হোম > খেলা > ক্রিকেট

দুদকের জালে বিসিবি

৭ কোটির খরচ ২৫ কোটি দেখিয়েছে বিসিবি

মুজিব শতবর্ষ উদ্‌যাপনে যেখানে ১৫ কোটির বাজেট দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। দুদকের প্রাপ্ত তথ্যে প্রকৃত ব্যয় মাত্র ৭ কোটি।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিসিবিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিসিবি সভাপতি হিসেবে ফারুক আহমেদ গত আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর আর সব খাতের মতো সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রায় আট মাস আগে দায়িত্ব নিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, আগের বোর্ড পরিচালনায় পাওয়া কিছু অসংগতির তদন্তে একটি বেসরকারি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অডিট করাবেন।

অভ্যন্তরীণ তদন্ত-নিরীক্ষা শুরু হলেও গতকাল প্রথমবার বিসিবি কার্যালয়ে দেখা গেল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি তিন সদস্যের দল। দুপুর ১২টার দিকে দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন, মাহমুদুল হাসান ও পরিদর্শক খলিলুর রহমান আসেন বিসিবিতে। অভিযান চলাকালে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ দেশে না থাকলেও বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন ছিলেন বিসিবি কার্যালয়ে। দুদক কর্মকর্তাদের আগমনে বিসিবিতে একধরনের চাপা অস্থিরতাও লক্ষ্য করা যায়। শুরুতে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরে অবশ্য সাংবাদিকদের কার্যালয়ে ঢোকার অনুমতি মেলে।

সংক্ষিপ্ত অনুসন্ধান শেষে দুদক কর্মকর্তারা বলেন, বিসিবির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তিনটি অভিযোগ এসেছে বিসিবির বিরুদ্ধে। প্রথমত, বিভাগীয় ক্রিকেট লিগে দল নির্বাচনে অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেন, বিপিএলের টিকিট বিক্রির আয়ে গরমিল এবং মুজিব শতবর্ষ উদ্‌যাপনের বাজেট ও ব্যয়ের অসামঞ্জস্যতা।

তৃতীয় বিভাগে দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অস্বাভাবিক হারে আবেদন বেড়েছে। সহকারী পরিচালক আল আমিন বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘আগে যেখানে ২-৩টি দল আবেদন করত, এ বছর ৬০টির বেশি দল আবেদন করেছে। আগে আবেদন ফি ছিল ৫ লাখ টাকা, এবার তা কমিয়ে ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। হঠাৎ অনেক বেশি আবেদন এবং আবেদন ফি কমেছে। আগে কোনো গোপন লেনদেন বা সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। স্থানীয় ক্লাব ও সংগঠকদের প্রভাব এবং আর্থিক লেনদেনের বিষয়েও প্রাথমিকভাবে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আমরা এখন বিসিবির জমা দেওয়া নথিপত্র খতিয়ে দেখছি।’

টিকিট বিক্রিতে বিসিবির দেখানো আয় ও বাস্তব আয়েও বড় ধরনের গরমিল রয়েছে বলে দুদকের সন্দেহ। আল আমিন বলেন, ‘বিপিএলের তৃতীয় থেকে দশম আসর পর্যন্ত বিসিবি যে আয় দেখিয়েছে, তা প্রায় ১৫ কোটি টাকা। অথচ (সবশেষ) একাদশ আসরে অনলাইন টিকিট বিক্রি করে বিসিবি আয় করেছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। আগে টিকিট বিক্রির তথ্য হয় গোপন রাখা হয়েছে, অথবা সেখানে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাৎ ঘটেছে।’

দুদক আরও একটি গুরুতর অভিযোগ পেয়েছে মুজিব শতবর্ষ উদ্‌যাপনকে ঘিরে। যেখানে ১৫ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। অথচ বিসিবিতে এসে দুদকের প্রাপ্ত তথ্যে প্রকৃত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৭ কোটি টাকা। ১৮ কোটির বেশি অর্থের কোনো স্বচ্ছ হিসাব পাওয়া যায়নি। এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখবেন বলে জানান দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে কমিশনের অনুমোদনের পরই আমরা অভিযান চালাই। বিসিবির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। আজকের অভিযানে আমরা শুধু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। বিসিবি আমাদের সহযোগিতা করছে। সবকিছু কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

দুদকের অভিযান নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা কিছু বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত চেয়েছেন। আমরা আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে বলেছি, তাদের সহযোগিতা করতে।’ প্রধান নির্বাহী হিসেবে দীর্ঘ সময় কাজ করা নিজাম উদ্দিনও কি দুর্নীতির অভিযোগ এড়াতে পারছেন? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যানেজমেন্ট টিম, বিসিবির পরিচালনা পরিষদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করি এবং বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনা করি। আমাদের কাজ হচ্ছে বোর্ডের নির্দেশ বাস্তবায়ন করা।’

আরও খবর পড়ুন:

নিজেদের ইতিহাস নতুন করে লেখার সামনে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ

নিলামের আগেই জানা গেল আইপিএলে কত ম্যাচ খেলবেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার

নতুন লিগ খেলতে আমিরাতে যাচ্ছেন মোস্তাফিজ

বিশ্বকাপের আগে দলে বেশি পরিবর্তন চান না লিটন

প্রথম দিনেই কি হার এড়ানোর বন্দোবস্ত করে ফেলল ইংল্যান্ড

পেইনকিলার নেওয়ার পরও শঙ্কায় ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার

১ যুগের অপেক্ষা ঘুচিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় রুটের প্রথম সেঞ্চুরি, বাকি রইল বাংলাদেশ

১৪ বছর পর ভারতের এই ঘরোয়া টুর্নামেন্টে খেলছেন রোহিত

ওয়াসিম আকরামকে পেছনে ফেলে সবার ওপরে স্টার্ক

অ্যাশেজে সৈকতের আম্পায়ারিংকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য গৌরবের বলছেন ইমরুল