‘ভাই সব, চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করা গরুর মাংস প্রতি কেজি মাত্র ৬২০ টাকা! এখনই চলে আসুন মিঠাপুকুর বাজারে তহিদুল ভাইয়ের দোকানে!’ —কয়েক দিন ধরে মাইকে এমন প্রচারণা চলছে মিঠাপুকুর বাজারে। তবু মিলছে না ক্রেতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর বাজার ও গড়েরমাথা এলাকায় গরুর মাংস বিক্রি হয়। ব্যবসায়ী লিটন জানান, ১৫-২০ দিন আগেও প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি হতো। তবে মাংস খেয়ে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় এখন বেচাকেনা প্রায় বন্ধ। দাম কমিয়ে প্রচারণা চালানো হলেও ক্রেতা আসছে না। বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আজ শনিবার উপজেলা সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকেও কোনো কসাই গরু জবাই করছেন না। সাড়ে ৯টার দিকে দুজন বিক্রেতাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা মাংস নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাশের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘আজ গরু জবাই হয়নি। মনে হয় গতকালের অবিক্রীত মাংস আজ বিক্রি করা হচ্ছে।’
কসাই নাজমুল বলেন, ‘পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সে দুজনের মৃত্যু আর ইমাদপুরে ছয়জন আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মানুষ গরুর মাংস খাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন।’ উপজেলার কৃষক হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গরুর মাংস কিনছি না, অ্যানথ্রাক্সের ভয় আছে।’ শিক্ষক আইনুল কবির বলেন, ‘আমার স্ত্রী গরুর মাংস খুব পছন্দ করেন, কিন্তু এখন কিনি না।’
জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহকারী কর্মকর্তা গোলাম ফারুক ডিয়ার বলেন, জবাইয়ের আগে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। মাংস বিক্রেতাদেরও নিয়ম মেনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর গরু জবাইয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগনিয়ন্ত্রণ চিকিৎসক এম এ হালিম লাভলু বলেন, আগের তুলনায় এখন মানুষ গরুর মাংস কম খান। চর্বিজাত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর—এ সচেতনতার পাশাপাশি অ্যানথ্রাক্সের ভয়ও বিক্রিতে প্রভাব ফেলছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া জবাই করা মাংস খাওয়া উচিত নয়।