হোম > নারী

সহমর্মী ও স্নেহময় মানুষের সংস্পর্শ মানসিক সমস্যার ঝুঁকি কমায়

ফারজানা রহমান

ডা. ফারজানা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

আমি ছোটবেলা থেকে পারিবারিকভাবে মানসিক নির্যাতনের মধ্যে বড় হয়েছি। মা-বাবার সম্পর্ক সব সময় খারাপ ছিল—মারামারি, ঝগড়া, মানসিক অশান্তি চোখের সামনে দেখেছি। মায়ের সহায়তা পাইনি। ছোটবেলা থেকে অপমান সয়ে এসেছি। মা অনেক সময় অন্যদের সামনে খাটো করত। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল মানুষ হয়ে ওঠা। বাবার টাকা যেন কম খরচ হয়, তাই স্কুলে হেঁটে যেতাম, দিস্তার খাতায় লিখতাম, টিফিনে পাঁচ টাকার বেশি খরচ করতাম না। ভালো কলেজে পড়ব, এই ছিল আশা। পরিবার পাশের কলেজে পড়তে বলল, প্রাইভেটে দেয়নি এমনকি আমার সিদ্ধান্তও মানেনি।

এই একাকিত্ব আর যন্ত্রণায় একসময় একজনকে ভালোবেসে ফেলি। সে আমার অনুভব বুঝত, কষ্টকে সম্মান করত, বিনিময়ে কিছু চাইত না। আমরা পালিয়ে বিয়ে করি; কিন্তু পরিবার সেটা মানেনি। আমাকে ফিরিয়ে এনে আটকে রাখে, মানসিক নির্যাতন করে, মিথ্যা কথা বলে এমনকি কালো জাদু পর্যন্ত করে। ছেলেটা আমাকে কষ্ট দেয়নি; বরং আমার সীমাবদ্ধতার প্রতি তার শ্রদ্ধা রয়েছে। এখন পরিবার আমাকে ডিভোর্সে বাধ্য করতে চায় এবং আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আবার বিয়ের প্ল্যান করছে।

আমি এখনো অনার্সে পড়ি, ভালো রেজাল্ট করছি। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। তাই বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়ে একটা রুম বা মেসে থাকতে চাচ্ছি। জানি না কীভাবে কী করব! ফাতেমা তুজ জোহরা, নীলফামারী

আপনি এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও পরাজিত হননি, বারবার চেষ্টা করেছেন, সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন, এটা আপনার চরিত্রের ইতিবাচক দিক। যারা শৈশবে খুব মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, অবহেলা ও অযত্নে বড় হয়, সাধারণত তাদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

তবে এটাও প্রমাণিত, শৈশবে প্রতিকূল পরিবেশে বড় হওয়া শিশুরা যদি তাদের জীবনের কোনো পর্যায়ে সহমর্মী ও স্নেহময় মানুষের সংস্পর্শে আসে; তবে তার জীবনে মানসিক সমস্যার ঝুঁকি কমে যায়।

এ ক্ষেত্রে আপনার স্বামীর মাধ্যমে শৈশবের শূন্যতা ইতিবাচকভাবে পূরণ হয়েছে। আপনি সত্যিই একজন অসাধারণ হার না মানা নারী। অবশ্যই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন। একটু খোঁজ করলে যেকোনো শহরে কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল পাবেন। সেখানে উঠে প্রশিক্ষণ বা চাকরির চেষ্টা করতে পারেন। আরেকটি কথা, যেহেতু স্বামীর সঙ্গে আপনার বন্ধন সুন্দর ও পরীক্ষিত, তাই পারিবারিক চাপে সম্পর্কটি নষ্ট করা ঠিক হবে না।

আপনি মানসিকভাবে খুব দৃঢ়। লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে যান। আপনার জয় সুনিশ্চিত।

পরামর্শ দিয়েছেন: সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা

বড়দিনের বিখ্যাত গানগুলোর নেপথ্যের নারীরা

উদ্যোক্তা মেলা: সংখ্যা কমলেও আশাবাদী নারী উদ্যোক্তারা

রোজের ফুটে ওঠার গল্প

আন্তর্জাতিক নারী: অন্ধকার আকাশ যাঁর ল্যাবরেটরি

অধিকারের পক্ষে মার্থার লড়াই

‘মেয়েদের ফুটবলে বাধা দিতে খোঁড়া হয়েছিল মাঠ’

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মন্ত্রণালয় ও সংসদে আসনের দাবি

জটিল প্রক্রিয়ার কারণে অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েও অভিযোগ করতে পারেন না নারীরা

ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে শাহেলীর লড়াই

১১ মাসে নির্যাতনের শিকার ২,৫৪৯ নারী ও কন্যাশিশু