নওগাঁর ধামইরহাটে কয়েক সপ্তাহ ধরে অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোকসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
আজ শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই প্রচণ্ড রোদ ও মাত্রাতিরিক্ত ভ্যাপসা গরমে বিশেষ করে দিনমজুর, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চালক, রিকশাচালক, বৃদ্ধ ও শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। গরমে নাজেহাল হয়ে পড়েছে পশু-পাখিও। রাতের বেলায় কিছুটা গরম কমলেও দিনভর তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ।
বদলগাছি আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র উচ্চ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম জানান, আজ সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ধামইরহাটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ২৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই বলেও তিনি জানান, তবে আগামী রোববার আবহাওয়ার পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে উপজেলার প্রধান সড়কগুলোতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মানুষের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসা কর্মজীবী মানুষজন পড়েছে ভোগান্তিতে।
রোদ ও গরম উপেক্ষা করে কর্মস্থলে যাওয়া লোকদের চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। অন্যদিকে খোলা আকাশের নিচে কাজ করতে না পারায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দিনমজুর, ভ্যান ও রিকশাচালকেরা। বয়স্ক ও শিশুরা একপ্রকার ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন।
দিনমজুর মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘মাথার ওপর প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরমে কয়েক দিন ঠিকমতো কাজে যেতে পারিনি। আজ সকালে চাতালে ধান শুকাতে গিয়ে মনে হচ্ছিল দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ১০ মিনিট পরপর পানি খেয়েও তৃষ্ণা মেটে না।’
ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকচালক আব্দুর রহমান বলেন, ‘এই গরমে যাত্রী কমে গেছে। দিন এনে দিন খাই। এমন অবস্থা চলতে থাকলে কাজ হারাব, পরিবার না খেয়ে মরবে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আশীষ কুমার সরকার জানান, ঈদের পর অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার খাওয়া ও তাপপ্রবাহের কারণে কিছুটা ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। তবে বয়স্ক ও শিশুরা এখন পর্যন্ত বড় ধরনের ঝুঁকিতে নেই।
তিনি বলেন, গরমে তৈলাক্ত খাবার না খেয়ে শাকসবজি ও পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। ঘরের বাইরে না গিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।