চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন হল ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা। সেই সঙ্গে রোববার প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা দেওয়ার পাশাপাশি উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগও দেন তাঁরা।
ভিপি, জিএস, এজিএস স্বাক্ষরিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিগত ১০ মাসে প্রাধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান কোনো সমস্যার সমাধান করেননি। তিনি এই আবাসিক হলে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতির মহোৎসব চালিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই সহ্য করতে পারছেন না।
অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নানা প্রশাসনিক সুবিধা গ্রহণ করলেও, হলে শিক্ষার্থীদের দুর্দশা লাঘবে কোনো পদক্ষেপ নেননি। তিনি চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকা কিংবা অন্য কোনো জেলায় গিয়ে দিনের পর দিন থাকলেও হলের নিয়মিত দায়িত্ব পালনের জন্য কাউকে চিঠি দিয়ে দায়িত্ব দেন না। এ কারণে হলের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
আরও উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি তিনি টানা চার দিন চট্টগ্রামের বাইরে থাকলেও কোনো চিঠি দিয়ে হল অফিসে অবহিত করে যাননি। গত ১০ মাস তিনি অনুপস্থিত থাকাকালে কোনো চিঠি দিয়ে যাননি। ফলে এটি প্রশাসনিক অনিয়ম, অসদাচরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভিস রুল অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই তদন্তের মাধ্যমে প্রাধ্যক্ষ এবং জড়িত স্টাফদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, হলের বেশির ভাগ কক্ষের ভাঙা দরজা ও জানালা মেরামত, হলে অবস্থিত দ্বিতীয় ডাইনিং চালু, সাইকেল স্ট্যান্ড স্থাপন, পরিষ্কার পানি সরবরাহের পাম্প স্থাপনসহ হলের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কোনো কাজই হল প্রভোস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত ১০ মাসে তা করেননি। তাঁকে বারবার অনুরোধ জানালেও তিনি কখনোই কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এ বিষয়ে হল সংসদের জিএস আবিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রভোস্টের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। উপাচার্য না থাকায় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) শামীম স্যার বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।’
জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ জানানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। অতিরিক্ত হিসেবে প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করতে হয়। ক্লাস, পরীক্ষাসহ অন্য কাজ থাকে। ছাত্রদের হয়তো ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি বাইরে আছি, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে কথা বলব।’