ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, ইসরায়েল যত দিন যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় মেনে চলবে হামাসও তত দিন তা অনুসরণ করবে।
গতকাল শুক্রবার রেকর্ড করা এক ভিডিও বার্তায় চলমান যুদ্ধবিরতি নিয়ে এ কথা বলেন গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠীটির প্রধান। আল আরাবিয়া নিউজের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।
মুক্তি ও স্বাধীনতার মূল্য গাজার শহীদেরা জীবন দিয়ে চুকিয়েছেন বলেও এ সময় মন্তব্য করেন ইসমাইল হানিয়া। তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করা, বন্দিবিনিময় সম্পন্ন করা, গাজাকে দখলমুক্ত করা এবং আল আকসা মসজিদে হামলা প্রতিরোধ করতে যা যা করা প্রয়োজন, তার সবই করতে প্রস্তুত আছে হামাস।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দোহায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে এক বৈঠকে যুদ্ধবিরতিকে রাজনৈতিক বিজয় হিসেবে অভিহিত করেন ইসমাইল হানিয়া। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ হানিয়াকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ফিলিস্তিনের শত্রুরা নারী, শিশু ও অন্য বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করেছে। তারপরও তারা লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানানোয় লেবানন, ইয়েমেন, ইরাক ও সিরিয়ার পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন হামাসপ্রধান। ইরানের নেতৃত্ব, রাষ্ট্রপতি, সরকার এবং ইরানের জনগণের দৃঢ় সমর্থনের জন্যও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ইসমাইল হানিয়া।
গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযান চালাতে থাকে। গাজার হামাস সরকারের তথ্যানুযায়ী, অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় ১৪ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে। ইসরায়েলে হামাসের হামলায়ও মারা যায় ১ হাজার ৪০০ ইসরায়েলি।
যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গতকাল হামাস প্রথম দফায় আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের কাছে ২৪ জিম্মিকে হস্তান্তর করেছে। এর মধ্যে ১৩ ইসরায়েলি নাগরিক, থাইল্যান্ডের ১০ নাগরিক ও ১ জন ফিলিপাইনের। ইসরায়েলও তাদের কারাগারে বন্দী থাকা ৩৯ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে ছেড়ে দিয়েছে। চুক্তির আওতায় জিম্মি মুক্তির পাশাপাশি চার দিন লড়াই বন্ধ রাখার ব্যাপারে দুই পক্ষের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে, তা-ও মানা হচ্ছে।