হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

চবিতে সংঘর্ষ: ৪ ঘণ্টা ধরে অপারেশন, লাইফ সাপোর্টে শিক্ষার্থী মামুন

চবি সংবাদদাতা

আহত শিক্ষার্থী মামুন। ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে গুরুতর আহত মো. মামুন লাইফ সাপোর্টে আছেন। মৃত্যুর মুখোমুখি মামুন চবির সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর নাকে ও মুখে অনেক বেশি রক্তক্ষরণের পাশাপাশি কানের পর্দা ফেটে গেছে। এ ছাড়া তাঁর ব্রেইনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১টার দিকে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে মামুনের ব্রেইন অপারেশন সম্পন্ন হয়। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

জানা যায়, হামলার সময় শক্ত, ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে মামুনের মাথার পেছনে ব্রেইনের অংশে আঘাত করা হয়েছে। ফলে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে।

মামুনের সহপাঠী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘মামুনের মাথার আঘাত ডাক্তারের আশঙ্কার চেয়েও তীব্র ছিল, ব্রেনের ওপরের ব্লাড-ক্লথ অপসারণ করলেই যেখানে জটিলতা কেটে যাওয়ার আশা ছিল সেখানে দেখা গেছে ব্রেনের ওপর হাড়ের টুকরো অংশ ঘিরে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে। এটি অপসারণে পুরো খুলি খুলে অপারেশন পরিচালনা করতে হয়েছে, ফলে পর্যবেক্ষণের সুবিধার্থে এটি সেরে ওঠার আগ পর্যন্ত খুলি বসানো যাবে না। তাঁকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পর্যবেক্ষণ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই তাঁর শারীরিক অবস্থার ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।’

এ বিষয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, গতকাল প্রায় চার ঘণ্টা ধরে মামুনের অপারেশন করা হয়েছে। ডাক্তার জানিয়েছে তাঁর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। অপারেশনে মামুনের মাথা থেকে ১৩ টুকরো হাড় বের করা হয়েছে। তাঁর খুলি এখন ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। তাঁকে শক্ত বস্তু দিয়ে আঘাত করার ফলে ব্রেইনের ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁকে তিন ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। তিনি যদি সুস্থ হন, তাহলে দুই মাস পর তাঁর খুলি লাগাতে হবে বলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জানিয়েছেন।

পার্কভিউ হাসপাতালের জিএম বলেন, ‘মামুনের জ্ঞানের অবস্থা কিছুটা ভালো। তবে, লাইফ সাপোর্টে আছে। পরবর্তীকালে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে এক ছাত্রী একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে দারোয়ানের সঙ্গে তাঁর তর্ক হয়। একপর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাঁকে মারধর করেন। তবে, পরবর্তী সময়ে অভিযোগ উঠে ওই ছাত্রী তর্কের একপর্যায়ে দারোয়ানকে চড় মারেন। পরে ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাঁকে ধাওয়া করলে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া না পাওয়ায় সংঘর্ষের মাত্রা বেড়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক বজলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার শত শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অনেকের অবস্থা গুরুতর। যৌথ বাহিনী অনেক দেরিতে ঘটনাস্থলে এসেছে, ততক্ষণে অনেক রক্তক্ষয় হয়ে গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে।’

আরও খবর পড়ুন:

একমঞ্চে ৬১ চিকিৎসা গবেষণাপত্র উপস্থাপন

চবির শাটলে বসা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, শিক্ষার্থীকে মারধর

রাউজানে ৪টি ইটভাটার চিমনি গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন

চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তার গাড়িতে হামলা, একজন বলছিলেন—‘গুলি কর’

পার্বত্য চুক্তির বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে গ্রেপ্তার আইনজীবী জামিনে মুক্ত

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারার প্রতিবাদে দিনে লাল পতাকা, রাতে মশাল মিছিল

চমেক হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে অর্ধদিবস কর্মবিরতি

পার্টির পেছনে ইসলাম থাকলে, সেটা ইসলাম হয়ে যায় না: সালাহউদ্দিন আহমদ

সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচলের দ্বিতীয় দিনেও কোটার ৮০০ কম পর্যটক

চবিতে আবারও ভুয়া শিক্ষার্থী আটক