হোম > নারী

জাতিসংঘের প্রতিবেদন

বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে এক নারী খুন হন, ঘাতক সঙ্গী অথবা স্বজন

আন্তর্জাতিক নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূল দিবস উপলক্ষে ২৫ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় প্রতিবাদ মিছিল। ছবি: এএফপি

২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ মিনিটে একজন নারী তাঁর সঙ্গী বা পরিবারের কোনো সদস্যের হাতে খুন হয়েছেন। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। সংস্থাটি বলেছে, নারী হত্যার ঘটনা ‘উদ্বেগজনকভাবে উচ্চমাত্রায়’ রয়ে গেছে।

জাতিসংঘ মাদক ও অপরাধবিষয়ক দপ্তর (ইউএনওডিসি) এবং জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেনের একটি যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর প্রায় ৮৫ হাজার নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ অর্থাৎ, ৫১ হাজার জনেরও বেশি নারী ও মেয়ে তাদের সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন। সে হিসাবে দৈনিক গড়ে ১৪০ জন নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ, প্রতি ১০ মিনিটে নিকটজনের হাতে খুন হয়েছেন একজন নারী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের জন্য প্রাণঘাতী সহিংসতার ঝুঁকির ক্ষেত্রে নিজের বাড়ি এখনো সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান হিসেবেই রয়ে গেছে!

বিশ্বে খুনের পরিসংখ্যানে অবশ্য পুরুষেরা নারীদের তুলনায় চারগুণ বেশি। ২০২৩ সালে মোট হত্যাকাণ্ডের ৮০ শতাংশের শিকার পুরুষ। তবে তাদের বেশির ভাগই অপরিচিত ব্যক্তির হাতে নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আফ্রিকায় পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। সেখানে ২০২৩ সালে ২১ হাজার ৭০০ নারী তাদের নিকটজনের হাতে খুন হয়েছেন।

ইউরোপে নারী হত্যার হার সবচেয়ে কম (২ হাজার ৩০০ জন)। এশিয়াতেও এ হার তুলনামূলক কম।

কিছু দেশে নারী হত্যার ঘটনা প্রতিরোধের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত লিঙ্গবৈষম্য এবং ক্ষতিকর ধারণার কারণে এই প্রবণতা ‘উদ্বেগজনকভাবে উচ্চমাত্রায়’ রয়ে গেছে।

ইউএনওডিসি–এর নির্বাহী পরিচালক গাদা ওয়ালি বলেন, ‘আমাদের লৈঙ্গিক পক্ষপাত, ক্ষমতার অসামঞ্জস্য এবং ক্ষতিকর ধারণাগুলো নারীর প্রতি সহিংসতা টিকিয়ে রাখে। এটি মোকাবিলার প্রয়াস দরকার এবং এ ধরনের ধারণা ও ব্যবস্থা ভেঙে ফেলতে হবে।’

প্রতিবেদন অনুসারে, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, নারী হত্যার ঘটনা প্রায়শই সহিংসতার পুনরাবৃত্তির ফল এবং তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেমন: নারীর প্রতি সহিংসতায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে, অর্থাৎ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এই ধরনের সহিংসতার নিরসন করা যেতে পারে।

ইউএন উইমেন–এর নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহৌস বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে কঠোর আইন, সরকারের অধিক দায়িত্বশীলতা এবং নারী অধিকার সংগঠন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্থার জন্য আরও বেশি অর্থায়ন প্রয়োজন।

এ ছাড়া, বিভিন্ন জাতীয় উৎস থেকে আরও উন্নত ডেটা সংগ্রহ—যেমন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন—এবং নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে একটি ‘শূন্য সহনশীলতার সংস্কৃতি’ গড়ে তোলা নারীদের হত্যার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন সিমা।

প্রতিবেদনটি ১০৭টি দেশ বা অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং সদস্য দেশগুলোর থেকে প্রাপ্ত প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূল দিবসে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

রোকেয়াকে ‘মুরতাদ’ বলা রাবি শিক্ষকের অপসারণ চায় মহিলা পরিষদ

ল্যানসেটের গবেষণা: শৈশবে ১০০ কোটি মানুষ যৌন সহিংসতার শিকার

মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় জীবনের গল্প

যৌতুক দাবি ও গ্রহণ করা এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ

মোটরবাইকপ্রেমী নারীদের যাত্রা

কবি বাবার উদ্ভাবক কন্যা

জুলাই অভ্যুত্থানে বেগম রোকেয়া ছিলেন প্রেরণা হয়ে: নাহিদ ইসলাম

যৌনকর্মীদের মানবাধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নিশ্চিতের দাবি সংহতির

দিলরুবা হক মিলি: বনরক্ষী এক নারীর গল্প

অতীতের আলো, বর্তমানের অন্ধকার