চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মোবারক হোসেনকে (৬০) হত্যা মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ রোববার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক এই রায় দেন। একই সঙ্গে আদালত তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা (২৫) ও মিলন হোসেন (২৩), বিলকিস বেগম (৪০), তার ছেলে রিপন হোসেন (২৪) ও সাদ্দাম হোসেন (২৭)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামি বিলকিস বেগম ঘরে বাইরের লোকজনের সঙ্গে অনৈতিক কাজ করেন। এ বিষয়ে বাড়ির লোকজন ও স্বজনরা তাকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন। কিন্তু তিনি কারও নিষেধ মানতেন না। ২০১৩ সালের ৮ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে অনৈতিক কাজের জন্য নিষেধ করে একই বাড়ির মোবারক হোসেন।
কেন তাকে নিষেধ করা হলো এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত আসামিরা মোবারকে হোসেন ও তার স্ত্রী নিলুফা বেগমকে মারধর ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে জখম করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে মোবারক হোসেনের অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুর পরদিনে ৪ এপ্রিল মোবারক হোসেনের ছেলে মো. জিল্লুর রহমান বাদী হয়ে উল্লেখিত আসামিদের বিবাদী করে ফরিদগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক মো. আখতার হোসেন। তিনি মামলার দায়িত্ব পেয়ে ৫ এপ্রিল আসামি বিলকিস বেগমকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ওই বছর ৩০ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রনজিত রায় চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলাটি ১০ বছরের অধিক সময় চলাকালীন আদালত ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। সাক্ষ্য গ্রহণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা এবং আসামিরা তাদের অপরাধ শিকার করায় বিচারক এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামি বিলকিস, সাদ্দাম ও মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন এবং আসামি মিলন ও রিপন হোসেন পলাতক।’ আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ।