে। কষ্টেসৃষ্টে ডলার চল্লিশেক হয়তো জোগাড় করতে পারব। কিন্তু চল্লিশ ডলারে ইউজড্ বুক স্টোর থেকে কেনা যাবে গোটা চারেক টেক্সট্ বুকস্, সস্তা রেস্তোরাঁয় খাওয়া যাবে অন্তত দু-তিনটি ডিনার। একটি আরশি কিনে এতগুলো টাকা খরচ করব?
পাকপাও উড়ে গিয়ে একটি গাছের ডালে বসে। মৃদু হাওয়ায় খানিক দুলতে দুলতে আমার দিকে তাকিয়ে একটু শিস দিয়ে কিছু গায়। ফিরে এসে আবার কাঁধে বসে, টুকটাক কিছু শব্দ করে পরিষ্কার থাই ভাষায় বলে, ‘কপচাই জিংজিং’ বা ‘থ্যাংক ইউ ট্রুলি।’ তারপর উড়ে যায় সে। কিছুক্ষণ গাছপালার উঁচু ডালে ঝোলাঝুলি করে কীভাবে যেন হাওয়া হয়ে যায়। আমি অনেকক্ষণ বেঞ্চে বসে থাকি। শূন্য পিঞ্জিরা হাতে অপেক্ষা করি, সন্ধ্যা হয় কিন্তু পাকপাও আর ফিরে আসে না।
(চলবে)

থাইল্যান্ডের তরুণী প্রেমজাই। ওর সঙ্গে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে সাক্ষরতাবিষয়ক দুই মাসের প্রশিক্ষণে শামিল হই। প্রশিক্ষণে দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে আগত পার্টিসিপেন্টরা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলেও আমরা দুজন থেকে যাই যুক্তরাষ্ট্রে। চেষ্টা করি, ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটসে মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হতে। তখন গোল বাঁধে আমি ও প্রেমজাই টোফেল পরীক্ষা পাস করতে ব্যর্থ হলে। তো আমরা দুজনে নন-ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হই, যেখানে ক্লাস করার জন্য টোফেল ইত্যাদির কোনো প্রয়োজন ছিল না।
জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টবিষয়ক একটি নন-ডিগ্রি ক্লাসে সপ্তাহে বার দুই আমরা মিলিত হতাম। এ ছাড়া কোনো না কোনো কারণে ক্যাম্পাসে আমাদের দেখা-সাক্ষাৎ প্রতিদিনই হতো। তখন আমি অত্যন্ত আর্থিক সংকটের মধ্যে ছিলাম। কিছুতেই স্বল্প বাজেটে বসবাসের জন্য একটি কামরা পাচ্ছিলাম না। তাই চেনাজানা বন্ধুবান্ধবদের অ্যাপার্টমেন্টে—কখনো কাউচে আবার কখনো ফ্লোরে বেডরোল পেতে বাতাসভরা বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তাম। তিন বেলা যথেষ্ট পরিমাণে খাবারদাবার জোটানোও মুশকিল হয়ে পড়েছিল।
আমি যেদিন অনাহারে থাকতাম, প্রেমজাই কীভাবে তা যেন টের পেয়ে যেত। ক্লাসের বিরতিতে তার ঢাউস পার্স থেকে একটি প্লাস্টিকের কৌটা বের করে দিয়ে বলত—ক্যাফেটেরিয়ার বুফে-লাঞ্চে প্রচুর বেক করা ফিশ দিয়েছিল, আমি তো অত খেতে পারি না, এক টুকরা এক্সট্রা মাছ সেভ করেছি।
তত দিনে প্রেমজাইয়ের হালচাল ও চেহারাসুরতে বিস্তর পরিবর্তন এসেছে। সে চুল কাঁচি দিয়ে এবড়োখেবড়ো করে নিজ হাতে ছেঁটে মুখে এনেছে ঈষৎ কর্কশ লুক। রেশমি স্কার্ট টার্ট বাদ দিয়ে পরতে শুরু করেছে পুরুষালি ঢঙের ঢোলা র্যাগেড্ শার্ট-প্যান্ট। আমার সঙ্গে দেখা হলে আর আগের মতো সুইট করে হাসে না। খোঁচা মেরে খানিক ত্যাড়া ত্যাড়া কথা বলে। আর আমি না চাইলেও খুব ইনডাইরেক্টলি এক-আধটু সাহায্যও করে।
আমার বাতাসভরা বালিশ ফুটো হয়ে যাওয়াতে আমি উইলিয়াম ফোকনারের ঢাউস রচনাবলিতে মাথা রেখে দিন কয়েক ঘুমাই। তাতে ঘাড় বাঁকা হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর ব্যাকপেন বাড়ে বিঘতভাবে। তখন প্রেমজাই নিয়ে আসে চিলেকোঠায় বসবাসের সম্ভাবনার সংবাদ। সে আরও চারটি আমেরিকান শ্বেতাঙ্গ মেয়েদের সঙ্গে মিলেঝুলে একটি ভিক্টোরীয় ধাঁচের খুব পুরোনো দোতলা বাড়িতে শেয়ারে বাস করছে। ওই বাড়িতে চিলেকোঠার এক চিলতে কামরা নামকাওয়াস্তে টাকায় ভাড়া দিচ্ছে। চাইলে আমিও ওখানে বাস করতে পারি।
ওই দিন সন্ধ্যাবেলা আমার বেডরোল, ব্যাকপ্যাক ও ফুটোবালিশ নিয়ে ওখানে এসে উঠি। চিলেকোঠায় পৌঁছাতে হয় হিলহিলে একটি আলগা মই বেয়ে। পরিসর পা লম্বা করে ঘুমানোর মতো প্রশস্ত। পাশে জামাকাপড়, জুতাছাতা, গোটা বিশেক বইপত্র ও কফি মগ রাখার মতো যথেষ্ট জায়গা আছে। বৈদ্যুতিক বাতির কোনো বন্দোবস্ত নেই। তার প্রয়োজনও নেই, টর্চ জ্বেলে অনায়াসে মই বাওয়া যাবে। আর খুব দরকার পড়লে জ্বালানো যাবে মোমবাতি। তখন গ্রীষ্মকাল চলছে। আমি দিন তিনেক চিলেকোঠায় বসবাস করে এক রাতে গরমে ঘেমে-নেয়ে মই বেয়ে নেমে আসি দোতলায়।
করিডরে একটি পুরোনো জ্যাম্পেস কাউচে স্কার্ট হাঁটু অবধি গুটিয়ে পা ছড়িয়ে বসে প্রেমজাই। সে ডিকশনারি দেখে মৃদুস্বরে দুলে দুলে ইংরেজি শব্দের উচ্চারণ মশকো করছে। আমার ঘর্মাক্ত হালত দেখে বোধ করি তার কৃপা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে বেজমেন্ট থেকে সে নিয়ে আসে একটি মাকড়সার জালে জড়ানো টেবিল ফ্যান। ঘণ্টাখানেকের পরিশ্রমে তাতে এক্সট্রা ইলেকট্রিক তার জুড়ে দিয়ে চিলেকোঠার ঠিক নিচে তার কামরায় প্লাগ-ইন করে মই বেয়ে তা আমার বেডরোলের পাশে রেখে যায়।
তারপর থেকে টেবিল ফ্যানের বাতাসে আমার শরীর জুড়ালেও, গভীর রাতে আমি দুঃস্বপ্ন থেকে জেগে উঠতে থাকি। কারণ, টেবিল ফ্যানটিতে কোনো ঢাকনা ছিল না। তাই আধো ঘুমে কেবলই মনে হতো—যদি ডানায় হাত লেগেটেগে যায়।
প্রেমজাই তখন কেবলই মুখভার করে থাকত বলে এ নিয়ে অভিযোগও করতে সাহস পেতাম না। তার মন খারাপের কারণ আমার জানা ছিল। আমি দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় টোফেল পাস করেছি, সঙ্গে সঙ্গে মাস্টার্স প্রোগ্রামে অ্যাডমিশনের বিষয়টিও সম্মানজনকভাবে সুরাহা হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে পরীক্ষায় বসে প্রেমজাই টোফেল উত্তীর্ণ হতে পারেনি। আমার সফলতায় আমি বড় বিব্রতবোধ করি। তার দিকে ভালো করে চোখ তুলে তাকাতেও পারি না আর।
উইকয়েন্ড শুরু হলে শনিবারে আমি একটু রাত করে বাড়ি ফিরতাম। ওই দিন ভিক্টোরীয় ধাঁচের পুরোনো দোতলা বাড়িটির যেন রূপ বদলে যেতো। চার-চারটি শ্বেতাঙ্গ যুবতী সন্ধ্যার পর সাজগোজ করত। আসত তাদের বয়ফ্রেন্ডরা। আমি মুখচোরা বিলাইয়ের মতো বেশ রাতে পা টিপে টিপে লিভিং রুমের লাগোয়া করিডর ধরে হেঁটে যেতে যেতে দেখি, মোমের আলোয় স্কার্টের ঘূর্ণি তুলে নাচছে একটি মেয়ে। আর তার বয়ফ্রেন্ড দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাজাচ্ছে চেলো।
সিঁড়ির তলায় ফয়ারেও খুব কাছাকাছি হয়ে দাঁড়িয়ে আরেকটি কাপল। তারা চাকোস চাকোস করে চুমো খাওয়ার ফাঁকে আমাকে ‘গুড নাইট’, ও ‘হ্যাভ অ্যা নাইস ইভিনিং’ বলে। দোতলার করিডরের কোনায় দেখি, জ্যাম্পেস কাউচে পা ছড়িয়ে বসে প্রেমজাই, যথারীতি ডিকশনারি ঘেঁটে ঘেঁটে মশকো করছে ইংরেজি রিডিং প্যাসেজ।
আমাকে দেখতে পেয়ে অনেক দিন পর তার মুখে ফিরে আসে সুপারসুইট হাসিটি। ফিক করে ঠোঁট ঈষৎ বাঁকিয়ে বলে, ‘টেল মি হাউ অ্যাম আই গোনা গেট অ্যা বয়ফ্রেন্ড?’ জবাবে আমি নির্লিপ্ত থাকলে সে টুসকি দিয়ে একটি মিন্টগাম আমার দিকে ছুড়ে দেয়। ঠিক তখনই পাশের লাগোয়া কামরা থেকে ভেসে আসে শরীরিভাবে অন্তরঙ্গ হওয়ার আলামত। এ ধরনের আধো অস্ফুট আওয়াজকে বিশুদ্ধ বাংলায় বলা হয় শীৎকার। তাতে প্রেমজাইয়ের চোখমুখ লাজরক্তিম হয়ে উঠলে, আমি এ সুযোগে তাকে ‘গুড নাইট’ বলে মইয়ে পা রেখে চিলেকোঠায় উঠে পড়ি।
মাসখানেকের ভেতর প্রেমজাইয়ের জীবনে মোড় ফিরে। কীভাবে যেন তারও জুটে যায় একটি বয়ফ্রেন্ড। চাঁছাছোলা মস্তকের পুরুষটি বারান্দাঅলা হ্যাট পরে এসে হাজির হতো দিনদুপুরে। রাতবিরাতে আমি চিলেকোঠা থেকে নেমে করিডরের কোনার কমন বাথরুম ব্যবহার করতে গেলে, চোখে পড়ত, প্রেমজাইয়ের বয়ফ্রেন্ড সানগ্লাসে চোখ ঢেকে ছায়ামূর্তির মতো টাকিলার বোতল আর লেবু হাতে যাচ্ছে কিচেনের দিকে।
একদিন ভোরবেলা মই বেয়ে নামতেই দেখি, জ্যাম্পেস কাউচে দৈহিকভাবে অন্তরঙ্গ হয়ে বসে আছে প্রেমজাই ও তার পুরুষবন্ধুটি। আমি চোখ ফেরাতে গেলে প্রেমজাই ‘ওয়েট অ্যা মিনিট’ বলে উঠে দাঁড়ায়। কার্পেটে পড়ে থাকা ড্রেসিং গাউন তুলে কাঁধে জড়িয়ে, কোমরে ফিতা বাঁধতে বাঁধতে সে বলে,‘আই লাইক ইউ টু মিট মাই বয়ফ্রেন্ড।’
তো আমি হাতটাত মিলিয়ে পরিচিত হই তার পুরুষবন্ধু হেক্টরের সঙ্গে। ছেলেটির ঊর্ধ্বাঙ্গ আদুল, লোমভরা বুকে অসংখ্য কাটাকুটি ও জখমের দাগ। ইংরেজি সে বলে খুবই সামান্য। তবে আমাকে আন্তরিকভাবে টাকিলা পানের আমন্ত্রণ জানায়, এবং জানতে চায় কী কাজ করি?
মাস্টার্স প্রোগ্রামের ছাত্রত্ব ছাড়া আমি মূলত বেকার জানতে পেরে, মেক্সিকো থেকে ফার্ম ওয়ার্কার হিসেবে আগত হেক্টর চুকচুক করে আফসোস প্রকাশ করে। বলে, চলে এসো আমার সঙ্গে, ফার্মে আপেল কুড়াবে, ঘণ্টাওয়ারি মাইনে এরা মন্দ দেয় না।
আমি রাজি না হলে হেক্টর একটু হতাশ হয়ে টিপয়ের তলা থেকে টেনে বার করে ছোট্ট একটি পিঞ্জিরা। তার আগল খুলে দিয়ে ঠোঁট সুচালো করে শিস দিতেই ডানা ঝটপটিয়ে খানিক উড়ে এসে তার কাঁধে বসে বর্ণিল একটি পাখি। প্রেমজাই উৎসাহের সঙ্গে ধূসরে সাদাটে হলুদ মাখানো খেচরের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়। এটি হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ান কাকাটিয়েল।
জুটিঅলা কাকাতুয়ার চোখের নিচে অরেঞ্জ বর্ণের দুটি কিউট বৃত্ত। পাখিটি হেক্টরের কাঁধ ছেড়ে উড়ে এসে ল্যান্ড করে প্রেমজাইয়ের ড্রেসিং গাউনের ঢোলা পকেটে। ওখানে পা রেখে সে বোতাম খুঁটতে শুরু করলে, আমি তাদের গুডবাই বলি।
সিঁড়ি ধরে একতলায় নেমে আসতে আসতে কেন জানি একটু ঈর্ষা হয়। কিন্তু হেক্টরের সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে আমাকে গলায় গোখরা সাপ পেঁচিয়ে ঘোরাফেরা করতে হয়। সে যোগ্যতা আমার নেই, তারপর নীরবে কপাট খুলে নেমে আসি ফুটপাতে।
কিছুদিনের মধ্যে প্রেমজাই লেখাপড়াতে আগ্রহ হারায়। নন-ডিগ্রি কোর্সের ক্লাসগুলোতে সে আর রেগুলার অ্যাটেন্ড করছে না। মাঝেমধ্যে দুপুরবেলা বাড়ি ফিরলে দেখি, সে কিচেনে রান্নাবান্না করছে, আর বারস্টুলে সানগ্লাস পরে বসে হেক্টর। কাকাতুয়াকে সে খাওয়াচ্ছে এক-দুটি করে সূর্যমুখী ফুলের বীজ।
প্রেমজাই আমার সঙ্গে আর কথাবার্তা তেমন বলে না। তবে ভালোমন্দ কিছু রান্না করলে বিড়ালকে খাবার দেওয়ার মতো করে চিলেকোঠার দোরগোড়ায় রেখে যায় এক বাটি থাই গ্রীন কারি, বা তম-ইয়াম-কুঙ বলে চিংড়ি মাছের স্যুপ, সঙ্গে পিরিচে একদলা জেসমিন রাইস।
হেক্টর সপ্তাহখানেকের জন্য মেক্সিকো সিটিতে ফিরে গেলে, কাকাতুয়ার হেফাজতের পুরো কাস্টডি পায় প্রেমজাই। কিন্তু সপ্তা তিন গড়িয়ে মাসখানেক হতে চলল হেক্টর আর ফিরে না। সে কোনো ঠিকানা বা টেলিফোন নম্বর দিয়ে যায়নি যে প্রেমজাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নিতে পরবে—তার হয়েছে কী?
তো কাকাতুয়াটি প্রেমজাইয়ের সঙ্গেই আছে। সে শিখে নিচ্ছে এক-দুটি থাই শব্দ বা বাক্য। একাকী উড়ে বেড়ায় খেচরটি দোতলার সর্বত্র। প্রেমজাই আজকাল জ্যাম্পেস কাউচে হামেশা মন খারাপ করে বসে থাকে। মিনি বুমবক্সে সে অহরহ শুনে আলবার্ট থংচাই বলে এক থাই পপ সিংগারের বিষণ্ন লিরিক।
টেবিল-ল্যাম্পের শেডের প্রান্তে বসে মৃদু সিঙসঙ স্বরে কাকাতুয়া অনুকরণ করে থাই গায়কের সেরেনাদ। আমি পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে ‘ওয়েট অ্যা মিনিট’ বলে আমাকে দাঁড় করিয়ে প্রেমজাই পাখিটি দেখিয়ে বলে, ‘ইজ নট হি অ্যা ডার্লিং বার্ড?’
‘অবকোর্স হি ইজ,’ বলে আমি সায় দিই। সে উৎসাহিত হয়ে বলে, ‘আমি তার নাম দিয়েছি পাকপাও। থাই ভাষায় পাকপাও এর অর্থ হচ্ছে ঘুড়ি। সারাক্ষণ উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে তো।’ কাকাতুয়াটি যেন তার কথা বুঝতে পেরেছে, এমন ভঙ্গিতে গ্রীবা বাঁকা করে থাই ভাষায় বলে, ‘কবচাই জিং জিং’ বা ‘থ্যাংক ইউ ট্রুলি’। পাখির পাকামিতে প্রেমজাই হেসে ফেলে ফিক করে।
পরদিন এ রকম করিডর ধরে হেঁটে যাচ্ছি। প্রেমজাই আবার আমাকে থামায়। বলে, ‘লুক পাকপাও চমৎকার একটি ট্রিক শিখেছে।’ বিষয় কী? পাখি আবার কী শিখল?
প্রেমজাই কাঠের সুদর্শন কারুকাজ করা ফ্রেমের একটি আয়না তুলে ধরে। আয়নাটির নিচের দিকে মেকআপের টুকিটাকি রাখার জন্য ছোট্ট একটি ট্রে আটকানো। ‘কিস দ্যা শ্যাডো-বার্ড ইন দি মিরর’, বলতেই পাকপাও ট্রে-তে পা রেখে বসে আরশিতে তার প্রতিবিম্ব মনোযোগ দিয়ে দেখে। খানিক নিরিখ করে সে অবশেষে প্রতিবিম্বের ঠোঁটে রাখে তার ঠোঁট। প্রেমজাই খুশি হয়ে তাকে কয়েকটি সূর্যমুখী ফুলের বীজ খেতে দেয়।
হেক্টর আর ফিরে আসেনি। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেমজাইয়ের বসবাসের মেয়াদ শেষ হয়ে আসে। সে টোফেল পরীক্ষায় চতুর্থবারের মতো অসফল হয়েছে। তার ভিসা এক্সটেনশন হচ্ছে না। আর এখনই ব্যাংকক রিটার্ন গেলে, আগে যেখানে সে চাকরি করত তা-ও হয়তো ফিরে পাওয়া যেতে পারে।
খুব দোলাচলের ভেতর এক সন্ধ্যায় সে মই বেয়ে উঠে আসে চিলেকোঠায়। পিরিচে করে সে নিয়ে এসেছে শুকনো কিছু ঝরা গোলাপের পাপড়ি। লাল গোলাপটি হেক্টর তাকে দিয়েছিল। শুকনো পাপড়িগুলো সিল্কের রুমালে পেঁচিয়ে পুঁটলি বাঁধতে গিয়ে প্রেমজাই আকুল হয়ে কাঁদে। সে ফিরে যাচ্ছে ব্যাংককে দিন তিনেক পর। এই শুকনো কটি পাপড়ি ছাড়া তার কাছে হেক্টরের আর কোনো স্মৃতিই নেই।
একটি সমস্যা দেখা দেয় কাকাতুয়া পাকপাওকে নিয়ে। তাকে থাইল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া যাবে না। আমি প্রেমজাইকে পরামর্শ দিই—প্যাটস্টোরে গিয়ে হয় পাখিটিকে বিক্রি করে দিতে, অথবা খুঁজে দেখতে, জানাশোনা কেউ যদি পাকপাওকে দত্তক নিয়ে লালনপালন করতে রাজি হয়।
এই দুই প্রস্তাবের কোনটাতেই প্রেমজাই রাজি হয় না। সে কেঁদে বলে, তার ধারণা কিছুদিন পর হেক্টর ফিরে আসবে। আর পাকপাও এর সন্ধানে এ বাড়িতে তার ফিরে আসা খুবই যুক্তিসংগত। তার দাবি আমি কিছুদিন পাকপাওয়ের তত্ত্বতালাবি করব, ইতিমধ্যে হেক্টর ফিরে এলে পাখিটি তাকে ফেরত দেব।
আমি ভেবেচিন্তে নিমরাজি হই। তখন প্রেমজাই আমাকে কাঠের কারুকাজ করা আয়নাটি দেখিয়ে বলে, পাকপাও আয়নায় মুখ দেখতে ও প্রতিবিম্বের পাখিকে চুমো খেতে খুবই ভালোবাসে। আমি যেন প্রতিদিন দুই-তিনবার আরশিতে পাকপাওয়ের মুখ দেখার ব্যবস্থা করি। এতে কাকাতুয়ার মন ভালো থাকবে।
এই প্রস্তাবে আমি রাজি হয়ে প্রেমজাইয়ের কাছে আয়নাটি চাই। কিন্তু সে কপাল কুঁচকে বলে, ‘সরি, এই আয়নাটি আমি আমার দিদিমার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছি। এটি তোমাকে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে শহরের একটি দোকানে সাউথ ইস্ট এশিয়ান আর্ট অবজেক্ট বিক্রি হয়। ওখানে এ ধরনের আয়না আছে কয়েকটি। তুমি কাইন্ডলি একটি কিনে নিও।’
প্রস্তাব শুনে আমি নীরব থাকি। তো উদ্বিগ্ন স্বরে সে ফের কথা বলে, ‘তুমি কি আমার পাকপাওয়ের জন্য একটি থাই স্টাইলের আয়না কিনতে পারবে না? আই অ্যাম রিয়েলি স্যরি, দিদিমার কাছ থেকে পাওয়া আয়নাটা যে দিতে চাচ্ছি না।’ আমি তার মুখের দিকে তাকাই। প্রেমজাইয়ের চোখমুখে ফুটে ওঠা বিষণ্ন অভিব্যক্তি আমাকে ছুঁয়ে যায়। তো একটি আয়না কেনার প্রতিশ্রুতি দিই। প্রেমজাই মৃদু হাসে, কিন্তু হাসিতেও মুছে যায় না বিষণ্নতার গাঢ় ছায়া।
মাস দুই কেটে যায়। হেক্টর ফিরে আসেনি। তবে কাকাতুয়া পাকপাওয়ের সঙ্গে আমার বন্ধন গাঢ় হয়েছে। এখন সে অবলীলায় আমার হাতে বসে তালু থেকে খুঁটে খায় সূর্যমুখী ফুলের বীজ। মাঝেসাজে পাখিটির মন ভালো থাকলে থাই ভাষায় আলবার্ট থংসাইয়ের পপ গানের লিরিকও শোনায় এক-আধটু। আমি সারা দিন নানা ধান্দায় বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াই। তাই পাকপাওকে খাঁচায় থাকতে হয়। তাকে পিঞ্জিরায় বন্দী করে রাখছি বলে একটু গ্লানিও হয়।
অবশেষে প্রেমজাইয়ের কাছ থেকে চিঠি আসে। সে জানতে চেয়েছে, আমি পাকপাওকে থাই স্টাইলের আয়না কিনে দিয়েছি কি না? বিষয়টি আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। আমার নিজের কোনো আয়না ছিল না। আর চুলদাড়িতে ভবসব নিজস্ব সুরত দেখার কোনো প্রয়োজনও ছিল না। তাই প্রেমজাইয়ের চিঠি পড়ামাত্র পাকপাওকে কমন বাথরুমে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিই। কাকতুয়াটির আরশি-প্রীতি সত্যিই অসাধারণ। সে উড়ে উড়ে কেবলই দেয়ালের আয়নায় মুখ দেখে। চেষ্টা করে, আয়নাতে পা ঠেকিয়ে পালক ছড়িয়ে বসে পড়ার। আমি তার পায়ের নিচে বাহু পেতে দিলে সে তাতে বসে তাকিয়ে থাকে প্রতিবিম্বের পাখিটির দিকে। তারপর ঠোঁট দিয়ে ছুঁয়ে দেয় ছায়া-পাখির ওষ্ঠ।
বিষয়টি আর অবহেলা করা যায় না। সুতরাং পাকপাওকে পিঞ্জিরায় পুরে নিয়ে রওনা হই শহরের দিকে। সাউথ ইস্ট এশিয়ান আর্ট অবজেক্টের দোকানে সত্যিই পাওয়া যায়, থাই স্টাইলের কয়েকটি আয়না। এই আরশিগুলো অবিকল প্রেমজাইয়ের দিদিমার দেওয়া আয়নার মতো। দাম উনচল্লিশ ডলার নাইটিনাইন সেন্ট। দামের দিকে তাকিয়ে পিঞ্জিরাসহ বেরিয়ে আসি দোকান থেকে।
শহরের পার্কের প্রান্তে এসে বনানীর নিবিড় ছায়ায় একটি বেঞ্চে বসে পিঞ্জিরা খুলে দিই। পাকপাও বেরিয়ে এসে আমার কাঁধে বসে। অবাক হয়ে সে দেখে, চারদিকের ঝিরিঝিরি সবুজ পত্রালি। আমি থাই স্টাইলের আরশির দামের বিষয়টি ভাবি। আমার উপার্জন নেই বললেই চলে। কষ্টেসৃষ্টে ডলার চল্লিশেক হয়তো জোগাড় করতে পারব। কিন্তু চল্লিশ ডলারে ইউজড্ বুক স্টোর থেকে কেনা যাবে গোটা চারেক টেক্সট্ বুকস্, সস্তা রেস্তোরাঁয় খাওয়া যাবে অন্তত দু-তিনটি ডিনার। একটি আরশি কিনে এতগুলো টাকা খরচ করব?
পাকপাও উড়ে গিয়ে একটি গাছের ডালে বসে। মৃদু হাওয়ায় খানিক দুলতে দুলতে আমার দিকে তাকিয়ে একটু শিস দিয়ে কিছু গায়। ফিরে এসে আবার কাঁধে বসে, টুকটাক কিছু শব্দ করে পরিষ্কার থাই ভাষায় বলে, ‘কপচাই জিংজিং’ বা ‘থ্যাংক ইউ ট্রুলি।’ তারপর উড়ে যায় সে। কিছুক্ষণ গাছপালার উঁচু ডালে ঝোলাঝুলি করে কীভাবে যেন হাওয়া হয়ে যায়। আমি অনেকক্ষণ বেঞ্চে বসে থাকি। শূন্য পিঞ্জিরা হাতে অপেক্ষা করি, সন্ধ্যা হয় কিন্তু পাকপাও আর ফিরে আসে না।
(চলবে)

আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
১৫ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
২৫ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫তৌহিদুল হক

রক্ত লাল
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে
গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায়
ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের
জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
যা স্বভাববিদ্ধ, তবে কতটা উপকারী বা বাঁচিয়ে
রাখার নিরলস অভিপ্রায়। মানুষের তরে
প্রাণীর অফুরন্ত প্রাচুর্য বিস্তৃতকরণে, কিংবা
উদ্ভিদের অন্তিম প্রেমে বসন্তের অভিষেকে।
কতটা জ্বলতে হয় পরের জন্য, কতটা ফুটন্ত
শরীর নিয়ে চালিয়ে যায় সেবার পরিধি।
এক চিরন্তন শিক্ষা, আবার উদিত হয়
দিনের শুরুতে, বিদায় প্রান্তিক অপূর্ব
মায়ায়-দিনের শেষ প্রান্তে।
এতটুকু কার্পণ্য রেখে যায়নি, হয়তো মুখ
ফিরিয়ে নিবে না কোনো দিন। তবে ভাবনার
অন্তিমে শেষ দৃশ্যের সংলাপে ভেসে
ওঠে জনদরদি রাজার মুখ। যেখানে রক্ত ঝরে
বন্যার বেগে সেখানেও প্রতিদিন ফুল ফোটে ফুল হয়ে।
যত দেখি
যত দেখি তৃপ্ত হই, শীতল হয়ে
জড়িয়ে পড়ি তোমার সমস্ত শরীরে। এক অজানা
শিহরণ ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে।
যেন দীর্ঘদিনের শুষ্কতা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দূরে।
হারিয়ে যাওয়া রস ফিরছে মূলে, নিয়ে যাচ্ছে আদিপর্বে।
যেমন নেয় নদীর কূল, জোয়ারের ফেনা।
ভাবনার অতলে অদ্ভুত মায়া, দীর্ঘক্ষণ মোহগ্রস্ত
করে রাখে চোখের পলক, তাকিয়ে থাকি মায়ার মায়ায়। কী অপরূপ মায়া!
সেখানেও দেখি তৃষ্ণার ব্যাকুলতা নিয়ে অপেক্ষারত কান্না।
জীবনের তল্লাটে হারিয়ে খুঁজি আজ
আমারও জীবন ছিল। মায়ায় ভরা নির্বিঘ্ন আয়োজন, কলমিলতার মতো নিষ্পাপ।
তৃপ্ত হই ঘাসে, বাতাসের বেহায়া আঘাতে
অভিমানের মোড়ক ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নেই
কচু পাতায় টলোমলো জলের লজ্জা। এ জীবনের চাহিদা তোমায় দেখার
প্রয়োজনে তপ্ত, হয় উত্তপ্ত অথবা সহ্যের অতীত শীতল।
এ যেন কেমন
গহিন অরণ্যে সবুজ পাতার মতো, মগজে
চিন্তার রাজ্যে ভাবের উদয়, আকুল বিন্যাসে
একটু একটু করে এগিয়ে নেয়, আবার ভরা কলসির
মতো বসিয়ে রাখে-ভবের রাজ্যে। একদিন সমস্ত ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে
এদিক-ওদিক চলন, জীবন্ত মরণ! মানুষ
কেন বাঁচে, কীভাবে বাঁচে-প্রশ্নের সমাধা
আজ তর্কপ্রিয় সন্ধানে, মূর্ত প্রার্থনা।
সকল প্রিয়জন পরিত্যাগে, নিগূঢ় যত্নে হৃদয়ে প্রবেশ করে
নিজের অপরিচিত চেহারা, সব জিজ্ঞাসার
অন্ত-ক্রিয়ার এক উচ্চতম বিলাস।
জীবনের মানে অর্থশুন্য ভবিতব্য! এ কী হয়?
চোখের পলকে নিষ্পাপ দৃশ্যলোক-পেছন ডাকে বারবার
যেখানে থাকে আবার দেখার ইচ্ছা, নামে যে মুক্তকরণ। মিলনকান্তির আবাস।
চতুর্মুখ সমীকরণে খেলে যায় সময়ের ঝাঁজালো সিদ্ধান্ত। কেউ কী অপ্রিয় হয় কারও?
যেখানে ভেসে ওঠে নীলপদ্ম, অতীতের নিটোল কিতাব। সে-তো মানুষের ছবি!
চলে আসুন সবজি বাজারে
মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি অনেক কিছু
যা মানুষের নয়। অ-মানুষের জন্ম-উত্তর বাঁচার
উপায় হতে পারে। পোশাকে সজ্জিত দেহ কতভাবে
হিংস্র হয়, গোপনে, অন্ধের গহনে।
প্রবেশের আগেই পেয়েছি সংকেত। কত নোংরা, পচা, আবর্জনায় ভরা একটি থালার মতো
পড়ে আছে সম্মুখে। কেউ কি দেখেছে?
হয়তো মেনে নিয়েছে সবাই, সবার আগে সে
যে ভেবেছে, কী বা আছে উপায়!
চারপাশে কত কিছুর ঘ্রাণ, চোখ যা বলে তা কি মেনে নেয় স্বাস্থ্যবার্তা
ফুটে আছে ফুলের মতো দোকানের পসরা। খেতে বা কেনায় বারণ বালাই নেই।
যা পাচ্ছে নিচ্ছে, অনেকে। কেউ গায়ে কেউ পেটে।
আহা! দেখার কেউ নেই!
এক অন্ধকারে হাঁটছে আমাদের পা।
কেউ কি আছে কোথাও, আলো নিয়ে হাতে? ভেবেছে কি কেউ
কেন আমাদের আয়োজনে সবাই নেই?
কেউ এসে শুধু একবার বলুক, এই নিন-আপনাদের জীবন টিকিট যা উত্তরণ।
চলে আসুন সবজির বাজারে, সবুজের খোঁজে।
ইতিহাস
আজ স্পষ্ট ঘোষণা, আমার চোখের সামনে কেউ নেই
নেই কেউ ভাবের অন্তিম ঘরে। এক অস্পৃশ্য অনুভব
ছুঁয়ে চলে, ভাসিয়ে দেয় অগণিত স্রোতের তুমুল আলিঙ্গনে।
আজ কিছু ভেবে বলছি না, সরাসরি জবাব---
আমি নই কারও!
সব বাতাসের সাথে মিশে থাকা চোখের প্রেম
ভাবনার বিলাসে জড়িয়ে পড়ার বাসনা----সকলের অগোচরে
অথবা সকলের মাঝে। জীবনের অর্থে হৃদয়ের গুড়গুড় আলাপ
ঘুটঘুটে অন্ধকারে হৃদয়ে খোলা আকাশ, শুধু
এক মুখচ্ছবি।
আজ কোনো ক্ষমা নেই---নিজের প্রতি! নিজের পাপে
হাঁটি আমি, সবার মাঝে একলা হয়ে। বেদনার
কালো রং নিয়ে। শুধু দেখে যাই, শুধু দেখতে যাই।
কত রং বিরাজ করে ভাবনার গরমিলে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রই।
দাঁড়িয়ে থেকেও হেঁটে যাই!
আজকের না বলা কথা, কোনো দিন বলা হবে না
হবে না দাঁড়িয়ে আবার ভাবা আর একটু বসলে
ভালো হতো। যে বসিয়ে রাখে যে আশায় বসে থাকে
সবকিছুর-ই সময় থাকে---
এরপর---ইতিহাস!

রক্ত লাল
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে
গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায়
ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের
জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
যা স্বভাববিদ্ধ, তবে কতটা উপকারী বা বাঁচিয়ে
রাখার নিরলস অভিপ্রায়। মানুষের তরে
প্রাণীর অফুরন্ত প্রাচুর্য বিস্তৃতকরণে, কিংবা
উদ্ভিদের অন্তিম প্রেমে বসন্তের অভিষেকে।
কতটা জ্বলতে হয় পরের জন্য, কতটা ফুটন্ত
শরীর নিয়ে চালিয়ে যায় সেবার পরিধি।
এক চিরন্তন শিক্ষা, আবার উদিত হয়
দিনের শুরুতে, বিদায় প্রান্তিক অপূর্ব
মায়ায়-দিনের শেষ প্রান্তে।
এতটুকু কার্পণ্য রেখে যায়নি, হয়তো মুখ
ফিরিয়ে নিবে না কোনো দিন। তবে ভাবনার
অন্তিমে শেষ দৃশ্যের সংলাপে ভেসে
ওঠে জনদরদি রাজার মুখ। যেখানে রক্ত ঝরে
বন্যার বেগে সেখানেও প্রতিদিন ফুল ফোটে ফুল হয়ে।
যত দেখি
যত দেখি তৃপ্ত হই, শীতল হয়ে
জড়িয়ে পড়ি তোমার সমস্ত শরীরে। এক অজানা
শিহরণ ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে।
যেন দীর্ঘদিনের শুষ্কতা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দূরে।
হারিয়ে যাওয়া রস ফিরছে মূলে, নিয়ে যাচ্ছে আদিপর্বে।
যেমন নেয় নদীর কূল, জোয়ারের ফেনা।
ভাবনার অতলে অদ্ভুত মায়া, দীর্ঘক্ষণ মোহগ্রস্ত
করে রাখে চোখের পলক, তাকিয়ে থাকি মায়ার মায়ায়। কী অপরূপ মায়া!
সেখানেও দেখি তৃষ্ণার ব্যাকুলতা নিয়ে অপেক্ষারত কান্না।
জীবনের তল্লাটে হারিয়ে খুঁজি আজ
আমারও জীবন ছিল। মায়ায় ভরা নির্বিঘ্ন আয়োজন, কলমিলতার মতো নিষ্পাপ।
তৃপ্ত হই ঘাসে, বাতাসের বেহায়া আঘাতে
অভিমানের মোড়ক ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নেই
কচু পাতায় টলোমলো জলের লজ্জা। এ জীবনের চাহিদা তোমায় দেখার
প্রয়োজনে তপ্ত, হয় উত্তপ্ত অথবা সহ্যের অতীত শীতল।
এ যেন কেমন
গহিন অরণ্যে সবুজ পাতার মতো, মগজে
চিন্তার রাজ্যে ভাবের উদয়, আকুল বিন্যাসে
একটু একটু করে এগিয়ে নেয়, আবার ভরা কলসির
মতো বসিয়ে রাখে-ভবের রাজ্যে। একদিন সমস্ত ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে
এদিক-ওদিক চলন, জীবন্ত মরণ! মানুষ
কেন বাঁচে, কীভাবে বাঁচে-প্রশ্নের সমাধা
আজ তর্কপ্রিয় সন্ধানে, মূর্ত প্রার্থনা।
সকল প্রিয়জন পরিত্যাগে, নিগূঢ় যত্নে হৃদয়ে প্রবেশ করে
নিজের অপরিচিত চেহারা, সব জিজ্ঞাসার
অন্ত-ক্রিয়ার এক উচ্চতম বিলাস।
জীবনের মানে অর্থশুন্য ভবিতব্য! এ কী হয়?
চোখের পলকে নিষ্পাপ দৃশ্যলোক-পেছন ডাকে বারবার
যেখানে থাকে আবার দেখার ইচ্ছা, নামে যে মুক্তকরণ। মিলনকান্তির আবাস।
চতুর্মুখ সমীকরণে খেলে যায় সময়ের ঝাঁজালো সিদ্ধান্ত। কেউ কী অপ্রিয় হয় কারও?
যেখানে ভেসে ওঠে নীলপদ্ম, অতীতের নিটোল কিতাব। সে-তো মানুষের ছবি!
চলে আসুন সবজি বাজারে
মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি অনেক কিছু
যা মানুষের নয়। অ-মানুষের জন্ম-উত্তর বাঁচার
উপায় হতে পারে। পোশাকে সজ্জিত দেহ কতভাবে
হিংস্র হয়, গোপনে, অন্ধের গহনে।
প্রবেশের আগেই পেয়েছি সংকেত। কত নোংরা, পচা, আবর্জনায় ভরা একটি থালার মতো
পড়ে আছে সম্মুখে। কেউ কি দেখেছে?
হয়তো মেনে নিয়েছে সবাই, সবার আগে সে
যে ভেবেছে, কী বা আছে উপায়!
চারপাশে কত কিছুর ঘ্রাণ, চোখ যা বলে তা কি মেনে নেয় স্বাস্থ্যবার্তা
ফুটে আছে ফুলের মতো দোকানের পসরা। খেতে বা কেনায় বারণ বালাই নেই।
যা পাচ্ছে নিচ্ছে, অনেকে। কেউ গায়ে কেউ পেটে।
আহা! দেখার কেউ নেই!
এক অন্ধকারে হাঁটছে আমাদের পা।
কেউ কি আছে কোথাও, আলো নিয়ে হাতে? ভেবেছে কি কেউ
কেন আমাদের আয়োজনে সবাই নেই?
কেউ এসে শুধু একবার বলুক, এই নিন-আপনাদের জীবন টিকিট যা উত্তরণ।
চলে আসুন সবজির বাজারে, সবুজের খোঁজে।
ইতিহাস
আজ স্পষ্ট ঘোষণা, আমার চোখের সামনে কেউ নেই
নেই কেউ ভাবের অন্তিম ঘরে। এক অস্পৃশ্য অনুভব
ছুঁয়ে চলে, ভাসিয়ে দেয় অগণিত স্রোতের তুমুল আলিঙ্গনে।
আজ কিছু ভেবে বলছি না, সরাসরি জবাব---
আমি নই কারও!
সব বাতাসের সাথে মিশে থাকা চোখের প্রেম
ভাবনার বিলাসে জড়িয়ে পড়ার বাসনা----সকলের অগোচরে
অথবা সকলের মাঝে। জীবনের অর্থে হৃদয়ের গুড়গুড় আলাপ
ঘুটঘুটে অন্ধকারে হৃদয়ে খোলা আকাশ, শুধু
এক মুখচ্ছবি।
আজ কোনো ক্ষমা নেই---নিজের প্রতি! নিজের পাপে
হাঁটি আমি, সবার মাঝে একলা হয়ে। বেদনার
কালো রং নিয়ে। শুধু দেখে যাই, শুধু দেখতে যাই।
কত রং বিরাজ করে ভাবনার গরমিলে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রই।
দাঁড়িয়ে থেকেও হেঁটে যাই!
আজকের না বলা কথা, কোনো দিন বলা হবে না
হবে না দাঁড়িয়ে আবার ভাবা আর একটু বসলে
ভালো হতো। যে বসিয়ে রাখে যে আশায় বসে থাকে
সবকিছুর-ই সময় থাকে---
এরপর---ইতিহাস!

থাইল্যান্ডের তরুণী প্রেমজাই। ওর সঙ্গে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে সাক্ষরতাবিষয়ক দুই মাসের প্রশিক্ষণে শামিল হই। প্রশিক্ষণে দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে আগত পার্টিসিপেন্টরা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলেও আমরা দুজন থেকে যাই যুক্তরাষ্ট্রে...
১০ অক্টোবর ২০২২
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
২৫ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’ জবাবে ফারুক বললেন, ‘কী আশ্চর্য ভাই?’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই যে প্রকৃতি, জোছনা, বৃষ্টি, নদী— কী সুন্দর! একদিন হয়তো আমি এসব আর দেখতে পারব না। একুশের বইমেলা হবে। লোকেদের ভিড়, আড্ডা; আমি সেখানে থাকব না। এটা কি মেনে নেওয়া যায়! হায় রে জীবন!’
‘আমার না বলা কথা’ বইয়ে ফারুক আহমেদ এই স্মৃতিচারণ করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি কিছু না বলে মূর্তির মতো বসে রইলাম। একসময় তাকিয়ে দেখলাম, হুমায়ূন ভাইয়ের দুচোখের কোনায় পানি।’
হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবে তিনি রয়েছেন দেশের তরুণদের মনে। যে বইমেলায় তিনি থাকবেন না বলে আক্ষেপ, সেই বইমেলায় তাঁর বইয়ের স্টলে তরুণদের ঢলের মধ্যে আছেন।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম এই দিনে (১৩ নভেম্বর); ভারত ভাগের এক বছর পরে ১৯৪৮ সালে। ছোট সময়ে তাঁর নাম ছিল শামসুর রহমান। তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পাল্টে ফেলতেন। তাঁর নাম পাল্টে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের স্রষ্টা তিনি। শুধু কথাসাহিত্যেই নয়; ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’,
‘আজ রবিবার’-এর মতো নাটক বানিয়েছেন, তৈরি করেছেন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’র মতো চলচ্চিত্র।
হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি, জোছনা ভালোবাসতেন। তাঁর লেখায় সেসব উঠে এসেছে বারবার। ২০১২ সালের জুলাইয়ে বর্ষাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে।
তিনি নেই। কিন্তু তাঁর লেখায় উঠে আসা চান্নিপসর, বৃষ্টি বিলাস আজও আছে তরুণদের মনে। ফারুক আহমেদ তাঁর ওই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আরেকটি স্মৃতিচারণ করেছিলেন এভাবে—‘এক বিকেলে শুটিং শেষে তাঁর প্রিয় লিচুগাছের দিকে তাকিয়ে আছেন হুমায়ূন। সেখানে ঝুলছে পাকা লিচু। তিনি তাঁর কেয়ারটেকার মুশাররফকে ডেকে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে এলেন। তাদের বললেন, গাছে উঠে যে যত পারে লিচু খেতে। বাচ্চারা কেউ গাছে উঠে লিচু খাচ্ছে, হইচই করছে। কেউ পকেটে ভরছে। হুমায়ূন আহমেদ অবাক হয়ে সেই লিচু খাওয়া দেখতে লাগলেন।’
ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন ভাই একসময় আমাকে বললেন, এমন সুন্দর দৃশ্য তুমি কখনো দেখেছো? এমন ভালো লাগার অনুভূতি কি অন্য কোনোভাবে পাওয়া যায়? আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ বললাম, না ভাই এমন ভালো লাগার অনুভূতি কোনোভাবেই পাওয়া যায় না।’
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে রাজধানীসহ জন্মস্থান নেত্রকোনাতে রয়েছে নানা আয়োজন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোরআন খতম করবেন। এরপর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং হুমায়ূনভক্তদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে। পরে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, কুইজ, হুমায়ূন আহমেদের রচিত নাটক ও সিনেমার অংশবিশেষ নিয়ে অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজধানীতে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সপ্তাহ, হুমায়ূন প্রতিযোগিতা, হুমায়ূন জন্মোৎসব, টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক ও অনুষ্ঠান প্রচারসহ নানা আয়োজনে মুখর থাকছে দিনটি।

হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’ জবাবে ফারুক বললেন, ‘কী আশ্চর্য ভাই?’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই যে প্রকৃতি, জোছনা, বৃষ্টি, নদী— কী সুন্দর! একদিন হয়তো আমি এসব আর দেখতে পারব না। একুশের বইমেলা হবে। লোকেদের ভিড়, আড্ডা; আমি সেখানে থাকব না। এটা কি মেনে নেওয়া যায়! হায় রে জীবন!’
‘আমার না বলা কথা’ বইয়ে ফারুক আহমেদ এই স্মৃতিচারণ করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি কিছু না বলে মূর্তির মতো বসে রইলাম। একসময় তাকিয়ে দেখলাম, হুমায়ূন ভাইয়ের দুচোখের কোনায় পানি।’
হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবে তিনি রয়েছেন দেশের তরুণদের মনে। যে বইমেলায় তিনি থাকবেন না বলে আক্ষেপ, সেই বইমেলায় তাঁর বইয়ের স্টলে তরুণদের ঢলের মধ্যে আছেন।
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম এই দিনে (১৩ নভেম্বর); ভারত ভাগের এক বছর পরে ১৯৪৮ সালে। ছোট সময়ে তাঁর নাম ছিল শামসুর রহমান। তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পাল্টে ফেলতেন। তাঁর নাম পাল্টে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের স্রষ্টা তিনি। শুধু কথাসাহিত্যেই নয়; ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’,
‘আজ রবিবার’-এর মতো নাটক বানিয়েছেন, তৈরি করেছেন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’র মতো চলচ্চিত্র।
হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি, জোছনা ভালোবাসতেন। তাঁর লেখায় সেসব উঠে এসেছে বারবার। ২০১২ সালের জুলাইয়ে বর্ষাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে।
তিনি নেই। কিন্তু তাঁর লেখায় উঠে আসা চান্নিপসর, বৃষ্টি বিলাস আজও আছে তরুণদের মনে। ফারুক আহমেদ তাঁর ওই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আরেকটি স্মৃতিচারণ করেছিলেন এভাবে—‘এক বিকেলে শুটিং শেষে তাঁর প্রিয় লিচুগাছের দিকে তাকিয়ে আছেন হুমায়ূন। সেখানে ঝুলছে পাকা লিচু। তিনি তাঁর কেয়ারটেকার মুশাররফকে ডেকে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে এলেন। তাদের বললেন, গাছে উঠে যে যত পারে লিচু খেতে। বাচ্চারা কেউ গাছে উঠে লিচু খাচ্ছে, হইচই করছে। কেউ পকেটে ভরছে। হুমায়ূন আহমেদ অবাক হয়ে সেই লিচু খাওয়া দেখতে লাগলেন।’
ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন ভাই একসময় আমাকে বললেন, এমন সুন্দর দৃশ্য তুমি কখনো দেখেছো? এমন ভালো লাগার অনুভূতি কি অন্য কোনোভাবে পাওয়া যায়? আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ বললাম, না ভাই এমন ভালো লাগার অনুভূতি কোনোভাবেই পাওয়া যায় না।’
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে রাজধানীসহ জন্মস্থান নেত্রকোনাতে রয়েছে নানা আয়োজন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোরআন খতম করবেন। এরপর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং হুমায়ূনভক্তদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে। পরে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, কুইজ, হুমায়ূন আহমেদের রচিত নাটক ও সিনেমার অংশবিশেষ নিয়ে অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজধানীতে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সপ্তাহ, হুমায়ূন প্রতিযোগিতা, হুমায়ূন জন্মোৎসব, টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক ও অনুষ্ঠান প্রচারসহ নানা আয়োজনে মুখর থাকছে দিনটি।

থাইল্যান্ডের তরুণী প্রেমজাই। ওর সঙ্গে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে সাক্ষরতাবিষয়ক দুই মাসের প্রশিক্ষণে শামিল হই। প্রশিক্ষণে দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে আগত পার্টিসিপেন্টরা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলেও আমরা দুজন থেকে যাই যুক্তরাষ্ট্রে...
১০ অক্টোবর ২০২২
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
১৫ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

থাইল্যান্ডের তরুণী প্রেমজাই। ওর সঙ্গে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে সাক্ষরতাবিষয়ক দুই মাসের প্রশিক্ষণে শামিল হই। প্রশিক্ষণে দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে আগত পার্টিসিপেন্টরা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলেও আমরা দুজন থেকে যাই যুক্তরাষ্ট্রে...
১০ অক্টোবর ২০২২
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
১৫ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
২৫ দিন আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

থাইল্যান্ডের তরুণী প্রেমজাই। ওর সঙ্গে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে সাক্ষরতাবিষয়ক দুই মাসের প্রশিক্ষণে শামিল হই। প্রশিক্ষণে দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে আগত পার্টিসিপেন্টরা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলেও আমরা দুজন থেকে যাই যুক্তরাষ্ট্রে...
১০ অক্টোবর ২০২২
আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায় ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।
১৫ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’
২৫ দিন আগে
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
০৮ নভেম্বর ২০২৫