ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতারণা মামলায় বনানী থানার বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দাশের আদালত আজ বৃহস্পতিবার এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘ তদন্তের পর তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করলে আদালত তা গ্রহণ করে ই-অরেঞ্জের মূল মালিক সোনিয়া মেহজাবিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া আসামিরা হলেন ই-অরেঞ্জ মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা এবং প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা আমানুল্লাহ, বীথি আক্তার, জায়েদুল ফিরোজ ও নাজমুল হাসান রাসেল।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রামে মামলা করেন রিয়াজুদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী নুরুল আবসার পারভেজ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বিভিন্ন সময় পণ্য কেনার জন্য ই-অরেঞ্জকে অর্থ দেন বাদী। নির্দিষ্ট সময়ের পরও তাঁকে কোনো পণ্য সরবরাহ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। অর্ডার নেওয়ার পর থেকে ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে নোটিশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহের আশ্বাস দেয়। কিন্তু তারা পণ্য সরবরাহ না করে দেশের প্রায় ১ লাখ গ্রাহকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এর মধ্যে বাদীসহ তিনজনের ১১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা রয়েছে।
ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে থানায় মামলা হতে থাকলে তিনি দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান। পরবর্তী সময়ে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা অনুপ্রবেশের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে তাঁকে আটক করেন। অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতের আদালতে তাঁর তিন বছরের জেল হয়। পরে ৫ সেপ্টেম্বর সোহেলকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ।
ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২৮টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। একটি মানি লন্ডারিং, দুটি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে এবং বাকিগুলো প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে।