ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বিরোধ চলছে যুক্তরাষ্ট্রের। ইউক্রেনে হামলা চালানো হলে এরই মধ্যে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়া সেনা সরানোর কথা বললেও সেটিকে ‘মিথ্যা’ বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে হামলা চালায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে অংশ না নিলেও ছায়াযুদ্ধে যে জড়াবে সেটি নিয়ে সন্দেহ নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্নায়ুযুদ্ধে জড়ালেও সরাসরি কোনো যুদ্ধে জড়ায়নি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। তবে স্নায়ুযুদ্ধে লিপ্ত থাকা এ দেশ দুটিই বিশ্বের অন্যতম দুই সামরিক পরাশক্তির দেশ।
সামরিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। সামরিক শক্তির ভিত্তিতে প্রতি বছর র্যাঙ্কিং প্রকাশ করা প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার’ এ তথ্য জানিয়েছে। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্সটি তৈরির ক্ষেত্রে শুধু দেশগুলোর প্রচলিত বা সাধারণ সামরিক সক্ষমতার বিষয়গুলোই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ও প্রযুক্তিগত মান, সামরিক প্রশিক্ষণের মান, সমরাস্ত্রের ক্ষেত্রে উন্নততর প্রযুক্তির ব্যাপকতা, সামরিক গবেষণা, ভৌগোলিক অবস্থান, ভূ-রাজনৈতিক সক্ষমতা, কূটনৈতিক কৌশল, অর্থনৈতিক সক্ষমতা, অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। যদিও কোনো হিসাবই যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার মতো দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সঠিক’ বলে নিশ্চিত করে না। বিশ্লেষকদের মতে, মূলত প্রতিরক্ষা বিষয়ক তথ্য গোপন রাখার নীতিই এ ক্ষেত্রে মেনে চলা হয়।
প্রতিরক্ষা ব্যয়ের হিসাবেও শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এ বছর প্রতিরক্ষা খাতে ৭৭ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করবে। রাশিয়ার এ বছর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করবে ১৫ হাজার কোটি ডলার।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের নয়টি হেলিকপ্টারবাহী ক্যারিয়ার রয়েছে। বিশ্বের অন্য সব দেশ মিলিয়ে এমন ক্যারিয়ারের সংখ্যা ১৬টি। অর্থাৎ, বিশ্বের এমন ক্যারিয়ারের এক-তৃতীয়াংশের বেশি যুক্তরাষ্ট্রের একারই রয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১২ লাখ ৮১ হাজার ৯০০ জন। রিজার্ভ আছে ৮ লাখ ১ হাজার ২০০ সৈন্য। রাশিয়ার সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা সাড়ে ৮ লাখ। রিজার্ভ আছে আড়াই লাখ।
এসব হিসাব মাথায় নিলে বলাই যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক দিক থেকে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে রাশিয়ার তুলনায়। তবে সাবেক সোভিয়েত আমলের কথিত গোপন প্রকল্পের বিষয় মাথায় নিলে এতটা নিশ্চিত হওয়া ঢের কঠিন। স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার সেই হিসাব–নিকাশের সত্যিকারের সুরাহা যে কখনোই হয়নি!
রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কিত আরও পড়ুন: