খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে। দেশে একসময় মঙ্গা ছিল, তখন মানুষ খাবার পেত না। চালের দাম বেড়ে গেলে মানুষ হইচই করে, আবার কমে গেলে কৃষকেরা হইচই করে। উভয়সংকটে আমরা।’
আজ বুধবার রাজধানীর শাহবাগে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে আয়োজিত ‘ভ্রাম্যমাণ নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষাগার’ উদ্বোধন ও হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘শুধু ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরির মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা কঠিন। তাই ভোক্তা, খাদ্য সরবরাহকারী এবং উৎপাদনকারীদের সবার মনের ল্যাবরেটরি পরিষ্কার করতে হবে। আমরা যতই মোবাইল ল্যাবরেটরি দিই না কেন, যারা ভোক্তা, যারা সরবরাহকারী, যারা উৎপাদনকারী তাদের মনের ল্যাবরেটরি পরিষ্কার করতে হবে। তা না হলে যতই ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করি না কেন, আমার মনে হয় কোনো কাজ হবে না।’
খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘খাদ্যের মান বুঝতে পারার সবচেয়ে বড় উপায় হলো খাদ্য পরীক্ষা। পরীক্ষা করতে না পারলে নিরাপদ বা অনিরাপদ কি না, বুঝতে পারব না। জাতীয় পর্যায়ে দেশে ল্যাব সক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ। ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে জেলা বা বিভাগে পরীক্ষা করা ছিল অকল্পনীয়। তাই আজকের দিন বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য আবু নূর মো. শামসুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্যসচিব মো. ইসমাইল হোসেন।
এ সময় জানানো হয়, মোবাইল ল্যাবে দুধে ডিটারজেন্ট, স্টার্চ, ইউরিয়ার উপস্থিতি, ঘি-তে বনস্পতি/হাইড্রোজিনেটেড এডিবল ফ্যাটের উপস্থিতি, হলুদের গুঁড়ায় লেড ক্রোমেটের উপস্থিতি, মরিচের গুঁড়ায় ইটের গুঁড়ার উপস্থিতি শনাক্ত করা যাবে।
এই মোবাইল ল্যাবরেটরির মাধ্যমে গোলমরিচে পেঁপের বীজ মেশানো, নারিকেল তেলে ভেজাল, শাকসবজি-ফলমূলে রং দেওয়া, শাকসবজি-ফলমূলে বালাইনাশকের মাত্রা নির্ণয়, মধুতে চিনির মিশ্রণ, পাউরুটিতে ক্ষতিকর পটাশিয়াম ব্রোমেটের উপস্থিতি, খাদ্যে অননুমোদিত কৃত্রিম রঙের উপস্থিতি, খাদ্যে ক্ষতিকর ভারী ধাতুর উপস্থিতিসহ আরও অনেক পরীক্ষা স্বল্প সময়ে করা যাবে।
অনুষ্ঠানে খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল জেলার নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তাদের কাছে মোবাইল ল্যাবরেটরির ভ্যানের চাবি হস্তান্তর করা হয়।