হোম > নারী

বইকে বেঁচে থাকার শক্তি হিসেবে দেখাতে চান দিয়া

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 

বই মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে— এই সত্য স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে নূজহাত নাছিম দিয়ার জীবনে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের একটি শান্ত, বইপ্রেমী পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন দিয়া। পরিবারে মা-বাবা ও দুই ভাই সব সময় তাঁকে পড়াশোনা এবং সাহিত্যচর্চায় উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। এই সমর্থন তাঁকে শক্তি জুগিয়েছে। বর্তমানে তিনি সোনারগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগে অনার্সে পড়ছেন। পাশাপাশি নিজের ক্যারিয়ার গড়ার পথে নিয়মিত বই পড়া এবং রিভিউ করা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বুক রিভিউ জগতে দিয়ার প্রথম পদক্ষেপ ছিল সমরেশ মজুমদারের বিখ্যাত উপন্যাস ‘সাতকাহন’ বইটি নিয়ে। বই নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত আসে নিজের বিষণ্নতা আর মানসিক চাপ থেকে। কারণ, তাঁর খারাপ সময়ে বই-ই তাঁকে সঙ্গ দিয়েছে, সাহস জুগিয়েছে। কাজ শুরু করার পর পাঠকদের কাছ থেকে পাওয়া ইতিবাচক সাড়া দিয়াকে সবচেয়ে বড় উৎসাহ দেয়। লেখা ও ভিডিও মিলিয়ে তিনি এরই মধ্যে ৮০টির বেশি বইয়ের রিভিউ করেছেন। তাঁর সবচেয়ে আলোচিত রিভিউগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বপন মিয়ার গল্পকথায় বাংলা ব্যাকরণ এবং কথাসাহিত্যিক মোহিত কামালের পরাণচুল্লি। এ ছাড়া ‘ঈশ্বর, তুমি কি শুনছ? আমি মার্গারেট বলছি’, ‘সাতকাহন’, ‘টিউজডেজ উইদ মরি, অ্যাটমিক হ্যাবিটস এবং ডেইলি স্টোয়িক’, ‘মহৎ জীবন’ এমন অসংখ্য বই নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। বুক রিভিউ করা দিয়া কারও কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে শেখেননি। নিজেই দেশি-বিদেশি বুক ইনফ্লুয়েন্সারদের রিভিউ দেখেছেন, সাহিত্যতত্ত্ব পড়েছেন এবং লেখালেখির চর্চা করেছেন। সময় ব্যবস্থাপনাই তাঁর বড় চ্যালেঞ্জ। কখনো বই সংগ্রহের সমস্যা, কখনো অনাকাঙ্ক্ষিত নেতিবাচক মন্তব্য—সবই তাঁকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে। তবে তাঁর বুক রিভিউ যাত্রার সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত ছিল যখন একজন পাঠক তাঁকে জানান, তাঁর রিভিউ দেখে তিনি আবার বই পড়ায় ফিরে এসেছেন।

২০২৪ সালে দিয়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁর বুকটক উইদ নূজহাত পেজটি চালু করেন। এখানে তিনি নিয়মিত রিভিউ, বইয়ের বিশ্লেষণ ও পাঠ-অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি কবিতা, প্রবন্ধ, আত্মোন্নয়নমূলক লেখা ও পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখে থাকেন। যার কিছু অনলাইন সাহিত্যমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি আরশিনগর সাহিত্য চক্রে তিনি বই আলোচনা এবং নতুন লেখক ও রিভিউয়ারদের উৎসাহিত করার কাজ করেন। দিয়া পেয়েছেন ‘ঐতিহ্য বুক ইনফ্লুয়েন্সার ২০২৫’ সম্মাননা, যা তাঁর কাজকে আরও মূল্যায়িত করেছে। ঐতিহ্যের আয়োজিত বুক ইনফ্লুয়েন্সার গেট টুগেদারে যোগ দিয়ে তিনি লেখক, পাঠক এবং বইপ্রেমীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের বিশেষ সুযোগ পেয়েছেন। আগামী দিনে দিয়া আরও পেশাদারভাবে রিভিউ করতে চান, লেখালেখি বাড়াতে চান এবং শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চান।

বই দান কার্যক্রম এবং শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের পড়াশোনায় সহায়তা করা তাঁর নিয়মিত অভ্যাস। এই যাত্রা সম্পর্কে দিয়া বলেন, বই মানুষকে বাঁচায়। ভেতরে ভেঙে যাওয়া মানুষেরাও বইয়ের কাছে ফিরে এলে আবার গড়ে উঠতে পারেন। তাঁর নিজের জীবনের মতো বই-ই তাঁর পুনর্জন্ম।

ক্ষত আর স্বপ্ন নিয়ে নতুন ভোরের অপেক্ষায় নারীরা

সৌন্দর্যশিল্পের মুকুটহীন সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথ আরডেন

বড়দিনের বিখ্যাত গানগুলোর নেপথ্যের নারীরা

উদ্যোক্তা মেলা: সংখ্যা কমলেও আশাবাদী নারী উদ্যোক্তারা

রোজের ফুটে ওঠার গল্প

আন্তর্জাতিক নারী: অন্ধকার আকাশ যাঁর ল্যাবরেটরি

অধিকারের পক্ষে মার্থার লড়াই

‘মেয়েদের ফুটবলে বাধা দিতে খোঁড়া হয়েছিল মাঠ’

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মন্ত্রণালয় ও সংসদে আসনের দাবি

জটিল প্রক্রিয়ার কারণে অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ করতে পারেন না নারীরা