ইতিহাসের না আবার পুনরাবৃত্তি ঘটে! কাল শুরুতে গোল দেওয়ার পর ইংল্যান্ড দলের কি এমন আশঙ্কা কাজ করছিল? শঙ্কাটা অস্বাভাবিক নয়। ইউরোতে শুরুতে গোল দেওয়ার পর এর আগেও ইংল্যান্ড পাঁচ-পাঁচবার হেরেছে। কিন্তু এবার পুরোনো রেকর্ডকে ভুল প্রমাণ করল ইংল্যান্ড। হ্যারি কেনের ঝলকানিতে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে সেমিফাইনালে ইংলিশরা। ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ এখন ডেনমার্ক।
১৯৯২-২০০৪ টানা চারটি ইউরো এবং সর্বশেষ ২০১৬ ইউরো; প্রতিবার একই ছবি। প্রথম ৫ মিনিটে গোল দিলেই হেরে যায় ইংল্যান্ড! ১৯৯২ ইউরোতে সুইডেনের বিপক্ষে প্রথম ৫ মিনিটেই গোল পেয়েও ম্যাচে হার ২-১ ব্যবধানে। ১৯৯৬ সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষেও শুরুর ৫ মিনিটেই গোল পেয়েছিল ইংলিশরা। তবু শেষমেশ টাইব্রেকে জার্মানদের কাছে হার! ২০০০ ইউরোর গ্রুপ পর্বে পর্তুগালের জালেও ইংল্যান্ড বল জড়িয়েছিল শুরুর ৫ মিনিটেই। লাভ হয়নি, শেষ পর্যন্ত হার ৩-২ গোলে। ২০০৪ ইউরোতে একই প্রতিপক্ষ পেয়েছিল তারা কোয়ার্টার ফাইনালে। সেই একই ছবি। শুরুতে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শুটআউটে পেরে ওঠেনি ইংল্যান্ড। আর গত ইউরোর শেষ ষোলোয় আইসল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ৫ মিনিটেই গোল দিয়েও শেষ পর্যন্ত ইংলিশদের হার ১-২ ব্যবধানে।
কাল ৪ মিনিটে রাহিম স্টার্লিংয়ের থ্রু বলের সহায়তায় হ্যারি কেনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ইউক্রেন পাল্টা-আক্রমণে গেলে ইংল্যান্ডকে হয়তো ‘পরিসংখ্যান জুজু’ চোখ রাঙাচ্ছিল! তবে প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে আরও বেশি আক্রমণাত্মক খেলে ইংল্যান্ড। ৫০ মিনিটে ইংলিশ অধিনায়ক কেন ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন। এই গোল করে কেন ইংল্যান্ডের হয়ে বড় টুর্নামেন্টে ৯ গোল করে অ্যালান শিয়ারারকে ছুঁয়েছেন। ইংলিশ অধিনায়কের সামনে এখন শুধুই কিংবদন্তি গ্যারি লিনেকার (১০)।
কাল ম্যাচ শেষে গ্যারেথ সাউথগেট ছিলেন অনেক উচ্ছ্বসিত। ইংল্যান্ড কোচ বলেছেন, ‘ছেলেরা দুর্দান্ত খেলেছে। কাল রাতে অনেক মানুষ খুশিতে বিয়ার খাচ্ছিলেন। দুর্দান্ত জয়ের পর এমন উদ্যাপনই তো করা উচিত। জার্মানি ও ইউক্রেনকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা দর্শকদের অনেক আনন্দ দিয়েছে। এখন ওয়েম্বলিতে সেমিফাইনালে আমাদের প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক।’
এখনই আত্মতুষ্টিতে ভুগতে না করছেন সাউথগেট। শিরোপায় চোখ করতে বলেছেন সাউথগেট, ‘খেলা এখনো শেষ হয়নি। আমরা আরও দুই পা এগোতে চাই।’
সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক শিয়ারারের অনুমান, এবার ইংলিশদের কিছু একটা হবে! বলেছেন, ‘এবার বিশেষ কিছু হচ্ছে। আমরা ধীরগতিতে টুর্নামেন্ট শুরু করেছি; কিন্তু প্রতি ম্যাচেই আমাদের উন্নতি হচ্ছে। মাথা শান্ত থাকতে বললেও হৃদয় তা মানছে না। শাবাশ গ্যারেথ ও ইংল্যান্ড! ইতিবাচক খেলাটা ধরে রেখো।’
শেষ ষোলোয় জার্মান জুজু কেটেছে, শেষ আটে কেটেছে পরিসংখ্যান জুজুও। এবার কি তবে ভিন্ন গল্প লিখতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড?