প্রকৃতিতে এখনো ফাল্গুন আসেনি। কিন্তু এরই মধ্যে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার আম বাগানগুলোর গাছে গাছে ফুটেছে মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই মুকুলের ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। আর এই মিষ্টি গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে শোনাচ্ছে মধুমাসের আগমনী বার্তা।
সেই সঙ্গে এই সব বাগানগুলোতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিকেরা। খাগড়াছড়ির রসালো আম্রপালি, বারিফোর, রাংগাই, মাহালিশা, কিউজাই ও বারোমাসি কাটিমন আমের স্বাদ দেশ-বিদেশে পরিচিত পেয়েছে অনেক আগেই। ফলে এই অঞ্চলের তৃণমূলেও বেড়েছে বিভিন্ন ফলের বাগান।
কৃষি অফিস ও বাগান মালিক সূত্রে জানা গেছে, জেলার মানিকছড়ি উপজেলায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৪৩০ হেক্টর টিলায় চাষ করা বাগানে আম উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার মেট্রিক টন। এদের মধ্যে রয়েছে—বাহারী ও রসালো আম্রপালি, বারিফোর, রাংগাই, মাহালিশা, কিউজাই ও বারোমাসি কাটিমন আম। ছোট-বড় অন্তত শতাধিক বাগান মালিক চাষ করছেন এই সব আম।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বাগান করেছেন বাটনাতলী ইউনিয়নের চেম্প্রুপাড়ার মো. আবু তাহের। তিনি জানান, ২০১১ সালে ১২০০ আম্রপালি চারা রোপণের মধ্য দিয়ে আম বাগান শুরু করেন, যা ২০১৫ সালে উৎপাদনে ১৮ লাখ টাকার আম বিক্রি দিয়ে যাত্রা শুরু। বর্তমানে ২৭ একর জায়গাজুড়ে ২২০০ আম্রপালি, ১৬০০ বারিফোর ও রাংগই, ১২০০ বারিফোর, মাহালিশা, কিউজাই জাতের আম রয়েছে। ২০২২ সালে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকা সত্ত্বেও ৫০ লাখ টাকার আম বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৬০-৬৫ লাখ টাকার আম বিক্রির আশা করছেন মো. আবু তাহের।
কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, পাহাড়ি এলাকার আম রসে, স্বাদে মন ছুঁয়ে যায়। বিশেষ করে আম্রপালির স্বাদ আলাদা। ফলে দিন দিন খাগড়াছড়ির সর্বত্র আম চাষে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছেন বাগান মালিকেরা। গত দুই বছর ধরে মানিকছড়িতে বারোমাসি কাটিমন আম চাষ প্রথম শুরু করে চমক দেখিয়েছেন ‘সুখী এগ্রো ফার্ম’। এখন বাটনাতলী এলাকায়ও কাটিমন আম চাষ করেছেন একাধিক ব্যক্তি। সারা বছর কম-বেশি কাটিমন আম বাজারজাতে বাগান মালিক যেমন একদিকে লাভবান। তেমনি বাজারের চাহিদাও প্রচুর। যদিও কাটিমন আম মৌসুম ছাড়া দাম বেশি (কেজি ৪০০ টাকা)।