আজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আর আজ শনিবার বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানান।
তিনি জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ এর জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটি সদস্য ও চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আগামী ৫-৬ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস কংগ্রেসনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বে জাতীয় প্রার্থনা প্রাতরাশ অনুষ্ঠিত হবে।
ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট ইভেন্টটি মূলত খ্রিস্টান ব্যক্তিত্ব, পাদ্রী, নির্বাচিত কর্মকর্তা এবং উদ্যোক্তাদের একটি সমাবেশ, যা সাধারণত ফেব্রুয়ারির প্রথম বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়।
বার্ষিক অনুষ্ঠানটি প্রথমে ‘প্রেসিডেন্সিয়াল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৭০ সালে এর নামকরণ হয় ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট। এই ইভেন্টে প্রার্থনা, রাজনীতি এবং ব্যবসাসহ সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। তাই এতে যোগদান মার্কিন প্রেসিডেন্টদের জন্য একটি প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে।
প্রথমবারের মতো ১৯৫৩ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরবর্তীতে উত্তরসূরিরাও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আর আজ শনিবার বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানান।
তিনি জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ এর জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটি সদস্য ও চেয়ারপারসন ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আগামী ৫-৬ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস কংগ্রেসনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বে জাতীয় প্রার্থনা প্রাতরাশ অনুষ্ঠিত হবে।
ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট ইভেন্টটি মূলত খ্রিস্টান ব্যক্তিত্ব, পাদ্রী, নির্বাচিত কর্মকর্তা এবং উদ্যোক্তাদের একটি সমাবেশ, যা সাধারণত ফেব্রুয়ারির প্রথম বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়।
বার্ষিক অনুষ্ঠানটি প্রথমে ‘প্রেসিডেন্সিয়াল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৭০ সালে এর নামকরণ হয় ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট। এই ইভেন্টে প্রার্থনা, রাজনীতি এবং ব্যবসাসহ সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। তাই এতে যোগদান মার্কিন প্রেসিডেন্টদের জন্য একটি প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে।
প্রথমবারের মতো ১৯৫৩ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরবর্তীতে উত্তরসূরিরাও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করেন।

অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
১৬ মিনিট আগে
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগে
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র...
৩ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
৩ ঘণ্টা আগেরেজা করিম, ঢাকা

অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
সময়ের প্রয়োজনে সংসারে মগ্ন গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়া নেমেছিলেন রাজনীতি নামের অচেনা-অজানা এক জটিল, বন্ধুর পথে। উত্থানপতন আর অনমনীয় সংগ্রামে ঘেরা চার দশকের দীর্ঘ যাত্রায় সেই একদা-অচেনা পথই তাঁকে বসিয়েছিল ‘আপসহীন’ নেত্রীর আসনে। গৃহবধূ খালেদা খানম হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের একজন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট। কৈশোর ও যৌবনের খালেদা খানম ১৯৬০ সালে তৎকালীন তরুণ সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ের পর হলেন খালেদা জিয়া। তখনো গৃহকোণেই সীমিত ছিল এই নামের বিচরণ। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনিশ্চয়তায় ঘেরা পরিবেশে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জিয়াউর রহমান পর্যায়ক্রমে হলেন রাষ্ট্রপতি। তখন থেকে রাষ্ট্রীয় সফর, সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে থাকেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড তাঁর জীবনের মোড় একেবারেই ঘুরিয়ে দেয়। জিয়ার হাতে গড়া বিএনপি তখন আকস্মিকভাবে নেতৃত্বের সংকটে পড়ে দিশাহীন। এই অবস্থায় ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি দলের নেতা-কর্মীদের ঐকান্তিক আহ্বানে বিএনপিতে যোগ দেন খালেদা জিয়া। সময়ের প্রয়োজনে এভাবে তিনি প্রায় হঠাৎ করে চলে আসেন জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিএনপিদলীয় রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেন। এরশাদের অবশ্য দাবি ছিল দুর্নীতি, নাজুক অর্থনীতিসহ সার্বিক অবস্থা সামলাতে তাঁকেই দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন বয়োবৃদ্ধ সাত্তার। খালেদা জিয়া শুরুতে এরশাদের এই ভূমিকার বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছিলেন। দল ক্রমেই তাঁর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। সে বছরেরই ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় প্রথম বক্তব্য দেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রসঙ্গত, জেন্ডার-সচেতন ‘চেয়ারপারসন’ প্রত্যয়টি এ দেশে চালু হয় আরও অনেক পরে। ১৯৮৪ সালের মে থেকে খালেদা জিয়ার সুদৃঢ় নেতৃত্বেই বিএনপি ক্রমে সংগঠিত হয়ে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়।
গৃহবধূর দায়িত্ব থেকে রাজনীতির কঠিন পথে চলার কাজটা সহজ ছিল না খালেদা জিয়ার জন্য। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকলেও ধৈর্য, পরিশ্রম এবং সহজাত সাংগঠনিক দক্ষতা পুঁজি করে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তুলনামূলকভাবে নিতান্ত নবীন দল বিএনপিকে ধীরে ধীরে জেলা ও থানা পর্যায়ে পুনর্গঠন করেন। দলের তৃণমূলকে সক্রিয় করা এবং নারী ভোটারদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে তিনি হয়ে ওঠেন অন্যতম প্রধান মুখ। এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে তাঁর আপসহীন নেতৃত্বে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পরের বছর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে তিনি হন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাঁর শাসনামল। এরপর ১৯৯৬, ২০০১ সালসহ মোট তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল বিএনপি। তবে সেবারের নির্বাচন বেশির ভাগ দল বর্জন করে। বিএনপির সেই সরকারের মেয়াদ ছিল খুব কম। ’৯৬-এর জুনে অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে ২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে বড়সড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এ সময় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিস্তারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এগিয়ে নিতে ২০০৩ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠন করে তাঁর সরকার। প্রাথমিক শিক্ষায় বৃত্তি ও উপবৃত্তিও চালু হয় সে বছর। পাশাপাশি এই সময় রাজনৈতিক সংঘাতও চলমান ছিল। নানা দিকে সাফল্যের পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগ, উগ্রবাদের উত্থানসহ কিছু বিতর্কিত বিষয়ও তাঁর শাসনামলের অংশ হয়ে ওঠে; যা বাংলাদেশের রাজনীতির চিরাচরিত বাস্তবতারই প্রতিফলন।
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। একসময় পাশাপাশি এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়লেও পরবর্তী সময়ে এই দুই নারীর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের রাজনীতি তীব্রভাবে দুই মেরুতে আলাদা হয়। কয়েক দশক ধরে তাঁদের নেতৃত্বাধীন দুই দল পর্যায়ক্রমে দেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে ক্ষমতায় ও বিরোধী দলে থেকে।
খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফা প্রধানমন্ত্রিত্বের শেষ দিকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থির হয়ে ওঠে। পরিণতিতে ২০০৭ সালে ক্ষমতায় আসে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রাজনৈতিক আবহে এই পরিবর্তন প্রায় সব রাজনৈতিক নেতার জন্যই সংকট ডেকে আনে। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়, এমনকি রাজনীতি থেকে স্থায়ীভাবে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয় তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানকে। কিন্তু কারাবাস, মামলাসহ নানা চাপের মধ্যেও খালেদা জিয়া নতি স্বীকার করেননি। দেশের রাজনীতিতে ‘ওয়ান-ইলেভেন’ হিসেবে পরিচিত এই পর্বে রাজনীতিক হিসেবে তাঁর দৃঢ়তার বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় ২৬০টি আসন পেয়ে বিশাল জয় পায়। বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবাদে মহাজোট সরকার ক্রমেই চরম কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠে। সে আমলে নানা যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে তাঁর দীর্ঘ ২৮ বছরের আবাসস্থল সেনাসদর এলাকার মইনুল রোডের বাসা থেকে উচ্ছেদ করা হয়। ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন বর্জনের পর মৃত্যু পর্যন্ত আর সংসদে ফেরা হয়নি বিএনপি নেতার। এর মধ্যে বড় ছেলে তারেক রহমান কারামুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য দেশ ছেড়ে লন্ডনে যান। শুরু হয় তাঁর নির্বাসিত জীবন। অন্যদিকে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যান। একের পর এক ধাক্কার মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যেতে হয় খালেদা জিয়াকে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই বছরের বন্দিজীবনের পর ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে বাড়িতে থাকার অনুমতি পান বিএনপির চেয়ারপারসন। তবে কারাগার থেকে বাড়িতে এলেও আগের মতো আর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা হয়নি তাঁর। হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতাসহ নানা গুরুতর শারীরিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে। মাঝে মাঝেই হাসপাতালে যেতে হচ্ছিল তাঁকে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাহী আদেশে দ্রুত কারামুক্ত হন খালেদা জিয়া। পরে একে একে সব মামলা থেকে খালাস পান তিনি। মুক্ত হওয়ার পর নয়াপল্টনে বিএনপির জনসভায় দীর্ঘদিন পর ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। সেই বক্তৃতায় অহিংস থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের শুরুতে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখান থেকে কয়েক মাস পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। তবে অসুস্থতা পিছু ছাড়েনি তাঁর। তখন থেকে প্রায়ই তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের মূল্যায়ন করতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি এমন এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন, যাঁকে নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। দেশপ্রেম, গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ ও সংগ্রামে তিনি অনন্য রাজনীতিবিদ হিসেবে থাকবেন। রাজনীতির জন্য তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাঁকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে দেওয়া হয়নি। আন্দোলন-সংগ্রামে দৃঢ়তা দেখিয়ে দেশের মানুষের মাঝে গণতান্ত্রিক স্পৃহা জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।’
৩৭ মামলা মোকাবিলা
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শেখ হাসিনার শাসনামলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল। ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে করা হয় পাঁচটি দুর্নীতির মামলা। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনে করা হয় আরও ৩২টি। শেষ পর্যন্ত এসব মামলার সব কটি থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন খালেদা জিয়া। কিছু মামলায় বেকসুর খালাস আর কিছু মামলা থেকে অব্যাহতি পান তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি নাইকো দুর্নীতি মামলা থেকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ তাঁকে খালাস দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়াকে প্রায় দুই বছর কারাভোগ করতে হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাজাপ্রাপ্ত ওই দুই মামলায় রাষ্ট্রপতি তাঁকে ক্ষমা করেন; কিন্তু খালেদা জিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যান। সর্বশেষ উচ্চ আদালত থেকে তিনি ওই দুই মামলায় খালাস পান।

অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
সময়ের প্রয়োজনে সংসারে মগ্ন গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়া নেমেছিলেন রাজনীতি নামের অচেনা-অজানা এক জটিল, বন্ধুর পথে। উত্থানপতন আর অনমনীয় সংগ্রামে ঘেরা চার দশকের দীর্ঘ যাত্রায় সেই একদা-অচেনা পথই তাঁকে বসিয়েছিল ‘আপসহীন’ নেত্রীর আসনে। গৃহবধূ খালেদা খানম হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের একজন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট। কৈশোর ও যৌবনের খালেদা খানম ১৯৬০ সালে তৎকালীন তরুণ সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ের পর হলেন খালেদা জিয়া। তখনো গৃহকোণেই সীমিত ছিল এই নামের বিচরণ। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনিশ্চয়তায় ঘেরা পরিবেশে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জিয়াউর রহমান পর্যায়ক্রমে হলেন রাষ্ট্রপতি। তখন থেকে রাষ্ট্রীয় সফর, সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে থাকেন খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ড তাঁর জীবনের মোড় একেবারেই ঘুরিয়ে দেয়। জিয়ার হাতে গড়া বিএনপি তখন আকস্মিকভাবে নেতৃত্বের সংকটে পড়ে দিশাহীন। এই অবস্থায় ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি দলের নেতা-কর্মীদের ঐকান্তিক আহ্বানে বিএনপিতে যোগ দেন খালেদা জিয়া। সময়ের প্রয়োজনে এভাবে তিনি প্রায় হঠাৎ করে চলে আসেন জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিএনপিদলীয় রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেন। এরশাদের অবশ্য দাবি ছিল দুর্নীতি, নাজুক অর্থনীতিসহ সার্বিক অবস্থা সামলাতে তাঁকেই দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন বয়োবৃদ্ধ সাত্তার। খালেদা জিয়া শুরুতে এরশাদের এই ভূমিকার বিরোধিতায় সোচ্চার হয়েছিলেন। দল ক্রমেই তাঁর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। সে বছরেরই ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় প্রথম বক্তব্য দেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রসঙ্গত, জেন্ডার-সচেতন ‘চেয়ারপারসন’ প্রত্যয়টি এ দেশে চালু হয় আরও অনেক পরে। ১৯৮৪ সালের মে থেকে খালেদা জিয়ার সুদৃঢ় নেতৃত্বেই বিএনপি ক্রমে সংগঠিত হয়ে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়।
গৃহবধূর দায়িত্ব থেকে রাজনীতির কঠিন পথে চলার কাজটা সহজ ছিল না খালেদা জিয়ার জন্য। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকলেও ধৈর্য, পরিশ্রম এবং সহজাত সাংগঠনিক দক্ষতা পুঁজি করে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তুলনামূলকভাবে নিতান্ত নবীন দল বিএনপিকে ধীরে ধীরে জেলা ও থানা পর্যায়ে পুনর্গঠন করেন। দলের তৃণমূলকে সক্রিয় করা এবং নারী ভোটারদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে তিনি হয়ে ওঠেন অন্যতম প্রধান মুখ। এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে তাঁর আপসহীন নেতৃত্বে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পরের বছর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে তিনি হন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাঁর শাসনামল। এরপর ১৯৯৬, ২০০১ সালসহ মোট তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিল বিএনপি। তবে সেবারের নির্বাচন বেশির ভাগ দল বর্জন করে। বিএনপির সেই সরকারের মেয়াদ ছিল খুব কম। ’৯৬-এর জুনে অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে ২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে বড়সড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এ সময় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিস্তারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এগিয়ে নিতে ২০০৩ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠন করে তাঁর সরকার। প্রাথমিক শিক্ষায় বৃত্তি ও উপবৃত্তিও চালু হয় সে বছর। পাশাপাশি এই সময় রাজনৈতিক সংঘাতও চলমান ছিল। নানা দিকে সাফল্যের পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগ, উগ্রবাদের উত্থানসহ কিছু বিতর্কিত বিষয়ও তাঁর শাসনামলের অংশ হয়ে ওঠে; যা বাংলাদেশের রাজনীতির চিরাচরিত বাস্তবতারই প্রতিফলন।
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। একসময় পাশাপাশি এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়লেও পরবর্তী সময়ে এই দুই নারীর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের রাজনীতি তীব্রভাবে দুই মেরুতে আলাদা হয়। কয়েক দশক ধরে তাঁদের নেতৃত্বাধীন দুই দল পর্যায়ক্রমে দেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে ক্ষমতায় ও বিরোধী দলে থেকে।
খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফা প্রধানমন্ত্রিত্বের শেষ দিকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থির হয়ে ওঠে। পরিণতিতে ২০০৭ সালে ক্ষমতায় আসে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রাজনৈতিক আবহে এই পরিবর্তন প্রায় সব রাজনৈতিক নেতার জন্যই সংকট ডেকে আনে। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়, এমনকি রাজনীতি থেকে স্থায়ীভাবে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে। গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয় তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানকে। কিন্তু কারাবাস, মামলাসহ নানা চাপের মধ্যেও খালেদা জিয়া নতি স্বীকার করেননি। দেশের রাজনীতিতে ‘ওয়ান-ইলেভেন’ হিসেবে পরিচিত এই পর্বে রাজনীতিক হিসেবে তাঁর দৃঢ়তার বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় ২৬০টি আসন পেয়ে বিশাল জয় পায়। বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবাদে মহাজোট সরকার ক্রমেই চরম কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে ওঠে। সে আমলে নানা যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে তাঁর দীর্ঘ ২৮ বছরের আবাসস্থল সেনাসদর এলাকার মইনুল রোডের বাসা থেকে উচ্ছেদ করা হয়। ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচন বর্জনের পর মৃত্যু পর্যন্ত আর সংসদে ফেরা হয়নি বিএনপি নেতার। এর মধ্যে বড় ছেলে তারেক রহমান কারামুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য দেশ ছেড়ে লন্ডনে যান। শুরু হয় তাঁর নির্বাসিত জীবন। অন্যদিকে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যান। একের পর এক ধাক্কার মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যেতে হয় খালেদা জিয়াকে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই বছরের বন্দিজীবনের পর ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে বাড়িতে থাকার অনুমতি পান বিএনপির চেয়ারপারসন। তবে কারাগার থেকে বাড়িতে এলেও আগের মতো আর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা হয়নি তাঁর। হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতাসহ নানা গুরুতর শারীরিক সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে। মাঝে মাঝেই হাসপাতালে যেতে হচ্ছিল তাঁকে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাহী আদেশে দ্রুত কারামুক্ত হন খালেদা জিয়া। পরে একে একে সব মামলা থেকে খালাস পান তিনি। মুক্ত হওয়ার পর নয়াপল্টনে বিএনপির জনসভায় দীর্ঘদিন পর ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। সেই বক্তৃতায় অহিংস থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের শুরুতে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখান থেকে কয়েক মাস পর অনেকটাই সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। তবে অসুস্থতা পিছু ছাড়েনি তাঁর। তখন থেকে প্রায়ই তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের মূল্যায়ন করতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি এমন এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন, যাঁকে নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। দেশপ্রেম, গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ ও সংগ্রামে তিনি অনন্য রাজনীতিবিদ হিসেবে থাকবেন। রাজনীতির জন্য তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাঁকে বিদেশে চিকিৎসা করাতে দেওয়া হয়নি। আন্দোলন-সংগ্রামে দৃঢ়তা দেখিয়ে দেশের মানুষের মাঝে গণতান্ত্রিক স্পৃহা জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।’
৩৭ মামলা মোকাবিলা
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শেখ হাসিনার শাসনামলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছিল। ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে করা হয় পাঁচটি দুর্নীতির মামলা। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনে করা হয় আরও ৩২টি। শেষ পর্যন্ত এসব মামলার সব কটি থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন খালেদা জিয়া। কিছু মামলায় বেকসুর খালাস আর কিছু মামলা থেকে অব্যাহতি পান তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি নাইকো দুর্নীতি মামলা থেকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ তাঁকে খালাস দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়াকে প্রায় দুই বছর কারাভোগ করতে হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাজাপ্রাপ্ত ওই দুই মামলায় রাষ্ট্রপতি তাঁকে ক্ষমা করেন; কিন্তু খালেদা জিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যান। সর্বশেষ উচ্চ আদালত থেকে তিনি ওই দুই মামলায় খালাস পান।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
১১ জানুয়ারি ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগে
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র...
৩ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা, দাফন ঘিরে জাতীয় সংসদ ভবন এবং জিয়া উদ্যান এলাকা ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েক হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। অনুমোদিত ছাড়া সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজায় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
আজ বুধবার সকালে সংসদ ভবন এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। আজ সকাল ৯টার একটু আগে বাংলাদেশের পতাকায় মোড়ানো একটি গাড়িতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের উদ্দেশে বের করা হয় তাঁর মরদেহ। এরপর নেওয়া হয় গুলশানের তারেক রহমানের বাসায়। সেখান থেকে তাঁর মরদেহ জানাজা ও দাফনের জন্য আনা হয় জাতীয় সংসদ ভবনে।

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টাগণ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
জানা যায়, খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পাকিস্তানের স্পিকার ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত ও দেশটির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সরকারের একজন প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রী ও বিশেষ দূত ঢাকায় আসছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা, দাফন ঘিরে জাতীয় সংসদ ভবন এবং জিয়া উদ্যান এলাকা ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েক হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। অনুমোদিত ছাড়া সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজায় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
আজ বুধবার সকালে সংসদ ভবন এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। আজ সকাল ৯টার একটু আগে বাংলাদেশের পতাকায় মোড়ানো একটি গাড়িতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের উদ্দেশে বের করা হয় তাঁর মরদেহ। এরপর নেওয়া হয় গুলশানের তারেক রহমানের বাসায়। সেখান থেকে তাঁর মরদেহ জানাজা ও দাফনের জন্য আনা হয় জাতীয় সংসদ ভবনে।

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টাগণ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
জানা যায়, খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে পাকিস্তানের স্পিকার ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত ও দেশটির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সরকারের একজন প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রী ও বিশেষ দূত ঢাকায় আসছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
১১ জানুয়ারি ২০২৫
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
১৬ মিনিট আগে
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র...
৩ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র এবং একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়ার প্রখর রাজনৈতিক নেত্রী হয়ে ওঠার রোমাঞ্চকর ইতিহাস।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। তবে পরবর্তী পূর্ণমেয়াদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিএনপির ভেতরে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। তৎকালীন নীতিনির্ধারকদের মতে, একদল খালেদা জিয়াকে সরাসরি রাজনীতিতে আনতে চাইলেও তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় একটি পক্ষ বিচারপতি সাত্তারের মনোনয়ন নিশ্চিত করে। এরশাদের আশঙ্কা ছিল, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ থাকবে না।
এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এম এ মতিন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে একটি ‘প্রেশার গ্রুপ’ তৈরি করা হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজও সাত্তারের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামসুদ্দোহাও এরশাদের প্ররোচনায় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা যায়।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করার পরপরই শুরু হয় ধরপাকড়। তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা তানভীর আহমদ সিদ্দিকীসহ অনেককে জেলে পাঠানো হয়। এরশাদের শাসনামলে বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য বারবার ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করা হয়। এর ফলে ১৯৮৩ সালে শাহ আজিজ, ডা. এম এ মতিন এবং শামসুল হুদা চৌধুরীদের নিয়ে ‘বিএনপি (হুদা-মতিন)’ গ্রুপ গঠিত হয়, যারা মূলত এরশাদকে সমর্থন জোগাত।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর জেনারেল এরশাদ দাবি করতে থাকেন যে প্রশাসনে সামরিক বাহিনীর সরাসরি অংশীদারত্ব থাকতে হবে। এই অগণতান্ত্রিক দাবি বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ওয়াশিংটনে কর্মরত তৎকালীন কর্মকর্তা এম সাইদুজ্জামান ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে সরকারকে জানিয়েছিলেন, সামরিক হস্তক্ষেপের কারণে বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সাত্তারকে সতর্ক করলেও ততক্ষণে পর্দার আড়ালে ক্ষমতা দখলের চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।
বিএনপির এই চরম দুর্দিনে দল যখন অস্তিত্ব সংকটে, তখনই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনুরোধে খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আসেন। ১৯৮৭ সালে তাঁকে আটকের পরও আন্দোলন দমানো যায়নি। ধীরে ধীরে তিনি একজন দক্ষ বক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অথচ ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত লাজুক ছিলেন এবং এমনকি জিয়াউর রহমানের জীবদ্দশায় কোনো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যেতেও সংকোচ বোধ করতেন। তাঁর এই আমূল পরিবর্তন এবং প্রখর স্মৃতিশক্তি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদেরও মুগ্ধ করেছিল।
১৯৮৬ সালের নির্বাচনে এরশাদ বিএনপিকে ১২৬টি আসন দেওয়ার টোপ দিয়েছিলেন। এই প্রস্তাব নিয়ে দলের অভ্যন্তরে বিতর্ক থাকলেও খালেদা জিয়া তাঁর সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, স্বৈরশাসকের অধীনে কোনো সিট ভাগাভাগি বা নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ ঘোষণা করলেও পরদিনই নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করে দেন বলে বিএনপি নেতাদের অভিমত।
দীর্ঘ ৯ বছরের লড়াইয়ের পর ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সম্মিলিত আন্দোলনের মুখে এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পদত্যাগ এবং প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে পুনরায় গণতন্ত্রের সূর্য উদিত হয়।
তথ্যসূত্র: তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম’ বইয়ের ঐতিহাসিক নথি

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র এবং একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়ার প্রখর রাজনৈতিক নেত্রী হয়ে ওঠার রোমাঞ্চকর ইতিহাস।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। তবে পরবর্তী পূর্ণমেয়াদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিএনপির ভেতরে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। তৎকালীন নীতিনির্ধারকদের মতে, একদল খালেদা জিয়াকে সরাসরি রাজনীতিতে আনতে চাইলেও তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের প্ররোচনায় একটি পক্ষ বিচারপতি সাত্তারের মনোনয়ন নিশ্চিত করে। এরশাদের আশঙ্কা ছিল, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ থাকবে না।
এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এম এ মতিন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে একটি ‘প্রেশার গ্রুপ’ তৈরি করা হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজও সাত্তারের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামসুদ্দোহাও এরশাদের প্ররোচনায় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা যায়।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বিচারপতি সাত্তারকে হটিয়ে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করার পরপরই শুরু হয় ধরপাকড়। তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা তানভীর আহমদ সিদ্দিকীসহ অনেককে জেলে পাঠানো হয়। এরশাদের শাসনামলে বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য বারবার ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করা হয়। এর ফলে ১৯৮৩ সালে শাহ আজিজ, ডা. এম এ মতিন এবং শামসুল হুদা চৌধুরীদের নিয়ে ‘বিএনপি (হুদা-মতিন)’ গ্রুপ গঠিত হয়, যারা মূলত এরশাদকে সমর্থন জোগাত।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর জেনারেল এরশাদ দাবি করতে থাকেন যে প্রশাসনে সামরিক বাহিনীর সরাসরি অংশীদারত্ব থাকতে হবে। এই অগণতান্ত্রিক দাবি বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ওয়াশিংটনে কর্মরত তৎকালীন কর্মকর্তা এম সাইদুজ্জামান ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে সরকারকে জানিয়েছিলেন, সামরিক হস্তক্ষেপের কারণে বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সাত্তারকে সতর্ক করলেও ততক্ষণে পর্দার আড়ালে ক্ষমতা দখলের চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল।
বিএনপির এই চরম দুর্দিনে দল যখন অস্তিত্ব সংকটে, তখনই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনুরোধে খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আসেন। ১৯৮৭ সালে তাঁকে আটকের পরও আন্দোলন দমানো যায়নি। ধীরে ধীরে তিনি একজন দক্ষ বক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অথচ ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত লাজুক ছিলেন এবং এমনকি জিয়াউর রহমানের জীবদ্দশায় কোনো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যেতেও সংকোচ বোধ করতেন। তাঁর এই আমূল পরিবর্তন এবং প্রখর স্মৃতিশক্তি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বদেরও মুগ্ধ করেছিল।
১৯৮৬ সালের নির্বাচনে এরশাদ বিএনপিকে ১২৬টি আসন দেওয়ার টোপ দিয়েছিলেন। এই প্রস্তাব নিয়ে দলের অভ্যন্তরে বিতর্ক থাকলেও খালেদা জিয়া তাঁর সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, স্বৈরশাসকের অধীনে কোনো সিট ভাগাভাগি বা নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ ঘোষণা করলেও পরদিনই নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনকে দুর্বল করে দেন বলে বিএনপি নেতাদের অভিমত।
দীর্ঘ ৯ বছরের লড়াইয়ের পর ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সম্মিলিত আন্দোলনের মুখে এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পদত্যাগ এবং প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে পুনরায় গণতন্ত্রের সূর্য উদিত হয়।
তথ্যসূত্র: তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম’ বইয়ের ঐতিহাসিক নথি

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
১১ জানুয়ারি ২০২৫
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
১৬ মিনিট আগে
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগে
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মরদেহ জানাজার জন্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার কিছু পরে নেওয়া হয়েছে। এর পর বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে বলে জানা গেছে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার জানাজাকে কেন্দ্র করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সকল দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বিএনপির মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন।
দাফনের কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তি ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মরদেহ জানাজার জন্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার কিছু পরে নেওয়া হয়েছে। এর পর বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে বলে জানা গেছে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার জানাজাকে কেন্দ্র করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সকল দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় আসতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সেখানে কেউ কাঁদছেন, কেউ মন খারাপ করে বসে আছেন। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে শোকের পরিবেশ।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বিএনপির মনোনীত রাজনীতিবিদেরা উপস্থিত থাকবেন।
দাফনের কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তি ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দাফন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
১১ জানুয়ারি ২০২৫
অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের দিনাজপুরের জলপাইগুড়ি। ঘন সবুজ চা-বাগানে ঘেরা এক জনপদ। সেখানেই জন্ম সেদিনের খালেদা খানমের। ডাকনাম পুতুল। শান্ত, লাজুক সেই কিশোরী বড় হয়ে জনমানুষের নেত্রী তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হবেন—কেই-বা তখন ভাবতে পেরেছিল! কিন্তু নিয়তি তাঁকে সে পথেই ঠেলে দিয়েছিল।
১৬ মিনিট আগে
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন কার্যক্রম পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় করা হবে। এ সময় ১০ হাজারের বেশি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।
২ ঘণ্টা আগে
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে গভীর সংকটের সৃষ্টি হয়েছিল, তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সম্প্রতি তৎকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকদের স্মৃতিচারণা ও ডায়েরি থেকে বেরিয়ে এসেছে সেই সময়ের ক্ষমতা দখল, ষড়যন্ত্র...
৩ ঘণ্টা আগে