Ajker Patrika

‘আমাদের সন্তানেরা যেন গুম-খুনের সুষ্ঠু বিচার দেখতে পায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ০৬
‘আমাদের সন্তানেরা যেন গুম-খুনের সুষ্ঠু বিচার দেখতে পায়’

‘আমি বেশি কিছু বলব না। কারণ, আমরা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এই কথাই বলব যে, আমরা যেন সুষ্ঠু বিচার পাই। এখন আর এই দেশে কোনো আদালত নেই। শুধু আছে আল্লাহর আদালত। আল্লাহর আদালতে শুধু বলি, আমরা যেন গুম-খুনের সুষ্ঠু বিচারটা পাই। আর আমরা যদি মরেও যাই, যেন আমাদের সন্তানেরা এই বিচার দেখতে পায়।’ এই আকুতি চট্টগ্রাম ছাত্রদলের প্রয়াত নেতা নুরুল আলম নুরুর স্ত্রী সুমি আক্তারের। 

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ বুধবার গুম-খুন হয়ে যাওয়া পরিবারের মাঝে দলের পক্ষ থেকে ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এই আকুতি জানান। ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ খুন হন নুরু। দল ও পরিবারের দাবি, পুলিশের লোকজন তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে। স্বামী হত্যার বিচার পাননি অভিযোগ করে অনুষ্ঠানে গুম-খুন হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্বজনের পক্ষ থেকে বিচারের দাবি জানান সুমি। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সুমির আকুতির সুরে তিনিও বলেন, ‘গুম-খুন, অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করতে করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’ 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন আর কথা নয়, কাজের প্রয়োজন। আমাদের যাঁরা খুন হয়ে গেছেন, তাঁদের আমরা ফিরে পাব না। তাঁদের পরিবার-পরিজন কষ্ট পাচ্ছে। যাঁরা গুম হয়েছেন, তাঁদের পরিবার আরও বেশি কষ্ট পাচ্ছে। কারণ তারা জানেই না, বেঁচে আছে না বেঁচে নেই। এই একটা অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমস্ত জাতিকে আজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। যাঁরা গুম হয়েছেন, খুন হয়েছেন, তাঁদের এই ত্যাগ তখনই সার্থক হবে, যদি আমরা এই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করে আনতে পারি।’ 

বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এটা প্রমাণিত সত্য যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। দেশে একটা একনায়কতন্ত্র চলছে। এটা প্রমাণিত সত্য যে, আজকে এখানে মানুষকে গুম, খুন, নির্যাতন করে, কারাগারে পাঠিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁদের ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। আমরা এই কথাগুলো বারবার বলেছি, বহুবার বলেছি। এখন রুখে দাঁড়ানোর এবং উঠে দাঁড়ানোর সময়।’ 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘একটাই কথা, ফয়সালা রাজপথেই হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আশাহত হওয়ার কারণ নাই। আমি মনে করি এসবের বিচার একদিন হবেই।’ 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এক ভয়ংকর পরিস্থিতি এবং দুর্দিনের মধ্যে আমরা জীবন অতিবাহিত করছি। প্রত্যেকটা গুম-খুনের সঙ্গে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রপ্রধান জড়িত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শোক ও ঐক্যের মাঝে একটি সুযোগ সন্ধানী মহল নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে: যুব বাঙালি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শোক ও ঐক্যের মাঝে একটি সুযোগ সন্ধানী মহল নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে: যুব বাঙালি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখ যোদ্ধা, প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ও অদলীয় রাজনৈতিক-সামাজিক চিন্তার তারুণ্যের প্রতীক ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুব বাঙালি। সংগঠনটি বলছে, ওসমান হাদির মৃত্যুতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া শোক ও ঐক্যের মাঝে একটি সুযোগ সন্ধানী মহল নৈরাজ্য সৃষ্টি করে চলেছে। যা কি না জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঐক্যকে বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রের শামিল। এ বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তিসমূহকে সতর্ক ও সংযত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয়ভাবে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল তাকে কাঠামোগত রূপ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশের রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও শ্রেণি-পেশার মানুষ রাজনৈতিক নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে একটি সুযোগ সন্ধানী মহল আগে থেকেই অভ্যুত্থানকারী শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আধিপত্যবাদবিরোধী ওসমান হাদির ওপর হামলা রাজনৈতিক সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ও জাতীয় ঐক্যে ফাটলের ইঙ্গিত বহন করে, তাঁর মৃত্যুতে যখন জাতি পুনরায় ঐক্যের সুযোগ পেয়েছে তখন সেই সুযোগ সন্ধানী গোষ্ঠী নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে সংবাদমাধ্যম, সাংস্কৃতিক সংগঠনে অগ্নিসংযোগ এবং সাংবাদিক ও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালাচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ওসমান হাদি কখনোই সংবাদমাধ্যম কিংবা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াকে সমর্থন করতেন না, সুতরাং তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যারা এসব নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে—তারা কখনই ওসমান হাদিকে ধারণ করে না।’ এমন পরিস্থিতিতে ছাত্র-যুবসমাজ, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তিসমূহকে সতর্ক, সংযত ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিক্ষোভ মিছিল বাতিল করে এনসিপির অবস্থান কর্মসূচি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিক্ষোভ মিছিল বাতিল করে এনসিপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্ষোভ মিছিল বাতিল করে এনসিপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদ এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল বাতিল করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে রয়েছেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, জাতীয় ছাত্রশক্তির সভাপতি জাহিদ আহসান, জুলাই যোদ্ধা খান তালাত মাহমুদ রাফি প্রমুখ।

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন এনসিপির নেতারা। তবে জুমার নামাজ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ওই কর্মসূচি স্থগিত করেন তাঁরা।

এরপর বিকেল ৪টার দিকে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। সেই কর্মসূচিও বাতিল করে বিকেল ৫টা নাগাদ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন দলের নেতারা।

এর আগে, আজ শুক্রবার দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা হাদির মৃত্যু নিয়ে যেকোনো কর্মসূচিতে সহিংসতা না করে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান।

আজ দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যেকোনো কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। গতকালের (বৃহস্পতিবার) মতো ভাঙচুর ও নাশকতা করার পরিকল্পনা রয়েছে জুলাইবিরোধী শক্তিগুলোর। আমরা যেকোনো প্রকার ভায়োলেন্স ও নাশকতার বিরুদ্ধে।’

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘জনগণের ক্ষোভকে ব্যবহার করে কোনো হঠকারী গ্রুপ কোথাও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ অথবা কোনো নাশকতামূলক কার্যক্রম যাতে করতে না পারে সে ব্যাপারে ভূমিকা পালন করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার অবস্থা আগের চেয়ে অনেক বেশি স্থিতিশীল: ডা. জাহিদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৪
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্রিফ করেন ডা. জাহিদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ব্রিফ করেন ডা. জাহিদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি ঘটেনি বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

খালেদা জিয়ার সবশেষ শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) যে অবস্থায় ছিলেন, সেই অবস্থার তুলনায় আজকে অনেকটা বেশি স্থিতিশীল রয়েছে। উনার শারীরিক অবস্থা গত এক মাসের মধ্যে এখন বেশ স্থিতিশীল আছে। আজকেও তাঁর একটা ছোট অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং তিনি সেটা গ্রহণ করতে পেরেছেন।’

গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা জিয়া। হাসপাতালে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) কেবিনে তাঁর চিকিৎসা চলছে। খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য তাঁর পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে দোয়া চেয়েছেন জাহিদ হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিশৃঙ্খলা ও হামলা স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি: আ স ম রব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৯
আ স ম আবদুর রব । ফাইল ছবি
আ স ম আবদুর রব । ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে দেশবাসীকে চরম ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে এক অপূরণীয় ক্ষতি জানিয়ে আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘তবে এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বা গণমাধ্যমে হামলা পরিস্থিতিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ইন্ধন জোগাতে পারে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবিরকে হেনস্তা করার মতো ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করে।’ তিনি বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি যেন কোনোভাবেই মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত না হয়, সে বিষয়ে দেশবাসীকে সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে হবে। কোনো অবিবেচনাপ্রসূত কাজ যেন ছাত্র-জনতার মহান গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক অর্জনকে নস্যাৎ করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। জাতীয় স্বার্থে আবেগ সংবরণ করে সবাইকে ধৈর্য ধারণ এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত