দুটি দেশ। দেশ দুটির সমস্যাও দুই রকমের। তবে একটি জায়গায় সম্ভবত দুটি দেশের মিল আছে। সেটা হলো—নারীর প্রতি বৈষম্য। এ কারণে আফগানিস্তান ও ফিলিস্তিনের নারীরা আছেন অধিকার ও স্বীকৃতির সংকটে। একটি দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত আর অন্যটি তালেবানের মতো পুরুষতান্ত্রিক শাসকদের হাতে। ফলে দুই দেশের নারীদের লড়াই করতে হচ্ছে প্রবলভাবে।
যুদ্ধ ও নিপীড়নের প্রতিবাদকারী ফিলিস্তিনি নারী বন্দীরা ইসরায়েলি কারাগারে অমানবিক জীবনযাপনে বাধ্য হন। তাঁদের বঞ্চিত করা হয় ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, শিক্ষার অধিকারসহ সব মৌলিক মানবাধিকার থেকে। কারাবাসের সময় প্রায়ই তাঁদের লৈঙ্গিক সহিংসতার শিকার হতে হয়। এদিকে আফগানিস্তানে নারীরা বর্তমানে স্পষ্টতই লৈঙ্গিক ও বর্ণবৈষম্যের শিকার। শহুরে ও গ্রামীণ অর্থনৈতিক, সামাজিক কিংবা সাংস্কৃতিক জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
তালেবানের কখনোই আফগানিস্তানের নারী, জনগণ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং এ বিষয়গুলোর প্রতি কোনো অঙ্গীকার ছিল না, এখনো নেই। হাবিবা সারাবি আফগানিস্তানের প্রথম নারী গভর্নর বর্তমানে বিদেশে বসবাস করছেন
ইসরায়েলি অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অসংখ্য নারী ফিলিস্তিনি ভূমি দখল, বসতবাড়ি ভেঙে ফেলা, সন্তানদের প্রতি অন্যায় ও অশোভন আচরণ এবং যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি রেখেছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী অতীতে তাঁদের গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ এবং কখনো কখনো শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। আর এখন তো দেশটিতে চলছে ভয়াবহ যুদ্ধ। ফিলিস্তিনের নারী অধিকারকর্মীরা মনে করেন, ফিলিস্তিনি প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়ন এবং সমান অধিকারের জন্য তাঁদের সংগ্রাম রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। আর এটি শুধু ইসরায়েলি দখলদারির অবসান ঘটিয়েই অর্জন করা সম্ভব। কারণ, ইসরায়েল নিজের দখলদারি বাস্তবায়নে শুধু ফিলিস্তিনি নারীদের ধর্ষণ ও হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি; দীর্ঘদিন সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে ফিলিস্তিনি নারীরাও হয়ে উঠছেন সহিংস। এতে ক্ষতি হয়েছে দ্বিমুখী।