কয়েক দিন ধরে ঢাকা ও আশপাশের সিনেমা হলগুলোতে ঘুরছেন নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস। গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে অপু বিশ্বাস-বাপ্পি চৌধুরী অভিনীত তাঁর নতুন সিনেমা ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’। এ বছর হলে মুক্তি পাওয়া এটিই প্রথম সিনেমা। দেবাশীষ জানিয়েছেন, দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখছেন তিনি। অনেক হলে ঝুলেছে হাউসফুল নোটিশও। করোনার কারণে বাংলা সিনেমায় যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, সেটি নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন দেবাশীষ। কিন্তু ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ মুক্তির পর তাঁর সেই শঙ্কা তো কেটেছেই, উপরন্তু সিনেমা নিয়ে নতুন আশা দেখছেন তিনি।
দেবাশীষ বিশ্বাসের কাছে প্রশ্ন ছিল, নতুন সিনেমা মুক্তি দেওয়ার জন্য এই সময়টি কতটা উপযুক্ত? তিনি বলেন, ‘সিনেমার গল্পে যদি দম থাকে, যদি সেটিতে দর্শকদের ভালো লাগার মতো কিছু থাকে; তাহলে এই সময়ে সিনেমা মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। এই সিনেমা প্রমাণ করেছে দর্শকদের ভালো লাগলে তাঁরা নিশ্চয়ই হলে আসবেন।’
‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ হলে থাকতেই আজ মুক্তি পাচ্ছে শাপলা মিডিয়ার ‘মাফিয়া’। জাহিদ হাসান, আঁচল অভিনীত সিনেমাটি প্রথম সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে ২৪টি হলে। ছবির পরিচালক তৌহিদ হোসেন চৌধুরী মনে করেন, দীর্ঘ বিরতি শেষে দর্শক হলে ফিরতে উন্মুখ হয়ে আছেন। তাই ছবির সাফল্য নিয়ে তাঁর প্রত্যাশার কমতি নেই।
একই প্রতিষ্ঠান থেকে পরবর্তী সময়ে আসবে সৈকত নাসিরের ‘তালাশ’, মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘যাও পাখি বলো তারে’, অঞ্জন আইচের ‘আগামীকাল’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমা। ‘তালাশ’ সিনেমার নির্মাতা জানিয়েছেন, ১১ অথবা ১৮ মার্চ ছবিটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। এ ছাড়া অন্য সিনেমাও মার্চ ও এপ্রিল—এ দুই মাসে মুক্তির প্রস্তুতি চলছে।
প্রযোজক ও পরিবেশক জাহিদ হাসান অভি বলেন, ‘অনেক দিন নতুন সিনেমা মুক্তি না পাওয়ায় হলে দর্শকশূন্যতা তৈরি হয়েছে, এটা সত্যি। এই পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য পথ একটাই—বড় বাজেটের কয়েকটি সিনেমা পরপর মুক্তি দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে আগামী ঈদ একটি ভালো সময়। ওই সময় বড় তারকাদের সিনেমা মুক্তি পেলে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, সেটি কেটে যাবে।’
এম রাহিম পরিচালিত পুলিশি অ্যাকশন সিনেমা ‘শান’ মুক্তির কথা ছিল ৭ জানুয়ারি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে দেওয়া হয়। নতুন মুক্তির তারিখ জানতে চাইলে এম রাহিম বলেন, “এ বিষয়ে শিগ্গিরই আমরা মিটিংয়ে বসব। প্রযোজকের সঙ্গে আলাপ করে নতুন মুক্তির তারিখ জানিয়ে দেব। একটি ভালো সময়েই ‘শান’ হলে আসবে।”
সব মিলে স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে বাংলা সিনেমা। নির্মাতা, প্রযোজকসহ সংশ্লিষ্ট সবারই প্রত্যাশা, গত দুই বছরে পিছিয়ে পড়া বাংলা চলচ্চিত্রে এবার সুদিন ফিরবে।