কাতার বিশ্বকাপ জিতে নিজের আজন্মলালিত স্বপ্ন পূরণ করেছেন লিওনেল মেসি। তখন থেকেই ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন, পরের বিশ্বকাপে (২০২৬ বিশ্বকাপ) শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে থাকবেন তো মেসি? বিশ্বকাপের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই ভক্ত-সমর্থকদের আগ্রহ বাড়ছে এ ব্যাপারে। আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড এবার দিলেন রহস্যময় এক তথ্য।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে হতে যাচ্ছে ২৩তম ফুটবল বিশ্বকাপ। শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে মেসির খেলা নিয়ে কোচ ও সতীর্থরা অনেক আত্মবিশ্বাসী। আগামী বিশ্বকাপে তাঁর বয়স ৩৯ হলেও মেসি তো আর্জেন্টিনা দলের প্রাণভোমরা। ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন কি খেলবেন না, এটা নিয়ে চারদিকে যখন এত আলোচনা, তখন যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম এনবিসি নিউজকে গতকাল দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছেন অনেক কিছুই। মার্কিন মুলুকে হতে যাওয়া বিশ্বকাপে দলের জন্য বড় কিছু করার আশার কথা শুনিয়েছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। মেসি বলেন, ‘আসলে বিশ্বকাপে খেলা দারুণ এক ব্যাপার। সেখানে আমি থাকতে চাই। যদি খেলি, তাহলে আর্জেন্টিনার সাফল্যে বড় অবদান রাখতে চাই।’
২০২৩ সালে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে চলে যান লিওনেল মেসি। ক্লাবটির হয়ে ২০২৩ লিগস কাপ, ২০২৪ সাপোর্টার্স শিল্ড—দুটি মেজর শিরোপা জিতেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশের সঙ্গে আড়াই বছরে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছেন। ৩৮ বছর বয়সেও গড়ে চলেছেন একের পর এক রেকর্ড। শুধু তা-ই নয়, মেসি মাঠে নামলে ভক্ত-সমর্থকদের ভিড় এত বাড়ে যে দর্শকসংখ্যাও রেকর্ড হচ্ছে নিয়মিত। যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ কোপা আমেরিকায় ‘মেসি ১০’ নম্বর জার্সি পরে আর্জেন্টিনার খেলা দেখতে এসেছিলেন অসংখ্য দর্শক।
বয়স যতই সংখ্যা হোক না কেন, অনেক সময় বয়সের ব্যাপারও মাথায় রাখতে হয়। চোটে পড়ায় ইদানীং তাঁর ম্যাচ মিসের ঘটনাও চোখে পড়ছে। অনেক সময় শুরুর একাদশে থাকলেও পুরো ৯০ মিনিট খেলার সুযোগ পান না। মেসি জানিয়েছেন, ফিটনেসের ওপর নির্ভর করছে তাঁর ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড বলেন, ‘ইন্টার মায়ামির জার্সিতে আগামী বছর প্রাক্-মৌসুমের প্রস্তুতি শুরু করব। সে সময় নিয়মিত নিজের অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখব যে শতভাগ ফিট কি না। আমরা তো আগের বিশ্বকাপ জিতেছি। সেটা আবার ধরে রাখার সুযোগ যদি পাই, তাহলে সেটা হবে অসাধারণ ব্যাপার। মেজর ইভেন্টে জাতীয় দলের হয়ে খেলা সব সময়ই স্বপ্নের মতো।’
এ বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বুয়েনস এইরেসের মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা-ভেনেজুয়েলা। সেই ম্যাচটা হয়ে উঠেছিল মেসিময়। কারণ, ম্যাচটি ছিল ঘরের মাঠে মেসির শেষ ম্যাচ। ঘরের মাঠে বিদায়ী ম্যাচ খেলতে নেমে বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড। সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনা জিতেছিল ৩-০ গোলে। মেসি করেছিলেন জোড়া গোল। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে চোটে পড়ে তাঁকে ম্যাচ মিস করতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু যখনই ফিরছেন, তাঁর প্রত্যাবর্তন হচ্ছে রাজার মতো। ভক্ত-সমর্থকেরা নিশ্চয়ই আগামী বিশ্বকাপে মেসির ‘শেষ ঝলক’ দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।