চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শতভাগ আবাসন ব্যবস্থাসহ পাঁচ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি), সহ-উপাচার্য (প্রোভিসি–একাডেমিক), ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ রয়েছেন।
আজ রোববার বেলা ১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলছিল।
প্রশাসনিক ভবনে আটকা পড়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো—শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করা, শতভাগ আবাসন না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত আবাসন ভাতা দেওয়া, সব হলে অবৈধভাবে অবস্থানকারী ছাত্রছাত্রীর তালিকা শনাক্ত করে অবিলম্বে তাঁদের হলের সিট বাতিল করতে হবে, হলের আবেদনপত্রের সঙ্গে ১০০ টাকা করে নিয়েও সিট না দিলে শিক্ষার্থীদের টাকা অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে এবং ছাত্রীদের হলে ডাবলিং (এক সিটে দুজন থাকার) প্রথা বন্ধ করতে হবে।
বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের ‘১০০ টাকার ভিক্ষুক, তাঁরা নাকি শিক্ষক’, ‘আবাসন ভাতা দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ ছাড়া উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোটি কোটি টাকা খরচ করে “ডিলিট” উপাধি দিতে পারে, অথচ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণে কোনো উদ্যোগ নিতে পারে না। দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবাসন দিতে না পারলেও ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে। অথচ চবিতে আমরা কেবল আশ্বাসই পেয়েছি, কোনো বাস্তব পদক্ষেপ নেই।’
ইতিহাস বিভাগের আরও এক শিক্ষার্থী তাহসান হাবিব বলেন, ‘আমাদের আবাসন সমস্যা নিরসনে প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। অনেকবার আন্দোলন হয়েছে, স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। এ জন্য আমরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে রেখেছে। আমরা লিখিতভাবে তাদের দাবিগুলো চেয়েছি। লিখিতভাবে দাবিগুলো পেলে সমাধানের চেষ্টা করব।’