Ajker Patrika

কর্মীদের পূর্ণকালীন অফিসে ফেরাতে বেতন বাড়াচ্ছে মার্কিন কোম্পানিগুলো

আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৯: ২২
কর্মীদের পূর্ণকালীন অফিসে ফেরাতে বেতন বাড়াচ্ছে মার্কিন কোম্পানিগুলো

কোভিডের ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারেনি অনেক প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে কর্মীদের মধ্যে হোম অফিস ছেড়ে পূর্ণকালীন অফিসে অবস্থানে অনীহা এখনো ব্যাপকভাবেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোম্পানিগুলো কর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

পশ্চিমে এখনো অনেক চাকরি হাইব্রিড—রিমোট অফিস করছেন অনেকে, কেউ কেউ মাঝেমধ্যে অফিসে আসেন। অনেক কোম্পানি অবশ্য কর্মীদের পূর্ণকালীন অফিস করতে বাধ্য করছে। বোয়িং, ইউপিএস, জেপিমরগান চেজের মতো বৃহৎ করপোরেশনগুলো সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিসে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক করেছে। 

কিন্তু এ ধরনের কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনেকে এখন পূর্ণকালীন অফিস করতে কর্মীদের বাড়তি বেতন দেওয়ার কথা বলছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিডকাল থেকে শুরু করে কর্মঘণ্টায় এবং অফিসে উপস্থিতির ক্ষেত্রে নমনীয় অবস্থান নিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে নাটকীয় পরিবর্তন দেখা গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেখা গেছে, বেতনের প্রায় ২০ শতাংশ সমান কর্মদিবস এখনো বাড়ি থেকে কাজ করছেন কর্মীরা। 

ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিপরিক্রুটারের প্রধান অর্থনীতিবিদ জুলিয়া পোলাক বলেন, ‘যে নিয়োগকর্তারা (অফিসে অবস্থান নিয়ে) নমনীয়তার বিষয়ে প্রতিযোগিতা করতে পারে না, তাদের বেতনের ক্ষেত্রে আরও আক্রমণাত্মক প্রতিযোগিতা করতে হবে।’ 

এখন দেখা যাচ্ছে, ফলাফল সেটিই হয়েছে; পূর্ণকালীন অফিস করাতে কর্মীদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে। 

জিপরিক্রুটারের ডেটা অনুসারে, মার্কিন কোম্পানিগুলো গত মার্চ নাগাদ অফিসে পূর্ণকালীন ব্যক্তিগত উপস্থিতির জন্য গড়ে বাৎসরিক ৮২ হাজার ৩৭ ডলার অফার করছে। এটি ২০২৩-এর তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি, যেখানে বিভিন্ন খাতে হাইব্রিড কর্মপরিবেশের জন্য গড়ে ৫৯ হাজার ৯৯২ ডলার এবং সম্পূর্ণ হোম অফিসের জন্য ৭৫ হাজার ৩২৭ ডলার দেওয়া হয়। এখন বেতন বৃদ্ধির ফলে কর্মীরা প্রাক্‌-মহামারি সময়কার অফিসের সময়সূচিতে ফিরে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। 

মহামারির সময় অফিসে উপস্থিতি ও কর্মঘণ্টার ক্ষেত্রে যে নমনীয়তা দেখানো হয়েছিল, তাতেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন কর্মীরা। তাঁরা আর এই আরাম ছাড়তে চাইছেন না। ফলে তাঁদের অফিসে ফেরাতে বেশি চাপ দিলে বেশি বেতন দিতে হবে—পরিস্থিতি এখন এমন। 

জিপরিক্রুটারের ডেটায় দেখা যায়, ২০২৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কর্মী সম্পূর্ণ হোম অফিস থেকে পূর্ণকালীন অফিসে ফিরে এসেছেন, তাঁদের বেতন ২৯ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। 

তবে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের চিত্র যুক্তরাষ্ট্রের মতো নয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাজ্যে ১৫ হাজার নিয়োগকর্তা এবং কর্মচারীদের একটি জরিপে দেখা যায়, ৪৩ শতাংশ কর্মী পূর্ণকালীন অফিসে ফিরে এসেছেন। এর মানে হলো, ইউরোপে বেতন বাড়ানোর পরও পূর্ণকালীন অফিসে ফিরে আসার প্রবণতা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দুর্বল। 

তবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক বারবারা পেট্রোঙ্গোলো বলছেন, এই বেতন বৈষম্যের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি রয়েছে: এটি শ্রমবাজারে বৈষম্যকে শক্তিশালী করতে পারে। যেসব কর্মী ঘরে অন্যদের যত্ন নেওয়ার দায়িত্বও পালন করেন, তাঁরা হাইব্রিড বা হোম অফিস পছন্দ করেন, বিশেষ করে নারীরা। তাই, যদি সর্বোচ্চ বেতনের চাকরিগুলোতে কম নমনীয়তা দেখানো হয়, তাহলে কর্মশক্তির কিছু অংশ উচ্চ বেতনের সুযোগ-সুবিধা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি বসরা সত্যিই তাঁদের কর্মীদের অফিসে ফেরাতে চান, তাহলে বর্তমান প্রণোদনা কিছু সময়ের জন্য থাকতে পারে। তবে নমনীয় কাজের ধরনগুলো অদৃশ্য হয়ে যাবে এমন কোনো লক্ষণ নেই। যেমন—মার্চের ডেটায় দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৩ শতাংশ পেশাদার এবং ব্যবসা-সেবা প্রতিষ্ঠান নিয়োগের সময় হাইব্রিড বা দূরবর্তী কাজের সুযোগ সংবলিত বিজ্ঞাপন দেয়। ফলে হোম অফিস করতে চাওয়া দক্ষ কর্মীদের হাতে এখনো বিকল্প রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানের চাটুকারিতায় নষ্ট যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক: সাবেক পেন্টাগন কর্মকর্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি

সাবেক পেন্টাগন কর্মকর্তা মাইকেল রুবিন দাবি করেছেন, পাকিস্তানের ‘চাটুকারিতা’ ও ‘ঘুষে’ যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘চরম অযোগ্যতার’ কারণেই ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।

সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুবিন জানান, ট্রাম্পের আচরণে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা ‘হতবাক’। কারণ তাঁর নীতির ফলে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্ক উল্টো দিকে ঘুরে গেছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এর পেছনে কী ‘পাকিস্তানের চাটুকারিতা, নাকি ঘুষ’ কাজ করেছে?

রুবিন বলেন, ‘আমাদের অনেকেই এখনো বুঝে উঠতে পারছি না, কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ককে নষ্ট করে দিলেন। অনেকেই প্রশ্ন করেন, তিনি আসলে কিসে প্ররোচিত হলেন। হয়তো পাকিস্তানের তোষামোদ। অথবা পাকিস্তান বা তাদের পৃষ্ঠপোষক তুরস্ক ও কাতারের ঘুষ ট্রাম্পকে প্রভাবিত করেছে... কিন্তু এটি এমনই এক ভয়াবহ ঘুষ, যার বোঝা আমেরিকাকে দশকের পর দশক কৌশলগত ঘাটতির মুখে ফেলবে।’

রুবিন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে রুশ তেল কেনা নিয়ে ‘শিক্ষা দেওয়ার’ চেষ্টা করছে। অথচ ওয়াশিংটন নিজেই মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য করছে—এটা ‘ভন্ডামি’। তিনি জানান, ভারতের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নয়াদিল্লির অবস্থান যৌক্তিক।

রুবিন বলেন, ‘আমেরিকানরা কী বোঝেন না, যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভারতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্যই তাঁরা নির্বাচিত করেছেন। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। খুব শিগগিরই ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাশিয়া ছাড়া আমাদের বিকল্প বাজার নেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া থেকে জিনিসপত্র কিনতে বাধ্য। এই অবস্থায় ভারতকে রুশ পণ্য কিনতে বাধা দেওয়া এক ধরনের ভন্ডামি।’

তিনি বলেন, ‘ভারতকে উপদেশ দেওয়ার বদলে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত কম দামে জ্বালানি সরবরাহ করা। যদি আমরা তা দিতে না পারি, তবে সবচেয়ে ভালো চুপ থাকা। কারণ ভারতকে সবার আগে তার নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হয়।’

উল্লেখ্য, ট্রাম্প চলতি বছরের আগস্টে ভারতের বেশির ভাগ পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল, নয়াদিল্লির রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখা।’

এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৪ ডিসেম্বর ভারত পৌঁছান ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এই শীর্ষ বৈঠকে জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী মোদি পুতিনকে ভারতের প্রতি তাঁর ‘অটল অঙ্গীকারের’ জন্য ধন্যবাদ জানান।

পুতিন মোদিকে বলেন, ‘রাশিয়া ভারতের জ্বালানি খাত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় তেল, গ্যাস, কয়লা এবং সব ধরনের সম্পদের নির্ভরযোগ্য জোগানদাতা। দ্রুতবর্ধনশীল ভারতীয় অর্থনীতির জন্য আমরা অবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।’ শুক্রবার রাতে পুতিন ভারতের সফর শেষ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানের চাটুকারিতায় নষ্ট যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক: সাবেক পেন্টাগন কর্মকর্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি

সাবেক পেন্টাগন কর্মকর্তা মাইকেল রুবিন দাবি করেছেন, পাকিস্তানের ‘চাটুকারিতা’ ও ‘ঘুষে’ যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘চরম অযোগ্যতার’ কারণেই ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে।

সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুবিন জানান, ট্রাম্পের আচরণে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা ‘হতবাক’। কারণ তাঁর নীতির ফলে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্ক উল্টো দিকে ঘুরে গেছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এর পেছনে কী ‘পাকিস্তানের চাটুকারিতা, নাকি ঘুষ’ কাজ করেছে?

রুবিন বলেন, ‘আমাদের অনেকেই এখনো বুঝে উঠতে পারছি না, কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ককে নষ্ট করে দিলেন। অনেকেই প্রশ্ন করেন, তিনি আসলে কিসে প্ররোচিত হলেন। হয়তো পাকিস্তানের তোষামোদ। অথবা পাকিস্তান বা তাদের পৃষ্ঠপোষক তুরস্ক ও কাতারের ঘুষ ট্রাম্পকে প্রভাবিত করেছে... কিন্তু এটি এমনই এক ভয়াবহ ঘুষ, যার বোঝা আমেরিকাকে দশকের পর দশক কৌশলগত ঘাটতির মুখে ফেলবে।’

রুবিন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে রুশ তেল কেনা নিয়ে ‘শিক্ষা দেওয়ার’ চেষ্টা করছে। অথচ ওয়াশিংটন নিজেই মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্য করছে—এটা ‘ভন্ডামি’। তিনি জানান, ভারতের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নয়াদিল্লির অবস্থান যৌক্তিক।

রুবিন বলেন, ‘আমেরিকানরা কী বোঝেন না, যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভারতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্যই তাঁরা নির্বাচিত করেছেন। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। খুব শিগগিরই ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাশিয়া ছাড়া আমাদের বিকল্প বাজার নেই। তাই যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া থেকে জিনিসপত্র কিনতে বাধ্য। এই অবস্থায় ভারতকে রুশ পণ্য কিনতে বাধা দেওয়া এক ধরনের ভন্ডামি।’

তিনি বলেন, ‘ভারতকে উপদেশ দেওয়ার বদলে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত কম দামে জ্বালানি সরবরাহ করা। যদি আমরা তা দিতে না পারি, তবে সবচেয়ে ভালো চুপ থাকা। কারণ ভারতকে সবার আগে তার নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হয়।’

উল্লেখ্য, ট্রাম্প চলতি বছরের আগস্টে ভারতের বেশির ভাগ পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল, নয়াদিল্লির রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখা।’

এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৪ ডিসেম্বর ভারত পৌঁছান ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এই শীর্ষ বৈঠকে জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী মোদি পুতিনকে ভারতের প্রতি তাঁর ‘অটল অঙ্গীকারের’ জন্য ধন্যবাদ জানান।

পুতিন মোদিকে বলেন, ‘রাশিয়া ভারতের জ্বালানি খাত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় তেল, গ্যাস, কয়লা এবং সব ধরনের সম্পদের নির্ভরযোগ্য জোগানদাতা। দ্রুতবর্ধনশীল ভারতীয় অর্থনীতির জন্য আমরা অবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।’ শুক্রবার রাতে পুতিন ভারতের সফর শেষ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ১৯
শেখ মুজিবুর রহমান ও ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত
শেখ মুজিবুর রহমান ও ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত

কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ আখ্যা দিয়েছেন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী। গতকাল শুক্রবার রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এক উত্তপ্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি ইমরান খানের ‘সশস্ত্র বাহিনীবিরোধী প্রচার’ নিয়ে কঠোর বক্তব্য দেন। অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘গাদ্দার’ বলেন এই পাক সেনা কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল চৌধুরী দাবি করেন, ‘ইমরান খান সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রচার চালাচ্ছেন, বিদেশি শক্তির সঙ্গে সমন্বয় করছেন এবং নানা ভুল তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছেন।’ তাঁর ভাষ্য, পাকিস্তানের ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতেই’ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন তিনি। এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘রাষ্ট্রের ওপরে কেউ নয়।’

ইমরান খানের নাম উল্লেখ না করে আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, একজন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব—যাঁর নাম না নিলেও সবার জানা—নিজের অহংকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে তিনি মনে করেন, ‘আমিই কিছু।’ এই বিভ্রান্তিকর মানসিকতার কারণেই তাঁর বয়ান ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিতে’ পরিণত হয়েছে।

জেনারেল চৌধুরী অভিযোগ করেন, ইমরান খান আদিয়ালা কারাগারে বৈঠকের পরপরই বারবার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উত্তেজনাকর বার্তা পাঠান এবং এসব বার্তা পরে বিদেশি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সমন্বিত প্রচারাভিযান’ হিসেবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তিনি আরও দাবি করেন, ইমরান খান নিজের তত্ত্বাবধানে একটি ‘বৈজ্ঞানিক ও সমন্বিত ট্রোল নেটওয়ার্ক’ গড়ে তুলেছিলেন, যেটি নিয়মিতভাবে সেনাবাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু বানায়।

শেখ মুজিবুর রহমানকে জড়িয়ে বক্তব্য

সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল চৌধুরী বলেন, ইমরান খান নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বারবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নিজের তুলনা করেন এবং অতীতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘বিকৃত ব্যাখ্যা’ দেন।

আইএসপিআর ডিজি বলেন, ‘আপনাদের আরও একটা উদাহরণ দিই। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া টুইট দেখলে বুঝবেন, তিনি গাদ্দার শেখ মুজিব রহমানের কত ভক্ত, তাঁর কারণে কত দুঃখ তাঁর! বারবার তাঁকে কোট করে এবং তাঁর উদাহরণ দেয়। কারণ, তিনি মনে করেন, তিনিই সব বোঝেন, বাকিরা সব ভুল।’

আইএসপিআর মহাপরিচালক অভিযোগ করেন, ইমরান খানের প্রচারের সঙ্গে ভারত, আফগানিস্তান এবং বিদেশে থাকা ট্রোল নেটওয়ার্কগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, ‘একটি টুইটের পরপরই বিদেশি অ্যাকাউন্টগুলো যেভাবে ক্রমান্বয়ে সাড়া দেয়, তাতে বোঝা যায়—এটি সংগঠিত প্রচারণা।’ তাঁর দাবি, সাম্প্রতিক এক পোস্টে ইমরান খান তাঁর অনুসারীদের সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু বানাতে বলেছেন, যা সরাসরি নিরাপত্তার ওপর আঘাত।

জেনারেল চৌধুরী বলেন, ‘যে কেউ সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করবে, সেনাবাহিনীও তার জবাব দেবে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের বাহিনী নয়—এটি কেবল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে নরম হতে পারে না এবং ‘খারেজি’ জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার সুযোগ নেই। সাম্প্রতিক সময়ে ইমরান খানের পক্ষ থেকে ‘জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনার’ ইঙ্গিতকে তিনি ‘রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান’ বলে উল্লেখ করেন।

পরিশেষে পাকিস্তানের গণমাধ্যমকে ‘তথ্যভিত্তিক’ সংবাদ পরিবেশন এবং ‘মিথ্যা প্রচারে পা না দেওয়ার’ আহ্বান জানিয়ে জেনারেল চৌধুরী বলেন, দেশের পানি ব্যবস্থাপনা, খাদ্যনিরাপত্তা, জনসংখ্যা সংকট—এসব প্রকৃত সমস্যা নিয়ে বেশি আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব ঠেকাতে ট্রাম্পের পদক্ষেপ বৈধ কি না, সিদ্ধান্ত দেবেন সুপ্রিম কোর্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে,ন দেশটিতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব সীমিত করার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশনা বৈধ কি না, তা তাঁরা পর্যালোচনা করবেন। অভিবাসন সীমিত করার তাঁর উদ্যোগের একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ এটি, যা কার্যকর হলে ঊনবিংশ শতাব্দীর সংবিধান সংশোধনী এত দিন যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সে ধারণাই পাল্টে যাবে।

এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, বিচার মন্ত্রণালয়ের করা আপিল গতকাল গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। ওই আপিলটি নিম্ন আদালতের এক রায়ের বিরুদ্ধে—যে রায়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ স্থগিত করা হয়েছিল। সেই আদেশে মার্কিন সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যদি কোনো শিশুর মা-বাবা কেউই মার্কিন নাগরিক না হন বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা (গ্রিন কার্ডধারী) না হন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মানো সেই শিশুকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না দিতে।

নিম্ন আদালত রায় দিয়েছিলেন, ট্রাম্পের এই নীতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার নিশ্চিত করা ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন।

সুপ্রিম কোর্ট চলতি মেয়াদেই যুক্তিতর্ক শুনবেন এবং আগামী জুনের শেষ নাগাদ রায় দিতে পারেন। যুক্তিতর্কের জন্য এখনো কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন অর্থাৎ ২০ জানুয়ারি এই আদেশে স্বাক্ষর করেন। বৈধ ও অবৈধ—দুই ধরনের অভিবাসন দমনে তিনি যে উদ্যোগগুলো নিয়েছেন, তার অংশই ছিল এটি।

অভিবাসন নিয়ে তাঁর অবস্থান দুই মেয়াদেই মার্কিন রাজনীতির সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলোর একটি; যেখানে সমালোচকেরা তাঁকে বর্ণ ও ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যের অভিযোগ এনে সমালোচনা করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীকে দেশটিতে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়ে আসছে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দিচ্ছে, এই সংশোধনী অবৈধ অভিবাসীদের সন্তান বা দেশে বৈধভাবে থাকলেও অস্থায়ীভাবে থাকা ব্যক্তি, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বা কর্মভিসাধারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন বলেন, এই মামলার পরিণতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নিরাপত্তা এবং নাগরিকত্বের পবিত্রতা—দুইয়ের ওপরই গভীর প্রভাব ফেলবে। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বিষয়ে আমেরিকান জনগণের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে ট্রাম্প প্রশাসন প্রস্তুত।

অন্যদিকে মামলার বাদীদের পক্ষে লড়াইরত আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (এসিএলইউ) জাতীয় আইনি পরিচালক সিসিলিয়া ওয়াং বলেন, ‘সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে নাগরিকত্বের মৌলিক নিশ্চয়তা কোনো প্রেসিডেন্ট বদলে দিতে পারেন না। চলতি মেয়াদেই সুপ্রিম কোর্টে এই বিতর্কের স্থায়ী নিষ্পত্তি হবে বলে আমরা আশা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত