রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার নতুন বাজারসংলগ্ন আনন্দ মেলার মাঠে বসেছে কোরবানির পশুর হাট। বুধবার (৪ জুন) সকাল ১০টার দিকে হাটে দেখা যায় গরু বিক্রেতারা গরু নিয়ে বসেছেন, আর ক্রেতারা ধীরে ধীরে আসতে শুরু করেছেন। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা পাহাড়ি গরুর।
প্রতি বছর কোরবানির মৌসুমে পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাহাড়ি গরু আসে এই হাটে। বিক্রেতারা জানান, পাহাড়ি গরু স্বাভাবিকভাবে লতা-পাতা, ঘাস ইত্যাদি খেয়ে বড় হয়। ফলে এসব গরুতে চর্বি কম, ইনজেকশন বা কৃত্রিম মোটাতাজাকরণের প্রভাবও থাকে না।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে গরু কিনতে আসা আবু বক্কর, মো. সেলিম ও রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘পাহাড়ি গরুর মাংস সুস্বাদু, চর্বি কম। তাই আমরা প্রতি বছর এখান থেকে গরু কিনে থাকি।’
স্থানীয় কয়েকজন ক্রেতা জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে হাটে আসতে পারেননি। বুধবার সকালে এসে তুলনামূলক কম দামে গরু কিনেছেন। চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের আবু কাওসার জানান, ‘৭০ হাজার টাকায় যে গরুটা কিনেছি, সেটা বাইরে কিনতে হলে লাখ টাকা দিতে হতো।’
গরু ব্যবসায়ী রফিক, জহির, কুদ্দুস ও কালাম বলেন, ‘এ বছর গরু কিছুটা কম। পাহাড়ি সম্প্রদায়ের লোকজন এখন পশু পালনে আগ্রহ হারাচ্ছে। তারা ফল চাষে ঝুঁকছে—ফলে গরুর সরবরাহ কমে গেছে। তবে দাম এখনো নাগালের মধ্যে আছে।’
নতুন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘এটাই কাপ্তাইয়ের একমাত্র কোরবানির হাট। পাহাড়ি গরুর কারণে এখানকার আলাদা একটা চাহিদা আছে। দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় আশপাশের উপজেলার মানুষও এখানে আসে।’
কাপ্তাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. এনামুল হক হাজারী জানান, ‘প্রাণিসম্পদ বিভাগের একটি তিন সদস্যের টিম হাটে সক্রিয় রয়েছে। কোনো পশু অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, কাপ্তাই উপজেলার এই হাটে প্রতি বছরই কোরবানির আগে গরু কেনাবেচা হয়। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে গরুগুলো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে কাপ্তাই লেকে এনে বিক্রি করা হয়। এখান থেকে মিনি ট্রাকযোগে রাঙ্গুনিয়া, রাউজানসহ আশপাশের উপজেলায়ও গরু সরবরাহ হয়।