ছেলে স্টিফেন মারা যাওয়ার পর থেকেই নানান ব্যাধিতে ভুগছিলেন ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার। পারকিনসনস, ডিমেনশিয়াসহ হৃদ্যন্ত্রের জটিলতার সঙ্গে লড়াই করছিলেন জার্মান কিংবদন্তি। কিন্তু লড়াইটা আর চালিয়ে যেতে পারলেন না ‘কাইজার’ (সম্রাট) খ্যাত সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার।
গত পরশু ৭৮ বছর বয়সে পুত্রের সঙ্গী হয়েছেন বেকেনবাওয়ার। তাঁর মৃত্যুর তিন দিন আগে আরেক কিংবদন্তি না ফেরার দেশে গেছেন। তিনি হচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের নক্ষত্র মারিও জাগালো। একই মাসে মৃত্যুবরণের মতো দুই কিংবদন্তির আরেকটি জায়গায় মিল রয়েছে। যে তিনজন ফুটবলার খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন, সেই তালিকার প্রথম দুজন তাঁরা। তৃতীয় জন হচ্ছেন ফ্রান্স কিংবদন্তি দিদিয়ের দেশম।
আর অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন বেকেনবাওয়ার। এই তালিকায়ও তাঁর সঙ্গী দেশম। এমন এক কিংবদন্তিকে হারিয়ে শোকের ছায়ায় ডুবেছে ফুটবল বিশ্ব। দুবারের ব্যালন ডি অর বিজয়ীকে তাই শ্রদ্ধা জানাতে ভোলেনি জার্মানির চ্যান্সেলর থেকে শুরু করে ফিফা, উয়েফারা।
শোক প্রকাশ করার সময় বেকেনবাওয়ারকে নিয়ে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, ‘আমরা তাঁকে মিস করব। ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার জার্মানির সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার। জার্মান ফুটবল প্রজন্মকে উৎসাহীত করেছেন তিনি।’
১৯৯০ বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান অধিনায়ক ম্যাথিউস আরও বলেছেন, ‘তার মৃত্যু ফুটবল এবং জার্মানির জন্য বড় ক্ষতির। একজন খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবেই শুধু সেরা ছিলেন না, মাঠের বাইরেও ছিলেন দুর্দান্ত। যাঁরা তাঁকে চিনতেন, সবাই জানেন ফ্রাঞ্জ একজন মহান ও উদার ব্যক্তি ছিলেন। একজন ভালো বন্ধুকে হারিয়েছি আমরা।’
বেকেবাওয়ারের অধীনেই ১৯৯০ বিশ্বকাপ জেতা রুডি ফোলারও গুরুকে নিয়ে আবেগঘন কথা বলেছেন, ‘তিনি চিরকাল একজন উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব হিসেবে বেঁচে থাকবেন। জার্মান ফুটবল মহান ব্যক্তিত্বকে হারিয়েছে। আর আমি মহৎ বন্ধুকে হারিয়েছি।’
অন্যদিকে ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেছেন, ‘বেকেনবাওয়ার ছিলেন দুর্দান্ত এক মানুষ, ফুটবলের বন্ধু এবং সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন ও কিংবদন্তি। প্রিয় ফ্রাঞ্জ, আমরা তোমাকে কখনো ভুলব না।’