আধুনিক যুগে হেলিকপ্টার বা গাড়িবহরের বদলে বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্য ধারণ করে এক ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন দেখল মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার উমেদপুর গ্রামের মানুষ।
পরিবারের দীর্ঘদিনের শখ ছিল ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে ছেলের বিয়ে হবে। সেই শখ পূরণ করতে গ্রাম্য মাতব্বর ও পরিবারের লোকজন মিলে শেষ পর্যন্ত ঘোড়ার গাড়িতে করেই বউ নিয়ে এলেন মাগুরার যুবক তপু শেখ (২১)।
বুধবার (০৮ অক্টোবর) উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামে এই ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে। বর তপু শেখ ওই গ্রামের সিয়ামত শেখের ছেলে। আর কনে একই উপজেলার মৌশা গ্রামের মনিরুল শেখের মেয়ে তৃন্নি খাতুন।
শুধু ঘোড়ার গাড়িই নয়, ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে বরযাত্রীদের পরিবহনে ছিল মোট ছয়টি গরুর গাড়ি এবং ২০টি মোটরসাইকেলের বিশাল বহর। মোট ৬০ জন বরযাত্রী এসেছিলেন এই ঐতিহ্যবাহী বহরে।
এমন বিয়ে দেখতে শত শত উৎসুক মানুষ ভিড় জমান বিয়েবাড়িতে। সড়কের ধারেও বিয়ে করতে যাওয়া-আসার সময় দাঁড়িয়ে থাকে উৎসুক জনতা।
বর তপু শেখ বলেন, ‘লোকজ ঐতিহ্য ও পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে করেছি। বিয়েতে মাইক্রোবাস না নিয়ে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহার অনেককেই মুগ্ধ করেছে।’ তিনি গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে যুবসমাজকে ঘোড়ার গাড়িতে বিয়ের আহ্বান জানান।
তপুর মা রাবেয়া বেগম জানান, তাঁদের পরিবারের একান্ত ইচ্ছা ছিল এমন একটি ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন করার। সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই তাঁরা এই বিশাল আয়োজন করেন।
নবদম্পতি তপু ও তৃন্নি এই আয়োজনে দারুণ খুশি। কনে তৃন্নি খাতুন বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ছিল পালকি অথবা ঘোড়ার গাড়ির মতো এমন একটি ঐতিহ্যবাহী বিয়ের। এই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমি আনন্দিত।’
কনের বাবা মনিরুল শেখ বলেন, ‘আমরা জানতাম না যে বরপক্ষ এমন ঐতিহ্যবাহী সাজে আসবে। বর খুব সুন্দর করে সাজানো একটি ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে এসেছে। ১ লাখ টাকা দেনমোহরে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে।’