হোম > বিজ্ঞান > গবেষণা

সম্পর্ক মেরামতে হাসুন

মানুষে মানুষে সম্পর্কে তো কতভাবেই আঁচড় পড়ে। কতভাবে বদলে যায় একেকটি সম্পর্কের রসায়ন। সম্পর্ক বোঝাতে কত রকমের শব্দ যে আছে। ‘মিঠা’, ‘অম্ল-মধুর’, ‘মধুর’ ইত্যাদি। কিন্তু যখনই কোনো সম্পর্ক বর্ণনা করতে গিয়ে ‘তিক্ত’ শব্দটি প্রয়োগ করতে হয়, তখন বুঝতে ঠিকঠাক নেই অনেক কিছুই। অথচ এই সম্পর্কের তিক্ততা হয়তো একটু মেরামতেই ঠিক করা সম্ভব। কিন্তু কী করে হবে এই মেরামত? গবেষকেরা বলছেন, একটু হাসিতেই সম্ভব।

এমনিতে অবশ্য বলা হয়, একটি হাসি খুলে দিতে পারে হাজারো দরজা। তাই বলে সব জায়গায় আবার হাসি নয়। ক্ষেত্রবিশেষে হাসিই হয়ে উঠতে পারে ‘বিপজ্জনক’।

যুক্তরাজ্যের কুইনস ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের একদল গবেষক সম্প্রতি হাসি নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন। তাঁরা বলছেন, হাসি সহজ কর্ম নয়। হাসির অভিব্যক্তির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে ৪০০ পেশি। তা এই ৪০০ পেশিকে ঠিকঠাক কাজে লাগাতে জানতে হবে। দেখা গেল, তিক্ত সম্পর্ক মধুর করতে আপনি হাসলেন। আর হয়ে গেল হিতে বিপরীত। অর্থাৎ, সম্পর্ক আরও তিক্ত হলো। তাই এসব ক্ষেত্রে সচেতন থাকাটাই দস্তুর।

এ সম্পর্কিত গবেষণা নিবন্ধটি কগনিশন অ্যান্ড ইমোশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা নিবন্ধের সহলেখক ড. স্টেফানি কার্পেন্টার বলছেন, ‘অন্যকে উদ্দেশ্য করে মানুষ যে হাসি আঁকে চোখে-মুখে, তাতে সব সময় বিশ্বাস ও সহযোগিতার ভাব থাকে না। হাসির ধরনের ওপরই নির্ভর করে একজন ব্যক্তি অন্যকে বিশ্বাস করবে কি করবে না। পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টিও এই হাসির ওপরই নির্ভরশীল।’ মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকের ভাষ্য, ‘ভালো বা মন্দ—পরিস্থিতি যা-ই হোক, মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করবে কি না, তা নির্ভর করে হাসির ওপর।’

গবেষকেরা হাসির এই প্রভাব সম্পর্কে জানতে একটি খেলার আয়োজন করেন। এতে অংশগ্রহণকারীদের এমন এক খেলায় অংশ নিতে হয়, যেখানে লাভ-লোকসানের বিষয়টি জড়িত। দুজন দুজন করে ভাগ করে দল করা হয়। খেলার শুরুতেই দলের এক সদস্য এমন একটি কাজ করেন, যা তাঁর অংশীদারের মধ্যে অবিশ্বাসের জন্ম দেয়।

পরের খেলায় এই বিশ্বাস ফের অর্জন করাই হয়ে ওঠে প্রথম ব্যক্তির মূল চ্যালেঞ্জ। আর এটি অর্জনে হাসিই তাঁর একমাত্র অস্ত্র। খেলায় অংশগ্রহণকারীরা তিন ধরনের হাসি ব্যবহার করেন। এর মধ্যে আকর্ণ বিস্তৃত হাসির ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ভালো দেখা যায়।

একটু মেপে যাঁরা হাসেন, তাঁরা সাবধান। কারণ, গবেষকেরা বলছেন, হাসির এই ধরনটিও গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এতে দেখা গেছে বিশ্বাস অর্জনের বদলে অবিশ্বাস দৃঢ় হয়েছে। তৃতীয় হাসিটি ছিল—কিছুটা অপরাধবোধ মিশ্রিত একেবারে স্বাভাবিক হাসি; অকৃত্রিম যাকে বলে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এর ফল ছিল সবচেয়ে ভালো।

গবেষকেরা বলছেন, গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বাস অর্জনের জন্য আপনি হাসলেন, কিন্তু দেখা গেল তা অবিশ্বাসটাই বাড়িয়ে দিল। তাই হাসিতে সাবধান। কারণ, হাসি যেমন ইতিবাচক দরজা খুলে দেয়, তেমনি হাসির মাধ্যমে নেতিবাচক দরজাও খুলে যেতে পারে।

গবেষকদলের প্রধান ও কুইন্স ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. ম্যাগডালেনা রিচলোয়াস্কার ভাষ্যমতে, ‘হাসি দিয়ে অনেক কিছুই হতে পারে। সিনেমার ভিলেনদের কথাই ভাবুন। ধরুন জেমস বন্ড ছবির খলনায়ক যেকোনো একজনের কথা। তিনিও কিন্তু হাসছেন। কিন্তু তা বন্ডের মতো নয়। তারা মাঝেমধ্যেই খারাপ কিছু ঘটলে বা ঘটবে বলে মনে হলে হাসে। হাসির সেই প্রেক্ষাপটই তাকে বাজে হাসিতে পরিণত করে।’ 

কৈশোর থামে বত্রিশে, বার্ধক্যের শুরু ছেষট্টির পর—চিহ্নিত হলো মস্তিষ্কের ৫ পর্যায়

প্রাণীদের প্রথম চুম্বন ২ কোটি ১০ লাখ বছর পুরোনো

৪০ হাজার বছর আগে একটি ম্যামথের জীবনের শেষ মুহূর্তের কথা জানলেন বিজ্ঞানীরা

শনির চাঁদে ‘অসম্ভব’ ঘটনা: তেল-জল মিশে যায় সেখানে

মানবমস্তিষ্ক অনুকরণে বাড়বে এআইয়ের দক্ষতা, কমবে বিদ্যুৎ খরচ: গবেষণা

বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত নতুন রং ছাদের তাপমাত্রা কমাবে ৬ ডিগ্রি পর্যন্ত

গোপনে টিকে থাকার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এআই: গবেষণা

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

কোয়ান্টাম জগতের নিয়ন্ত্রণ হাতের মুঠোয় এনে নোবেল জিতলেন তিন বিজ্ঞানী

মানবদেহে রেগুলেটরি টি সেলের কাজ কী—যা আবিষ্কার করে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী