বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি কমলেও রপ্তানি বাণিজ্য ব্যাপক হারে বেড়েছে। গেল ২০২১-২২ অর্থ বছরে ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৪৪ মেট্রিক টন। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে করোনার সময়েও বন্দর ও কাস্টমস ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করায় এই বিপুল পরিমাণে পণ্য রপ্তানি সম্ভব হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, রেলে রপ্তানি বাণিজ্য চালু আর সীমান্তে হয়রানি কমলে আরও বেশি পণ্য রপ্তানি সম্ভব।
বেনাপোল আমদানি রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক আজকের পত্রিকাকে জানান, ১০ বছর আগেও বেনাপোল বন্দর দিয়ে কেবল আমদানি বাণিজ্যে গুরুত্ব ছিল। তবে বাংলাদেশি পণ্যের গুণগত মান ভালো হওয়ায় চাহিদা বাড়তে থাকে ভারতে। আমদানি হতো এমন অনেক পণ্যই এখন রপ্তানি তালিকায় যুক্ত হয়েছে। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, কেমিক্যাল, অ্যাসিড, কাগজ, কাচা লোহা, বসুন্ধরা টিসু, মেলামাইন, রাইস ব্রান্ড, মেহগনি ফলসহ শতাধিক প্রকারের পণ্য।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দরবিষয়ক সম্পাদক মেহেরুল্লাহ জানান, রপ্তানি বৃদ্ধিতে দেশি পণ্যের যেমন কদর বেড়েছে, তেমনি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ায় বেকারত্ব কমছে। রেলে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হলেও রপ্তানির সুযোগ নেই। পণ্য খালাস করে খালি রেল ফিরে যায় ভারতে। যদি রেলে এসব পণ্য রপ্তানি করা যায়, তবে দ্রুত সময়, কম খরচ ও নিরাপদে পণ্য পরিবহনে সাশ্রয়ী হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান জানান, রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাকে অবৈধ পণ্য যাতে প্রবেশ করতে না পারে সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ দীর্ঘ সময় ধরে ট্রাক তল্লাশি করছে। এতে দিনের দিন সব ট্রাক রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না। হয়রানি মূলক তল্লাশি কমলে রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে।
রপ্তানি কারক তৌহিদুর রহমান জানান, পদ্মা সেতু চালুতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজে এখন রপ্তানি বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে বাণিজ্য গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করতে হবে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে করোনার সময়েও কাস্টমসের পাশাপাশি বন্দরের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্য সেবা চালু রাখায় বিপুল পরিমাণে এই রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও দ্রুত যাতে পণ্যবাহী ট্রাক ওপারে প্রবেশ করতে পারে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আজিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৫ মেট্রিক টন। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ মেট্রিক টন। রপ্তানি বেড়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৪৪ মেট্রিক টন।
এই কর্মকর্তা বলেন, সড়ক পথের পাশাপাশি রেলে পণ্য আমদানি হচ্ছে ভারত থেকে। পরে রেল খালি ফেরত যায়। যদি রেলে রপ্তানি চালু করা যায়, তবে কম সময় ও খরচে পণ্য রপ্তানি বাড়বে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে ভারত। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করছে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে