ট্রেন পরিচালকের (গার্ড) দায়িত্ব অবহেলায় বিলম্বে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে পঞ্চগড়গামী ‘কাঞ্চন এক্সপ্রেস’। আজ সোমবার সকালে পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর ছেড়ে যায় ট্রেনটি।
পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টারের অফিস সূত্রে জানা গেছে, ‘কাঞ্চন এক্সপ্রেস’ পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ৮টা। এর আগেই সিগন্যাল থেকে শুরু করে ছেড়ে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু সব প্রস্তুতি থাকলেও ট্রেনের পরিচালক যথাসময়ে উপস্থিত না হওয়ায় ট্রেনটি গন্তব্যে রওনা হতে পারছিল না। পরে ট্রেন পরিচালককে কোথাও খুঁজে না পেয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অসুস্থ বলে জানান। কিন্তু অসুস্থ হলে বা কোনো সমস্যা থাকলে তা অফিসকে অবহিত করার নিয়ম থাকলেও তিনি তা পালন করেননি। ফলে নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট বিলম্বে অন্য একজন পরিচালককে দিয়ে ট্রেনটি গন্তব্যে রওনা দেয়। এতে বিপাকে পড়েন স্টেশনে অপেক্ষমাণ ওই ট্রেনের শত শত যাত্রী।
বিজয় কুমার নামে এক যাত্রী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এ ট্রেনেই দিনাজপুরে যাই। ৯টায় অফিসে উপস্থিত হই। কিন্তু আজ গার্ডের কারণে এখানেই ৯টা পার হয়ে গেল। এ জন্য অফিসে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে।’
নয়ন নামে আরেক যাত্রী জানান, তাঁর বাড়ি পার্বতীপুরের বাসুপাড়া এলাকায়। বিশেষ কাজে আজ দিনাজপুর যাওয়ার জন্য এসে দেখেন ট্রেন লেট। এখন বাধ্য হয়ে বাসেই যেতে হচ্ছে তাঁকে।
ট্রেন বিলম্বে ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে পার্বতীপুর স্টেশনের মাস্টার শওকত আলী বলেন, রোস্টার অনুযায়ী ইকবাল বাহারের ওই ট্রেনের পরিচালক হিসেবে ডিউটি ছিল। তবে ট্রেন ছাড়ার সময় পার হলেও ট্রেন না ছাড়ায় জানতে পারি ট্রেন পরিচালক নেই। খোঁজ করা হলে তিনি অসুস্থ বলে জানান। তবে অসুস্থ হলেও যথারীতি অফিসকে অবহিত করার নিয়ম থাকলেও তিনি তা করেননি। পরে অন্য একজন পরিচালককে দিয়ে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট বিলম্বে ৯টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি পঞ্চগড়ের উদ্দেশে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ ঘটনায় লালমনিরহাটের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তদন্ত কমিটি ছাড়াই এরই মধ্যে তাঁকে কাজ থেকে অবমুক্ত করা হয়েছে। আগামীকাল আমার দপ্তরে তাঁকে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে ট্রেনের পরিচালক অভিযুক্ত ইকবাল বাহারের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।