হোম > সারা দেশ > ফেনী

বিয়ের কেনাকাটা করতে গিয়ে ১৪ বছর নিখোঁজ ছিলেন খোকা, বাগদত্তাও অপেক্ষায় ছিলেন ৩ মাস

সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি

গায়েহলুদ ও বিয়ের কেনাকাটা করতে বেরিয়ে আর ফেরেননি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মোস্তাফিজুর রহমান খোকা। এরপর ১৪ বছরে থানায় জিডিসহ গণমাধ্যমে নিখোঁজ সংবাদ দিয়েও তাঁর সন্ধান মেলেনি। অবশেষে রাঙামাটি জেলার তবলছড়ি এলাকায় তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়। আজ বৃহস্পতিবার পরিবারের লোকজন গিয়ে আগের ছবিসহ বিভিন্ন প্রমাণ দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন ৪৪ বছর বয়সী খোকাকে। 

মোস্তাফিজুর রহমান খোকা সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের পালগিরি গ্রামের জালাল মেম্বারবাড়ির মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর খোকাকে ফেরত পেয়ে খুশি স্বজনেরা। তবে পরিবারে সদস্যদের কাউকেই চিনতে পারছেন না তিনি। স্বজনদের কথায় আস্থা রেখে মানিয়ে চলার চেষ্টা করছেন। 

পরিবারের ধারণা, কেনাকাটা করার জন্য যাওয়ার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে এ সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। 

স্বজনেরা জানান, ২০১০ সালে বিয়ের ঠিক দুই দিন আগে নিখোঁজ হন তিনি। এরপর নানাভাবে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি তাঁর। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এমনকি যে নারীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, তিনিও প্রায় তিন মাস অপেক্ষা করেছেন। 

কীভাবে খুঁজে পাওয়া গেল, সেই বর্ণনায় তাঁর স্বজনেরা জানান, চলতি বছরের মার্চে তাঁদের এক প্রতিবেশী রাঙামাটির তবলছড়িতে কাজ করতে গিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান খোকাকে চোখে পড়লে তাঁদের জানান। পরে কখনো দেখা হলে ভিডিও করে পাঠাতে বলেন স্বজনেরা। এরপর ২৫ মে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে খোকাকে আবার চোখে পড়ে ওই ব্যক্তির। পরে সেখানে তিনি ভিডিও করে তাদের পাঠান। ওই ভিডিও দেখে খোকার মা, ভাই-বোনেরা তার খোকাকে শনাক্ত করেন। পরে তাঁকে আনতে যান। সঙ্গে করে নিখোঁজ হওয়ার আগের বেশ কিছু ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যান। 

উপজেলার তবলছড়ি কেন্দ্রীয় মসজিদ এলাকায় মোস্তফা নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে থাকতেন মোস্তাফিজুর রহমান খোকা। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিকে প্রমাণ দেখিয়ে বৃহস্পতিবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয় মোস্তাফিজুর রহমান খোকাকে। 

স্থানীয়রা জানান, মোস্তাফিজুর রহমান খুবই শান্ত স্বভাবের ছিলেন। বিভিন্ন কাজে দক্ষ ছিলেন তিনি। তার ব্যবহারে স্থানীয়রা সন্তুষ্ট ছিলেন।

খোকার মা নুরজাহান বেগম (৭০) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার কলিজার সন্তানের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। প্রতিদিন রাতে তার থাকার ঘরের বিছানা ঠিক করে দিতাম। আমার বিশ্বাস ছিল, আমার খোকা আমার কোলে আসবে। আমি মনে করেছিলাম সে অনেক কষ্টে আছে। কিন্তু সে রাঙামাটির লোকজনের খুব আদরের হয়ে ছিল।’ 

বোন রহিমা নাজমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভাই তার বিয়ে ও গায়েহলুদের মার্কেট করার জন্য ফেনী যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন থেকে সব জায়গায় খোঁজ করেছি। থানায় সাধারণ ডায়েরি করছি। ১৪ বছর পর আমার ভাইকে পেয়ে আমরা পরিবারের সবাই খুশি।’ 

খোকার মামাতো ভাই নুর আলম বলেন, ‘খোকা ভাই, ওই এলাকায় (রাঙ্গামাটি) সবার সঙ্গে সুন্দর করে চলত। আমরা তাকে তবলছড়ি থেকে আনতে গেলে সেখানে সবাই খোকা ভাইয়ের সুনাম করেছে।’ 

তবলছড়ি উপজেলার বাসিন্দা ও ঠিকাদার বাচ্চু ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বাজারে একটি কাজ করতে গিয়ে খোকার দেখা পাই। এরপর তাঁকে আমি আমার সব কাজে রাখতাম। সে ভালো কাজ করত। কারও সাথে মন্দ আচরণ করত না।’ 

এ বিষয়ে সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সদস্য আবু সুফিয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রায় ১৪ বছর আগে মোস্তাফিজুর রহমান খোকা নিখোঁজ হয়েছিলেন। আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছে পরিবার।’

আনোয়ারায় সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার দুই শিশুর পরিচয় মিলেছে, বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা

মহাসড়কে দোকান যানজটে ভোগান্তি

ভোটের মাঠে: জয়ের সমীকরণ পাল্টে দেবে পাহাড়ি ভোটার

চাঁদপুরে হেফাজতে নির্যাতন, ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রামে থার্টি ফার্স্ট নিয়ে ৬ নির্দেশনা সিএমপির

খামারে ডাকাতের হানা, অস্ত্র ঠেকিয়ে ১২ গরু লুট

চন্দনাইশে অলিপুত্রের সমর্থনে সরে দাঁড়ালেন জামায়াতের প্রার্থী

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জাতি অভিভাবকসুলভ নেতৃত্বকে হারাল: চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন

চট্টগ্রামে সংসদ নির্বাচন: তিন আসনে বিএনপির প্রার্থী নিয়ে উত্তেজনা

পেট্রোলিয়াম করপোরেশন: দেড় বছরেও চালু হয়নি ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প