কালো পলিথিন দিয়ে বানানো তাঁবু। যে কোনো সময় গুটিয়ে ফেলা যায় এমন ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘরেই তাঁদের বাস। অন্ধকার সেই ঘর এখন আলো ঝলমলে। ঘরের সামনেই বসানো আছে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল। সব বেদে পরিবারের ঘরেই এখন বিজলি বাতি। হাতে হাতে মোবাইল ফোন। ফোনে মেমোরি কার্ড লাগিয়ে তাঁরা দেখেন নাটক সিনেমা। ঝলমলে আলোতে বসে পড়ালেখা করছে শিশুরা। যদিও যাযাবর বলে তাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেই।
বংশ পরম্পরায় বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনের পেশা সাপ ধরা, সাপের খেলা দেখানো এবং নানা তাবিজ-কবচ ও কবিরাজি ওষুধ বিক্রি করা। এটাই তাদের আয়ের উৎস, জীবন জীবিকা, এটুকুই তাদের জীবন।
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের দেউতি বাজার এলাকায় দেখা মেলে অস্থায়ীভাবে বসবাসরত ১৭টি বেদে পরিবারের। সেখানে ৭৫ জন নারী-পুরুষ ও শিশু একসঙ্গে গাদাগাদি করে বসবাস করছেন। তাঁরা বলেন, অনেকে এখন বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য কাজ করছে। সাপ কেনা-বেচা ও সাপ খেলার ব্যবসা আগের মতো চলে না। ছেলে-মেয়েরাও আর এ পেশায় আসতে চায় না। তারা পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হতে চায়। ভবঘুরে জীবন ছেড়ে নিয়মিত স্কুলে যেতে চায়।
আরেক বেদে ইয়াউল মিয়া বলেন, আমরা বছরের ১০ মাস দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াই, আর দু’মাস ঢাকার সাভারে থাকেন বেদেরা। যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অস্থায়ী বসবাস করি তখন রাতে কেরোসিনের বাতিই ভরসা ছিল। এখন রাতে সৌর বিদ্যুতের বাতি জ্বলে। এখান থেকে মোবাইলে চার্জ দিতে পারি। মেমোরি কার্ড দিয়ে টিভিতে ভিডিও দেখতে পারি।