Ajker Patrika

সীমাবদ্ধতার মাঝেও সাফল্যের গল্প

সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট) 
১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মোংলা ইপিজেডে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মোংলা ইপিজেডে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের। ছবি: আজকের পত্রিকা

গ্যাস-সংযোগ নেই, বিমানবন্দর নেই; রয়েছে নাব্যতাসংকট, নাগরিক সুবিধাও সীমিত—এত সব প্রতিকূলতার মধ্যেও গত এক দশকে ৪ গুণ রপ্তানি এবং প্রায় ১২ গুণ বিনিয়োগ বৃদ্ধির সাফল্য দেখিয়েছে মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)। এ সময় প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিল্প ও অর্থনীতিতে মোংলা ইপিজেড হয়ে উঠেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

বন্দরের পাশে গড়ে ওঠা শিল্পাঞ্চল

মোংলা ইপিজেড সূত্র জানায়, মোংলা বন্দরের সুবিধা কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে ১৯৯৮ সালে বন্দরের মাত্র ২৭০ মিটার দূরে ৩০২.৯৭ একর জমির ওপর ইপিজেডটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে প্রায় ২ হাজার বর্গমিটার আয়তনের ২৭৮টি শিল্প প্লট রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২৭৫টি প্লট এরই মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে ৩৬টি কারখানা উৎপাদনে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ২৩টি বিদেশি মালিকানাধীন, দুটি যৌথ উদ্যোগ এবং ১১টি দেশীয় প্রতিষ্ঠান। আরও ১১টি কারখানা চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে উল্লম্ফন

২০০১ সালে একটি কৃষি প্রক্রিয়াকরণ কারখানার মাধ্যমে মোংলা ইপিজেডের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম বছরে যেখানে মাত্র ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছিল, বর্তমানে সেখানে নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ কাজ করছেন।

২০১৫ সাল পর্যন্ত মোংলা ইপিজেডে মোট বিনিয়োগ ছিল ২৬৫ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সেই বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭ কোটি টাকায়। অর্থাৎ ১০ বছরে বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ১২ গুণ। একই সময়ে রপ্তানি আয় বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা, যা এক দশক আগে ছিল ৪ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ বছরে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ।

বহুমুখী শিল্পে কর্মসংস্থান

বর্তমানে মোংলা ইপিজেডে তৈরি পোশাক, টাওয়েল, লাগেজ ও ট্রাভেল ব্যাগ, স্টিল টিউব, কার সিট হিটিং প্যাড, রাবার পণ্য, পরচুলা, পাটজাত পণ্য, পলি ব্যাগ এবং অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্প গড়ে উঠেছে। এসব পণ্য ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ডস, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন উপব্যবস্থাপক মাকরুজ্জামান বলেন, মোংলা ইপিজেড প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্যই ছিল বন্দরের কার্যক্রম বাড়ানো। কাঁচামাল আমদানি এবং উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির ফলে মোংলা বন্দরের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

গ্যাস, বিমানবন্দর ও নিরাপত্তা সংকট

সম্ভাবনার পাশাপাশি রয়েছে বড় কিছু চ্যালেঞ্জ। গ্যাস-সংযোগ না থাকা, নাব্যতাসংকট, বিমানবন্দরের অভাব, সুন্দরবনের নিকটবর্তী অবস্থান এবং লবণাক্ত এলাকার কারণে শিল্প পরিচালনায় ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

ভারতীয় মালিকানাধীন ভিআইপি লাগেজ বিডি প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, মোংলায় বিমানবন্দর না থাকায় বিদেশি ক্রেতাদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়; পাশাপাশি ইপিজেড ও বন্দর এলাকায় আলাদা থানা না থাকায় নিরাপত্তাঝুঁকিও রয়েছে।

পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জিনলাইট বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) হৃদয় হোসাইন বলেন, গ্যাস ছাড়া শিল্প উৎপাদন দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই করা কঠিন। ২০০৭ সালে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এ ছাড়া আমরা মোংলা বন্দরের সুবিধাও পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। বন্দরে নাব্যতাসংকটের কারণে কনটেইনার জাহাজ আগমনের সংখ্যাও চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় অনেক কম। কনটেইনারপ্রতি খরচও বেশি।

সম্ভাবনার অপেক্ষায়

মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক কালাম মো. আবুল বাসার বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, আদমজী ও কর্ণফুলী ইপিজেডে বর্তমানে কোনো প্লট খালি না থাকায় সাম্প্রতিককালে মোংলায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। গ্যাস-সংযোগ, বন্দর উন্নয়ন, বিমানবন্দর এবং নিরাপত্তা অবকাঠামো উন্নত করা গেলে মোংলা ইপিজেড দেশের রপ্তানি ও কর্মসংস্থানে আরও বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।

মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, আগে মোংলা এলাকার অর্থনীতি ছিল কৃষি ও চিংড়িনির্ভর। এখন শ্রমিকেরা টয়োটা গাড়ির হিটিং প্যাড, ভিআইপি লাগেজ ব্যাগ, টাওয়েল, ফ্যাশন উইগ, পাটজাত পণ্য, অ্যাগ্রো প্রসেসিং পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত আছেন। এসব পণ্য ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ডস, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ওয়ালটন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলাম। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ওয়ালটন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলাম। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশের ইলেকট্রনিকস পণ্য উৎপাদন শিল্পের পথিকৃৎ ও ওয়ালটন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলামের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনায় গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ওয়ালটনের হেডকোয়ার্টার্স, করপোরেট অফিসসহ দেশব্যাপী ওয়ালটনের সার্ভিস সেন্টার, প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুমগুলোতে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

মহৎপ্রাণ ব্যক্তি নজরুল ইসলাম ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাতে না-ফেরার দেশে চলে যান। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। সে সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। পরদিন ১৮ ডিসেম্বর তাঁর নিজ গ্রাম গোসাই জোয়াইরে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।

কর্মজীবনে সফল ব্যক্তিত্ব আলহাজ এস এম নজরুল ইসলাম ৭ মে, ১৯২৪ সালে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গোসাই জোয়াইর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম এস এম আতাহার আলী তালুকদার এবং মায়ের নাম মোসাম্মৎ শামছুন নাহার।

প্রথমে বাবা এস এম আতাহার আলী তালুকদারের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত হলেও স্বাধীনতার পর আলাদাভাবে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ব্যবসা শুরুর প্রাথমিক অবস্থায় তিনি নানাবিধ প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। কিন্তু তাঁর সততা ও কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে সব প্রতিকূলতা সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করেন।

দেশের মানুষের কাছে সাশ্রয়ীমূল্যে ইলেকট্রনিকস পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন রেজভী অ্যান্ড ব্রাদার্স, সংক্ষেপে আরবি গ্রুপ। রেজভী তাঁর বড় ছেলে। পাঁচ ছেলে আর দুই মেয়ের পিতা তিনি।

নজরুল ইসলাম তাঁর ছেলেদের নিয়ে বৈঠক করে ব্র্যান্ডের নাম ঠিক করলেন ওয়ালটন। পারিবারিক বৈঠকে আরেকটি নাম ঠিক হয় মার্সেল। তবে প্রথমে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের নামেই যাত্রা শুরু। আরবি গ্রুপ নাম বদলে হয়ে গেল ওয়ালটন গ্রুপ। যাতে বিশাল ভূমিকা রাখেন তাঁর মেধাবী সন্তানেরা। আগে যেখানে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ কথাটাকে অবহেলার চোখে দেখা হতো, একসময় সেটিই হয়ে ওঠে সম্মানের এক স্লোগান।

একসময় দেশে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয় ওয়ালটন পণ্যের। এই ব্র্যান্ডের পণ্যের উচ্চমান গ্রাহকদের আশাবাদী করে তোলে। এরপর শুরু হয় একই গ্রুপের আরেক ব্র্যান্ড মার্সেলের পথচলা। নজরুল ইসলামের দূরদর্শিতা ও সুযোগ্য পরিচালনায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা ওয়ালটন পণ্যের সুনাম ও খ্যাতি আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

২০০৬ সালে গাজীপুরের চন্দ্রায় জায়গা কিনে ওয়ালটনের নিজস্ব কারখানা নির্মাণের কাজে হাত দেওয়ার পর প্রথমে কিছু বাধার সম্মুখীন হতে হয়। তবে সেসব বাধা পেরিয়ে নিজেদের অর্থেই কারখানা নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়। ২০০৮ সালে নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত হয় ওয়ালটন ফ্রিজ। সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের পণ্য এবং সেবা দিয়ে জয় করে নেন গ্রাহকের আস্থা।

পর্যায়ক্রমে শুরু হয় টেলিভিশন, এয়ারকন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েব ওভেন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, কম্প্রেসার, লিফট, ফ্যান, সুইচ-সকেট, কেব্‌লসসহ শতাধিক ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স সামগ্রীর উৎপাদন। বর্তমানে ফিনিশড গুডসের পাশাপাশি ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পোনেন্টস ও ম্যাটেরিয়ালস উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ওয়ালটন।

ওয়ালটন শুধু দেশেই বাজারজাত করে সীমাবদ্ধ থাকেনি। প্রথমে মধ্যপ্রাচ্য দিয়ে রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়ে বর্তমানে ৫০টিরও বেশি দেশে যাচ্ছে ওয়ালটন পণ্য। মেড ইন বাংলাদেশ লেখাটি এখন বিশ্বের মানুষের কাছে সম্মান আদায় করে নিতে সক্ষম হচ্ছে।

এরপর ‘সময় এখন বাংলাদেশের’ স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম মোবাইল ফোনের কারখানা। পরবর্তী সময়ে ল্যাপটপও উৎপাদন শুরু করে ওয়ালটন। এর মধ্য দিয়ে ওয়ালটন কারখানা কমপ্লেক্স হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তি পণ্যের উৎপাদন ও গবেষণাগার। প্রায় ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তৈরি হচ্ছে দক্ষ জনশক্তি।

ব্যবসায়িক সাফল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আলহাজ এস এম নজরুল ইসলাম বিভিন্ন আর্থসামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, টাঙ্গাইল জেলা সার ডিলার সমিতির সভাপতি, টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের পরিচালক এবং টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় জমি বন্ধকি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

নজরুল ইসলাম তাঁর গ্রামে এস এম নজরুল ইসলাম কারিগরি বিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ছাড়া, মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এতিমখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত সাহায্য-সহযোগিতা দিতেন। তিনি গ্রামের দুস্থ, বৃদ্ধ ও মহিলাদের জন্য বয়স্কভাতা প্রকল্প চালু করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রেমিট্যান্স সংগ্রহে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন জনতা ব্যাংকের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের কাছ থেকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের কাছ থেকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

২০২৪-২৫ অর্থবছরে তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আনয়নকারী ব্যাংকের কৃতিত্ব অর্জন করেছে জনতা ব্যাংক পিএলসি। ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের কাছ থেকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান।

এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের কাছ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের কাছ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৬ অর্জন করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ করে এ পুরস্কার অর্জন করে ব্যাংকটি।

ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের কাছ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন।

এ সময় ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মোতাহার হোসাইন মোল্লা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০ কোটি টাকার বেশি সব ঋণ ফের যাচাই করা হবে: গভর্নর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৭
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের সংকট কাটাতে এবং ভেঙে পড়া শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আরও কঠোর ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতের বড় অনিয়ম ধরতে ২০ কোটি টাকার বেশি অঙ্কের সব ঋণ নতুন করে যাচাই করা হবে। পাশাপাশি ধুঁকতে থাকা ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবসায়ন এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে সব ধরনের আইনি জটিলতা দূর করা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ব্যাংকিং খাত সংস্কার: চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গভর্নর জানান, ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ফেরাতে বড় অঙ্কের ঋণগুলোর ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০ কোটি টাকার বেশি সব ঋণ নতুন করে যাচাই করা হবে। এসব ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি জামানত ঠিক না থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যাংক পরিচালকদের কঠোর জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।

সেমিনারে গভর্নর জানান, পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার পাশাপাশি ৯টি অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) অবসায়ন করা হচ্ছে। তবে আমানতকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের সব সাধারণ আমানতকারী তাঁদের জমানো পুরো টাকা ফেরত পাবেন। প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীরা তাঁদের অর্থের একটি অংশ ফেরত পাবেন। এ লক্ষ্যে পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা ফেরতের সুবিধার্থে ইতিমধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

ড. মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে নতুন আইনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও একজন ভালো নেতা দরকার। এই সরকার যদি প্রস্তাবিত আইনটি পাস করে দেয়, তবে ব্যাংকিং খাতে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। তিনি আরও যোগ করেন, মন্ত্রীর কথায় যেন গভর্নরকে বরখাস্ত না করা যায়, এমন আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

সেমিনারে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আসন্ন নির্বাচন একটি সন্ধিক্ষণ। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করার সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাজনৈতিক নেতারা কি আগের মতো ক্ষমতাশালী পুঁজিপতিদের হাতে ব্যাংক ছেড়ে দেবেন, না জনগণের কল্যাণে ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পুঁজিতে এই খাত ব্যবহার করবেন?

সেমিনারে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের মাধ্যমে মূলত ব্যাংক খাত ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং খেলাপি ঋণ ৩৬ শতাংশে পৌঁছায়। এখন যে সংস্কার হচ্ছে, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার তা কতটা এগিয়ে নেবে—সেটিই বড় চ্যালেঞ্জ।

বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের প্রকৃত হার ৩৬ শতাংশ বলে স্বীকার করেন ড. মনসুর। এ সংকট কাটাতে তিনি বড় ঋণের জন্য ব্যাংকগুলোর ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বন্ড মার্কেটের বিকাশের ওপর জোর দেন। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মানের আর্থিক খাত গড়তে অন্তত ১০ বছর সময় লাগতে পারে, তবে সঠিক পথে হাঁটা শুরু হয়েছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত