হোম > অর্থনীতি

বাংলাদেশে তুলা রপ্তানিতে ধীরগতি, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে বেশ কয়েক দিন অস্থিতিশীল থাকার পর পুরোনো ক্রয়াদেশের পণ্য সরবরাহ করতে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও ফুটওয়্যার শিল্প আবারও পুরোদমে কাজে লেগে গেছে। শ্রমিকেরাও অতিরিক্ত কাজ করছেন। তার পরও বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে আপাতত ক্রয়াদেশ স্থগিত রেখেছেন সাময়িকভাবে। আর এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে ভারতেও। বাংলাদেশে দেশটির তুলা রপ্তানি কমে যেতে শুরু করেছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংবাদমাধ্যমটি ভারতীয় তৈরি পোশাক খাতের নির্বাহীদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশে তুলা রপ্তানি কমে যাওয়ার বিষয়ে চেন্নাইভিত্তিক ফরিদা গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিক আহমেদ বলেন, ‘পশ্চিমা কোম্পানি থেকে নতুন অর্ডার আসছে না। শ্রমিকেরা ও প্রশাসন বোঝে যে, উৎপাদন হলো লাইফলাইন এবং তারা অর্ডার সম্পূর্ণ করার জন্য ওভারটাইম কাজ করছে। অর্ডার পূরণের জন্য কিছু আইটেম ভারত থেকে নেওয়া হয়, এমনকি টেকনিশিয়ানও নেওয়া হয়।’ 

বাংলাদেশের ফুটওয়্যার শিল্পে বিনিয়োগ করা এই গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বেশির ভাগ উৎপাদন কার্যক্রম হয় ঢাকা ও চট্টগ্রামে, যা বিক্ষোভ থেকে তুলনামূলকভাবে বিচ্ছিন্ন ছিল। আগস্টের শুরুতে ব্যাঘাত ঘটেছিল, কিন্তু এখন স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হওয়ায় অনুকূল শুল্ক ব্যবস্থার কারণে পশ্চিমারা শিগগির আবার দেশটিতে ক্রয়াদেশ দেওয়া শুরু করবে।’

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিব চন্দ্রিমা চ্যাটার্জি বলেন, ‘পশ্চিমা কোম্পানিগুলো ভারতকে একটি বিকল্প হিসেবে দেখছে। কিন্তু সরবরাহ করার ক্ষমতার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। এই মুহূর্তে ভারতীয় ও বাংলাদেশি পণ্যের অফারগুলোর মধ্যে গুণগত ও পরিমাণগত পার্থক্য আছে।’ তিনি জানান, ভারতেও কিছু ক্রয়াদেশ যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে গার্মেন্টস ও ফুটওয়্যার শিল্পের জন্য কিছু কাঁচামাল রপ্তানি কমে যাওয়ায় পুরো বিষয়টির ওপর তাৎক্ষণিক প্রভাব নেতিবাচক হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় পোশাক খাতের এক নির্বাহী বলেন, বাংলাদেশে চলমান সংকটের আগে থেকেই পশ্চিমা কোম্পানিগুলো ভারতের দিকে নজর রেখেছিল। ইউরোপীয়রা বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যুতে ক্রমশ উদ্বিগ্ন, তাই ভারতের বাজারের দিকে তাকিয়ে আছে। 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অস্থিরতা কিছু সময় আগে শুরু হলেও ক্রয়াদেশ ভারতে সরানো হয়নি। সেগুলোর বেশির ভাগই যাচ্ছে কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায়। ভারতে অনেক সুযোগ আছে, কিন্তু আমাদের পণ্যের গুণগত অবস্থান বদলাচ্ছে না এবং এর ফলে আমরা সুবিধাও হাসিল করতে পারছি না।’ 

বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও পোশাকশিল্প দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি অর্জন করে এবং দেশের জিডিপিতে এর প্রভাব ১১ শতাংশ। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের তথ্যমতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর উচ্চতর ইনপুট খরচ, প্রতিকূল আবহাওয়াসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনের অবকাঠামো দুর্বল হওয়ার কারণে বাংলাদেশের ৪৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাকশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

আগস্টের শুরুতে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেছিলেন, প্রতিবেশী বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ঘটনাবলির কারণে ভারতীয় পোশাক খাত ‘একটু অনিশ্চয়তার’ মুখোমুখি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকার ‘পরে নয় বরং তাড়াতাড়ি’ বিষয়গুলো সমাধান করবে।

আরও খবর পড়ুন: 

তেল-পেঁয়াজে দাম বাড়তি, সবজিতে ফিরছে স্বস্তি

উত্তরা ব্যাংকের ২৫০তম শাখার উদ্বোধন

টানা চার মাস কমল রপ্তানি আয়

৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল সিগারেট কোম্পানি

১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা শুরু রোববার

প্রশান্ত মহাসাগরে দুই প্রকল্পের অনুমোদন দিল এডিবি-বিশ্বব্যাংক

এক ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৬ কোটি টাকা জরিমানা

১৪টি বন্ধ পাটকল বেসরকারি খাতে, আরও হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

মেট্রো রেলস্টেশনে ৯টি সুপারস্টোর চালু করবে এমজিআই

জনতা ব্যাংক পিএলসির ৮৬৬তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত