Ajker Patrika

টিকটক-ইনস্টাগ্রামেই সংবাদ পড়ছে কিশোর-তরুণেরা: গবেষণা

টিকটক-ইনস্টাগ্রামেই সংবাদ পড়ছে কিশোর-তরুণেরা: গবেষণা

প্রথাগত সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কিশোর-কিশোরীরা। তাদের কাছে খবরের উৎস হয়ে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়া। বিশেষ করে টিকটক ও ইনস্টাগ্রাম। ব্রিটিশ সরকারের সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকমের নতুন গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে।

গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিকটক থেকে হালনাগাদ খবর দেখে নেওয়া লোকের সংখ্যা ২০২০ সালে ছিল ৮ লাখ। ২০২২ সালে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ লাখে! 

আর প্রথমবারের মতো ইনস্টাগ্রাম তরুণদের মধ্যে খবরের সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসে পরিণত হয়েছে। ব্যবহারকারী কিশোর-কিশোরীদের ২৯ শতাংশ খবর পড়ার জন্য এই প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর করে। এরপরই টিকটক ও ইউটিউবের অবস্থান। 

তবে বয়স্কদের মধ্যে এখনো প্রিন্ট, টিভি এবং রেডিওর প্রাধান্য রয়েছে। 

টিকটকে খবর পড়া নেটিজেনের সংখ্যা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে মূলত অল্প বয়সীরা। এই শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মে খবর পড়া লোকের অর্ধেকের বয়স ১৬ থেকে ২৪ বছর। 

অফকম বলছে, টিকটকে সংবাদ পড়া (দেখা বা শোনা) লোকের সংখ্যা এখন স্কাই নিউজ ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের সমান। 

টিকটক ব্যবহারকারী যারা সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিল তাঁরা বলেছেন, তাঁরা সংবাদমাধ্যমগুলোর নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে যেখানে ২৪ শতাংশ তাঁদের (পছন্দের বা প্রয়োজনীয়) খবর পান, সেখানে অন্যান্য ব্যক্তি যাদের তাঁরা ফলো করেন তাঁদের কাছ থেকে আরও বেশি (৪৭ %) খবর পান। 

এসব প্ল্যাটফর্ম ক্রমেই সংবাদের প্রাথমিক উৎসেও পরিণত হচ্ছে। হয়রানি, নির্যাতন বা অনিয়ম-দুর্নীতির কোনো ভিডিও টিকটক বা ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হওয়ার পর মূল ধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে সে বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এমনকি সোর্স হিসেবে এসব প্ল্যাটফর্মকেই তারা ব্যবহার করে। এমন ঘটনা কিন্তু ক্রমেই বাড়ছে। 

উদাহরণ হিসেবে অ্যাম্বার হার্ড এবং জনি ডেপের মধ্যে সাম্প্রতিক হাই-প্রোফাইল মানহানির মামলার কথা বলা যেতে পারে। টিকটক, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে মামলার শুনানি বা আদালতের ভেতর-বাইরের নানা ভিডিওর আধিপত্য ছিল পুরোটা সময়। অনেকে টিকটকে তাঁদের ফলোয়ারদের সঙ্গে ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করার আগে ইউটিউবে বিচারিক প্রক্রিয়ার লাইভ দেখেছেন। পরে সেখান থেকে ছোট ছোট ক্লিপ তাঁরা টিকটকে শেয়ার করেছেন। 

অফকমের কৌশল ও গবেষণা বিষয়ক গ্রুপ ডিরেক্টর ইহ-চৌং তেহ এক বিবৃতিতে বলেন, আজকাল কিশোর-কিশোরীরা সামাজিক মাধ্যমের ফিডগুলো স্ক্রল করে দেশ-দুনিয়া সম্পর্কে হালনাগাদ থাকতে পছন্দ করে। খবরের জন্য একটা সংবাদপত্র হাতে নেওয়া বা টিভির রিমোট হাতে নিয়ে বসার প্রবণতা দ্রুত কমে যাচ্ছে। 

‘সেই সঙ্গে তরুণেরা যখন সোশ্যাল মিডিয়ার খবরগুলোকে কম নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে, তখন তারা দিনের কোনো ইস্যু নিয়ে হাজার হাজার মানুষের বিভিন্ন মতামত পরিবেশনের জন্য এসব প্ল্যাটফর্মকেই এগিয়ে রাখে।’ যোগ করেন ইহ-চৌং তেহ।

ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকার পরও কিন্তু সমীক্ষায় অংশ নেওয়া কিশোর-যুবকদের এক-তৃতীয়াংশেরও কম (৩০ %) বলেছেন তাঁরা টিকটকের মাধ্যমে পাওয়া খবরের বিষয়বস্তুকে বিশ্বাস করেন। 

আর ইনস্টাগ্রামের ক্ষেত্রে, এই প্ল্যাটফর্মে যারা খবর পড়েন তাঁদের ৪৫ শতাংশই বিবিসিকে অনুসরণ করেন। এরপরই আছে—স্কাই নিউজ (২২ %), ল্যাড বাইবেল এবং বাজফিড (উভয়ই ১৪ %। 

প্রায় ৬০ শতাংশ ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী যারা সংবাদ পড়েন তাঁরা বলেছেন, তাঁরা একজন পাবলিক ফিগারকে অনুসরণ করেন, যেখানে ৪৪ শতাংশ বলেছেন তাঁরা কমপক্ষে একজন সাংবাদিককে অনুসরণ করেন। 

অফকমের প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, প্রথাগত সংবাদমাধ্যমের গ্রাহক দ্রুত কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। বিবিসি ওয়ান এবং বিবিসি টু আগে ব্রিটেনে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সংবাদ উৎস ছিল। দুটোই শীর্ষস্থান থেকে ছিটকে গেছে, এখন পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে এ দুটি টিভি নেটওয়ার্ক। 

টিভি সংবাদ বেশিরভাগ (৭১ %) প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে এখনো সবচেয়ে বিশ্বস্ত উৎস থেকে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার খবরগুলো তাঁরা সবচেয়ে কম নির্ভরযোগ্য বলে মনে করেন। বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন মাত্র ৩৫ শতাংশ। 

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রিন্ট এবং অনলাইন সংবাদপত্রের পাঠকও এ বছর আরও কমে গেছে। খবরের জন্য এখনো এসব প্ল্যাটফর্মে নির্ভর করেন মাত্র ৩৫ শতাংশ। যেখানে ২০২০ সালে এ হার ছিল ৪৭ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে ছিল ৫১ শতাংশ। শুধু ছাপা কাগজে সংবাদ পড়েন এমন পাঠকের সংখ্যাও কমে গেছে। ২০২০ সালে এ হার ছিল ৩৫ শতাংশ, চলতি বছর তা ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। 

কিশোর-তরুণদের মধ্যে সংবাদপত্র পাঠের হার গত পাঁচ বছরে ১৯ শতাংশ থেকে কমে ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। 

অর্থাৎ গবেষণা অনুযায়ী সরাসরি সংবাদমাধ্যম থেকে সংবাদ পড়া (বা দেখা) পাঠকের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমছে—এটা সত্য। তবে বিপরীতে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম বা এ ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে সংবাদ পাঠের প্রবণতা বাড়লেও সেখানে সংবাদের বড় উৎস এখনো সংবাদমাধ্যম। তার মানে, প্রচলিত সংবাদমাধ্যমগুলোর এখনকার চ্যালেঞ্জ হলো—এসব প্ল্যাটফর্মকে সংবাদের কার্যকর বিতরণ ব্যবস্থার অংশ করে নেওয়া। সেখানে বিবিসির ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বড় দৃষ্টান্ত হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া ওয়েবসাইট চেনার উপায়

ফিচার ডেস্ক
ভুয়া ওয়েবসাইট চেনার উপায়

ভুয়া ওয়েবসাইটগুলো আসল ওয়েবসাইটের মতো হতে পারে। যদিও ছোট ছোট পার্থক্য থাকে, যেগুলো আপনি একটু খেয়াল করলে চিনতে পারবেন।

ইউআরএল দেখুন

ওয়েবসাইটে ঢোকার আগে ইউআরএল ঠিকভাবে দেখে নিন। আসল ওয়েবসাইটের ইউআরএল সাধারণত এইচটিটিপিএস দিয়ে শুরু হয়, যেখানে ‘এস’-এর মাধ্যমে জানানো হয় যে সাইটটি নিরাপদ। যদি ইউআরএলে শুধু এইচটিটিপি থাকে, তাহলে সেটা সন্দেহজনক হতে পারে।

ওয়েবসাইটের বানান চেক করুন

একই ধরনের নাম কিংবা বানানে সামান্য পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় সঠিক ওয়েবসাইট চিনতে সমস্যা হয়। তাই ওয়েবসাইটের বিষয়ে সন্দেহ হলে বানান দেখে নিতে পারেন।

লোগো ও ডিজাইন দেখুন

অনেক সময় ভুয়া ওয়েবসাইটগুলো আসল প্রতিষ্ঠানের লোগো ও ডিজাইন হুবহু নকল করে। কিন্তু সেখানে কিছু অসামঞ্জস্য থাকতে পারে। লোগো কিংবা ছবি অস্পষ্ট থাকলে সেটি সন্দেহজনক হতে পারে।

অনলাইন ওয়েবসাইট চেকার ব্যবহার করুন

অনলাইন ওয়েবসাইট চেকারগুলো বেশ সহায়ক। অনেক ওয়েবসাইট, যেমন ভাইরাস টোটাল, গুগল সেফ ব্রাউজিং ইউআরএল ভয়েডের মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন, সাইটটি নিরাপদ কি না। এই চেকারগুলো ওয়েবসাইটের সুরক্ষা যাচাই করার জন্য উপযুক্ত সহায়তা দিয়ে থাকে।

ওয়েবসাইটের রিভিউ এবং রেটিং দেখুন

যদি আপনি কোনো নতুন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন, তাহলে তার রিভিউ এবং রেটিং চেক করুন। এ ছাড়া সামাজিক মিডিয়ায় ওই সাইটের বিষয়ে গ্রাহকেরা কী বলছেন, তা-ও দেখে নিতে পারেন।

সূত্র: ডিজিসার্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগুনের ঝুঁকিমুক্ত ব্যাটারি বানালেন বিজ্ঞানীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ই-চুন লু জানান, আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এমন প্রযুক্তির ব্যাটারি বাজারে আসবে। ছবি: সংগৃহীত
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ই-চুন লু জানান, আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এমন প্রযুক্তির ব্যাটারি বাজারে আসবে। ছবি: সংগৃহীত

স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়ি—সবকিছুতেই এখন লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার। কিন্তু এই ব্যাটারি থেকে মাঝেমধ্যে ভয়াবহ আগুনের খবর পাওয়া যায়, যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ নকশায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।

লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিতে থাকে দাহ্য ‘ইলেকট্রোলাইট’; এটি মূলত জৈব দ্রাবকে দ্রবীভূত লিথিয়াম লবণের একটি তরল দ্রবণ। ব্যাটারি অতিরিক্ত চার্জ হওয়া, ফুটো হয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত গরম হলে এই তরল অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। তখন এক বিপজ্জনক রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়, যাকে বলা হয় ‘থার্মাল রানঅ্যাওয়ে’। এর ফলে ব্যাটারি খুব দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে আগুন ধরে যায়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিমানে ব্যাটারিজনিত ধোঁয়া বা আগুনের ৮৯টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত জানুয়ারিতে একটি এয়ারবাসে পাওয়ার ব্যাংক থেকে লাগা আগুনে পুরো বিমানটিই ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল।

২০২৪ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের অর্ধেক ব্যবসায়ী লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি-সংশ্লিষ্ট অগ্নিকাণ্ড বা বিস্ফোরণের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন।

হংকংয়ের চায়নিজ ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক ব্যাটারির নকশায় এমন পরিবর্তন এনেছেন। সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা বলছেন, বর্তমান উৎপাদন পদ্ধতি পরিবর্তন না করেই এটি প্রয়োগ করা সম্ভব।

গবেষণার প্রধান লেখক এবং ভার্জিনিয়া টেকের পোস্টডক্টরাল ফেলো ইউ সান বলেন, ‘সাধারণত ব্যাটারির পারফরম্যান্স বাড়াতে গেলে নিরাপত্তা কিছুটা বিঘ্নিত হয়। আমরা এমন একটি তাপ-সংবেদনশীল উপাদান তৈরি করেছি, যা সাধারণ তাপমাত্রায় ভালো পারফরম্যান্স দেবে, কিন্তু তাপমাত্রা বাড়লে ব্যাটারিকে স্থিতিশীল রাখবে।’

কীভাবে কাজ করে এটি

গবেষকদের উদ্ভাবিত নতুন ইলেকট্রোলাইটে দুটি দ্রাবক ব্যবহার করা হয়েছে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায়—প্রথম দ্রাবকটি ব্যাটারির রাসায়নিক কাঠামোকে দৃঢ় রাখে এবং কার্যক্ষমতা বজায় রাখে। উচ্চ তাপমাত্রায়—ব্যাটারি গরম হতে শুরু করলে দ্বিতীয় দ্রাবকটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এটি রাসায়নিক কাঠামোকে কিছুটা শিথিল করে দেয় এবং আগুনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে এমন বিক্রিয়াগুলো ধীর করে দেয়।

গবেষণাগারে নতুন নকশার ব্যাটারিকে যখন পেরেক দিয়ে ফুটো করা হয়, তখন এর তাপমাত্রা বেড়েছিল মাত্র ৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, প্রথাগত ব্যাটারিতে একই পরীক্ষায় তাপমাত্রা মুহূর্তের মধ্যে ৫৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যায়। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে ব্যাটারির স্থায়িত্বে কোনো প্রভাব পড়ে না। ১ হাজার বার চার্জ করার পরও এটি ৮০ শতাংশের বেশি ক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম।

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ই-চুন লু জানান, এই পদ্ধতি বাণিজ্যিক ব্যাটারি সিস্টেমে সহজে যুক্ত করা সম্ভব। কারণ, এতে শুধু বিদ্যমান ইলেকট্রোলাইট তরলটি বদলে দিলেই হয়, কোনো নতুন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই। তিনি আরও বলেন, ‘বড় পরিসরে উৎপাদন করলে এর খরচ বর্তমান ব্যাটারির মতোই হবে।’

অধ্যাপক ই-চুন লু জানান, আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এমন প্রযুক্তির ব্যাটারি বাজারে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উসকানিমূলক কনটেন্ট বন্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার

  • বিদ্বেষ ছড়ানো পোস্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে মেটাকে চিঠি
  • উসকানিমূলক কনটেন্টের তথ্য চায় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪০
উসকানিমূলক কনটেন্ট বন্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল সংস্থা মেটাকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পাশাপাশি উসকানিমূলক পোস্টের বিষয়ে অভিযোগ নিতে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল আইডি চালু করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, হেট স্পিচ—যা সরাসরি সহিংসতা ঘটায় কিংবা সহিংসতার ডাক দেয়; সেটা জাতীয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ মতে দণ্ডনীয় অপরাধ। সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বানসংবলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে মেটাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের পোস্ট সম্পর্কে সরাসরি রিপোর্ট করতে হবে। এ জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল চালু করা হয়েছে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী সরকার মনে করছে, নির্বাচনের আগে ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তারই ফলে এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এসব ঘটনা তুলে ধরে শুক্রবার মেটার ভাইস প্রেসিডেন্ট (পাবলিক পলিসি) সাইমন মিলনার, আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক (পাবলিক পলিসি) সারিম আজিজ ও মানবাধিকার নীতি প্রধান ফ্রেডরিক রাউস্কিকে চিঠি দেয় জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি ও বিটিআরসি। ওই চিঠিতে সহিংসতা উসকে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে আহ্বান জানানো হয়।

বর্তমানে দেশে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ চলছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘দুঃখজনকভাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে, ফেসবুক ব্যাপক সহিংসতা উসকে দেওয়া, ভীতি প্রদর্শন এবং আসন্ন নির্বাচন ব্যাহত করার আহ্বানের প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে সহিংসতা উসকে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে এবং বাস্তবে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব উসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যু এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা।’

অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে, বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং আরেকটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট, পেজ ও চ্যানেল নিষ্ক্রিয় করতে এর আগে একাধিকবার মেটাকে অনুরোধ জানিয়েছিল বিটিআরসি। কিন্তু মেটা সে সব অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করেনি। শুক্রবার পাঠানো চিঠিতে সে বিষয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।

চিঠির সঙ্গে সহিংসতা ও হামলার আহ্বান জানানো কিছু ফেসবুক পোস্টের তালিকা সংযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে অভিযোগ করে বলা হয়, এসব কনটেন্ট সম্পর্কে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রিপোর্ট করা হলেও, ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ সময়মতো বা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। এসব পোস্টের অব্যাহত উপস্থিতি ও বিস্তার সহিংসতায় ভূমিকা রেখেছে, যার মধ্যে গণমাধ্যম ভবন ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রয়েছে।

সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো পোস্ট বা অ্যাকাউন্ট ডাউন করতে, অর্থাৎ সরিয়ে দিতে পারে না। সরকার শুধু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কাছে তুলে ধরতে পারে। তাই সরকার সহিংসতার উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দিতে ইমেইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। এখন থেকে ০১৩০৮৩৩২৫৯২ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং [email protected] ই-মেইলে উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দেওয়া যাবে। এসব তথ্য বিটিআরসির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মে পাঠানো হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে একটা পক্ষ ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার একধরনের প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে বিটিআরসির চিঠি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৪
উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে বিটিআরসির চিঠি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতার উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেটাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

গতকাল শুক্রবার মেটার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ফেসবুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করে বড় ধরনের সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও আসন্ন নির্বাচন বানচালের ডাক দেওয়া হচ্ছে, যা জনজীবনে সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ভিন্ন মতাদর্শের কিছু ব্যক্তি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে প্রকাশ্যে এই মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছে, যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক। আবার কেউ কেউ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এসব উসকানিমূলক প্রচারণার পরই দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়ে এবং জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।

বিটিআরসির অভিযোগ, উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে বা ব্লক করতে দেরি করছে মেটা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেটা যে সময় নিচ্ছে, এর মধ্যে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে আরও সহিংসতা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

মেটার কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সময়মতো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে চিঠিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিটিআরসি।

একই সঙ্গে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয় চিঠিতে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ-সম্পর্কিত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি গাইডলাইন আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রাসঙ্গিকভাবে প্রয়োগ করা; বাংলা ভাষার কনটেন্টে নজরদারি জোরদার করা এবং অভিযোগ ওঠা কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত