চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের সাগর উপকূলে সিত্রাংয়ের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসে শতাধিক মহিষ। উপজেলার সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারি, কুমিরা ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের সাগর উপকূলীয় এলাকায় এসব মহিষ ভেসে আসে। এর মধ্যে কুমিরা আলোকদিয়া এলাকায় সেগুলো উদ্ধারের পর দখল স্থানীয়দের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ এসে মহিষগুলো হেফাজতে নিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের সাগর উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারে ভেসে আসা মহিষগুলো জাহাজভাঙা কারখানার কর্মচারী ও স্থানীয় কয়েকজন উদ্ধার করেন। দখল নিয়ে গণ্ডগোলের পর মহিষগুলো সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ।
ধারণা করা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে চর এলাকা অথবা উপকূলীয় কোনো খামার থেকে মহিষগুলো জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছে। একইভাবে বিকেলে উপজেলার ভাটিয়ারি ও বাঁশবাড়িয়া আকিলপুর সাগর উপকূলে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা বেশ কিছু মহিষ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ সময় তাঁরা বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে জানিয়ে তাঁদের জিম্মায় দিয়ে দেন।
সীতাকুণ্ডের কুমিরা মাদার স্টিল শিপইয়ার্ড নামের জাহাজভাঙা কারখানার মালিক মাস্টার আবুল কাসেম জানান, জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা বেশ কিছু মহিষ উদ্ধার করে প্রথমে নিজেদের জিম্মায় রাখা হয়। পাশাপাশি উপকূলীয় স্থানীয় লোকজনও বেশ কিছু মহিষ উদ্ধার করেছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পাশাপাশি তাঁরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকেও জানিয়েছেন।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জাহাজভাঙা কারখানা মালিক ও স্থানীয় লোকজন উপকূলে ভেসে আসা শতাধিক মহিষ উদ্ধার করেছে বলে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জানতে পেরেছি। মহিষগুলো নিরাপদে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপযুক্ত প্রমাণসহ যদি উদ্ধার করা মহিষগুলোর দাবিতে কোনো মালিক আমাদের কাছে আসেন। তবে তা সঠিকভাবে যাচাইয়ের পর সত্যতা পেলে তাদের কাছে মহিষগুলো হস্তান্তর করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীতে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা শতাধিক মহিষ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মহিষের আসল মালিক না আসা পর্যন্ত মহিষগুলো নিজেদের জিম্মায় নিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করা হয়েছে। মহিষ নিয়ে কুমিরায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে মারামারি বিষয়টি শুনেছি। এ চারটি স্থান ছাড়া সীতাকুণ্ডের উপকূলীয় এলাকার আরও বিভিন্ন স্থানে মহিষ ভেসে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে থানা-পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে।’