পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসানো হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পাথরবিহীন রেলপথের নির্মাণকাজ শেষ হয় বলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ জানান।
আগামী ৪ এপ্রিল ভাঙ্গা থেকে মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত পদ্মা সেতু হয়ে ৪১ কিলোমিটার রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর কথা তুলে ধরে সাঈদ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার রাতে সেতুতে সর্বশেষ রেল স্লিপার বসানো হয়েছে, এখন অপেক্ষা শুধু ট্রায়ালের।’
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকা’কে বলেন, সর্বশেষ বসানো স্লিপারটির পাশে ৭ মিটার ঢালাই করা হয়েছে। সেটি শক্ত হতে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে। কংক্রিট পরীক্ষা শেষ হলে এরপরই ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে।
আফজাল হোসেন আরও বলেন, ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেল সংযোগ প্রকল্পের ৭৪ শতাংশ, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা ৯২ শতাংশ এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর ৬৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ বলে জানান এই কর্মকর্তা।
মূল এবং দুপাশের ভায়াডাক্ট মিলিয়ে পদ্মা রেল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। রেলসেতুতে ৮টি মুভমেন্ট জয়েন্ট আছে। দেশে প্রথমবারের মতো সর্ববৃহৎ রেলব্রিজ মুভমেন্ট জয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে পদ্মা রেল সেতুতে। দ্রুত গতিতে রেল চলার সময় এই মুভমেন্ট জয়েন্ট ৮০০ মিলিমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারবে।
মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের ৮টি স্লিপার ছাড়া বাকিগুলো কংক্রিটের তৈরি। এগুলো ফরিদপুরের ভাঙ্গা পুরোনো রেলস্টেশনের পাশে স্থাপিত কারখানায় তৈরি করেছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে বিশেষ তাপমাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের স্লিপারগুলো তৈরি করে আনা হয় চীন থেকে।
রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল যানবাহন চালু রেখেই নিচতলায় পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। এখন তা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পথে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্টের (সিএসসি) তত্ত্বাবধানে চলছে পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ। পদ্মা সেতু ছাড়াও প্রকল্পের মোট ১৭২ কিলোমিটার লেভেল কংক্রিটবিহীন রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেলসেতুর কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর দুপাশের স্টেশন নির্মাণ চূড়ান্ত পর্যায়।
আরও খবর পড়ুন: